শিক্ষক জুয়েল পারভেজ।

13 20
Avatar for Sajeeb_alex
4 years ago

শিক্ষা জীবনের শুরু থেকে অর্থাৎ সেই প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত অসাধারণ অনেক ভালো শিক্ষকের ছাত্র হতে পেরেছি। কিন্তু যদি সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক সম্পর্কে বলতে হয় তাহলে একজন শিক্ষকের কথাই আমি বলব। যিনি আমার এই ক্ষুদ্র জীবনের চলার পথে সবচেয়ে বেশি প্রেরণা ও উৎসাহ জুগিয়েছেন। আমার সেই প্রিয় শিক্ষকের নাম জুয়েল পারভেজ।

স্যার ছিলেন আমার স্কুল শিক্ষক। আমি তখন ঢাকার মেরুল বাড্ডার সিরাজ মিয়া মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। জুয়েল স্যার আমাদের বাংলা ব্যাকরণ পড়াতেন। স্কুলে বাংলা ব্যাকরণ আমার কাছে খুবই কঠিন একটি বিষয় মনে হতো। আমার এই ব্যাকরণ ভীতি দূর হয় জুয়েল স্যারের পাঠদানের কারণেই।

স্যারের যে দিকটি আমার সবচেয়ে ভালো লাগত তা হলো তিনি শুধু ক্লাসে পাঠদানের মধ্যেই জ্ঞান বিতরণ সীমাবদ্ধ রাখতেন না। তিনি যেহেতু সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন সেই সুবাদে তিনি সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করতেন। ক্লাসের পুরোটা সময় তিনি জ্ঞানের আলোয় মাতিয়ে রাখতেন ছাত্রদের। স্যারের পাঠদান এবং সুচিন্তিত আলোচনা সাহিত্যের প্রতি আমার প্রচণ্ড আগ্রহ জেগে ওঠে। তখন থেকেই আমি প্রচুর বই পড়া শুরু করি এবং যা পরিবর্তে আমার ব্যক্তিগত চিন্তাধারা ও চিন্তাভাবনায় অনেক পরিবর্তন আনে।

ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কেবল একজন শিক্ষকই তার ছাত্রদের প্রতিভাগুলো বুঝতে পারেন এবং সেই প্রতিভা বিকাশ করার পথটাও বাতলে দিতে পারেন। আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি কারণ আমার প্রিয় শিক্ষকের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। স্যারের সঙ্গে এক রকম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে যখন কলেজে উঠি পড়াশোনার চাপটাও খুব বেড়ে যায়। কলেজে উঠে পড়াশোনায় বেশ ফাঁকিবাজ হয়ে যাই। ঠিকমতো পড়াশোনা করতাম না। ফলে রেজাল্টও খারাপ হতে থাকল। সামনে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এবং এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। আমার রেজাল্টের দুরবস্থার কথা শুনে স্যার একদিন আমাকে বোঝালেন এবং খুব উৎসাহ দিলেন। নিজের প্রিয় শিক্ষকের কাছ থেকে উৎসাহ পেলে সব ছাত্রেরই মনে একটা উদ্দীপনা জাগে। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। আমি সেদিন থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী হই। সবচেয়ে আনন্দের কথা হলো উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় আমি ভালো রেজাল্ট করি শুধুমাত্র স্যারের সেইদিনের কথাগুলো মেনে চলার কারণেই।

আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া। যা আমার জীবনের গতিপথটাই পাল্টে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে নেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা যার ছিল তিনি আমার প্রিয় শিক্ষকের জুয়েল পারভেজ স্যার। স্যার কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্যারের সঙ্গে আমার খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং তাঁর সান্নিধ্য পাবার সুযোগ হয়েছিল। তিনি তাঁর ছাত্র জীবনের নানান মজার ঘটনা আমাকে বলতেন ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়া নিয়ে আমাকে সবসময়ই উৎসাহ দিতেন।

আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম কিন্তু বিজ্ঞানের বাইরে পড়াশোনার একটা ঝোঁক ছিল। স্যার আমার এই আগ্রহটা বুঝতে পেরেছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ও জ্ঞান অর্জনের পরিধি যে কত বিশাল সে সম্পর্কে আমি তাঁর কাছ থেকেই উৎসাহ পেয়েছি। তাই আমি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য ছুটিনি। আমি কলা বা সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয়ে পড়তে চেয়েছিলাম। অবশেষে স্যারের সঠিক দিক নির্দেশনা ও পরামর্শে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে যাই। যেদিন ভর্তির পরীক্ষার ফলাফল দেয় স্যার আমাদের বাসায় এসেছিলেন। স্যার খুব খুশি হয়েছিলেন সেদিন। সেদিন ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম একজন ভালো শিক্ষকের গুরুত্ব কতখানি একজন সাধারণ ছাত্রের জন্য।

বলা হয়ে থাকে বাবা-মার পরই শিক্ষকের স্থান। আমার কাছে এই কথাটি কোনো অংশেই মিথ্যা নয়।

11
$ 0.00
Avatar for Sajeeb_alex
4 years ago

Comments

knowledge..learning..better life

$ 0.00
4 years ago

স্যার খুব খুশি হয়েছিলেন সেদিন। সেদিন ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম একজন ভালো শিক্ষকের গুরুত্ব কতখানি একজন সাধারণ ছাত্রের জন্য।

$ 0.00
4 years ago

হুম,

$ 0.00
4 years ago

Yes

$ 0.00
4 years ago

yes

$ 0.00
4 years ago

Excellent

$ 0.00
4 years ago

nice written post my friend....i had to translate it because i dont understand your language

$ 0.00
4 years ago

thanks dear friend

$ 0.00
4 years ago

Onk sondor waritting

$ 0.00
4 years ago

Like your writing.thank you for share this.

$ 0.00
4 years ago

অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল। ধন্যবাদ আপনাকে।

$ 0.00
4 years ago