গল্পটা আমার দাদার কাছ থেকে শুনা। দাদা যেমন করে বলে ছিলেন ঠিক তেমন করে বলছি ' বলে রাখা ভালো, আমার দাদা রেলওয়েতে জব করতেন। তেমন কোনো বিশেষ কাজ ছাড়া দাদা ছুটি পেতেন না। যাইহো গল্পে ফিরে আসা যাক। সময়টা ছিলো ১৯৭৯ দাদা ছুটিতে আসেন বাড়িতে তখন ছিলো শীত কাল ডিসেম্বরে শীতের রাজার আগমন, গ্রামে সাধারণত মানুষ তখন ফসলের বীজ রোপণ করছেন। রাত ছিলো আনুমানিক ৩ টা থেকে সাড়ে ৩টা ফসলের বীজ রোপণ করার সময় হওয়াতে আনেক তখন রাত জেগে কাজ চালিয়ে যেতেন। তো আমার দাদা ভাবলেন শুধু শুধু সময় নষ্ট না করে মাছ ধরা যাক, (যদিও দাদা প্রোফেশনালি মাছ শিকারী ছিলেন না) তা যাই ভাবা তাই কাজ, একটা মাছ মারার জন্য কোঁচ গ্রাম্য ভাষায় (স্বরু বাঁশের মাথায় এক ঘোচা সুচালো লোহার দন্ড) তো দাদা রওনা দিলেন আমাদের বাড়ির পূর্বে খাল পাড়ের দিকে সাধারণত তখন দাদার হাতে আলো জ্বালানোর মতো টর্স বা কুপী কিছুই ছিলোনা। পথ মধ্যে আমাদের পাশের বাড়ির ইয়াকুব আলি নামক এক ব্যাক্তির সাথে দেখা হয়, উনার হাতে ছিলো একটা টর্স তো উনি দাদাকে উদ্দেশ্যে করে বললেন আমার সাথে চল। দাদা কিছু একটা বলতে যাবেন তখনি লোকটা হাতের ইশারায় কিছু না বলার ইঙ্গিত করেন। দাদা তখন তাকে অনুসরণ করতে থাকেন, দাদা বলেন ভাই আপনি কোথায় থেকে আসছেন? তখন তিনি দাদার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকান, দাদা আর কিছু বলতে সাহস পাননি। চুপচাপ তাকে অনুসরণ করতে থাকেন, কথিত আছে যে দাদা যে খাল পাড়ের দিকে যাচ্ছেন ওই খাল পাড়ের পাশে একটা বিশাল বাগান সেখানে নাকি অদিম যুগে ছোট বাচ্চা মারা গেলে তাদের কবর দেওয়া হতো, অথবা কেউ যদি বিষ খেয়ে অথবা কোনো প্রকার আত্মহত্যা করে মারা যায় সেখানে তাদের দাফন করা হতো। তো উনারা ঠিক ওই দিক দইয়ে যাচ্ছিলেন সেই বনের আগে নাকি ছোট খাটো একটা গ্রাম ছিলো তো সেই কারণে ওখানে একটা পরিত্যক্ত কুটির রয়েছে। দাদার এবং ঐ লোকটি কুটিরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দাদা লক্ষ করলেন ৬০ থেকে ৬৫ বছরে সাদা কাপড় পরিহৃত এক মহিলা দাদাকে ইশারা করে বলছেন এখান থেকে চলে যেতে। কিন্তু দাদা নাকি তখন এক প্রকার মোহ এর মধ্য পড়ে যান, তিনি চাইলেও তার শরীর উনার কন্ট্রলে ছিলোনা। তাই তিনি পালাতে গিয়েও ব্যার্থ হলেন, উনারা যখন কবর গুলোর পাশ কেটে যান তখন তিনি কিছু শিয়াল কে প্রাণপণে দৌড়াতে দেখেন। লোকটির পিছু করতে করতে দাদা প্রায় খাল পাড়ে চলে যান। তখন দাদার মনে একটা বুদ্ধি আসলো, তিনি সার্টের পকেট থেকে দিয়াশলাই এবং সিগারেট বের করে দ্রুত তা জ্বালিয়ে নেয়। তখন তিনি দেখতে পান তার সামনে থাকা লোকটি অনেক খানি দূরে চলে গেছেন, আর তখনি দেখতে পান লোকটির আসল চেহারা দাদার ভাষ্য অনুযায়ী অবয়বটা দেখতে ছিলো কয়েকটা প্রাণী মতো। যেমন চোয়াল ছিলো ক্রোকোডাইলের মতো (কুমির) চোখ ছিলো বিশাল আকারের নখ ছিলো অনেক বড় পেটের নিচ থেকে একটু বাকানো পায়ের হাটু থেকে নিচে ছিলো মহিষের মতো আর ঘোড়ার মতো লম্বা লেজ ছিলো আর পুরো শরীর ছিলো মাছের মতো পিচ্ছিল । স্বাভাবিকভাবে ওটার আকার ছিলো দাদার চাইতে তিন গুণ বড়। দাদা যখন সিগারেট ধরান তখন ওটা খালে ঝাপ দেয় এবং দাদার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকায়, দাদা তখন প্রচন্ডভাবে ভয় পায় এবং আয়াতুল কুরসি পড়তে থাকেন। কিছুতেই কোনো ফল হয়নি, সিগারেটটিও প্রায় নিভু নিভু অবস্থায় ঠিক তখনি মসজিদে আযহান পড়ে আর অবয়ব টা দ্রুত সাতরে পালায়। যাওয়ার আগে দাদাকে বলে তোর ভাগ্য ভালো তুই আজকের জন্য বেঁচে গেছিস। এরপর দাদার কিছু আর মনে নেই দাদা senses হয়ে যান। প্রায় ১ সপ্তাহের বেশী সময় দাদার জ্বর ছিলো। এরপর থেকে দাদা আর বেশি রাত বাহিরে থাকতেন না।
ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, আর এটা ছিলো আমার লিখা প্রথম স্টোরি । আমার কাছে আরো অনেক স্টোরি আছে উৎসাহ পেলে সেগুলো ও উপস্থাপন করবো ধন্যবাদ।
Also I must say its such a good written 🙏 I enjoyed reading it how you talk about the things that you do