এক মেয়ে তার নিজের ধর্ষণের বর্ণনা দিয়ে লেখা পোস্টের শেষে লিখলো," আমি সেদিন যথেষ্ট ভদ্র পোশাক পরে ছিলাম। আমার সাথে ওড়না ছিল এবং সেটা ভালোভাবেই বুকে ছিল। গলায় ছিল না।" এই জায়গাটা আমার খুব বিঁধল। এতসবের মধ্যেও মেয়েটাকে ক্রমাগত নিজের পোশাকের জন্য জবাবদিহিতা করে যেতে হচ্ছে। আমি জানি এখানে আমার এই পোস্টটা যারা পড়বেন তাদের অনেকেই ভাবেন ধর্ষণের জন্য একটা মেয়ের পোশাক দায়ী। যারা এমনটা ভাবেন আপনাদের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখে গেলাম, আশা করি উত্তর পাবো। ১. ধর্ষক নামক মানুষরূপী পশুরা একটা মেয়েকে সম্মান সর্বোপরি একটা মানুষকেই সম্মান করতে জানে না, তারা মেয়েটার পরিহিত পোশাককে কিভাবে সম্মান করবে? ২. একটা মেয়ের পোশাকই যদি ধর্ষণের জন্য দায়ী হয় তাহলে পর্দার আড়ালে থাকা নারীও কেন ধর্ষণের শিকার হয়? ৩. ওড়না ঠিকমত পড়লে, হিজাব করলে- অনেক বিপদ থেকে নাকি বেঁচে যাওয়া যায়, তাহলে তনুর মতন মেয়েরা কেন ধর্ষিতা হয়? কেন ওদের জীবন দিতে হয়? ৪. দেহের গড়ন স্পষ্ট করে এমন পোশাক, দেহাবয়ব যদি ধর্ষণের কারণ হয় তাহলে শিশুদের কেন ধর্ষণ হচ্ছে? ৫. পর্দা করা শুধু ইসলাম ধর্মের নারীদের জন্যই ফরজ, তাহলে অন্য ধর্মের নারীদের, বোনদের কি আমরা ধর্ষিতা হতে দেখতে চাই? কখনই না।।
তাহলে এবার আপনারা আপনাদের বিজ্ঞ যুক্তি দিয়ে বোঝান, একটা মেয়ের পোশাককে কেন ধর্ষণের জন্য দায়ী করা হয়? আমার কাছে ধর্ষণের একমাত্র কারণ ধর্ষকের নোংরা, বিকৃত মানসিকতা। আর কিছুই নয়।
আপনারা যদি ধর্ষণের কারণ হিসেবে মেয়েদের পোশাককে বারবার দায়ী করেন সেটা কিন্তু পরোক্ষভাবে ধর্ষকদের উৎসাহিতই করছেন। কারণ এরপর তারা বারবার পোশাকের অজুহাতে একটা মেয়ের শরীর স্পর্শ করার সাহস পাবে।
ইদানিং কিছু বলি না, মেয়েদের পক্ষে কথা বলতে গেলেই নারীবাদীর ট্যাগ ঝুলিয়ে দেয়া হয়। তবে আজ বলতে বাধ্য হলাম। কারণ সবকিছু দেখেশুনে আর চুপ করে থাকা যায় না। শুধুমাত্র একটা মেয়ে হিসেবেই নয়, একটা মানুষ হিসেবে- খারাপ লাগে!
কারণ এমন একটা জায়গায় বসবাস করছি যেখানে, ধর্ষকের আগে ধর্ষিতার দোষ খোঁজা হয়। ধর্ষকের আগে ধর্ষিতাকে জবাবদিহি করতে হয়....
লেখা: Emon
ছবি: সুপ্তি দাশ চৈতি
desh tah roshatole jacche😑