#হয়তো_ভালোবাসি
#Writer_Eshetaq_Nora
#Part_06
নীড়ের চোখ টলোমলো করছে।হয়তো বন্ধ করলেই পানির ফোটা গুলো পড়ে যাবে।সায়ান নীড়ের ব্যাপার টা বুঝতে পারলো।গিয়ে নীড়ের পাশে দাড়িয়ে তার কাধে হাত দিলো।নীড় সায়ানের দিকে তাকালো।মনে হচ্ছে এখোনি কেদে দিবে।
নীড়ঃ সসায়াননন🥺🥺
সায়ানঃ নীড় প্লিজ কন্ট্রোল কর নিজেকে।আগে দেখ কি হয়।
নেশা আর ছেলেটি তো এখনো দুইজনকে দুইজনে জড়িয়ে আছে।হঠাৎ সব লাইট জ্বলে উঠলো। আর ওরা দুইজন দুইজনকে ছেড়ে দিলো।নেশা নিসুর দিকে তাকালো আর দেখলো তারা হা করে তাকিয়ে আছে।যার অর্থ এই তারা কিছুই বুঝেনি।নেশা ওদের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো।
নেশাঃ আকাশ কাম।।সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।
(ছেলেটি হলো আকাশ। আকাশ চৌধুরী।। বিসন্যাসম্যান।নেশা সিডনিতে তার কাছেই থাকতো।দুইজন দুইজনকে ভালোবাসে।কিভাবে তাদের পরিচয় তা না হয় পরে জানবেন😊)
আকাশঃ হ্যা চলো।
নিসুঃ ননেশা এটা কে?
নেশাঃ আমার লাইফ।আমার এইম
নেশা সায়ান আর নীড়কে দেখতে পেল নাহ । কিন্তু সেদিকে মাথা না ঘামিয়ে আকাশ কে নিয়ে ঘরে চলে গেল।
সায়ান আসলে নীড়কে নিয়ে গেছে।কেননা এখানে থাকলে নীড় কিছু একটা করে ফেলবে আকাশকে।
।
রাতে--
নেশা মাত্র শুতে যাবে সব লাইট গুলো অফ হয়ে গেল।
নেশাঃ লাইটের আবার কি হলো ধুর।বাইরে গিয়ে দেখি।
নেশা যেই নাহ পা বাড়াবে কেউ তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো। আর প্রচন্ড পরিমাণে কান্না করছে।নেশা জানেই মানুষটি কে।তাই চুপ করে আছে।আর মানুষটি কেন কান্না করছে তাও জানে।হ্যাঁ মানুষটি আর কেউ নাহ নীড়.। নেশা চাইছে নীড়কে সরাতে। কিন্তু কেন জানি পারছে নাহ। অনেক দিন পর সেই চিরচেনা ছোয়া।নেশার ও ইচ্ছা করছে শক্ত করে নীড়কে আঁকড়ে ধরতে। ঠিক যতোটা শক্ত করে ধরলে নীড় আর তাকে ছেড়ে যেতে পারবে নাহ।কিন্তু এটা অন্যায় নীড় তো তার নাহ।আর নাহ নীড় তাকে ভালোবাসে। ও শুধু নীড়ের আবেগ। নীড় তো নিহাকে ভালোবাসে।
নেশা কথা গুলো ভাবতে ভাবতে নীড়কে খুব জোরে ধাক্কা দিলো। নীড় অনেক দুরে গিয়ে পড়লো।
নীড়ঃ নেশা আমি....
নেশাঃ চলে যান এখান থেকে চলে যান।[চিৎকার করে]
হঠাৎ সব লাইট জ্বলে উঠলো। আর নেশা নীড়কে কোথাও দেখতে পেলো নাহ।নেশা কিছুক্ষন চুপ করে বসে থাকলো।নাহ আজ তার কান্না পাচ্ছে নাহ।বরং হাসি পাচ্ছে।কারন সে পেরেছে নিজেকে বদলাতে।নিজের ফিলিংস গুলো দমিয়ে রাখতে।।।এইটা তো তার জন্য খুব খুশির খবর তাই নাহ।।
।
।
সকালে নীড় ফ্রেশ হয়ে নিচে গেল।যদিও সারারাত তার ঘুম হয়নি।।সকালে নিচে গিয়ে আরো মাথা নষ্ট হয়ে গেল।কারন নেশা মোবাইলে কি যেন করছে আর আকাশ তাকে খাইয়ে দিচ্ছে।নীড়ের চোখ গুলো আবার ছলছল হয়ে গেল।
নেশাঃ আমি আর খাবো নাহ।
আকাশঃ যাস্ট এতো টুকু খেলে হবে নাহ জান।।আর একটু খাও।।দেখ বেশি নাহ খেলে বিয়ের পর আমার বেবি গুলোও তোমার মতো কাঠি হবে।
নেশাঃ কিহ আমি কাঠি😡।তুমি তো একটা কুমড়া।মুটু।আমি ঠিক আছি😒।
আকাশঃ হুহ আমি মটু হলে তুমি ও তো মুটকি।উফ সেদিন কোলে নিয়েছিলাম।কি ভারি।পাঁচদিন পর্যন্ত কোমড়ে ব্যাথা ছিলো।
নেশাঃ কি বললি তুই🤬🤬।আমি মুটকি।।কে বলেছিলো আমায় কোলে নিতে।হুহ।লাগবে নাহ কোলে নেওয়ার। যে চিকন তাকে গিয়ে কোলে নে। হুহহহহহহ।[বলেই হনহন করে চলে গেল।আকাশ ও নেশার পিছন পিছন ছুটে গেল৷ ]
আকাশঃ আরে জানু আমি তো দুষ্টুমি করছিলাম।তুমি তো অনেক পাতলা।একদম বাতাসের মতো।ওহহ বেবি রাগ করে নাহ।
নেশাঃ হুহ😒
আকাশঃ সরি তো।এই যে কান ধরছি।
নেশাঃ 😒😒
আকাশঃ আচ্ছা আর এমন করবো নাহ প্রমিজ।
নেশাঃ নাহ একটা কাজ করলে শুধু মাফ করবো।
আকাশঃ কি?
নেশাঃ আমাকে কোলে নিয়ে পুরো রিসোর্ট ঘুরতে হবে।
আকাশ তো যেন হাতে চাঁদ পেল।যতোদিনই নেশাকে কোলে নিয়েছে নিজে থেকে নিয়েছে।কখনো নেশা নিজে বলেনি আজ বললো।আকাশ ছলছল চোখে নেশার দিকে তাকিয়ে আছে।খুব ভালোবাসে এই পাগলিটাকে।পারলে আকাশের চাঁদ টাও হয়তো এনে দিতে পারবে।যেদিন প্রথম দেখেছিলো সেদিন থেকেই ভালোবাসে।দিন দিন ভালোবাসা যেন বাড়ছে বই কমছে নাহ।
নেশাঃ কি হলো নিবা নাহ🥺
আকাশঃ ইয়েস সুইটহার্ট। তোমাকে না নিলে কাকে নিবো।[বলেই নেশাকে কোলে তুলে নিলো৷ ]
নেশাঃ একি আকাশ তুমি কাদছো কেন?কষ্ট হচ্ছে বুঝি। তাহলে নামিয়ে দেও.(নামতে চেয়ে)
আকাশঃ একটা মাইর দিবো নামতে চাইলে।আমার যতক্ষণ মন চাইবে ততোক্ষণ রাখবো।
নেশাঃ তুমি আমায় মারবে🥺
আকাশঃ নারে পাগলি।এইটা তো কথার কথা।আচ্ছা চলো যাওয়া যাক।
নেশাঃ হুম।
[বলেই নীড়ের সামনে দিয়ে নেশাকে কোলে করে নিয়ে চলে গেল আকাশ।নীড়ের মনে হচ্ছে কেউ তার কলিজাটা টেনে নিয়ে যাচ্ছে ]
হঠাৎ পিছন থেকে সায়ান নীড়ের কাধে হাত দিলো।নীড় ঘুরে তাকালো।
সায়ানঃ কিরে কষ্ট হচ্ছে?
নীড়ঃ জানি নাহ রে কিন্তু কাউকে সহ্য করতে পারছি নাহ ওর সাথে।
সায়ানঃ এইটাই ভালোবাসা নীড়। আর কবে বুঝবি যে তুই নেশাকে ভালোবাসিস।
নীড়ঃ আমি নেশাকে ভালোবাসি নাহ।
সায়ানঃ তুই নেশাকে ভালোবাসিস। তোর চোখ বলে তুই নেশাকে ভালোবাসিস।
নীড়ঃ ভালো তো আমি নিহাকে ও বাসতাম।দেখ ওকে ছাড়া তো বেচে আছি।আর নেশাকে তো আমি কখন ভালোবাসি বলিইনি। তাহলে তুই কিভাবে এইটা বলছিস।
সায়ানঃ তুই নিহাকে ভালোবাসোসনি কখন।।ও যাস্ট তোর অভ্যাস ছিলো।যদি ভালোই বাসতি তাহলে নিহাকে খুজতে যেতি।খোঁজ নিয়েছোস তার। নিসনি।তাহলে এইটা কিসের ভালোবাসা?
নীড়ঃ খোঁজ তো আমি নেশার ও নেই নি তাহলে ওকে ভালোবাসি কিভাবে বলছিস।।
সায়ানঃ নিহা চলে যাওয়ার আগে তুই যেমন ছিলি এখনো তেমনই আছিস।অথছ নেশা যেদিন চলে গেছিলো তুই নিজের সব কিছু ছেড়ে দিয়েছিলি।হাসতে ভুলে গেছিলি।তাহলে তুই কাকে ভালোবাসিস তুই নিজেকে জিজ্ঞাসা কর।আর কিছু তোকে বুঝানো আমার পক্ষে সম্ভব নাহ। তুই নিজেই ভেবে দেখিস। এখনো টাইম আছে নীড় নেশাকে ফিরিয়ে আনার।এখনো তুই ওকে তোর জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারিস যদি চাস।।আমার কথা গুলো ভেবে দেখিস
[বলেই সায়ান চলে গেল ]
নীড় চুপচাপ রুমে চলে এলো
নীড়ঃ সত্যিই কি আমি নেশাকে ভালোবাসি।সত্যিই তো নিহা যখন চলে গেছিলো ওর জন্য ওতোটা মন খারাপ হয়নি যতোটা নেশা চলে যাওয়ার পর হয়েছিলো।আর না নিহাকে ওতো মনে পড়েছে।শুধু নেশাকে মনে পড়েছে।।ওর পাগলামো গুলো মনে পড়েছে ওর সাথে কাটানো সময় গুলো।তাহলে কি আমি নেশাকে ভালোবাসি😥।আচ্ছা আমি #হয়তো_ভালোবাসি। কিন্তু নেশা।ও কি আজ ও আমায় ভালোবাসে🥺আমার জন্য ফিল করে😥।।আচ্ছা ও তো আকাশকে ভালোবাসে।তাহলে আমায় কি আবার ভালোবাসবে।নাহ করলে নাই আবার জাগিয়ে দিবো।না হলে জোর করবো।আফটার অল আমি নীড় আহমেদ। ফাইনালি কারো প্রেমে পড়েছি বলে কথা।এতো সহজে ছেড়ে দিবো নাকি😎।।এখন তুমি দেখতে থাকো নেশা খান তোমাকে কিভাবে এই নীড় নিজের করে নেয়😁😎
।
।
অন্যদিকে --
আকাশ এখনো নেশাকে কোলে নিয়ে ঘুরছে।আর নেশা কোলে বসে আইসক্রিম খাচ্ছে আর বকবক করছে।আর আকাশ সে তো মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।।
আকাশঃ মনে মনে- তোমার কাছে থাকলে যে নিজের উপর কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি কেন বুঝো নাহ তুমি নেশা।কতো মেয়েই তো আমার লাইফে এসেছে গেসেছে।তাদের সাথে সম্পর্ক ছিলো যাস্ট ওয়ান নাইটের।অথচ এতো আনন্দ তো পাইনি।তোমার সামনে আসার অনুভূতি যেন সুখের সাগরে ভাসিয়ে দেয়।সব সুখ তার কাছে কিছুই নাহ।খুব ভালোবাসি তোমায় জান খুব।।যেদিন তোমায় আমার ঘরের আর আমার মনের রানী করে নিতে পারবো সেদিন আমার সব স্বপ্ন পুর্ন হবে😊😊
।
।
চলবে😁😀😎
(পাঠকরা প্লিজ ধাক্কাধাক্কি করবেন নাহ🙈🙉🙉।।আপনারা খালি টুইস্ট চান তাই গল্প ৩৬০° এঙ্গেল এ ঘুরিয়ে দিলাম।এখন আপনারাই বলেন নেশা কার। আকাশ নাকি নীড়ের🙊🤧)
Nice story bro