বাংলাদেশি হিসেবে নদীর সাথে আমাদের আত্মিক সখ্যতা। দেশের ভেতর দিয়ে বড়-ছোট কয়েকশত নদী প্রবাহিত হচ্ছে। শাখানদী এবং উপনদী বাদ দিলে এখানে মোট আন্তর্জাতিক নদীর সংখ্যা ৫৮টি। এদের মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ।
কুড়িগ্রাম দিয়ে প্রবেশ করে ময়মনসিংহ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনার সাথে মিলিত হওয়া এই নদের উৎপত্তি হিমালয়ের কৈলাস পর্বতশৃঙ্গের জিমা ইয়ংজং হিমবাহে। তিব্বতে এই নদের নাম সাংপো। ভারতের কিছু অঞ্চলে একে লোহিত নামেও ডাকা হয়। হিন্দু পুরাণে আছে, হিমালয়ের ব্রহ্মকুণ্ড নামক হ্রদে স্নান করে পাপমুক্ত হওয়ার পর পরশুরাম তার কুঠারের আঘাতে পাহাড় ভেঙে সেই বদ্ধ জলকে মুক্তভাবে প্রবাহিত করে দেন। সেই প্রবাহই বর্তমানের ব্রহ্মপুত্র। সেই বিশ্বাস অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে অনুষ্ঠিত হয় পুণ্যস্নান।
ব্রহ্মপুত্রের ধারা থেকেই জন্ম হয়েছে বর্তমান যমুনা নদীর। ১৭৮২-৮৭ সময়কালের মধ্যে সঙ্ঘটিত ভূমিকম্প এবং ভয়াবহ বন্যার ফলে এর গতিধারা বদলে যায়। ব্রহ্মপুত্রের পানি তখনকার জোনাই খালের সাথে মিলিত হয়ে গঠিত হয় যমুনা নদী।
এই নদের বুকে রাতদিন জেলেদের আনাগোণায় যেমন জীবিকার স্পন্দন পাওয়া যায়, তেমনি প্রতিবছর প্রলয়ংকারী বন্যায় হাজার মানুষের জীবিকা ধ্বংসেরও অশনি বার্তা শোনা যায়। এককালের খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রকে ঘিরে গ্রামবাংলার জীবনের অনেক উৎসব উদযাপিত হতো। তবে কালের বিবর্তনে সেই ব্রহ্মপুত্র তার পানি হারিয়ে শুষ্ক খালের ন্যায় মরে যাচ্ছে।
we should take care rivers