#আমি_শুধু_তোমাকেই_চেয়েছি
❤🦋
#writer_kamrul
#part_19
🍁
.
.
.
তিতলি সাজ্জাদের হাতে হাত রেখে পার্ক এর রাস্তা ধরে হেটে যাচ্ছে। সাজ্জাদ তো গুন গুন করে গান ও গাইছে। তা শুনে তিতলি অবাক হয়ে সাজ্জাদকে দেখছে আর লজ্জা পাচ্ছে। তিতলি নিরবতা ভেঙে বলে উঠলো,
তিতলি: কি জনাব? ভালো লাগছে না এভাবে হাটতে?(পাশে সাজ্জাদের দিকে তাকিয়ে)
সাজ্জাদ: আরে ভালো লাগবে না মানে! আমার বউ কিছু বলবে,,,, তা আমার ভালো না লেগে কই যাবে! আমার তো ইচ্ছে হচ্ছে এই সময়টা যেন থেমে যায়। যেন সারাজীবন তোমার সাথে হাটতে পারি। হাটবে তো আমার সাথে সারাজীবন?
তিতলি: উহুম না!
সাজ্জাদ:(উত্তেজিত হয়ে) কেন?
তিতলি: কারন আমার পা ব্যাথা হয়ে যাবে।(হেসে দিয়ে)
সাজ্জাদ হাফ ছেড়ে বলল,
সাজ্জাদ: ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে! তা তুমি চাইলে আমি তোমাকে কোলে নিয়েও হাটতে পারবো! চলবে?
তিতলি:(থুতনিতে আঙুল দিয়ে) ভেবে দেখতে হবে!
সাজ্জাদ হুট করে তিতলিকে কোলে তুলে নেয় আর বলে,
সাজ্জাদ: ভাবাভাবি পরে করো। এখন চলো।(মুচকি হেসে)
তিতলি সাজ্জাদের কাজে হা হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করতে থাকে আর বলে,
তিতলি: কি করছেন সাজ্জাদ? নামান আমাকে! সবাই কিভাবে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।(আশেপাশে তাকিয়ে)
সাজ্জাদ: আই ডোন্ট কেয়ার! আর বেশি ছটফট করলে কিন্তু সবার সামনে চুমু দিয়ে দিবো। আর তুমি খুব ভালো করেই জানো আমার লজ্জা নামক জিনিসটার বড্ড অভাব।(চোখ টিপ দিয়ে)
তিতলি সাজ্জাদের কথা শুনে খুব ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছে এখানে তার কথা খাটবে না। তাই লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছে। আর সাজ্জাদ ওকে কোলে নিয়ে হাটছে।
,
,
,
,
,
,
সাজ্জাতকে তিতলি জোর করে একটা মেলায় নিয়ে গেছে। তিতলির এরকম মেলা খুব পছন্দ। সাজ্জাদ বারণ করেছিল কিন্তু তিতলি সাজ্জাদের কথা শুনে নি। তাই সাজ্জাদকেও বাধ্য হয়ে আসতে হয়েছে। মেলায় এসে তিতলি অনেক খুশি। এদিক সেদিক যাচ্ছে। সাজ্জাদ আর তিতলি একটা স্টলে ঢুকে জিনিসপত্র দেখছিল তখন সাজ্জাদের চোখ যায় তিতলির দিকে। সে খুব মনযোগ দিয়ে চুড়ি দেখছিল। সাজ্জাদ কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে,
সাজ্জাদ: কি ম্যাডাম! পছন্দ হয়েছে?
তিতলি মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে। সেখান থেকে অনেক গুলো চুড়ি কেনে। তারপর একসাথে ফুচকা খায়। তিতলি সাজ্জাদকে নিয়ে প্রথম ফুচকা খেল! সাজ্জাদ প্রথমে খেতে চায় নি কিন্তু তিতলির জেদের কাছে হার মানতে হলো। প্রায় অনেক্ষন ঘুরাঘুরির পর সাজ্জাদ তিতলিকে নিয়ে সেই নদীর পাড়ে আসে। দুজনেই পাড়ে বসে আছে। কি সুন্দর সূর্যটা অস্ত যাচ্ছে আর তার লালিমা সাজ্জাদ আর তিতলির গায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিকেলের মিষ্টি রোদটা তিতলির খুব প্রিয়।
হঠাৎ করে সাজ্জাদ বলে উঠলো,
সাজ্জাদ: কি সুন্দর বিকেল তাইনা?(তিতলির দিকে তাকিয়ে)
তিতলি:(নদীর দিকে সোজা তাকিয়ে) হুম! খুব সুন্দর। জানেন সাজ্জাদ যখন প্রিয় মানুষটা সাথে থাকে তখন সবকিছুই অনেক ভালো লাগে,,,মিষ্টি লাগে।(মুচকি হাসি দিয়ে) নিজেই জানি না কখন আপনার এতো কাছে চলে এলাম! প্রথমে তো আপনাকে সহ্যই হতো না।
সাজ্জাদ: হয়তো এর জন্যই একে ভালোবাসা বলে। কিন্তু আমি জানি তোমার মনে এখনো আমাকে নিয়ে অনেক কনফিউশন আছে। তা আমি ধীরেধীরে ক্লিয়ার করবো। চিন্তা করো না। আমি তোমাকে অনেক আগে থেকে জানলেও তুমি আমাকে নতুন চেনো তাই এমন মনে হচ্ছে।
তিতলি:(এক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে) হুম।
,
,
,
সাজ্জাদ আর তিতলি কিছুক্ষন দুজনেই চুপ ছিল। নিরবতা ভেঙে সাজ্জাদ বলে উঠলো,
সাজ্জাদ: তিতলি জান! তোমাকে আমি কিছু দিতে ভুলে গেছি।(পকেটে হাত দিতে দিতে)
তিতলি ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করে কি? সাজ্জাদের হাতে একটা বক্স। ছোট বক্স,,, খুব কিউট ভাবে র্যাপিং এ মোড়া। তিতলি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালে সাজ্জাত বক্সটা খুলতে বলে। তিতলি ও বক্সটা হাতে নিয়ে খুলে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে আর মুচকি হেসে সাজ্জাদের দিকে তাকায়। তা দেখে সাজ্জাদ বলে,
সাজ্জাদ: পছন্দ হয়নি?
তিতলি:(হালকা হেসে) পছন্দ হয়েছে কিন্তু আমার তো নাক ফোঁড়ানো নেই। আমি এটা কি করে পড়বো?(ঠোট উলটে)
সাজ্জাদ: আসলে আমি বুঝতে পারিনি। তোমার জন্য কিছু গিফট আনা উচিত ছিলো। তাই ভাবলাম তোমাকে এই নোসপিনটায় খুব মানাবে,,,,,তাই এনেছি। তোমার ভালো না লাগলে আমি তোমায় অন্য কিছু উপহার কিনে দেই?
তিতলি: পরেরটা পরে! এখন যখন গিফট দিয়েছেন এটা আমি ফেরত দিবো না। এটা আমার কাছেই থাক।
সাজ্জাদ আর কিছু বলল না। হয়তো বলার মতো কিছু পায় নি। দুজনে অনেক্ষন একসাথে সময় কাটিয়ে বাসায় ফিরলো।
,
,
,
,
,
বাসায় ফিরে তিতলির চোখ চড়কগাছ! তার বাবা মা আবার ঝগড়া করছে। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাড়াতাড়ি হাতের জিনিসগুলো রেখে বাবা মায়ের কাছে গেলো। গিয়ে আগে দুইজনকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,
তিতলি: আজ দুজন কি নিয়ে ঝগড়া করছো?(একবার বাবার দিকে তাকিয়ে, একবার মাম্মার দিকে তাকিয়ে)
বাবা: দেখ না মামনি! আমার কোন কথাই তোর মাম্মা শোনে না।
মাম্মা: একদম মিথ্যে কথা বলবে না। তুমি আমার কথা শুনছো না।
তিতলি:(হাত দিয়ে থামিয়ে) আরে আচ্ছা! আগে বলো কি নিয়ে ঝগড়া করছো।
মাম্মা: আরে আমি বলেছি বিয়েতে আমি শাড়ি পরবো,,,,,যেহেতু আমি শ্বাশুরি হতে যাচ্ছি। কিন্তু না তোর বাবা বলছে আমাকে লেহেঙ্গা পড়তে! আর উনি নাকি মাঞ্জা মেরে আসবে। আর আমাকে নিয়ে কাপল ডান্স করবে! বুড়ো বয়সে শখ কতো!
বাবা: তাতে দোষের কি আছে! তুমি চাইলে আমি তোমাকে আবার বিয়ে করে বাসরও করতে পারি,,,,,কাপল ডান্স তো কোন বিষয়ই না!(চোখ টিপ দিয়ে)
তিতলি তার বাবার কথা শুনে বিষম খেলো। আর গলা খাঁকারি দিয়ে বলতে লাগলো,
তিতলি: বাবা! আমি এখানে আছি! আর মাম্মাকে লেহেঙ্গা পড়তে বলছো! মাম্মার লেহেঙ্গা তুমি সামলাবা?
তিতাস সাহেব কিছু চিন্তা করে বললেন,
বাবা: ঠিক আছে লেহেঙ্গা পড়তে হবে না কিন্তু কাপল ডান্স করতে হবে।(জেদ ধরে)
তিতলি উপরে যেতে যেতে বলল,
তিতলি: সে তোমার আর মাম্মার বিষয়! তোমারাই সামলাও!
ব্যাস আর কি লাগে! আবার শুরু হয়ে গেলো তাদের খুনশুটিময় ঝগড়া!
তিতলি তার জিনিসগুলো নিয়ে উপরে চলে গেলো।
,
,
,
,
,
তিতলি অনেক্ষন ধরে চিন্তা ভাবনা করে কনিকাকে ফোন দিয়ে সকালে আসতে বলল।
,,
,,
,,
(চলবে),,,,
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।
0
2
Nice story