Ex gf

4 26
Avatar for Raiyan
Written by
4 years ago

গল্পঃ এক্স গার্লফ্রেন্ড যখন অফিসের বস।

পর্বঃ ৬

লেখকঃ মো:kamrul

স্বপ্নাঃ আপনি তো এই মাসের বেতন পাবেন না!

মুহূর্তেই মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো....

বেতন পাবো না মানে? এটা কি ধরনের কথা?

স্বপ্নাঃ হুম, পাবে না মানে পাবে না।

আমিঃ কিন্তু কেন? আমার অপরাধ।

স্বপ্নাঃ অফিসে টি-শার্ট পড়েছো,

এটা অফিস রুলের বাইরে ছিলো।

আরো অনেক জায়গায় ভুল করেছো।

তাই এই মাসের বেতন পাবে না।

আমিঃ বেতন পাবো না বললেই হলো নাকি?

স্বপ্নাঃ হুম।

আমিঃ তারমানে আপনি আমার বেতন দিবেন না,

এইতো?

স্বপ্নাঃ এই বেয়াদব তোকে এক কথা কয়বার বলবো?

বলছি না দিবো না,

কি করবি কর,

যা এখান থেকে।

আমিঃ কি করমু দেখবি?

(ঠাসসস ঠাসসস)

দুইটা চড় গালে বসিয়ে দিলাম,

সে গালে হাত দিয়ে আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আমি বললাম....

লাগবে না তোর টাকা,

তোকে আমার এই সামান্য টাকা ভিক্ষা দিলাম।

তুই যদি এগুলো খেয়ে অনেক বড় হতে পারিস,

তাতে আমার কোনো আপত্তি নাই।

যাহ ছেড়ে দিলাম তোর চাকরি,

আল্লাহ কাওকে মারে না,

কথাটা মনে রাখিস।

এ কথা গুলো বলে বাইরে চলে আসছিলাম।

এমন সময় দেখি পিয়ন আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।

মনে হয় সব কিছু শুনে ফেলেছে।

আমি কোনো কথা না বলে সোজা বাইরে চলে গেলাম।

গাছতলায় গিয়ে বসে রইলাম,

যেখানে স্বপ্না আর আমি সব সময় বসে থাকতাম।

অফিস থেকে সোজা ওখানে চলে আসছি।

বসে বসে ভাবছি স্বপ্না আমার সাথে এগুলো কেন করছে?

আমি তো ওর কোনো ক্ষতি করিনি।

তবুও সে এগুলো কেন করছে?

ধুর কেন যে ওর সাথে রিলেশনে ছিলাম।

যদি না থাকতাম হয়তো আজকে এই দিনটা আর আসতো না।

বাবা মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে,

কি হবে ওদের।

এই মুহূর্তে তো চাকরিও পাবো না,

কি আছে কপালে আল্লাই জানে।

বসে বসে এগুলো ভাবছি,

এই দিকে আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে,

মনে হয় বৃষ্টি হবে।

একটু পর বৃষ্টি শুরু হলো,

আমিও বসে আছি।

বৃষ্টিতে ভিজলে নাকি মন হালকা হয়।

অনেক সময় নিয়ে ভিজলাম।

পকেটে হাত দিয়ে দেখি ২০ টাকা আছে,

তারমানে আজকে আর খাওয়া যাবে না।

একটা টং দোকানে গিয়ে চা আর পাউরুটি খেয়ে বাসার দিকে হাটা দিলাম।

কেমন জানি খারাপ লাগছে,

স্বপ্নাকে চড় দেওয়া আমার উচিত হয়নি।

যেটাই হোক না কেন,,

সে তো এখন অফিসের বস।

নিজেকে নিজের কাছেই অপরাধী মনে হতে লাগলো।

এগুলো ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসছি।

কাপড় চেইঞ্জ করে শুয়েছি মাত্র।

আমার হাত পা কাঁপতে শুরু করলো।

মনে হয় ঠান্ডা লাগছে,

বৃষ্টিতে ভিজলেই আমার জ্বর চলে আসে।

রাত যতো গভীর হচ্ছে জ্বর ততো বাড়তেছে।

আমার পুরো শরীর কাঁপতেছে।

এরমধ্যে ছোট বোন কল দিলো....

ভাইয়া তুই যে টাকা দিলি সেখান থেকে আজকে আমি ৩ টা জামা নিয়েছি।

আমিঃ কিহ!

হুম, এ মাসে বেশি টাকা দেওয়ার কারণে অনেক কিছু নিয়েছি।

আমিঃ টাকা কে দিয়েছে?

আরে তোর অফিসের একটা ম্যাডাম আছে না, সে দিয়েছে।

আমিঃ কোন ম্যাডাম?

আরে ধুর আমি এতো কিছু চিনিনা, শুধু বলেছে তোর সাথে একসাথে কাজ করে।

আমিঃ ওও আচ্ছা।

কিরে ভাইয়া তুই টাকা দিয়েছিস আর তুই নিজেই ভুলে গেছিস।

আমিঃ নারে, এমনি মনে পড়ছিলো না।

ভাইয়া তোর কি শরীর খারাপ? গলা এমন লাগছে কেন?

আমিঃ না আমি ঠিক আছি। টাকা কখন পেয়েছিস?

গত পরশু দিন ভাইয়া।

আমিঃ ও আচ্ছা পরে কথা হবে। রাখি এখন।

তারমানে স্বপ্না টাকা টা বাড়িতে দিয়ে আসছে,

তাও সবার আগে।

আর আমি না জেনেই ওর গালে ছিঃ, ভাবতেই কেমন জানি লাগছে।

রাতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই।

সকালে ঘুম থেকে উঠতে যাবো,

কিন্তু পারছিনা।

পুরো শরীর জ্বরে কাঁপতেছে,

অনেক চেষ্টা করে বাথরুমে গেলাম,

বাথরুমে থেকে বের হওয়ার পর আর কিছু মনে নেই।

অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছিলাম।

যখন জ্ঞান আসলো তখন নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করলাম,

দেখলাম সিহাব আমার পাশে বসে আছে।

আমিঃ কিরে আমি এখানে কেন?

সিহাবঃ সব বলবো, আগে একটু ভালো হয়ে নে।

আমিঃ আমি ভালো আছি বল এখানে কিভাবে আসলাম?

সিহাবঃ ম্যাম আর আমি তোকে নিয়ে আসলাম,

কাল রাত থেকে তোর মোবাইল অফ পাচ্ছি।

ম্যামও অনেকবার তোকে কল দিয়েছে।

আমিঃ তারপর?

সিহাবঃ তারপর সকালে যখন তুই অফিসে আসিস নি,

ম্যাম নিজেই তোর বাসায় যায়,

গিয়ে দেখে তুই মেজেতে পড়ে আসিস।

সাথে সাথে আমাকে কল দেয়।

তারপর দুজনে মিলে তোকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।

আমিঃ ম্যাম এখন কোথায়?

সিহাবঃ এতোক্ষন এখানে বসে বসে কাঁদছিলো, আমি ম্যামকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি।

আমিঃ আর কিছু বলেনি?

সিহাবঃ এটা দিয়ে গেছে (একটা কাগজ)

খুলে দেখলাম লেখা আছে "" ভালো হলে আবার অফিসে আসবেন""

হঠ্যাৎ করেই গত কাল রাতের ছোট বোনের কথা গুলো মনে পড়ে গেলো,

তারপর সিহাবকে বললাম....

আচ্ছা দোস্ত ছোট বোনটা বলেছে বাসায় নাকি কোন ম্যাডাম টাকা দিয়ে আসছে।

তুই কিছু জানিস?

সিহাবঃ হুম ম্যাম নিজেই টাকা দিয়ে আসছে। আমিই ঠিকানা দিয়েছি।

আমিঃ কিন্তু আমাকে কিছু বলেনি কেন?

আর কখন করলো এই কাজ?

সিহাবঃ সেদিন যখন ম্যাম তোকে ৮ টা ফাইল ধরিয়ে দিয়েছিলো সেদিন ভুলে মোবাইল ম্যাম এর রুমে রেখে চলে এসেছিলি তোর মনে আছে।

আর তখন তোর বোন কল করেছিলো।

যা যা বলেছে ম্যাম সব কিছু শুনেছে।

আমাকে ডেকে নিয়ে তোর ঠিকানা জিজ্ঞেস করে তারপর নিজেই টাকা দিয়ে আসে।

আমিঃ কিন্তু তুই আমাকে কিছু বলিস নি কেন?

সিহাবঃ তোকে বললে আমার চাকরি থাকবেনা।

এখনো অনেক কিছু তোর অজানা আছে যেগুলো তুই জানিস না।

সময় হলে জানবি।

আমিঃ ম্যাম আমার জন্য এতো কিছু করছে আর আমি কিনা....

সিহাবঃ কি করেছিস?

আমিঃ না তেমন কিছু না (সত্যটা আর বললাম না)

তারপর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে চলে গেলাম,

২ দিন রেস্ট নেওয়ার পর মোটামুটি ভালো লাগেছে।

চিন্তা করলাম অফিসে গিয়ে স্বপ্নার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবো।

পরেরদিন অফিসে গেলাম,

স্বপ্নার রুমের সামনে গেলাম...

আমিঃ ম্যাম আসবো?

স্বপ্নাঃ হুম আসেন। (আমার দিকে না তাকিয়ে)

আমিঃ ম্যাম একটা কথা ছিলো।

স্বপ্নাঃ হুম বলেন।

আমিঃ ম্যাম সেদিনের জন্য আমি অনেক দুঃখিতো, আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দিয়েন।

স্বপ্নাঃ আচ্ছা বাদ দেন সে সব কথা, ১১ টার সময় রেড়ি থাকবেন।

একজায়গায় যাবো।

আমিঃ জ্বি ম্যাম,

কোথায় যাবেন?

স্বপ্নাঃ সেটা গেলেই দেখবেন।

আমিঃ ওকে ম্যাম।

স্বপ্নাঃ হুম এবার কাজে যান।

তারপর চলে আসলাম,

নিজের ডেস্কে এসে বসে আছি।

স্বপ্নার কথা ভাবছি,

চোখমুখ সব লাল হয়ে ফুলে আছে।

দেখে মনে হচ্ছে নেশা করেছে বা কান্না করেছে।

কিন্তু নেশাতো করার কথা না,,,,,

মনে হয় কান্নাই করেছে।

একটু পর পিয়ন আসলো,..

"ম্যাম আপনাকে বাইরে গিয়ে দাড়াতে বলেছে""

আমি কিছু না বলে ড্রাইভারের কাছে গেলাম,,,

ড্রাইভার আমাকে দেখে বললো...

কি খবর ভাই?

এখন কেমন আছেন?

আমিঃ এইতো ভাই মোটামুটি, আপনার কি অবস্থা?

ড্রাইভারঃ আছি আলহামদুলিল্লাহ ভালো, সেদিন আপনার জন্য ম্যাডাম যা করলো, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতেন না।

আমিঃ কোন দিন?

ড্রাইভারঃ আরে ভাই ভুলে গেলেন নাকি, ওই যে আপনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন সেদিন।

আমিঃ ও আচ্ছা। আচ্ছা আমরা এখন কোথায় যাবো,

কিছু জানেন?

ড্রাইভারঃ শপিংমলে,

আপামনির বিয়ে তো তাই।

আমিঃ কিহ! বিয়ে মানে?

ড্রাইভারঃ হুম উনার বিয়ে ঠিক হইছে, পাত্রকে নাকি উনি নিজেই পছন্দ করছে।

ড্রাইভারের কথা শুনে আমার পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে যেতে লাগলো,

বুকের মধ্যে কেমন জানি একটা ব্যাথা অনুভব হতে লাগলো।

কথা বলার সময় দেখলাম স্বপ্না আসছে,,,

আর কোনো কথা না বলে দাঁড়িয়ে আছি।

সে এসে বললো....

গাড়িতে উঠেন।

উঠে বসলাম,

তারপর বললাম...

আমিঃ ম্যাম আমরা কোথায় যাচ্ছি?

স্বপ্নাঃ বিয়ের শপিং করতে?

আমিঃ কিন্তু ম্যাম আমাকে কেন নিয়ে যাচ্ছেন?

স্বপ্নাঃ ভুলে যাবেন না আপনি আমার পার্সোনাল সেক্রেটারি, সব গুলো কাজ আপনাকেই করতে হবে। আর শুনেন...

আমিঃ জ্বি ম্যাম বলেন।

স্বপ্নাঃ বিয়ের সব গুলো কাজ আপনি নিজ হাতে করবেন, দায়িত্বটা আপনার উপর দেওয়া হলো।

আমিঃ ওকে ম্যাম।

এদিকে আমার কলিজা ফেটে যেতে লাগলো,

জোরে জোরে বলতে ইচ্ছা করছে স্বপ্না বিয়েটা করো না, আমি এখনো তোমাকে ভালোবাসি।

কিন্তু সেটা আর possible না।

একটু পর শপিংমলের সামনে চলে আসলাম।

এরপর সবাই ভিতরে গেলাম,,,,

#__চলবে......

2
$ 0.00
Avatar for Raiyan
Written by
4 years ago

Comments

Nice next part plz

$ 0.00
4 years ago

Tnx

$ 0.00
4 years ago

Nice keep it up

$ 0.00
4 years ago

Tnx

$ 0.00
4 years ago