😊💙স্বপ্ন ও সম্পর্ক💙😊

পিয়া বারানদায় দাড়িয়ে ভাবছে করোনা পুরো বিশ্ব কে কাঁপিয়ে রেখেছে।ঠান্ডা হিম বাতাস তার শরীর কে ছুঁয়ে যাচ্ছে।মনের মধ্যে প্রচন্ড একটা ঠান্ডা প্রবাহ শুরু হয়েছে -কেন পিয়া বুঝতে পারছে না।তার স্বামী সন্তান নিয়ে তার অনেক সুখের জীবন তাই সে আল্লাহ্ র কাছে সবসময় শুকরিয়া আদায় করে ।কিন্তু তার এখন কেন জানি খুব লিখতে ইচ্ছা হচ্ছে তার জীবনের একটা অধ্যায় যা সে কখনোই ভুলতে চেয়েও পারে না । তখন সবেমাত্র পিয়া কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে উঠেছে।হঠাত্ একদিন ফোন বেজে উঠলো ।পিয়া ফোন টি রিসিভ করে।ওপাশ থেকে খুব সুন্দর একটা কন্ঠ বলে উঠল 'পিয়া আছে'?তখন ওর কিশোরী মন, অনেক আগ্রহ জন্মে আর মনের মধ্যে কেমন জানি একটা অদ্ভুত অনুভূতি সৃষ্টি করে ছেলেটির কন্ঠ।ছেলেটি কে সে জানে না কিন্তু কথা বলে অনেক্ষন।এরপর তাদের আরো বেশ কয়েকদিন কথা চলতে থাকে।এর মধ্যে পিয়া জানতে পারে ছেলেটির নাম আবির।পিয়া এখন প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকে কখন আবিরের সাথে তার কথা হবে। কারণ আবির কে তার এত ভালো লাগে যে সারাক্ষণ ও তার কথায় ভাবতে থাকে অন্য রকম একটা অনুভূতি নিয়ে যা সে বুঝতে পারছিল না এইটা কিসের অনুভূতি।এরই মাঝে আবির তার ফোন নম্বর পিয়া কে জানিয়ে দেয় ।হয়তো আবিরের ও ভালো লাগে পিয়ার সাথে কথা বলতে। দুই বছর কেটে গেল ওদের দুজনের বন্ধুতের।এখন পিয়া অনেক কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করে- সব আবির কে নিয়ে ।অনেক স্বপ্ন বুনতে থাকে।তখন সে বুঝতে পারে সে আবির কে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে কিন্তু চিন্তিত হয় আবির কখনোই ওর সাথে দেখা করতে বলে না। ওর মধ্যে কি কোন আবেগ আছে কিনা- এটা নিয়ে পিয়া অনেক বিভ্রান্ত থাকে ।সে ভাবে যদি আবির তাকে নিয়ে অন্য কিছু ভাবতো তাহলে অবশ্যই তাকে জানাতো।একদিন পিয়ার খুব মন চাইল আবির কে উপহার দিবে।যখন আবির উপহার পেল পিয়া তার মাঝে কোন উষ্ণ অনুভূতি দেখতে পেল না।কিছু দিন পর পিয়া জীবনে প্রথম একটা ধাক্কা খেল যখন আবির তাকে জানায় পিয়ার দিয়া জামা পরে সে তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে যায়।এরপর পিয়ার মন কষ্টে বিষাদ এ ভরে যায়।পিয়া কি করবে বুঝতে পারে না-- ও কি আবির কে জানাবে সে কতটা ভালোবাসে?কিন্তু এই কথা আবির কে জানানো ঠিক হবে কিনা এইটা বুঝতে পারে না।কারণ আবির এর মনে যে তার জন্য কোন আবেগ নেই এটা সে বুঝতে পারে ।এই কথা মেনে নিতে পিয়ার অনেক কষ্ট হয় প্রথম প্রেম প্রথম ভালোবাসা, স্বপ্ন সব অপুরণ থাকবে?পিয়া তারপরও আবির এর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে না।তার মনে হয় আবির হয় তো মজা করছে তার সাথে।একদিন হয়তো সে বলবে সে তাকে ভালোবাসে। কিছু দিন পর পিয়া জানতে পারে আবির বিদেশে যাবে ।তখন ভাসিটি আসে তার সাথে দেখা হয় ।পিয়া অবাক হয় এতদিন মানুষ টা কে না দেখে ভালোবেসে গিয়েছে।সেইদিন পিয়ার মনে হল আবির ওর জন্য একটু আগ্রহ অনুভূব করছে । এরপর একদিন আবির বলে সে দেখা করতে চাই ।দুজন দেখা করল কিন্তু বিশেষ কিছু কথা হয় না দুজনের মধ্যে ।আবির হয় তো পিয়া কে ভালো লাগলেও সেই ভালোবাসার টান টা অনুভূব করে নি কখনোই । আবির বিদেশে চলে যায়।পিয়া সেই দিন অনেক কাঁদে।মেয়ে টি অনেক বোকা সে বুঝতেই পারেনি তার স্বপনের মানুষ টা অন্যজন কে তার মন দিয়ে গিয়েছে।এরপর আবির তাকে মাঝে মাঝে ফোন করে কথা বলে।আবির নিজেও জানে না সে কেন পিয়ার সাথে কথা বলে।পিয়া ভাবে আবির নিশ্চয়ই ওকে মিস করে তাই ফোন করে ।একবার সে তার পছন্দের সব গান রেকর্ড করে বিদেশে পাঠাই এই ভেবে যদি আবির তার অনুভূতি বুঝতে পারে ।ফোনে ও বলতে থাকে যদি সম্পর্ক টাকে অন্যরুপ দেয়া যায় ।কিন্তু আবির এড়িয়ে চলে । একদিন আবির এর ফোন আসে সে দেশে এসেছে ।পিয়া অনেক খুশি হয়ে দেখা করতে চলে যায়।তারপর বেশ কিছু দিন চলে যায় ।তাদের আরো দুই তিনবার দেখা হয় বিভিন্ন জায়গায় কিন্তু পিয়া বুঝতে পারে আবির আর আগের মত তার সাথে কথা বলতে আগ্রহী না।একদিন রাতে পিয়া ফোন করে আবির বলে তার প্রেমিকার জন্য তার অনুভূতির কথা -- স্বপ্ন ভাগ্নের অনুভূতি সবার নেই ।পিয়া জীবনে এই অনুভূতির সাধ পেয়েছে তাই এখন জীবনে অনেক কিছু সহজ ভাবে মেনে নিতে পারে। পিয়ার আবিরের সাথে শেষ কথোপকথন ছিল ওর জীবনের সবচেয়ে কষ্টদায়ক।আবির তখন তার প্রেমের তরীতে ভেসে বেড়াচ্ছে তার প্রেমিকার হাত ধরে-ওই সময় পিয়ার ফোন আবিররের কাছে খুব অনাকাঙিক্ষত ও বিরক্তিকর ছিল ।তাই অনেক তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে শেষ করে আর পিয়া সেই আঘাতের পর আর কখনোই আবির কে ফোন করতে সাহস করে নাই আর অনেক ঘৃণা নিয়ে আবিররের জীবন থেকে সরে আসে।।আস্তে আস্তে সে ভুলে যায় সে আবেগের কথা।।। একদিন পিয়া তার জীবনের আসল রাজপুত্রের দেখা পাই ও সেই মানুষ টার হাত ধরে জীবনে অনেক স্বপনের পথ পাড়ি দিয়ে আজ সুন্দর সুখের সংসার করে যাচ্ছে ।