সবাইকে গল্পটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইলঃ-

ফাহিমকে কাঁদতে দেখে বিস্মিত হয়ে তার বাবা বললেন,"কাঁদছিস কেন? কি হয়েছে?" ভীত কন্ঠে কাঁদতে কাঁদতে ফাহিম বললো,"কলেজে যাওয়ার পথে ৩/৪ টা বখাটে মেয়ে আমাকে প্রতিদিন ডিস্টার্ব করে বাবা। তাদের মধ্যে একজন আজকে আমার গায়ে হাত দিয়ে একটা শার্টের বোতামও খুলে নিয়েছে। আমার অনেক ভয় লাগছে বাবা। আমি আর কলেজে যেতে চাই না।" . ছেলের কথা শুনে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সবজি কাটতে কাটতে উদাস গলায় ফাহিমের বাবা বললেন, "ছেলে মানুষের জীবনই এরকম রে। ছেলে হয়ে জন্মাইছিস, এরকম একটু আকটু হবেই। তোর মতো বয়সে থাকতে এরকম আমার সাথেও অনেক হইছে। তুই কাঁদিস না। কাল থেকে তোর মা তোকে কলেজে দিয়ে আসবে।" . রাতে ফাহিমের বাবা ফাহিমের মা নাজমাকে সব কাহিনী খুলে বললেন। মুখ থেকে সিগারেটের ধোঁয়া বের করতে করতে নাজমা বললেন,"আজকাল পুরুষ ধর্ষণের নিউজ প্রায়ই খবরের কাগজে দেখি। সেদিন রাকিব নামের এক ছেলেকে রাস্তায় একা পেয়ে সাদিয়া নামের কোন মাফিয়া মেয়ে নাকি ধর্ষণ করছে। ফাহিমকে নিয়ে তো চিন্তায় ফেলে দিলা। আমি অফিসেই যাবো নাকি ওকে কলেজে রেখে আসবো। তোমাকে ওর সাথে পাঠাবো এমন জো ও নাই। এরকম বখাটে টাইপের মেয়েরা নাকি আজকাল বাবার বয়সী লোকদেরও টিজ করছে। তার মধ্যে তুমি তো আবার সুন্দর। আজকে একটা বোতাম টেনে ছিড়েছে। কবে না জানি শার্টটাই খুলে নেয়। ছেলেটার সাথে উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে গেলে তো সমাজে মান সম্মান কিছু থাকবে না। কাল থেকে ফাহিমকে বলো জোব্বা পরে কলেজে যেতে। পর্দাই আসল।"

মশারী টানাতে টানাতে ফাহিমের বাবা বললো,"জোব্বা পরা ছেলেরা কি ধর্ষিত হচ্ছে না? রায়হান,রিফাত,জাহিদ এরা তো জোব্বা পরতো। ওরা কি রেহাই পেয়েছে? বলো?"

চিন্তিত মুখে নাজমা বললেন,"আচ্ছা,ফাহিমকে বিয়ে দিয়ে দিলে কেমন হয়? সুন্দর ছেলের এত পড়াশোনার কি দরকার? এমনেই অনেক সরকারি চাকুরিজীবী মেয়ে লাইন দিয়ে আছে। অফিসে আজকে রেহানা আপা তার মেয়ে নুসরাতের কথা বললেন। মেয়ে নাকি বিসিএস ক্যাডার। সম্বন্ধটা কি আগাবো? তুমি কি বলো?"

খুশিতে আটখানা হয়ে ফাহিমের বাবা বললেন,"এখানে বলার কি আছে? এত ভালো সম্বন্ধ আমরা আর কোথায় পাবো?"

কপালটা একটু ভাঁজ করে নাজমা বললেন,"কিন্তু মেয়ের বয়স যে ফাহিমের থেকে অনেক বেশি।"

ঠোঁট বাঁকিয়ে ফাহিমের বাবা বললেন,"তাতে কি হইছে? তোমার বয়সও তো আমার থেকে অনেক বেশি। মেয়ে মানুষের ওইসব বয়স টয়স দিয়ে কোনো কাজ নাই। চাকরিটাই মেইন।"

২ দিন পর পাত্রীপক্ষ দেখতে আসে ফাহিমকে। ফাহিমের বাবা ওকে পার্লার থেকে মেকআপ করিয়ে আনে। ছেলেকে সুন্দর দেখাতে হবে। মেয়ে যদি পছন্দ না করে তাহলে তো সমস্যা। পরিবারের দিকে তাকিয়ে, সুমাইয়াদের মতো টিজারদের থেকে বাঁচতে ফাহিমও বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায়। ওর হাতের রান্না খেয়ে তো পাত্রীপক্ষের সবাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এরকম একটা রুপে গুনে গুনান্বিত ছেলেকেই তো বাড়ির জামাই করতে চায় সবাই। ছেলে মেয়ের আলাদা কথা হলো। এই ফাঁকে নুসরাত ফাহিমকে জিজ্ঞাসা করলো,"ফাহিম তুমি ভার্জিন তো?" লাজুক স্বরে মাথা নিচু করে ফাহিম বললো,"হ্যাঁ। আপনি?" নুসরাত গলা খাকারি দিয়ে বললো,"তোমাকে আমার পছন্দ হইছে। কিন্তু ছেলে মানুষ হয়ে এত প্রশ্ন করো কেন? স্বভাবটা বদলাবা। চলো সবাই অপেক্ষা করছে নীচে।" বিয়ের দিন পাকা হয়ে গেলো। . কলেজের বন্ধুদের বিয়ের কার্ড দিতে ফাহিম কলেজে গেলো একদিন। কিন্তু সেদিন আর বাসায় ফেরা হলো না তার। ভর্তি হতে হলো হাসপাতালে। রাস্তায় সুমাইয়া,মীম,আনিকা আর জেরিন মিলে তাকে পাট ক্ষেতে নিয়ে গিয়েছিলো। এই খবর শুনে পাত্রীপক্ষ সীমিত আকারে সমবেদনা জানিয়ে বিয়ে ক্যান্সেল করে দিলো। ফাহিম সেদিন জোব্বা পরেই বের হয়েছিলো। তাই তাকে দোষ দেওয়ার মতো কোনো উপায় কেউ পেলো না। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ধর্ষনকারীদের শাস্তি হলো না। ফাহিম আত্নহত্যার মাধ্যমে ধিক্কার জানালো এই নারী শাসিত সমাজের প্রতি। এই শহরে পুরুষের কোনো দাম নাই। এক ফোটাও নাই!

5
$
User's avatar
@Priya5 posted 3 years ago

Comments

প্রিয়া আপু,এটা পড়ে আমার মাথা ঘুরতেছে। তবে ভালোই লিখেছ,,,,,,,,

$ 0.00
3 years ago

Onk sundor silo golpo ta..

$ 0.00
3 years ago

Nice your story

$ 0.00
3 years ago

😥😥😥😥

$ 0.00
3 years ago

wow nice

$ 0.00
3 years ago

I subscriber your id now you suboscribe my id

$ 0.00
3 years ago

😥😥😥

$ 0.00
3 years ago