----------------------★----------------------

মিথিলাকে সাথে নিয়ে রাকিবদের বাসায় ডুকে পড়লাম.. বাসায় ডুকে সব গুলো হারামিদের দেখলাম একসাথে বসে গল্প করছে,,,,আমি যেতেই....

সবাইঃ কিরে কী খবর তোর....!! আমিঃ এই তো ভালো... তোদের কী খবর....?? সবাইঃ ভালো.... হোসেনঃ ভাবি আপনি কেমন আছেন...?.. মিথিলাঃ ভালো... আপনারা কেমন আছেন...?? সবাইঃ ভালো....!! আমিঃ সবাই একসাথে বসে কীসের কথা বলতেছিলি... আকাশঃ সবাই মিলে ভাবছি... রাকিবের হলুদের অনুষ্টান ছাদে করবো...!! আমিঃ হুমম,,,ছাদে করলে তো ভালোই হবে.....!! অপুঃ আমরা সবাই এই কথাই বলতেছি... কিন্তু রাকিব বলতেছে নিচে করবে...?? আমিঃ এই রাকিব,, বিয়ে হচ্ছে...!! রাকিবঃ কেনো,, আমার বিয়ে হচ্ছে.... আমিঃ তাহলে ডিসিশন নিবে কে...?? রাকিবঃ আমি...!! আমিঃ নাহ.. তুই নাহ... ডিসিশন নিবো আমরা...!! রাকিবঃ আচ্ছা তোদের যেখানে ভালো মনে হয়ে সেখানেই কর....!! আমিঃ তাহলে এখানে সবাই বসে আছোস কেনো..?? ছাদে চল...

  • হা চল........

তারপর সবাই মিলে ছাদে চলে আসলাম.. আর মিথিলা রাকিবের বোনে আর কাজিনদের সাথে চলে গেছে... ছাদে এসে সবাই ডেকোরেশন সাজাতে লাগলাম... সব কিছু আগেই বাসায় ছিলো তাই আর সাজাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না... আমি আকাশ আর অপু মিলে সাজাতে লাগলাম... আর হোসেন রাকিব আর রকিবের সুমন সব কিছু আমাদের কে হাতে তুলে দিচ্ছে....ছাদ প্রায় সাজানো শেষ,, বাসায় অনেক মেহমান ও চলে আসছে...

রাতে..বক্স বাজিয়ে সবাই মিলে অনেক আনন্দ করছি,, আর মিথিলা ছাদের এক কোনায় দাড়িয়ে আছে... বন্ধুদের সাথে অনেক আনন্দ করতে লাগলাম... এরোই মধ্যে রাকিবের হলুদের অনুষ্টান শুরু হয়ে গেলো...

আর অন্যদিকে মিথিলা তাদের এককোনায় দাড়িয়ে আমাদের আনন্দ করাকে সেও উপভোগ করছে.. হঠাৎ কোথা থেকে জেনো দুজন লোক এসে মিথিলার সামনে এসে দাড়ালো...

মিথিলাঃ আপনার কারা...??

  • আমরা তো মানুষ.. তবে এখন অমানুষের কাজ করতে যাচ্ছি... মিথিলাঃ কি বলতে চাচ্ছেন আপনারা...??
  • আমরা বলি না... আমরা করে দেখাই... মিথিলাঃ দেখেন এখানে আমার স্বামী আছে আমি কিন্তু তাকে ডাক দিবো...
  • অবশ্যই... দেন যত জোর আছে ডাক দেন...!! মিথিলাঃ নয়ন....(অনেক জোরে চিৎকার করে আমাকে ডাক দিলো কিন্তু বক্সের শব্দের কারনে আর আমার কানে এসে মিথিলার শব্দ এসে পৌছালো না...)
  • কি হলো আপনার স্বামী শুনতে পারছে না....

মিথিলা দৌর দিয়ে যেই আমার কাছে আসতে যাবো ওমনি.. তাদের দুজনের মধ্যে একজন.. মিথিলার চুল ধরে আবার পিছনের দিকে টান দিয়ে ফেলে দিলো.. তারপর মিথিলাকে ইচ্ছা মতো মারতে লাগলো.. মিথিলা চিৎকার করে আমাকে ডাকতে লাগলো কিন্তু বক্সের শব্দের জন্য মিথিলার কোনো আমি শুনতে পারছি... না... মিথিলাকে যখন তার পেটে লাথি দিতে যাবে.. তখন মিথিলা তাদের হাত জোর করে বলতে লাগলো...

মিথিলাঃ প্লিজ আমার পেটে মারবেন.. না.. প্লিজ.. কিন্তু তারা মিথিলার কোনো কথা না শুনে... তাকে পেটে কয়েকটা লাথি মেরে দিলো..

আর এদিকে আমি রাকিবের গায়ে হলুদ নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে আছি.. এমন সময় মোবাইলে কল আসলো.. কোনো কথা না বলেই কল টা রিচিব করলাম..

আমিঃ হ্যালো কে বলছেন....!!!

  • বাহ.. তুমি তো দেখছি.. অনেক কানন্দ করতেছো.. তোমার বউকে একা রেখে.. আমিঃ এই আপনি কে বলছেন...
  • আমার কথা বাদ দাও... তোমার বউ এর একবার খোজ করো..

আমি কলটা কেটে দিয়ে স্টেজ থেকে নেমে এসে মিথিলাকে খুজতে লাগলাম... মিথিলাকে শেষ বার যেখানে দেখছি.. সেখানে আসলাম... এসে দেখি দুজন লোক মিথিলার মুখে চাপ দিয়ে কিছু একটা বলছে.. আর মিথিলা নিচে শুয়ে,,, আর সারা শরীরে রক্ত লেগে আছে.. আমি চিৎকার দিয়ে মিথিলার দিকে এক দৌড় দিলাম.. আমার চিৎকার শুনে বক্সটা বন্ধ করে দিলো.. আর সবাই আমার কাছে আসতে লাগলো.. আর লোক দুজন আমাকে আসতে দেখে.. ছাদের পাশে আম গাছ দিয়ে নেমে গেলো... আমি মিথিলার কাছে এসে মিথিলার মাথাটা উঠিয়ে নিজের কোলে রেখে... বলতে লাগলাম...

আমিঃ এই মিথিলা চোখ খুলো... ( কান্না জড়ুত কন্ঠে..) মিথিলার মুখ থেকে শেষ শব্দটা শুধু আমার নামটাই শুনলাম...মিথিলাকে অঙ্গান হতে দেখে.. কোলে তুলে নিলাম.. তারপর তারাতরি করে নিচে চলে আসলাম... নিচে গাড়িতে উঠে পড়লাম.. আমার সাথে হোসেন ও আসছে তাই তাকে ড্রাইব করতে দিলাম... আমি মিথিলাকে নিয়ে পিছে বসলাম....

আমিঃ এই মিথিলা চোখ খুলো.. প্লিজ...!! এই মিথিলা প্লিজ একবার চোখ খুলো... প্লিজ.. তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি কী করে বাঁচবো.... প্লিজ মিথিলা চোখ খুলো... আমি শুধু মিথিলাকে ডাকতে লাগলাম.. আর মিথিলা চুপ করেই আছে.. কোনো শব্দ করছে না... আমি বলে বুঝাতে পারবো না মিথিলার এ অবস্থায় আমার ভিতর দিয়ে কী চলছে.. মিথিলাকে নিয়ে হাসপাতালে.. চলে আসলাম.....

হাসপাতালে এনে ডক্টর মিথিলাকে একটু দেখে আইসিইউ তে নিয়ে গেলো.... আমি আর হোসেন বাইরে বসে রইলাম.... বুঝতেছি না.. মিথিলার কেনো.. বারবার এরোকম হচ্ছে.. এমন সময় তখন কার কল এর কথা মনে পড়লো.. সেটা নিশ্চয় মিম ছিলি.. মিম ছাড়া এটা আর কেউ নাহ.. এমন সময় মোবাইলটা বেজে উঠলো.. চেয়ে দেখি আম্মু কল করছে...বুঝতে ছিনা কল রিচিব করে আম্মুকে কী বলবো,,, মিথিলার কথা জিঙ্গাস করলে,, আমি জবাব দিবো,, তারপরেও,, চোখে পানি মুছে কল রিচিব করলাম...

আমিঃ হা আম্মু বলো...!! আম্মঃ কোথায় তুই এতো রাত হয়ে গেছে এখনো আসছিস না কেনো...?? আমিঃ আম্মু আসব একটু পরে..
আম্মুঃ মিথিলা কোথায়.. ( আম্মু কথাটা বলার সাথে আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না.. হাউমাউ করে কেটে উঠলাম.. আম্মু আমার কান্নার শব্দ শুনে.. বললো..

আম্মুঃ কিরে তুই কাঁদছিস কেনো..?? বউমা ঠিক আছে তো..?? আমিঃ আসলে আম্মু,,( কান্না জড়িতে কন্ঠে..) আম্মুঃ কী হয়েছে বউমার..?? আর তুই কাঁদছিস কেনো..?? আমিঃ আসলে আম্মু,, ( তারপর আম্মুকে সব বলে দিলাম..) আম্মুঃ তোরা এখন কোন হাসপাতালে আছিস..?? ( কান্নার শব্দ শুনা যাচ্ছে ওপাশ থেকে হয়তো আম্মু কাধছে...) আমিঃ ***** এই হাসপাতালে....!! আর আম্মু তোমাকে এখন আসতে হবে না,, বরং কালকে সকালে এসো... আম্মুঃ আচ্ছা,,, আর ডক্টর কী বলে আমাকে জানাস..!! আমিঃ হুমম,,,

আম্মুর সাথে কথা বলে কল কেটে দিলাম.. মোবাইল রাখার আগেই.. আবারো মোবাইলে কল চলে আসলো.. মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আকাশ কল করছে...

আমিঃ হা বল... আকাশঃ ভাবি এখন কেমন আছে..?? আমিঃ এখনো কিছু বলতে পারছি.. না.. ডক্টর বের হলে জানতে পারবে... আকাশঃ ওহ,, আর ওই দুইটারে ধরছি..!! আমিঃ কোথায় ওরা... আকাশঃ আমগো পুরান গুদামে বেধে রাখছি.. আমিঃ আচ্ছা তোরা ওদের মুখ থেকে এটা বের কর যে মিম এখন কোথায় আছে...?? এবার তোরা যেভাবেই পারোস... আকাশঃ আচ্ছা.... আর ডক্টর বের হলে জানাস.. ভাবির কী খবর... আমিঃ আচ্ছা....

কল কেটে দিয়ে মোবাইলটা রেখে দিয়ে দাড়িয়ে শুধু আইসিইউর সামনে পায়চারী করতে লাগলাম... যে কখন ডক্টর বের হবে... আর কখন জানতে পারবো যে মিথিলা এখন ঠিক আছে...

হোসেনঃ নয়ন তুই একটু শান্ত হয়ে বস... দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে...!! কিচ্ছু হবে না ভাবির... আমিঃ এই সব কিছু হয়েছে শুধু আমার জন্য... আমি যদি মিথিলাকে একলা না ছাড়তাম তাহলে আজ এতো কিছু হতো না... হোসেনঃ দোষটা তোর না দোষ টা হলো.. ওই মিমের যে তোর বউ এর এ হাল করছে... আমিঃ তার কথা এখন বাদ দে... তার কথা শুনলে... মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে...

এভাবে আরো প্রায় এক ঘন্টা যাবার পরে ডক্টর বের হয়ে আসলো.. আমি তারাতরি করে ডক্টরের গাছে চলে আসলাম............

1
$
User's avatar
@Fahim01 posted 4 years ago

Comments