ভিটামিন_সি

2 15
Avatar for alma45
Written by
4 years ago

♣শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় ভিটামিন সি। এ ছাড়া ত্বক ও হাড়ের কোলাজেনের সুরক্ষা দিতে, দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন সি উপকারী। ভিটামিন সি-র অভাবে অবসন্নতা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।

♥টকজাতীয় সব ধরনের ফলে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। লেবু, মাল্টা, কমলা, জলপাই, আমলকী, আনারস ইত্যাদিতে ভিটামিন সি থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, কাঁচামরিচেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

♠ভিটামিন সি-র ঘাটতি হলে যেসব সমস্যা হয় সেগুলোর কথা।

১. যাঁদের শরীরে ভিটামিন সি-এর অভাব রয়েছে, তাঁরা খুব সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। শরীরে শক্তি কমে যায়, অবসন্ন হয়ে পড়েন। দীর্ঘমেয়াদি অবসন্নতা অনেক রোগেরই লক্ষণ। তাই দীর্ঘদিন ধরে অবসন্ন বোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২. শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি হলে বিরক্তিভাব দেখা দেয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।

৩. যাদের শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি হয়, তাদের হঠাৎ করে ওজন কমে যেতে পারে।

৪. ভিটামিন সি-এর অভাব হলে গিঁটে ব্যথা বা পেশিতে ব্যথার সমস্যা হয়।

৫. ভিটামিন সি-এর অভাব হলে দেহে কালশিটে দাগ পড়ে। যদি শরীরে এ রকম দাগ বেশি হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৬. ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এর ঘাটতি দেখা দিলে এসব অংশে সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া এর অভাবে মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার সমস্যা হতে পারে।

৭. ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়াও ভিটামিন সি-এর ঘাটতির লক্ষণ।

৮. ভিটামিন সি-এর ঘাটতি হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়।

√ভিটামিন সি যুক্ত খাবার আমাদেরকে নানা রকম শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা করে থাকে।

√শরীরের টিস্যু, রক্তনালী, কার্টিলেজ বা স্ট্রাকচারের গঠন, বিকাশ ও রক্ষণা-বেক্ষণের জন্যে ভিটামিন সি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একট পুষ্টি উপাদান।

কাজেই, আমাদের সবারই জেনে রাখা প্রয়োজন যে-সব খাবারে ভিটামিন সি আছে।

♦ভিটামিন সি এমন একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বা জারন চাপ কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এটি নানা ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলেও কথিত আছে বিভিন্ন মেডিকেল রিসার্স পেপারে। অর্থাৎ, এই ভিটামিনে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান রয়েছে যা এক ধরণের অ্যাসিড বা ক্ষারক।

♦ভিটামিন সি একটি অ্যাসকরবিক এসিড যা আমাদেরকে সুস্থ্য ও সবল রাখার জন্যে শরীরে নানা রকম ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অন্যতম বড় চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচিত। এটি শরীরের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং বিভিন্ন ধরণের রোগের সঙ্গে নিয়মিত ফাইট করে।

আপনি নিশ্চয়ই জানেন ভিটামিন সি কি আর এটি কেন খাবেন। যেটা আপনি হয়তো জানেন না, সেটা হচ্ছে মানব দেহ ভিটামিন সি স্টোর করে রাখতে পারে না। তাই, মানুষকে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে নিয়মিত ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু বিশেষ এই ভিটামিনটির জন্যে কী ধরণের খাবার গ্রহণ করতে হয়! আসুন, সেটাই আজ জানা যাক।

♥ভিটামিন সি যুক্ত খাবার

ভিটামিন সি জলে দ্রবীভূত হয় এবং খাদ্য থেকে এটি দ্রবণের পর খাবারের অন্যান্য অতিরিক্ত অংশ প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। আসুন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি আছে যে-সব খাবারে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানি-

ভিটামিন সি যুক্ত খাবার

#পেয়ারা

পেয়ারার সঙ্গে পরিচিত নন এমন লোক কি আমাদের দেশে আছে? দেশী ফল হিসেবে পেয়ারার পরিচিতি আছে সবার কাছেই। তবে, পেয়ারার যে বিশেষ বিষয়টা অনেকের কাছেই অপরিচিত, সেটি হচ্ছে পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আপনি আরো জেনে অবাক হবেন যে, পেয়ারার ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

√একটি সাধারণ সাইজের পেয়ারায় ১২৬ মিলিগ্রাম বা ১৪০ ডিভি ভিটামিন সি থাকে।

√এছাড়াও, পেয়ারা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লাইকোপিনি ভরপুর যা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

√পেয়ারা আমাদের ব্লাড প্রেশার কমায়।

√শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়ে থাকে যা হার্ট অ্যাটাকসহ আরো নানা রকম হৃৎরোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে।

♥ ICMR STS awarded Research project এর আন্ডারে পেয়ারা খাইয়ে ৪২ দিন ধরে ৪৫ জন উচ্চ রক্ত চাপে ভোগা তরুণ-তরুণীর উপর একটি গবেষণা চালানো হয়েছে। ফলাফল হিসেবে দেখা গিয়েছে যে, যারা এই ৪২ দিনের প্রতি দিন ৪০০ গ্রাম বা ৭টি করে পেয়ারা খেয়েছে, তাদের ব্লাড প্রেশার অনেক কমে গিয়েছে। অর্থাৎ, নরমাল লেবেলে চলে এসেছে। সেই সাথে, কোলেস্টেরলের লেবেলও কমে গিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।

বুঝতেই পারছেন যে ভিটামিন সি ছাড়াও পেয়ারার আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। সুতরাং, প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখা প্রয়োজন, যদি আপনি ভিটামিন সি এর অভাবে ভুগতে না চান।

#কমলা ও কমলার রস

কমলা কম ক্যালরিযুক্ত দারুণ একটি ফল। রসালো এই ফলটি যেমন পুষ্টিতে ভরপুর, তেমনই ভিটামিন সিতে টইটুম্বুর। মিষ্টি ফল হিসেবে এটি দারুণ জনপ্রিয়। সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এবং নানা রকম রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচতে কমলা একটি দারুণ ফল।

কমলা নামের এই ফলটি প্রায় পৃথিবীর সব দেশেই পাওয়া যায়। তবে, কমলা সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয় চীনে। এটি যেমন সরাসরি খাওয়া যায়, তেমনি এর জুস বানিয়েও পান করা যায়। আবার, বিভিন্ন রকমের ক্যান্ডি তৈরিতে কমলার কার্যকর ব্যবহার রয়েছে।

ভিটামিন সি-তে ভরপুর কমলার কদর রয়েছে সব ডাক্তারদের কাছেই। কাজেই, কারো যদি সি ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়, তবে ডাক্তাররা কমলা সাজেস্ট করে থাকে।

√ প্রতি ১০০ গ্রাম কমলার জুসে ৫৩.২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে যা আমাদের দৈনিক চাহিদা মেটানোর জন্যে যথেষ্ট।

√এছাড়াও, কমলায় ১৭০টি ভিন্ন ভিন্ন ফাইটো-কেমিক্যাল রয়েছে যা মানব দেহের পুষ্টি উৎপাদনে প্রচুর ভূমিকা রাখে।

√ভিটামিন সি-তে রয়েছে ৬০টিরও বেশি ফ্ল্যাবোনয়েড যা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটোরি হিসেবে আমাদের দেহে দারুণ কাজ করে।

√ সুতরাং, শুধু ভিটামিন সি এর জন্যেই নয়, আরো নানা উপকারের জন্যে আমাদের নিয়মিত ভিটামিন সি যুক্ত খাবার কমলা খাওয়া প্রয়োজন।

#কাকডু বরই

কাকডু বরই মূলত একটি অস্ট্রেলিয়ান ফল যা অস্ট্রেলিয়ার লোকের কাছে terminalia ferdinandiana নামে বেশি পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ায় এটি সুপার ফুড নামেও পরিচিত। ছোট আর টক জাতীয় এই ফলটি আমাদের দেশেও পাওয়া যায়, মেয়েদের কাছে এটি অত্যন্ত লোভনীয় একটি ফল যা তারা লবন মরিচ দিয়ে ভর্তা বানিয়ে খেয়ে থাকে।

√আপনি জেনে আশ্চর্য্য হবেন যে, একটি কমলায় যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে, তার থেকে ১০০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে ছোট এই ফলটিতে। প্রতি ১০০ গ্রাম কাকডু বরইতে রয়েছে ৫ হাজার ৩০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি যা ৫৩০% ডিবি।

√ভিটামিন সি এর পাশাপাশি কাকডু বরইতে আরো আছে ভিটামিন ই, পটাশিয়াম, লুটেনিন নাম অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।

#জাম্বুরা

জাম্বুরা অনেকটাই কমলার মতো। কাজেই, বিস্ময়ের কারণ নেই যে জাম্বুরায় ভিটামিন সি থাকবে। তবে, আপনি এই জেনে বিস্মিত হতে পারেন যে জাম্বুরায় ভিটামিন সি এর পরিমাণ কমলার চেয়ে খুব একটা কম নয়।

√প্রতি ১০০ গ্রাম জাম্বুরার জুসে ভিটামিন সি আছে ৪৫ মিলিগ্রাম যেখানে কমলায় আছে ৫৩ মিলিগ্রাম।

আমাদের দেশের মানুষ এমনিতেই জাম্বুরা খেতে খুব পছন্দ করে। অনেকে শুকনা মরিচ ভেজে নিয়ে সেটাকে ভেঙ্গে জাম্বুরার সঙ্গে মিক্স করে খুব মজা করে খায়। আর তাদের অজান্তেই তাদের শরীর ভিটামিন সি পায়। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন সি এর অভাব থাকে, তবে মাঝে মধ্যেই জাম্বুরা খেতে ভুলবেন না।

#কূল বা বরই

√কমলা কিংবা জাম্বুরায় যে পরিমাণ ভিটামিন সি আছে তার চেয়ে অন্তত ১০০ ভাগ বেশি আছে কূল বা বরইতে।

√আপনি জেনে অবাক হবেন যে, প্রতি ১০০ গ্রাম বরইতে ভিটামিন সি এর পরিমাণ ৫ হাজার ৩শ মিলিগ্রাম। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার হিসেবে এটি অতুলনীয়।

তবে, সেটা সব বরইয়ের ক্ষেত্রে নয়। বিশেষ যে বরইতে এত পরিমাণ ভিটামিন সি আছে, তার নাম ককাডু বরই যা মূলত অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বেশি জন্মায়। আর এটিকে অস্ট্রেলিয়ার সুপারফুডও বলা হয়ে থাকে। আমাদের দেশেও মাঝে মাঝে এ বরইটি দেখা যায়।

#ব্ল্যাক কিউর‌্যান্ট বা জাম ফল

#জাম_ফল

Blackcurrant একটি অ্যামেরিকান ফল। তবে, জাম জাতীয় এই ফলটি বাংলাদেশেও উৎপন্ন হয়। এটি জামের একটি ভিন্ন প্রজাতি।

√আধা কাপ ব্ল্যাক কিউর‌্যান্টে ১০১ মিলিগ্রাম বা ১১২% ডিবি ভিটামিন সি রয়েছে।

√অ্যান্থোসায়ানিন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এই ছোট ফলটি হৃৎরোগ, ক্যান্সারসহ আরো কিছু ক্রনিক রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে।

#সবুজ রঙের বেল মরিচ

ভিটামিন সি এর জন্যে বেল মরিচে দারুণ ভেলকি রয়েছে। অর্থাৎ, সবুজ রঙের যে বেল মরিচ পাওয়া যায়, তাতে ভিটামিন সি এর পরিমাণ অনেক।

√একটি মিডিয়াম সাইজের বেল মরিচে ৯৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। আর একজন মানুষের জন্যে একদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণের জন্যে এ-রকম ৩টি বেল মরিচই যথেষ্ট্য।

শুধু ভিটামিন সি’ই নয়, সবুজ বেল মরিচ আমাদের শরীরের জন্যে দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ ও কে এর ৮ পার্সেন্ট পূরণ করতে সক্ষম। এছাড়াও, বেল মরিচে রয়েছে ১৫ পার্সেন্ট ভিটামিন বি৬। এছাড়াও, আরো জেনে অবাক হবেন যে, একটি পূর্ণাঙ্গ বেল মরিচে রয়েছে ২৪ ক্যালোরি খাদ্য গুণ।

সাধারণত সবুজ বেল মরিচ কেটে সালাদের সঙ্গে খাওয়া হয়ে থাকে। তবে, চাইলে এটিকে বিভিন্ন খাবারের উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, সবচেয়ে ভাল ফল পেতে হলে, খাওয়ার জন্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল সবুজ রঙের বেল মরিচ বাছাই করাই উত্তম।

#লাল মিষ্টি মরিচ

সবুজ বেল মরিচের মতো লাল মিষ্টি মরিচেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।

√এক কাপ কাঁচা লাল মিষ্টি মরিচে ১৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আর এ-রকম এক কাপে ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ২৪।

√এছাড়াও এই মরিচে ফাইবার ও ভিটামিন এ রয়েছে। এমনকি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্সও পাওয়া যায় লাল মিষ্টি মরিচে।

√সাধারণত বিভিন্ন শাক-সবজির সঙ্গে লাল মিষ্টি মরিচ রান্না করা হয়। আবার, এটিকে সালাদের সঙ্গেও ব্যবহার করতে দেখা যায়, বিশেষ করে বড় রেস্ট্রুরেন্টগুলোতে তৈরি সালাদে এই মরিচ থাকবেই। √এই মরিচের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এটি টমেটো সস তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। বলতে গেলে এই মরিচ ছাড়া টমেটো সস অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

#মিষ্টি হলুদ মরিচ

এটিও সবুজ বেল মরিচ এবং লাল মিষ্টি মরিচের মতোই ভিটামিন সি-তে ভরপুর। এই মরিচটি যতই পরিণত হয়, ততই এতে ভিটামিন সি বাড়তে থাকে। √মাত্র দেড় কাপ (৭৫ গ্রাম) মিষ্টি হলুদ মরিচে ১৩৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে যা মূলত ১৫২% ডিভি। আর এই পরিমাণটা সবুজ বেল মরিচে থাকা ভিটামিন সি এর পরিমাণের প্রায় দ্বিগুণ।

√মিষ্টি হলুদ মরিচে থাকা পর্যাপ্ত ভিটামিন সি আপনার চোখের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর

√এটি আপনার চোখে ছানি ছড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা করতে পারে।৩০০ জনেরও বেশি মহিলাদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে চোখে ছানি পড়ার হার ৩৩% পর্যন্ত কমে গিয়ে থাকে।

√ সুতরাং, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার এর তালিকায় উপরোক্ত ৩টি মরিচই থাকা প্রয়োজন।

#এসেরোলা চেরি

ব্রাজিল ও জার্মানীর সুপরিচিত একটি ফল এসেরোলা চেরি। আমাদের দেশে এসেরোলা চেরি উৎপন্ন হয় না, তবে আমদানি হয়। স্বপ্ন, পিকিউএসসহ বিভিন্ন চেইন শপগুলোতে এটি কিনতে পাওয়া যায়।

√এক কাপ লাল রঙের এসেরোলা চেরিতে ৮২২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে যা ৯১৩% ডিবি।

√স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ফুড রিসার্চ সেন্টারের গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, এসেরোলা চেরিতে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান রয়েছে। এটি স্কিন ও ডিএনএ ড্যামেজকে ভাল করতে সাহায্য করে।

#সরিষা শাক

√আমরা অনেকেই সরিষা শাক খেতে পছন্দ করি। এক কাপ কাঁচা সরিষা শাকে ২১৭% ডিবি বা ১৯৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে।

√আর এক কাপ রান্না করা সরিষা শাকে ১১৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এর উপস্থিতি থাকে। এছাড়াও সরিষা শাকে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, ফোলেট ও ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে।

#ব্রোকলি

ব্রোকলি একটি সবুজ রঙের কপি যা আমাদের দেশে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এক কাপ পরিমাণ ব্রোকলিতে রয়েছে ৫১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।

বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, ব্রোকলি আমাদের শরীরে ভিটামিন সি সরবরাহের পাশাপাশি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ক্যান্সার এবং হৃৎরোগের ঝুঁকি কমায়।

#লিচু

রসালো এই ফলটিতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। একটি সাধারণ সাইজের লিচুতে ৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে যা ৭.৫ ডিবির সমান। এছাড়াও, লিচিতে রয়েছে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড যা ব্রেনের জন্যে ব্যাপক উপকারি। এমনকি, এটি রক্তনালি পরিস্কার রাখে এবং রক্ত চলাচলে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

পেপে

এক কাপ বা ১৪৫ গ্রাম পেপেতে ৮৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায় যা মেইনলি মেমোরি বুস্টিংয়ে সাহায্য করে থাকে।

#RDA (Recommend dietary Allowance) এর সুপারিশ মতে নির্দিষ্ট লিঙ্গ ও বয়সের জন্য স্বাস্থ্যকর ব্যক্তিদের ৯৭ থেকে ৯৮ শতাংশ ভিটামিন-সি এর পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে হবে ।

জীবনধারা (বয়স) RDA (মিলিগ্রাম)

বাচ্চা (১-৩ বছর ) ১৫ মিলিগ্রাম,

বাচ্চা (৪-৮ বছর) ২৫ মিলিগ্রাম

বয়ঃসন্ধিকাল (৯-১৩ বছর) ৪৫ মিলিগ্রাম,

কিশোর-কিশোরী (১৪-১৮ বছর) ৬৫-৭৫ মিলিগ্রাম, প্রাপ্তবয়স্ক নারী (১৯ বছর+) ৭৫ মিলিগ্রাম,

প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ (১৯ বছর+ ) ৯০,

গর্ভবতী নারী (১৯ বছর+) ৮৫ মিলিগ্রাম,

দুগ্ধদান নারী (১৯ বছর+ ) ১২০মিলিগ্রাম।

স্কার্ভির উপস্থিতিতে, প্রতিদিন ৩০০ মিলিগ্রাম থেকে ১ গ্রাম ডোজ দেওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে, বিষাক্ততার প্রমাণ ছাড়াই প্রায় ৬ গ্রাম ভিটামিন-সি সাধারণ প্রাপ্তবয়স্কদের প্রেসক্রাইব করা যেতে পারে।

সাবধানতার বিষয় হলো- দিনে ২ হাজার মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি গ্রহণ করলে মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ডায়েরিয়াসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই আপনার ডাক্তার বা ডায়টেশিয়ানের সাথে পরামর্শ করুন।

#ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ কিছু খাবার: (মিলিগ্রাম প্রতি ১০০গ্রামে)

ফলমূল:

আমলকী- ৪৫৩ মিলিগ্রাম,

পেয়ারা- ২২৮ মিলিগ্রাম,

জাম্বুরা- ১২২মিলিগ্রাম,

আম- ১০৩ মিলিগ্রাম,

আমড়া- ৭৭ মিলিগ্রাম,

জাম- ৭৪ মিলিগ্রাম,

বরই- ৬৬ মিলিগ্রাম,

পাকা পেঁপে- ৬২ মিলিগ্রাম,

কমলা- ৫৪ মিলিগ্রাম,

লেবু- ৪৬ মিলিগ্রাম।

শাকসবজি:

সজনে পাতা- ২২০ মিলিগ্রাম,

কাঁচামরিচ-১০২ মিলিগ্রাম,

কাঁকরোল- ৯৯ মিলিগ্রাম,

করলা- ৯১ মিলিগ্রাম,

ফুলকপি- ৭৩ মিলিগ্রাম,

কালো কচূশাক- ৬৩ মিলিগ্রাম,

পাটশাক- ৫৪ মিলিগ্রাম,

পুঁইশাক-৫২ মিলিগ্রাম,

মিষ্টি আলু-৩৫ মিলিগ্রাম,

আলু-১৯ মিলিগ্রাম।

♦তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো- ফল এবং শাকসবজি দীর্ঘ সময় ধরে উত্তপ্ত করলে ভিটামিন সি হ্রাস পায়। ♦সর্বাধিক পুষ্টি পেতে কেনাকাটার পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এগুলো খাওয়া এবং পুষ্টির ক্ষতি সীমিত করার জন্য অল্প সময়ের জন্য বাষ্প বা মাইক্রোওয়েভে সবজি রান্না করুন। বেশি বেশি ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খান।

♠ভিটামিন সি অতিরিক্ত খেলেও বিপদ!

আমাদের শরীর খাবারে থাকা নানা ভিটামিনে সমৃদ্ধ হয়। ইমিউনিটি বাড়াতে, শরীর থেকে বিষ নিঃসরণ, শরীরকে শক্তিশালী করে তুলতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে ভিটামিনের জুড়ি নেই। তবে শীতকালে সর্দি-কাশির প্রবণতা বাড়ে, তখন অনেকেই ভিটামিন সি ট্যাবলেট খান। কিন্তু মনে রাখবেন, যে কোন ভিটামিনের অতিরিক্ত সেবন শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলে।

তাই ভিটামিন যত খাব তত ভালো এটা কখনওই ঠিক নয়। বুঝতে হবে আপনার শরীর কতটা ভিটামিন সি নিতে সক্ষম। যে কোন প্রাপ্তবয়স্ত মানুষের দিনে ৬৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি শরীরে প্রয়োজন। তবে এর মাত্রা দিনে সর্বোচ্চ ২০০০ মিলিগ্রাম হতে পারে। আমরা যে খাবার খাই তাতে কম-বেশি ভিটামিন সি থাকে। সাধারণত কমলালেবু, লেবু, লাল মরিচ ভিটামিন সি-তে ভরপুর।

অতিরিক্ত ভিটামিন সি শরীরে গেলে যা হতে পারে তা এবার জেনে নিন...

* দিনে ২০০০ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি পাকস্থলীর সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এমনকী তা ডায়েরিয়া পর্যন্ত গড়াতে পারে।

* কিডনিতে স্টোন তৈরি করে ক্যালসিয়াম অক্সালেটস। ভিটামিন সি-তে কিন্তু অক্সালেটস রয়েছে। তা থেকে কিডনি স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অতিরিক্ত ভিটামিন সি খাওয়া থেকে সাবধান!

* আপনি ফ্যাট কমানোর জন্য বা সর্দি-কাশি তাড়াতে যদি বেশি করে ভিটামিন সি খান, তবে শরীরের অপ্রয়োজনীয় ভিটামিন সি শরীর থেকে মল-মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তখন প্রস্রাব কিংবা পায়খানা বার বার হতে পারে। তবে অন্য ভিটামিনের মতো শরীরে ভিটামিন সি বিষ হয়ে জমে থাকে না।♥♥

2
$ 0.03
$ 0.03 from @TheRandomRewarder
Avatar for alma45
Written by
4 years ago

Comments

Vitamin c is mostly important for our regular body.. Its help to grow the nutrients cells.. Nd self defensing power

$ 0.00
4 years ago

হুম

$ 0.00
4 years ago