Crush যখন বর😍
#Season_4
#Part_50
#Writer_Afnan_Lara
তনু-হুমম,,আপনি??
শিশির-আমার কথা বাদ দাও,তোমার এত বড় সাহস হলো কি করে তুমি আমাকে সরিয়ে নিজের জীবন বিপদে ফেলে দিলা???
তনু-আমি আসলে...
শিশির-চুপ,
বেশি বেশি না???একটা থাপ্পড় মেরে দিব তোমাকে,
আর কখনও এমন ভুল করবা না,
আমার গায়ে গুলি লাগলে আমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যেতাম,
কিন্তু তোমার তো লাইফ রিস্ক হয়ে যাচ্ছিলো,
তনু-তাও তো আপনাকে সেভ করতে পেরেছি এতেই আমার জীবন
শিশির-আর ইমোশান দেখাতে হবে না আমাকে!
একটা মানুষকে এত ভালোবাসার কোনো কারণ আমি পাই না,
কম ভালোবাসো আমাকে,তোমার এই ভালোবাসা তোমাকে আজ কবরে নিয়ে যাচ্ছিলো
তনু-আপনার টানে আবার ফিরে আসলাম
তনু একটু কাছে গিয়ে শিশিরকে জড়িয়ে ধরলো
শিশির আরও কিছু বলতে চাইছিলো, আরেকটু বকতে চাইসিলো তনুকে,
কিন্তু পারলো না,তনু খুব যত্ন করে শিশিরকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে,
এই মেয়েটা খুব সুন্দর করে জড়িয়ে ধরতে জানে
তনু-আমি আপনাকে খুঁজে পেয়েছি এত বড় একটা দেশে,
শিশির হাসলো,সেও হাত এগিয়ে এনে তনুকে জড়িয়ে ধরলো
তনু-দেখেছেন,সেদিন আমি ঢাকায় পা রাখার পর সবার আগে আপনার সাথেই দেখা হয়েছে আমার আর সুইজারল্যান্ডেও আমার আপনার সাথে দেখা হয়ে গেলো,
শিশিরের চোখের পানি বেরিয়ে আসলো
ছেলেরা তাদের অশ্রু মেয়েদের দেখায় না
শিশির হাত দিয়ে চোখ মুছে ফেললো
তনু শিশিরকে ছেড়ে তাকিয়ে আছে
শিশির-তোমার হাতে ব্যান্ডেজ কেন,নার্সরা হাতে ব্যান্ডেজ করলো কেন,হাতে কি হয়েছে
তনু-রাকিব আমাকে বেঁধে রেখেছিল দড়ি দিয়ে সেটাই খুলতে গিয়ে চুড়ি ভেঙ্গে হাত কাটা গেসে,
শিশির-তার পাপের শাস্তি সে পেয়ে গেছে
তনু-মানে?
শিশির-সে পুলিশের গুলিতে মারা গেছে
তনু-কিহহ,রিনাকে কি বলবো আমি, ও তো এসবের কিছুই জানে না
শিশির-সব জানলে ও নিজেই ঘৃনা করবে নিজের ভাইকে,
তনু-একটা কথা বলেন আপনি এখানে কি করে এলেন?
শিশির-আমার অফিসের কাজেই আমি আসছি তোমাকে জানাতে পারিনি তুমি এক্সাম হলে ছিলে,
তনু -ওহহ,,
শিশিরবাবু আমাকে কিছু খেতে দাও,আমার খুব খিধে পেয়েছে কাল থেকে কিছু খাইনি আমি
শিশির-হুম,আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে তোমার জন্য খাবার আনতেসি বসে থাকো,শিশির উঠে চলে গেলো
তনু শিশিরের চলে যাওয়া দেখতেসে,
আজ যেনো নতুন করে এই ছেলেটার প্রেমে পড়েছি আমি,
এটা ভাবতে ভাবতেই শিশির খাবার এনে তনুর মুখের সামনে ধরলো
তনু শিশিরের হাতে খেতে লাগলো বসে বসে,হঠাৎ ওর মনে হলো শিশিরও নিশ্চয় কিছু খায়নি
তনু শিশিরের হাত ঘুরিয়ে ওকেও খাওয়ায় দিলো
তারপর খাওয়া শেষে শিশির মাকে কল করে জানালো সব কিছু,
মা তো রীতিমত অবাক , কি থেকে কি হয়ে গেলো এসব,!
শিশির তনুকে হসপিটাল থেকে ছাড়িয়ে হোটেলে নিয়ে এসেছে
তনু ঘুমায়,ওকে ঘুমের ঔষুধ দিয়েছে ডাক্তার
শিশির গায়ের থেকে শার্ট খুলে শাওয়ারের নিচে কিছুক্ষন বসে রইলো ফ্লোরে
দরজা লাগায়নি,বসে বসে তনুকে দেখতেসে শিশির
তনু চাদর টেনে গভীর ঘুমে আছে
শিশির তনুর মুখের দিকে চেয়ে আছে,
ঝর্নার পানি শিশিরের মাথা গড়িয়ে ওর মুখ থেকে টপটপ করে গিয়ে বুকের দিকে যাচ্ছে,
আজ হয়ত তনু জেগে থাকলে ওকে শাওয়ারের নিচে টেনে আনতো শিশির,
আজকের এই incidence এর পর থেকে শিশির বুঝেছে সে তনুকে ছাড়া থাকতে পারবে না,,কেমন একটা ফিলিংস যোগ হয়েছে,
এখন শুধু তনুকেই দেখতে মন চায়,
১ঘন্টা হয়ে গেসে,শিশির এখনও বসে আছে শাওয়ারের নিচে, তনুর মুখই দেখতেসে শুধু
তনু এপাশ ওপাশ করে জেগে গেলো,
চোখ ডলে ডলে উঠে বসলো,চুল মুখের সামনের থেকে সরিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখলো শিশির শাওয়ারের নিচে বসে তার দিকে তাকিয়ে আছে
তনু-একি?আপনি এখানে এমন করে বসে আছেন কেন,
কথাটা বলে তনু নামতে গেলো
শিশির -নামবা না,আমি আসতেসি
শিশির উঠে ঝর্না অফ করে তোয়ালে নিয়ে বেরিয়ে আসলো
তনু-কি হয়েছে আপনার?
শিশির-কিছু হয়নি,উঠসো কেন?
তনু-এমনিতেই মাথা চিনচিন করে উঠলো তাই আর ঘুমাতে পারলাম না
শিশির-বসো আমি কফি অর্ডার করতেসি
শিশির চুল মুছতে মুছতে ফোন নিয়ে কল করে অর্ডারটা করে নিলো
শিশির শার্ট পরতে পরতে তনুর দিকে তাকিয়ে দেখলো তনু গা চুলকাচ্ছে,
চুলকানোরই কথা,জামা এটা কাল থেকে পরে আছে,তার উপর এত দখল গেসে
শিশির-এটা change করে ফেলো
তনু অবাক চোখে শিশিরের দিকে তাকালো,
ব্রু নাচিয়ে বললো আপনার মাথা ঠিক আছে,?আমি কি সাথে করে কিছু এনেছি?কি পরবো?
শিশির নিজের শার্টটা ব্যাগ থেকে নিয়ে তনুর দিকে এগিয়ে ধরলো
শিশির-তোমার জামাটা আমি ধুয়ে দিব,ওটা শুকাতে শুকাতে এটা পরে থাকো আপাতত,
তনু-আপনি কেন ধুবেন,আমি ধুয়ে দিচ্ছি
তনু নামতে গেলো
শিশির-খবরদার নামবা না!!,হাতে ইয়া বড় ব্যান্ডেজ আর উনি জামাকাপড় ধুবে
তনু-😒
শিশির-আর নয়তো থাকো আমি বাইরে থেকে ড্রেস কিনে আনতেসি
তনু-না,প্লিস আমাকে ছেড়ে কোথাও যাইয়েন না
শিশির-ফাইন,তাহলে শার্টটা পরে নাও
শিশির শার্টটা তনুর সামনে এনে রাখলো,
নাও পরে নাও আমি বারান্দায় আছি
এটা বলে শিশির বারান্দার দিকে চলে গেলো
তনু শিশিরের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতেসে
তারপর শার্ট টা পরে চেয়ারে রেখে দিলো খাট থেকে নেমে,
আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে তনু শিশিরকে ওর বাহু জড়িয়ে ধরলো পিছন থেকে
শিশির তনুর দিকে ফিরে দাঁড়ালো
তনু-কি ব্যাপার?আজ আপনি আমাকে শুধু শার্টে দেখে ঘামতেসেন না যে??
শিশির-কারনটা পরে বলি?
তনু-ঠিক আছে
কলিংবেল বাজতেই শিশির গিয়ে কফির দুটো মগ নিয়ে আসলো
তনু খাটে গোল হয়ে বসে পড়লো,
হাঁটু দেখা যায় বলে জিহ্বায় কামড় দিয়ে চাদর দিয়ে ঢেকে ফেললো তনু,
শিশির হাসতেসে আর কফি খাচ্ছে তনুর কান্ড দেখে
কফিটা শেষ করে তনুর জামাটা ধুয়ে বারান্দায় ঝুলিয়ে দিলো শিশির
তনু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতেসিলো,জামায় এখনও রক্তের দাগ আটকে আছে
তনু হাসতে হাসতে বললো জীবনে কি জামাকাপড় পরিষ্কার করেন নাই?
শিশির-নাহ,আমার জামা কাপড় বুয়া ধুয়ে দেয়
তনু-হুম বুঝলাম
শিশির-কেন?জামা ধোয়া হয়নি নাকি?
তনু-হয়েছে,খুব ভালো হয়েছে,একটা কথা বলবো?
শিশির-বলো
তনু-আমার আর এখানে থাকতে ইচ্ছে করছে না আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব,
শিশির-একটা কথা বলো,রাকিব তোমার পাসপোর্ট পেলো কই???
তনু-সেটায় বুঝতেসিলাম না পরে রাকিব নিজেই বলসে সে আমাদের বাসায় ফেক কাজের লোক পাঠিয়ে পাসপোর্ট চুরি করাইসে
শিশির-কি?আমার বাসায় চুরি!
তনু-আমি বাসায় এখন ফেরত যাব কি করে?পাসপোর্ট তো আমার কাছে নেই
শিশির-সেটার ও সলুশন হয়ে গেসে,
পুলিশ রাকিবের পকেটে ওর আর তোমার পাসপোর্ট পেয়েছে,সেটা দিয়েই কাজ হবে
তনু-বাব্বাহ আমি তো ভয় পেয়ে গেসিলাম, ভাবসি আর যেতে পারব না
শিশির-আমি চাইলে ২দিনেই তোমার পাসপোর্ট বানিয়ে নিতে পারি Switzerland থেকে
তনু-ওহ তাই নাকি
শিশির তনুর দুই কাঁধে তার হাতদুটো রেখে বললো হুম তাই
তনু ইয়া বড় হা করে শিশিরের মুখের দিকে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছে
তনু-এই পোলার হলোটা কি,?এমন করতেসে কেন,
গাঁজা টাজা খাইসে নাকি,??
এমন রোমান্টিক মুডে আছে কেন,?
কিছু সুবিধা লাগতেসে না,
আমার চোখের দিকে কি সাহস করে তাকিয়ে আছে আর আগে চোখে চোখ রাখতেই পারতো আর এখন চেয়েই আছে,ঘামতেসেও না!!😲😱
শিশির তনুর কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো কি হয়েছে?এমন হা করে চেয়ে আছো কেন?
তনু-না কিছু না,এমনিতেই
শিশির ফোন নিয়ে সোফায় গিয়ে বসলো
তনু খাটে বসে চাদর টেনে গালে হাত দিয়ে শিশিরের দিকে তাকিয়ে ভাবতেসে শিশিরের এমন স্বভাব পাল্টানোর কারন কি?আমার প্রেমে পড়ে নাই তো?
নাহ সেটা হবে কেন,এতদিন ধরে এত কাঠ খড় পোড়াইলাম লাভ হয়নি আর এখন কেন হতে যাবে,
অন্য কোনো কারন হতে পারে হয়ত,
উনার জন্মদিন নাকি আমার?না সেগুলো তো দেরি আছে,তাহলে আর কি কারন?
শিশির ফোনের থেকে চোখ উঠিয়ে ধাঁধালো চোখে তনুর দিকে তাকালো
তনু কেঁপে উঠলো,এমন করে চাহনি দিচ্ছে কেন আমাকে
তনু ঢোক গিলে পানি নিয়ে খেলো,
শিশির বাঁকা একটা হাসি দিয়ে আবার ফোনের দিকে তাকালো
তনু উঁচু হয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে একবার দেখে নিলো
নাহ সব তো ঠিক আছে,আর আমাকে তো রুগীর মত লাগে,এই চেহারাতে তো উনার আমার উপর ক্রাশ খাওয়ার কথা না,উফ পাগল হয়ে যাবো আমি এই ধাঁধার উত্তর খুঁজতে গিয়ে,কেউ তো বলো শিশিরের এমন বিহেভের কারণটা কি???
চলবে♥
3
4
Osdjjddjjd