The villain husband

3 8
Avatar for Kamrul16
3 years ago

The Villain Husband

অনেকক্ষন ধরে ড্রিংক করে যাচ্ছে রুদ্র, আজ অনেকদিন পর আবার ড্রিংক করছে রুদ্র। একটা সময় স্নেহাকে না পাওয়ার কষ্টে ড্রিংক করতো রুদ্র, কিন্তু আজ স্নেহাকে পেয়েও হারানোর ব্যাথায় ড্রিংক করছে রুদ্র।

তবে আজ তো তার কষ্ট পাওয়ার কথা না, সে তো এটাই চেয়েছিলো, স্নেহার বদনাম আর স্নেহার বাবা মায়ের অসম্মান!!

তবে কেন এমন হচ্ছে,

বোতলের পর বোতল ড্রিংক শেষ করছে রুদ্র। তবে আজ তার এ কষ্টের স্পষ্ট কোনো কারন রুদ্র নিজেও জানেনা,

আজ তার কষ্ট কি স্নেহার আজকের দেয়া থাপ্পড় নাকি নিজের বউ আর সন্তানের থেকে আলাদা হবার কষ্ট।

ড্রিংক করতে করতে টেবিলে ওপরে কোনো রকম ভাবে হাত ঝুলিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো রুদ্র,

রাত ১১ টা আশিসের ফোনে ঘুম ভাঙল রুদ্রের।

- হ্যালো, স্যার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে আমাদের, ( আশিস)

- কি হয়েছে?( রুদ্র)

- স্যার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে আপনি আগে এখানে আসুন সব নিজেই জানতে পারবেন!!

আশিসের কথা শুনে রুদ্র তাড়াতাড়ি বের হয়ে গেলো বাসা থেকে।

অফিসে গিয়েই সোজা নিজের কেবিনে ঢুকলো রুদ্র।

মাথা নিচু করে বসে আছে একটা লোক, আর পাশেই দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে আশিস।

রুদ্র কেবিনে ঢুকতেই,

- করিম চাচা আপনি? এতো বছর পর?( রুদ্র)

বাবা আমাকে মাফ করে দাও বাবা, আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। বলেই রুদ্রের পায়ে হাত দিয়ে বসে পড়লো করিম।

- আরে চাচা কি করছেন আর মাফই বা চাইছেন কেনো,

- বাবাগো আমি ভুল করছি তার কোনো ক্ষমা হয়না বাবা, আমাকে মাফ করে দেন।

রুদ্র করিমকে ধরে উঠালো,

- চাচা আমাকে বলুন কি হয়েছে, না বললে আমি কিভাবে বুঝবো আসল ঘটনা?

- বাবা অধরা আন্তহত্যা করেনি, ওকে মেড়ে ফেলা হয়েছে,

- মানে এসব কি করছেন চাচা?

-হ্যা বাবা, ওকে মেড়ে ফেলা হয়েছে আর ওর পেটে যে বাচ্চা ছিলো তাও মিথ্যা ছিলো, সব কিছু সাজানো গোছানো প্লেন ছিলো!!

- চাচা আপনি এসব কি বলছেন? আর এসব আপনি কিভাবে জানেন?

- আমি জানি বাবা, কারন খুন হওয়া আমি দেখেছিলাম,

আমি সত্যিটা সবাইকে জানাতেও চেয়েছিলাম কিন্তু তার আগেই আমাকে ওরা হুমকি দেয়,আমি কাউকে কিছু বললে ওরা আমাকে আর আমার দুই ছেলেমেয়েকে মেড়ে ফেলবে,

- তাই আপনাকে সেদিনের পর আর ওই এলাকায় দেখা যায়নি তাইনা?

- হ্যা বাবা ভয়ে আমি পালিয়েছিলাম,কিন্তু অনেকদিন পর ওই এলাকায় একদিন ফিরে যাই যেয়ে শুনে এই ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে যেয়ে আপনাকে জেলে যেতে হয়েছে আর আপনার বাবা সেই কষ্ট মেনে নিতে না পেরে মাড়া গিয়েছে।

তারপর থেকে নিজেকে অপরাধী করি সব কিছুর জন্য আমি যদি আপনাদের সব সত্যি বলতাম তবে হয়তো সবার জীবন এলোমেলো হতোনা!! কথাগুলো বলেই কেঁদে দিলো করিম চাচা।

তার মানে আমরা এতোদিন আসল সত্যিটাই জানতাম না, তার মানে স্নেহার কারনে আত্নহত্যা করেনি অধরা আপু। রুদ্রের সব কিছু কেমন জানো গুলিয়ে যাচ্ছে। এতোদিন মিথ্যার ওপরে ভিত্তি করে, এতোকিছু করেছে,( মনে মনে কথাগুলো ভাবছে রুদ্র)

- আচ্ছা চাচা, আপনি তো স্নেহাদের বাড়ি কাজ করতেন এই ব্যাপারে তো আরো অনেক কিছুই জানবেন! আমাকে একটু সব খুলে বলুন।

- বাবা আমারে আশিস বাবা বলেছে যে তুমি স্নেহা মাকে কতো ভুল বুঝেছো,

বাবা স্নেহা মা তো অনেক ভালো তার মনে কোনো ভেজাল নেই,

কিন্তু আসল কালপিট হচ্ছে স্নেহা মায়ের মামা, সে স্নেহা মাকে অধরার নামে খারাপ খারাপ কথা বুঝিয়েছে, আর শ্রাবন বাবা অধরাকে ভালোবাসতো শ্রাবন বাবাকেও অধরার নামে খারাপ কথা বুঝিয়েছে।

সবাইকে বুঝিয়েছে যে অধরা খারাপ মেয়ে ছিলো, আর তার কারনেই অধরার পেটে বাচ্চা এসে গিয়েছিলো, সমাজের কথা ভেবে নিজেই আত্নহত্যা করে প্রান দিয়েছে,

এসব সইতে না পেরে শ্রাবন বাবা কষ্টে অভিমানে দেশ ছেড়ে চলে যায়।

এখান থেকে বউ বাচ্চা নিয়ে চলে গিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু কেও যেন কিছু বুঝতে না পারে তাই স্নেহার মামার কথায় বাদ্ধ্য হয়েই আমাকে আবার ওই বাড়িতে কাজে যেতে হয়।

বাবা স্নেহা আর শ্রাবন বাবাকে ওরা অনেক ভুল বুঝিয়েছে, তোমাদের নামে খারাপ কথা বলেছে তাই স্নেহা মা তোমাকে আর শ্রাবন বাবা অধরাকে ঘৃনা করে।

বাবা আর কেও না জানুক আমি জানি, স্নেহা মা তোমার জন্য অনেক কষ্ট ভোগ করেছে, দিন দিন পাগলের মতো কাটিয়েছে,

রুদ্র যেন আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না, পায়ের নিচের মাটি যেন সরে যাচ্ছে রুদ্রর। তারমানে সে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছে।

স্নেহাকে ভুল বুঝেছে। দোষ না করেও শাস্তি পেতে হয়েছে স্নেহাকে।

রুদ্রের ইচ্ছা করছে নিজেকে গুলি করে ক্ষতবিক্ষত করে দিতে নিজেকে, কিন্তু না তাকে শক্ত হতে হবে।

স্নেহার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, ফিরিয়ে আনতে হবে স্নেহা আর তার বাচ্চাকে।

কিছু না বলেই রুদ্র বেড়িয়ে পড়লো,

মাথায় অনেক কথা ঘুরপাক খাচ্ছে রুদ্রের,

পাগলের মতো এদিক ওদিক খুজছে স্নেহাকে,

রুদ্র জানে না স্নেহা কোথায় আছে, তবে আজ স্নেহাকে সামনে পেলে স্নেহার পা ধরে ক্ষমা চাই, আর চিৎকার করে স্নেহাকে বলতো,

স্নেহা আমাকে শাস্তি দাও, আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি আজ তুমি আমায় যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো,

কিন্তু এমন কিছুই করতে পারছেনা রুদ্র কারন এসব বলার জন্য আজ স্নেহাকেইতো সে খুজে পাচ্ছেনা।

অনেকক্ষন খোজার পরও স্নেহানে খুজে পায়নি রুদ্র।

তাই বাসায় ফিরে স্নেহার ছবিটা বুকে নিয়ে সোফায় বসে চিৎকার করে কাঁদছে রুদ্র।

রুদ্রের এমন কান্না শুনে তিতির আর রুদ্রের মা দুজনেই ছুটে এলো,

- কি হয়েছে বাবা? কি হয়েছে? তুই এমন করছিস কেনো?( রুদ্রের মা)

রুদ্র তার মাকে পাশে দেখেই জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো, রুদ্র।

- মা আমি অনেক বড় ভুল করে আছি, সত্যিটা যদি আর দুইদিন আগেও জানতাম তাহলে এই ভুল আমি করতাম না মা,

- কি হয়েছে বাবা আমাকে সব বল,

তারপর কাঁদতে, কাঁদতে মাকে সব বললো রুদ্র,

- এ তুই কি করেছিস? একটা মেয়ের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার সম্মান আর তুই তাতেই হাত দিয়েছিস? এটা তুই কিভাবে পাড়লি? তোকে ছেলে ভাবতেও আমার ঘৃনা করছে। আমি আজই স্নেহাকে আ বাড়িতে ফিরিয়ে আনবো।

- না মা, এতো কিছুর পর ও ফিরে আসবেনা। আর ও কোথায় আমি জানিনা।

- আমি জানি ভাইয়া( তিতির)

অবাক হয়ে তিতিরের দিকে তাকালো রুদ্র,

- তুই কিভাবে জানিস?

- আজ কলেজ থেকে আসার সময় আমি ভাবিকে দেখি তারপর ফলো করি, তারপর জানতে পারি ভাবি আমাদের কলেজ এর প্রিন্সিপ্যাল এর বাসায়,

কিন্তু ও সেখানে কি কিভাবে?

- আমি বেশি কিছু জানিনা ভাইয়া,

- তিতির আমাকে সেখানে নিয়ে চল, আমি স্নেহাকে ফিরিয়ে আনবো,

তারপর তিতির রুদ্র আর রুদ্রের মাকে নিয়ে তানিয়াদের বাসায় রওনা দিলো,

- তোর বেবিটা কিন্তু খুব কিউট হবে,( তানিয়া)

- কিভাবে বুঝলি?

- আরে তুই এতো কিউট আর তোর বেবিটা তো ডাবল কিউট হবে তাইনা।

- তুই ও না( স্নেহা)

- কি আমি? ও হ্যা আমি হচ্ছি ফিউচার খালামনি।

হাহা দুই বান্ধবী মিলে হাসাহাসি করছে আর গল্প করছে,

দরজায় কলিংবেল বাজতেই,

- মনে হয় ভাইয়া ফিরেছে তুই বস আমি দরজা খুলে আসছি!!

বলেই তানিয়া দরজা খুলতে চলে গেলো,

দরজা খুলেই,

- ইয়েস কারা আপনারা, ঠিক চিনলাম না তোহ?( তানিয়া)

- মা আগে ভেতরে আসি তারপর সব বলছি!!

- ঠিক আছে আসুন, বলেই তানিয়া সবাইকে ভেতরে আসতে বললো,

স্নেহা রুম থেকে মহিলা কন্ঠ শুনে বেড়িয়ে এলো,

স্নেহাকে দেখতেই রুদ্রের মা এগিয়ে গেলো,

- মা তুই ঠিক আছিস? স্নেহার গাল ধরে।

স্নেহা কিছুই বুঝতে পারছেনা, কাল যে তাকে চোখের সামনে দেখতে পারেনি আজ সে এভাবে এসেছে আর!! ভাবতে, ভাবতেই স্নেহা বললো,

- আপনারা এখানে?

- ভাবি আমরা তোমাকে নিতে এসেছি ভাইয়া আমাদের সত্যিটা বলেছে যে তোমার কোনো দোষ নেই,(তিতির)

- তোমরা এসব কি বলছো,

আমি বলছি স্নেহা, রুদ্র বলতে শুরু করলো, করিম চাচার আসা থেকে শুরু করে রুদ্রের সব সত্যি জানা সব কিছু রুদ্র স্নেহাকে বললো,

রুদ্রের বলা শেষ হতেই স্নেহা বলতে শুরু করলো,

- বাহ, বাহ খুব ভালো, আমার জীবনটা দেখি পুতুলখেলা হয়ে গিয়েছে যখন ইচ্ছা আমাকে আদর দিয়ে ঘরে তুলবেন আর আপনার ছেলের ভুল বোঝার কারনে তার মিথ্যা কথা বিশ্বাস করে আবার যখন ইচ্ছা আমাকে বাড়ি থেকে বেড় করে দিবেন। মা আমিতো কখনো আপনাকে মায়ের চোখে ছাড়া অন্য ভাবে দেখিনি।

আর এই অমানুষটার কথা আর কি বলবো,

যে নিজের স্ত্রীকে সবার সামনে মিথ্যা কথা বলে চরিত্রহীন প্রমান করে, আর শেষমেস নিজের সন্তানকে অবৈধ প্রমান করতেও যার অন্তর একটু কাপেনা।

আপনারা আমাকে কি পেয়েছেন বলুন? কি পেয়েছেন?

আমি একটা মেয়ে বলে, এ শহর থেকে আমার শেষ ঠিকানাও কেরে নিয়েছেন আমার বাবা মাকে বাদ্ধ্য করেছেন দেশেরবাড়ি চলে যেতে,

সেদিন আমি বেরিতে আসার পর একবার ও কি ভেবেছিলেন এতো রাতে একটা মেয়ে কতোটা খারাপ অবস্থায় পড়তে পারে?

সত্যিটা না জেনে শাস্তি দিয়েছেন আমাকে আমার সন্তানও রেহাই পায়নি।

আর কথা বলতে পারছেনা স্নেহা কাঁদতে, কাঁদতে বসে পড়েছে ফ্লোরে।

রুদ্র স্নেহাকে ধরতে যাবে তখনি,

- ডোন্ট টাচ মি! আপনার মতো লোক আমাকে টাচ করলে আমি নিজেকে অপবিত্র মনে করবো,,

- স্নেহা!!!

- অবাক হবেননা, যা বলেছি তা সত্যি বলেছি,

- আমার ছোয়ায় যদি তুমি অপবিত্র মনে করো নিজেকে তবে তোমার গর্ভে যে আছে সে তো আমার ভালোবাসার ছোয়ার চিহ্ন,

- কি বললেন আপনি( রাগে লাল হয়ে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে বললো স্নেহা) আপনার অংশ? দুইদিন আগে সবার সামনে ওকে অস্বীকার করে এখন অধিকার ফলাতে এসেছেন। শুনে রাখুন ও আপনার কেও না।

আমি ঘৃনা করি আপনাকে,

চেঁচিয়ে কথাটা বলেই রুদ্রকে জোরে ধাক্কা দিকো স্নেহা,,

চলবে,

( পড়াশুনা আর কাজে মাঝে গল্প লিখি, কিন্তু তারপর ও আপনারা অনেকেই নেক্সট বলেন। এতে কষ্ট পাই। আচ্ছা একটু কষ্ট করে আপনাদের মতামত জানিয়ে আমাকে একটি উৎসাহিত করতে পারবেন না?😞)

1
$ 0.00
Avatar for Kamrul16
3 years ago

Comments

If you write a story in Bengali, it is nice to see the title in Bengali. The story has been as good as ever.  

$ 0.00
3 years ago

Tnx

$ 0.00
3 years ago

Wonderful

$ 0.00
3 years ago