ছেঁড়া ফ্রক পরা নিষ্পাপ চেহারার ছোট্ট মেয়েটা আপনার দামি গাড়ির জানালার ওপাশে দাঁড়িয়ে কাকুতিমিনতি করছে, স্যার একখান ফুল কেনেন, স্যার একখান ফুল কেনেন, দশ টাকা দাম মাত্র। নেন না স্যার একটা ফুল?
আপনি কী করলেন? চোখ বড়বড় করে মেয়েটাকে কড়া গলায় ধমক দিলেন। তারপর আবার বিরক্ত হয়ে জানালা খুলে ওর গালে ঠাশ করে চড় মেরে বললেন, যা, দূর হ এখান থেকে বেয়াদব। কেনো সাহেব? সে কি হাত পেতেছিলো? ভিক্ষা করতে এসেছিলো আপনার কাছে? সে তো কেবল ব্যবসা করতে এসেছিলো। হালাল ব্যবসা। আপনি একটা নিখুঁত হালাল ব্যবসার মূল্য দিতে জানেন না, অথচ এই আপনিই শহরের সবচেয়ে খ্যাতিমান ব্যবসায়ী। ও আচ্ছা, বাংলায় বললে আবার তৃপ্তি আসবে না। আপনি ব্যবসায়ী নন, বিজনেসম্যান!
এই যে জনাব, আপনার ঘরের খবর কিন্তু আমি রাখি। আজ ভোরে উঠে আপনার স্ত্রী আর পুত্রবধূ মিলে ইচ্ছেমতো কাজের বেটিকে বেদম মারধর করেছে। কারণটা বলবো? আপনার একমাত্র সুপুত্র তাকে সুযোগ পেয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জড়াজড়ি করেছে, টানাহ্যাঁচড়া করেছে। আর সেটা দেখে আপনার ঘরের মহিলা বাহিনী কাজের বেটিকেই উল্টা পিটিয়েছে। তারপর এই হট নিউজটা আপনার আমলে গেলো। আপনি বসলেন বিচারকের গদিতে। রুক্ষমূর্তির মতো বসে কড়া বিচার করলেন। কী বিচার করলেন? কাজের বেটিকে দুই মাসের বকেয়া বেতন না দিয়েই কানের নিচে দুইটা থাপ্পড় মেরে বিদায় করে দিলেন। বাহ্ চেয়ারম্যান সাহেব, বাহ্! এটা ভাবতেই আমার নববধূর মতো লজ্জা লাগছে যে আপনি এই অত্র এলাকার চেয়ারম্যান। এলাকার সমস্ত বিচারকার্য আপনার উপরেই এসে পড়ে। আমি সত্যিই লজ্জিত।
ও শিক্ষক মশাই? কোথায় যাচ্ছেন? সেদিন নাকি ক্লাসে ঢুকে পোলাপান গুলারে খুব শিখিয়েছেন, ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ'। কিন্তু আজ সারাদিন দেখলাম আপনি কাদের গুণ্ডার সাথে খোশমেজাজে আড্ডাবাজি করেছেন। অবশ্য এতে দোষের কিছু না। কারণ আপনি এটাও পড়িয়েছেন যে, ‘পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়'। তবে আসল খবর কিন্তু আমার জানা আছে। কাদের গুণ্ডাকে চিপায় গিয়ে টাকা কেনো দিয়েছেন আপনি? একমাত্র শালাবাবুকে বিদায় করে দিয়ে খুব ভোগবিলাসিতা চলবে, তাই না? বাহ্ শিক্ষক মশাই, আপনি সত্যিই মেধাবী! আপনি তো সবসময় পড়ান, আজকে আমি একটু পড়াই? একটু পড়াই আপনাকে? শোনে রাখুন, ‘উপদেশের চেয়ে দৃষ্টান্ত ভালো’ এবং ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’।
ও ভাই? মেয়েটার কোমরটা ছেড়ে একটু এদিকে আসবেন? আমি কিন্তু সব জানি। গতরাতে আপনার বউ আপনাকে আদরমাখা গলায় বললো, কাল তো তোমার অফিস ছুটি। চলো না, কালকে আশেপাশে কোথাও একটু ঘুরে আসি? নিয়ে যাবে তো?
তখন আপনি কী বলেছিলেন? মনে আছে? আরে না না, কাল সম্ভব না। কাল অফিস বন্ধ থাকলেও বিদেশি এক ক্লায়েন্টের সাথে পার্সোনাল মিটিং আছে। অন্যকোনো দিন যাবো। কিন্তু ভাই আমার, আমাকে কি একটু বলবেন যে বিদেশি ক্লায়েন্টের সাথে মিটিং-এর আভিধানিক অর্থটা কী? পার্কে বসে পরনারীর সঙ্গে ঢলাঢলি করা? যাহোক ভাই, আপনি আবার জিজ্ঞেস করবেন না যে আমি আপনার ঘরের খবর কিভাবে পকেটে নিয়ে ঘুরি। বউকেও সন্দেহ করবেন না। অবশ্য এটা মনে রাখা উচিত যে, ঘরের আসবাবপত্রেরও কিন্তু গায়ে নতুন রঙ মাখতে ইচ্ছে করে মাঝেমধ্যে।
না না ভাই, খাবো না কিছু। এমনিই আপনার সুখ্যাত ভাতের হোটেলটা দেখতে এলাম একটু। হোটেলের বয়স কতো হলো যেন? আচ্ছা মালিক সাহেব, একটু এদিকে আসবেন? কানাকানি একটা কথা বলতাম আরকি। কালকে রাতে সাত নাম্বার রোড মোড়ের ফার্ম থেকে যে চল্লিশটা ইয়া বড়বড় মরা মুরগি আনলেন, ওগুলা কোথায়? মানুষের পেট নামক নর্দমায় চালান করা হয়ে গেছে? ছিঃ ভাই ছিঃ, মাথা থেকে টুপি খোলেন মিয়া। জানেন, আপনার এই বিশালাকার ভুঁড়িতে ধারালো একটা ছুরি দিয়ে জোরেশোরে গুঁতা মারতে ইচ্ছে করছে আমার।
ও প্রেমিক প্রেমিকারা? কী করেন? মোবাইল গুঁতান নাকি? বাহ্ আপনাদের টাইপিং স্পিড তো অবাক করার মতো! বেশ কয়েকজনের সাথে চ্যাট করছেন দেখি। আপনাদের বফগফ কোনটা? ও আচ্ছা, এটা? আহারে! আপনারা কি জানেন আপনাদের ভালোবাসার মানুষের মনে খুব দুঃখ? আপনাদের বফগফরা প্রত্যেকটা টেক্সট করে ফোনের স্ক্রিনে অপলক তাকিয়ে থাকে। আর আপনারা কী করছেন? আরো পাঁচ দেশে রস বিলিয়ে তার লম্বা লম্বা টেক্সটের রিপ্লাই দিচ্ছেন, হুম হ্যাঁ ওকে। বাহ্ খুব ভালো তো। আপনাদেরকে কী করা উচিত বুঝতে পারছি না আমি। তবে কানের নিচে থাপ্পড় মারবো না অবশ্যই। শুধু একটা অনুরোধ করি, কারো আবেগ অনুভূতি নিয়ে খেলবেন না প্লিজ। নিজে ভালো থাকুন, ওপাশের মানুষটাকে ভালো রাখুন.....
ছেঁড়া ফ্রক পরা নিষ্পাপ চেহারার ছোট্ট মেয়েটা আপনার দামি গাড়ির জানালার ওপাশে দাঁড়িয়ে কাকুতিমিনতি করছে, স্যার একখান ফুল কেনেন, স্যার একখান ফুল কেনেন, দশ টাকা দাম মাত্র। নেন না স্যার একটা ফুল?
আপনি কী করলেন? চোখ বড়বড় করে মেয়েটাকে কড়া গলায় ধমক দিলেন। তারপর আবার বিরক্ত হয়ে জানালা খুলে ওর গালে ঠাশ করে চড় মেরে বললেন, যা, দূর হ এখান থেকে বেয়াদব। কেনো সাহেব? সে কি হাত পেতেছিলো? ভিক্ষা করতে এসেছিলো আপনার কাছে? সে তো কেবল ব্যবসা করতে এসেছিলো। হালাল ব্যবসা। আপনি একটা নিখুঁত হালাল ব্যবসার মূল্য দিতে জানেন না, অথচ এই আপনিই শহরের সবচেয়ে খ্যাতিমান ব্যবসায়ী। ও আচ্ছা, বাংলায় বললে আবার তৃপ্তি আসবে না। আপনি ব্যবসায়ী নন, বিজনেসম্যান!
এই যে জনাব, আপনার ঘরের খবর কিন্তু আমি রাখি। আজ ভোরে উঠে আপনার স্ত্রী আর পুত্রবধূ মিলে ইচ্ছেমতো কাজের বেটিকে বেদম মারধর করেছে। কারণটা বলবো? আপনার একমাত্র সুপুত্র তাকে সুযোগ পেয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জড়াজড়ি করেছে, টানাহ্যাঁচড়া করেছে। আর সেটা দেখে আপনার ঘরের মহিলা বাহিনী কাজের বেটিকেই উল্টা পিটিয়েছে। তারপর এই হট নিউজটা আপনার আমলে গেলো। আপনি বসলেন বিচারকের গদিতে। রুক্ষমূর্তির মতো বসে কড়া বিচার করলেন। কী বিচার করলেন? কাজের বেটিকে দুই মাসের বকেয়া বেতন না দিয়েই কানের নিচে দুইটা থাপ্পড় মেরে বিদায় করে দিলেন। বাহ্ চেয়ারম্যান সাহেব, বাহ্! এটা ভাবতেই আমার নববধূর মতো লজ্জা লাগছে যে আপনি এই অত্র এলাকার চেয়ারম্যান। এলাকার সমস্ত বিচারকার্য আপনার উপরেই এসে পড়ে। আমি সত্যিই লজ্জিত।
ও শিক্ষক মশাই? কোথায় যাচ্ছেন? সেদিন নাকি ক্লাসে ঢুকে পোলাপান গুলারে খুব শিখিয়েছেন, ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ'। কিন্তু আজ সারাদিন দেখলাম আপনি কাদের গুণ্ডার সাথে খোশমেজাজে আড্ডাবাজি করেছেন। অবশ্য এতে দোষের কিছু না। কারণ আপনি এটাও পড়িয়েছেন যে, ‘পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়'। তবে আসল খবর কিন্তু আমার জানা আছে। কাদের গুণ্ডাকে চিপায় গিয়ে টাকা কেনো দিয়েছেন আপনি? একমাত্র শালাবাবুকে বিদায় করে দিয়ে খুব ভোগবিলাসিতা চলবে, তাই না? বাহ্ শিক্ষক মশাই, আপনি সত্যিই মেধাবী! আপনি তো সবসময় পড়ান, আজকে আমি একটু পড়াই? একটু পড়াই আপনাকে? শোনে রাখুন, ‘উপদেশের চেয়ে দৃষ্টান্ত ভালো’ এবং ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’।
ও ভাই? মেয়েটার কোমরটা ছেড়ে একটু এদিকে আসবেন? আমি কিন্তু সব জানি। গতরাতে আপনার বউ আপনাকে আদরমাখা গলায় বললো, কাল তো তোমার অফিস ছুটি। চলো না, কালকে আশেপাশে কোথাও একটু ঘুরে আসি? নিয়ে যাবে তো? তখন আপনি কী বলেছিলেন? মনে আছে? আরে না না, কাল সম্ভব না। কাল অফিস বন্ধ থাকলেও বিদেশি এক ক্লায়েন্টের সাথে পার্সোনাল মিটিং আছে। অন্যকোনো দিন যাবো। কিন্তু ভাই আমার, আমাকে কি একটু বলবেন যে বিদেশি ক্লায়েন্টের সাথে মিটিং-এর আভিধানিক অর্থটা কী? পার্কে বসে পরনারীর সঙ্গে ঢলাঢলি করা? যাহোক ভাই, আপনি আবার জিজ্ঞেস করবেন না যে আমি আপনার ঘরের খবর কিভাবে পকেটে নিয়ে ঘুরি। বউকেও সন্দেহ করবেন না। অবশ্য এটা মনে রাখা উচিত যে, ঘরের আসবাবপত্রেরও কিন্তু গায়ে নতুন রঙ মাখতে ইচ্ছে করে মাঝেমধ্যে।
না না ভাই, খাবো না কিছু। এমনিই আপনার সুখ্যাত ভাতের হোটেলটা দেখতে এলাম একটু। হোটেলের বয়স কতো হলো যেন? আচ্ছা মালিক সাহেব, একটু এদিকে আসবেন? কানাকানি একটা কথা বলতাম আরকি। কালকে রাতে সাত নাম্বার রোড মোড়ের ফার্ম থেকে যে চল্লিশটা ইয়া বড়বড় মরা মুরগি আনলেন, ওগুলা কোথায়? মানুষের পেট নামক নর্দমায় চালান করা হয়ে গেছে? ছিঃ ভাই ছিঃ, মাথা থেকে টুপি খোলেন মিয়া। জানেন, আপনার এই বিশালাকার ভুঁড়িতে ধারালো একটা ছুরি দিয়ে জোরেশোরে গুঁতা মারতে ইচ্ছে করছে আমার।
ও প্রেমিক প্রেমিকারা? কী করেন? মোবাইল গুঁতান নাকি? বাহ্ আপনাদের টাইপিং স্পিড তো অবাক করার মতো! বেশ কয়েকজনের সাথে চ্যাট করছেন দেখি। আপনাদের বফগফ কোনটা? ও আচ্ছা, এটা? আহারে! আপনারা কি জানেন আপনাদের ভালোবাসার মানুষের মনে খুব দুঃখ? আপনাদের বফগফরা প্রত্যেকটা টেক্সট করে ফোনের স্ক্রিনে অপলক তাকিয়ে থাকে। আর আপনারা কী করছেন? আরো পাঁচ দেশে রস বিলিয়ে তার লম্বা লম্বা টেক্সটের রিপ্লাই দিচ্ছেন, হুম হ্যাঁ ওকে। বাহ্ খুব ভালো তো। আপনাদেরকে কী করা উচিত বুঝতে পারছি না আমি। তবে কানের নিচে থাপ্পড় মারবো না অবশ্যই। শুধু একটা অনুরোধ করি, কারো আবেগ অনুভূতি নিয়ে খেলবেন না প্লিজ। নিজে ভালো থাকুন, ওপাশের মানুষটাকে ভালো রাখুন.....