গল্পটা ভালবাসার

1 8
Avatar for Hasan16
4 years ago

#গল্পটা_ভালোবাসার💞💞💞

#সিজন_2

#পর্বঃ৩৪

"মিষ্টি মা আমাকে একটু হেল্প কর না। সকাল থেকে দুইটা কি যে সাজতাছে কে জানে। আমাদের একটু হেল্প কর না তুই। "

"মা আমি কি হেল্প করবো। তোমরা আস্তে আস্তে করো।"

আসলে আসার পর থেকে সিমা রোদের আশেপাশেই ঘুরঘুর করছে। তাই আমি ও সবসময় রোদের সাথেই ছিলাম কিন্তু এখন মা আমাকে কাজ করতে বলছে এবার কি হবে? এবার তো সিমা রোদের সাথেই আরো বেশি করে মিশে থাকবে। আর রোদ বান্দরটা ও কিছুই বলবে না। অসহ্য।,,,,,

মা আমাকে কাজ দিয়ে বসিয়ে রাখছে। কিন্তু আমার মন তো ওইদিকে। কাজ কি আর হয়। কাজের বদলে অকাজ টাই বেশি করছি। তা দেখে মা আমাকে বললো,

"মিষ্টি তুই কি করছিস এতোক্ষণ ধরে। একটা কাজ দিছি এই একটা নিয়েই পড়ে আছিস। এখনো কিছুই করতে পারলি না।"

আমার মায়ের কথায় মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে কিন্তু চুপ থেকে কাজটা কোন মতে করে দিয়ে চলে যেতে নিলে মা আরেকটা কাজ দিয়ে বসিয়ে রাখলো। কি একটা অবস্থা। এদিকে মাকে বলতে ও পারছি না আমি কিসের জন্য এমন করছি। অসভ্য রোদ তোরে আজকে আমি গরম পানিতে চুবামু খালি একবার বাড়ি যাইতে দে তারপর বুঝবি মজা!

সব কাজ করার পর আমি বাইরে গিয়ে দেখি সিমা শাঁকচুন্নিটা আমার রোদের সাথে সেল্ফি তুলছে। তা ও বিভিন্ন রকমের স্টাইলে। আর প্রতিটা সেল্ফিতেই রোদের গা ঘেসে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে। সিমা আবার ও রোদের গা ঘেসে সেল্ফি নিতে যায় । আমার তো রাগ এবার চরমে উঠে গেছে। তাই আমি এক দৌড়ে সিমাকে ইচ্ছা করে ধাক্কা দিয়ে রোদের পাশে দাঁড়িয়ে বলি,

"আমি ও তোমাদের সাথে সেল্ফি তুলবো। "

সিমা আমার ধাক্কা খেয়ে সোজা মাটিতে পড়ে গেছে। সাথে ওর দামী ফোনটা ও। 😂,,,,,,

রোদ সিমার পড়ে যাওয়া দেখে আমার দিকে তাকায়। তারপর জোরে জোরে হেসে দেয়। সিমা লজ্জায় চোখ মুখ লাল করে উঠে দাঁড়ায়। আর আমাকে বলে,

"এটা কি করলা তুমি?"

"ও সরি সরি। আমি তো বুঝতেই পারিনি তুমি পড়ে যাবে। আমি তো ভাবছিলাম তুমি খাম্বার মতো শক্ত করে দাঁড়িয়ে থাকবা। হাজার ধাক্কালে ও তোমাকে নড়াতে পারবো না। "

"মজা করছো আমার সাথে তুমি?"

"ইশ তোমার সাথে মজা করতে আমার বয়েই গেছে।"

"তোরে ইচ্ছা মতো পিটাইতে পারলে শান্তি পেতে পারতাম আরকি।"(মনে মনে)

"রোদ ভাইয়া তুমি হাসলা কেনো? আমাকে পড়ে যেতে দেখে তুমি আমাকে না তুলে হাসলে? "

"কি আর করবে বলো তোমার ধপাস করে পড়ে যাওয়াটা দেখে যে কেউই হাসবে। আমি তো.... "

"রোদ ভাইয়া।"

"উফঃ! বারে বারে রোদ ভাইয়া, রোদ ভাইয়া করো কেনো তুমি? রোদ ভাইয়া ছাড়া কি চোখে কিছু দেখো না তুমি? "

"😡"

"চলো সেল্ফি তুলবা না। আসো আমি ও তুলবো।"

সিমা আমার উপর রেগে গিয়ে ভিতরে চলে যায়। আর আমি রোদের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলি,

"আপনি আসলেই লুচু।"

"কি বললা তুমি? তুমি আমাকে কি বললা?"

"কানে শুনতে পান নাই। আরেকবার বলতে হবে নাকি?"

"আমাকে তুমি লুচু বললা? "

"এইতো ভালো শুনেছেন আপনি।"

"তোমার আমাকে কোন দিকে লুচু মনে হয় হ্যাঁ।"

"সব দিক দিয়ে। সকাল থেকে দেখছি আপনি ওই সিমার সাথেই মিষ্টি মিষ্টি করে কথা বলেই যাচ্ছেন তো বলেই যাচ্ছে। শুধু আজকে সকাল না যেই দিন থেকে ওই শাঁকচুন্নিটা বাড়িতে আসছে সেই দিন থেকেই দেখে আসছি। আর আজকে তো আমি এতো সুন্দর করে সাজলাম আপনি কিছুই বললেন না। উলটা আমাকে সব মুছে ফেলতে বললেন আর ওই সিমা সাজলো তো ও খুব সুন্দর লাগছে। কেনো হ্যা কেনো? আমাকে কি কম খারাপ লাগছিলো নাকি? তারপর ওই শাঁকচুন্নি আমাকে গাইয়া বললো আর আপনি সবটা শুনলেন । কিন্তু একটু কথা ও বললেন না। এখন আবার ওই সিমা আপনার গা একেবারে ঘেসে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলো আর আপনি ও সুন্দর করে ওর সাথে পোজ নিচ্ছিলেন। তো এতো কিছুর পর লুচু বলবো না তো কি বলবো আপনাকে হ্যাঁ। "

একদমে পুরো কথাটা শেষ করি। তা দেখে রোদ বলে,

"আস্তে আস্তে। একদমে এতো কথা বললে তো দম আটকিয়ে যাবে।"

"😡"

"আচ্ছা সিমা শাঁকচুন্নি হলো কবে থেকে?"

"জানি না।"

রোদ আমার কানে কানে ফিসফিস করে বললো, "তুমি কি সিমাকে হিংসা করছো?"

"মোটেই না। আমি কেনো ওকে হিংসা করবো।"

"তাহলে সিমাকে নিয়ে তোমার এতো প্রবলেম হচ্ছে কেনো? হুম "

"আপনি না,,,আপনি,,,,আপনি আসলেই লুচু। "

বলে ওখান থেকে চলে আসি। বিয়ের কথাবার্তা সব ঠিক হয়ে গেছে। আজকেই এংগেজমেন্ট হয়ে গেছে। নিরা আর তিশা তো সেই খুশি। আর আমি ও। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ওদের বিয়েটা হয়ে যাবে সিমা ও ততো তাড়াতাড়ি চলে যাবে। আর আমি নিশ্চিন্ত হবো।

তারপর সবাই বাড়ি চলে আসি। এখানে এসে সিমা আবারো ন্যাকামি শুরু করে দিছে।

"রোদ ভাইয়া তোমাকে খুব টায়ার্ড লাগছে। তুমি রুমে যাও আমি তোমার জন্য কফি আনছি।"

"তুমি কেনো? মিষ্টি তুমি কফি নিয়ে এসো প্লিজ,,,। সিমা তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে নাও। তোমাকে আনতে হবে না।"

"হ্যাঁ আমি এক্ষুনি যাচ্ছি। " বলে আমি কফি আনতে গেলে সিমা আমাকে আটকিয়ে বলে,

"রোদ ভাইয়া। আজকে আমি আনলে কি হয়? আমি তো কফি ভালোই বানাই। তুমি একবার আমার হাতের কফি খেয়ে দেখো তুমি আবারো খেতে চাইবে। আমি তোমার জন্য স্পেশাল কফি বানিয়ে আনছি। "

রোদ বেশি কিছু না বলে শুধু "ঠিক আছে" বলেই চলে যায়।

এদিকে আমি রাগে জ্বলে যাচ্ছি। রোদ টায়ার্ড সেটা আমার থেকে বেশি এই শাঁকচুন্নিটা খেয়াল রাখছে। অসহ্য। এখন আবার কফি ও খাওয়াতে চাচ্ছে। কতো খারাপ মেয়ে। আমি খাওয়াচ্ছি চা। দাড়া তুই,,,।

সিমা কফি বানাচ্ছে। আমি লুকিয়ে লুকিয়ে সব দেখছি। কিন্তু আমি তো ভালো কফি কিছুতেই বানাতে দিবো না। তাই ওৎ পেতে আছি। কখন সিমা একটু সরবে আর আমি কিছু একটা করবো। কিন্তু ওই অসভ্য সিমা সরছেই না। আর আমি তার জন্য সিমাকে একশো বারোটা গালি দিয়েই যাচ্ছি।

সিমা কিসের জন্য জানি রান্না ঘর থেকে বের হইছে। আর আমি সেই সুযোগে ভিতরে ঢুকে ভাবছি কি করা যায়। কিছুই মাথায় আসছে না। হাতের কাছে কফির বয়াম টা পেলাম। সাথে সাথেই কফি পাউডার অনেকগুলো মিশিয়ে দেই। আর সাথে তো লবন, চিনি সবই বেশি বেশি দিয়ে দিয়েছি। কালারটা কেমন একটা দেখাচ্ছে। এটা খেতে কি হইছে আল্লাহ্‌ই জানে।

ইচ্ছা করেই এটা করেছি। একবার খেলে খালি খেতেই ইচ্ছা করবে তাই না। খাওয়া এবার তোর রোদ ভাইয়াকে। বেশি করে খাক। বেশি শক হইছে তাই না তোর হাতের কফি খাওয়ার। খাও ব্যাটা রোদ। বেশি করে খাও। বউয়ের হাতের কফি না খেয়ে কাজিনের হাতে কফি খাওয়ার শকটা পূরণ করো।

সিমা আসছে তাই আমি আবার সরে গেলাম। সিমার দিকে তাকাতেই বুঝতে পারলাম ও ওর ঘরে গেছে লিপস্টিক লাগাইতে। লিপস্টিক লাগিয়ে সাজুগুজু করে রোদের রুমে যাওয়া না। আজকে তোর সাজুগুজু বের হবে অসভ্য বান্দরনী।

সিমা ঢেং ঢেং করে নাচতে নাচতে রোদের রুমে গিয়ে মিষ্টি করে একটা হাসি দিয়ে রোদকে কফিটা দেয়। রোদ একটা থ্যাংকস দিয়ে কফিটা মুখে নিয়েই সবটা ফেলে দেয়।

"রোদ ভাইয়া ফেলে দিলে কেনো? আমি এতো কষ্ট করে বানালাম। আর তুমি খেলে না। ফেলে দিলে।"

"এটা কি বানিয়েছো সিমা তুমি?"

"কেনো কফি। আমি তো রোজ এরকম কফিই খাই। আমার কাছে তো খুবই ভালো লাগে।"

"হুম আসলেই খুব ভালো। আমি আর এই কফি খেতে চাই না। এতো ভালো কফি খেলে না আমি পাগলই হয়ে যাবো। "

" তুমি কফিটা খাবে না।"

এতোক্ষণ আমি লুকিয়ে লুকিয়ে শুনছিলাম। এখন আমি এসে বলি, "না গো। তোমার রোদ ভাইয়া তোমার স্পেশাল কফি খাবে না। ও আমার হাতের কফিই বেশি পচ্ছন্দ করে" বলে আমি রোদের দিকে আমার বানানো কফি এগিয়ে দেই।রোদ সেটা নিয়ে খাওয়া শুরু করে। আর সিমা,,,,,,,,,,

চলবে...............

1
$ 0.00
Avatar for Hasan16
4 years ago

Comments

নাইস

$ 0.00
4 years ago