‘আমি অমুক, কাজ করছি তমুক নিয়ে’ ‘বুঝলে বুঝপাতা না বুঝলে তেজপাতা’, ‘ঢেলে দেই?’

হাল আমলের বেশ ট্রেন্ডি তিনটে ডায়ালগ! সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছেন কিন্তু এসব চোখে পড়েনি, এমন ভার্চুয়াল বাসিন্দা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাবে। সেদিন কোথাও যেন পড়লাম, ‘ফেইসবুক হলো একটা ভার্চুয়াল বাজার, আর বাজারকে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিকৃষ্ট জায়গা বলেছেন’।

বাজার আমাদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ, তথাপি কেনো বাজারকে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিকৃষ্ট স্থান বললেন? কারণ, বাজারের অধিকাংশ আলোচনাই অহেতুক। এখানে গীবত, চোগলখুরি, লোক ঠকানো সহ এমন কোন পাপ নেই যার চর্চা সাধারণত হয় না।

দুনিয়াবি বাজারের মতোই আমাদের ভার্চুয়াল বাজার ফেইসবুকটাও অহেতুক আড্ডাবাজির কারখানায় পরিণত হয়েছে। আমরা জেনে হোক বা না-জেনে, যেকোনভাবেই এসব অহেতুক আড্ডাবাজিতে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি। তার-ই প্রকৃষ্ট উদাহরণ উপরের ডায়ালগ তিনটে।

সহীহ বুখারীর একটা হাদিসে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে আল্লাহ এবং আখিরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন হয় ভালো কথা বলে, নতুবা চুপ থাকে’।

‘আমি অমুক, কাজ করছি তমুক নিয়ে’, ‘বুঝলে বুঝপাতা না-বুঝলে তেজপাতা’ টাইপের যে অহেতুক কথাবার্তা যা আমাদেরকে সাময়িক আনন্দ-তৃপ্তি দেয়, যা লিখে আমরা ক্ষণিকের জন্য পুলক অনুভব করি, তা কি কোনোভাবে ‘ভালো কথা’র আওতায় পড়ে? এই কথাগুলো সমাজের জন্যে, আমাদের জীবনধারণের জন্যে দরকারি আদৌ?

যদি দরকারি না হয়, তাহলে তা অবশ্যই ‘ভালো কথা’র আওতায় পড়বে না। আর, নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ‘যে আল্লাহ এবং আখিরাতে বিশ্বাস করে’ মর্মে শর্তারোপ করেই দিয়েছেন, তখন সেই শর্তের মধ্যে আমরা প্রত্যেকে আবদ্ধ হয়ে যাইনি? আমাদের মাঝে কে কে আল্লাহ এবং আখিরাতে বিশ্বাস করি না?

যদি আমরা আল্লাহ এবং আখিরাতে বিশ্বাস করি, তাহলে আমাদের উচিত হয় ভালো কথা বলা, নয়তো-বা চুপ থাকা। এটাই নবিজীর আদেশ এবং সুন্নাহ। অহেতুক কথা, তা যতোই মুখরোচক, আনন্দদায়ক এবং বিনোদন-সহায়ক হোক না কেনো, তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য যদি না ভালো কথা হয়।

ভালো কথা মানে সবসময় যে কেবল কুরআন এবং হাদিসের টেক্সট হতে হবে, তা কিন্তু নয়। সমাজ গঠনে ভালো কোন প্রস্তাবনা-পরামর্শ, ক্যারিয়ার গঠনের আলাপ, সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার বিধির প্রসঙ্গ সহ জীবন-সহায়ক যেকোন কিছুই ভালো কথার আওতাভুক্ত। সেগুলো নিয়ে আলাপে কোন বাঁধা নেই।

ট্রেন্ডি টপিকে চাইলেই গা ভাসানো যায়। কিন্তু যদি সুক্ষ্মভাবে এটা ভাবা যায় যে, দিনশেষে এটার ভালো কোন ফলাফল আছে কি না, তাহলে অহেতুক ট্রেন্ডি টপিকে গা না ভাসিয়ে, ভালো, গঠনমূলক আলাপে নিজেদের যুক্ত করা সহজ হবে।

স্রোতে গা ভাসানোটা সহজ, স্রোতের প্রতিকূলে দাঁড় টানাটাই কঠিন। তবু কঠিনেরে ভালোবাসিলাম!

লেখকঃ আরিফ আজাদ

7
$
User's avatar
@labib1820 posted 3 years ago

Comments

একদম রাইট।আমরা বাস্তবিক লাইফটাকে উপভোগ না করে ভার্চুয়াল জগৎটা নিয়ে সবাই পড়ে আছি।আদৌ কি এগুলা আমাদের উপকারে আসবে?আর এসব ডায়ালগ তো এখন কমন হয়ে গেছে কেউ ভালো কথা একটা ও মুখ দিয়ে বের করতে পারেনা শুরু হয় এটা নিয়ে সমালোচনা তোড় জোড়।সবার একটা প্রাইভেসি আছে কে কি করতেছে ভিডিও করে ছেড়ে দিচ্ছে।আসলে ফেইসবুক টা ভালো আমাদের উপকারি বাজার বানাই পেলছে কিছু নোংরা মস্তিষ্কের মানুষ।দেশটা নোংরা মি এ ভরে গেছে।খুব ভালো পোস্ট।কথা গুলা একদম মনে ধরছে। আর ও কিছু বলতে ইচ্ছে করছে বাট বলবোনা।ধন্যবাদ।

$ 0.00
3 years ago

What a article bro.Very nice.Good luck bro

$ 0.00
3 years ago

:D <3

$ 0.00
3 years ago

Right

$ 0.00
3 years ago

haa!

$ 0.00
3 years ago

Oh.

$ 0.00
3 years ago

হু

$ 0.00
3 years ago