সোনার তরী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা। কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা। রাশি রাশি ভারা ভারা ধান কাটা হল সারা, ভরা নদী ক্ষুরধারা খরপরশা। কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা। একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা, চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা। পরপারে দেখি আঁকা তরুছায়ামসীমাখা গ্রামখানি মেঘে ঢাকা প্রভাতবেলা– এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা। গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে, দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে। ভরা-পালে চলে যায়, কোনো দিকে নাহি চায়, ঢেউগুলি নিরুপায় ভাঙে দু-ধারে– দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে। ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্ বিদেশে, বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে। যেয়ো যেথা যেতে চাও, যারে খুশি তারে দাও, শুধু তুমি নিয়ে যাও ক্ষণিক হেসে আমার সোনার ধান কূলেতে এসে। যত চাও তত লও তরণী-‘পরে। আর আছে?– আর নাই, দিয়েছি ভরে। এতকাল নদীকূলে যাহা লয়ে ছিনু ভুলে সকলি দিলাম তুলে থরে বিথরে– এখন আমারে লহ করুণা করে। ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই– ছোটো সে তরী আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি। শ্রাবণগগন ঘিরে ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে, শূন্য নদীর তীরে রহিনু পড়ি– যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের লেখা সত্যিই অসাধারণ। তিনি তার লেখনীর জন্য ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। তিনি ১৯১৩ সালে তার অমরসৃষ্টি 'গীতাঞ্জলি' এর জন্যে সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হন.. তিনি তার লেখার মাধ্যমে আজো আমাদের মাঝে বেচে আছেন । আমাকেও সাপোর্ট করবেন আশা করি।