অহংকারী_মেয়ে

অভ্র_নীল

৩য়_পর্ব

সকালে উঠে কলেজের দিকে রওনা দিলাম, আজকে তিশাকে দেখতে পাচ্ছিনা বাট ওর ফ্রেন্ড গুলা আমাকে সামনে দাঁড় করিয়ে মজা করছে, রোজকারের মতো আজো, তাই আমি আর কিছু মনে করিনা। -- এই দেখ গরীব ছেলেটা কলেজ এসেছে রে...(তিশার ফ্রেন্ড) -- ছেলেটা বড়োই গরীব রে, তিশা পরশু ভিক্ষা দিচ্ছিলো নেইনি, বেশি ভাব। আমি মাথা নিঁচু করে শুনছি। 😞 -- ঠিকি বলেছিস। -- একটা কথা বলতে হবে দেখি, ছেলেটার মুখের দিকে তাকা যেমন কিছু জানে না। -- হাহাহাহা, হাসালি রে রিতা। আমি তাকাবো আবার এরকম ভিখারি ছেলের দিকে। কোথা থেকে তিশা এসে...
-- ঠিকি বলেছিস তোরা, কুত্তা কুত্তা হয় কখনো খরগোশ হওয়া যায় না। ভাবতে পারিনি তিশাও আমাকে এভাবে বলবে, এবার ওর ফ্রেন্ডররা চলে গেলো, তিশা আমার সামনে দাঁড়িয়ে..
-- কি হলো আমার কথার উত্তর কই? -- না না না মানে কোথাও তো লেখা নেই। -- তাই, আমি বলি তাহলে -- জ্বি বলুন -- I hate you.... -- ওহ আচ্ছা, এটা বলার কি প্রয়োজন ছিলো, এটা তো কলেজের সবাই আমাকে করে। -- বেশি না বকে চলো, এটা বলে আমার হাতটা ধরতে গেলো...
-- প্লিজ আমার হাত ধরবেন না। -- কেন? -- আপনার মতো বড়লোকের মেয়ের হাতের উপর হাত রাখার আমার অধিকার নেই আর রাখতেও চাই না। -- দূর হাত দেবো না। চলো -- কোথায়? -- একটু বেড়াতে। -- না সম্ভব না। -- কেন? -- আমি ক্লাস মিস করে বেড়াতে যাবো ভাবলেন কি করে? -- ওহ আচ্ছা, শর্ত মনে আছে তো। -- কি শর্ত -- রাতের ওটা, কলেজের প্রফেসার। -- না না আমি যাচ্ছি চলেন -- গুড বয়। এবার আমরা গাডিতে উঠলাম, তিশা দেখি আজ একটা নীল জিন্স আর একটা টপ পড়ে এসেছে, খুব জঘন্য দেখাচ্ছে, ছি ছি ছি। মুসলিম মেয়েদের অহংকার তো বরখা, নাহলে হিজাব। আমি আর নিজের মুখ সামলাতে না পেরে..... -- একটা কথা বলবো। -- জ্বি। -- হয়তো রাগ করতে পারেন তবে -- আরে বলো তো। -- আজ না আপনাকে খুব জঘন্য দেখাচ্ছে। -- মানে😡😡😡😡😡 মেয়েটা খুব রেগে গেছে মনে হয়, -- আজকে আপনাকে খুব জঘন্য লাগছে। -- এটাই তোমার মতো গরীবদের প্রব্লেম, এই গরীব গুলা নিজেরা পড়তে পাইনা বলে অন্যের সহ্য করতে পারে না। আমি খুব রেগে গেলাম এটা শুনে। -- গাড়ি থামান। -- কেন? -- গাড়ি থামাতে বলেছি আমি। -- না, আমি এবার রেগে ব্রেকে পা লাগালাম, দাঁড়িয়ে গেলো গাড়ি, এবার আমি গাড়ি থেকে নেমে হনহন করতে হাঁটতে থাকলাম, তিশা এবার ছুটে ছুটে আমার পিছনে পিছনে আসছে, এবার আমাকে জড়িয়ে ধরলো....... আমাকে জড়িয়ে ধরতেই ঝটকা মেরে সরিয়ে দিলাম.... আমি এবার রেগে...... -- কি হচ্ছে এটা? এবার তিশা একটু ভয় খেয়ে.... -- কককইইইই কিছু না তো। সরি সরি
-- ঠিক আছে এসব আমি একদম পছন্দ করিনা। -- আচ্ছা, এবার চলো আমার সাথে। -- না আমি যাবো না। -- তুমি যাবে কিনা। আমি এবার মাথা নিচু করে...
-- আপনাদের মতো বড়লোকদের সাথে উঠাবসা না করাই ভালো, আপনাদের সাথে ঘুরতে হলে পকেটে সবসময় ১০-১৫০০০টাকা নিয়ে বের হতে হবে। এটা শুনে তিশা রেগে আমার গালে একটা থাপ্পড় মেরে..
-- এই ক্ষাত পোলা কুত্তা, তোর কাছে টাকা থাক আর নাই থাক তুই আমার সাথে যাবি নাহলে সোজা কলেজের প্রফেসারের কাছে যাবো। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম, যদি কলেজে গিয়ে উল্টাপাল্টা কিছু বলে দেয়, এখন অবশ্য মুখের কথার কোনো দাম নেই যার কাছে টাকা আছে সেই এই দুনিয়ার মালিক মনে হয়, তাই আমি রাজি হয়ে গেলাম। -- আচ্ছা চলেন। এবার আমি গাড়িতে চাপলাম, আমি ড্রাইভ করতে পারিনা কারন এসব গাড়ি তো আমাদের ওখানে মহেশ কাকার আছে সে অনেক বড়োলোক, আর আমরা তো মাত্র দিন আনি দিন খাই, এসবের কোনো বালাই নেই। আমি চুপ করে এবার বসে থাকলাম। কিছুক্ষন পর একটা মলে এলো, এবার তিশা আমার হাতটা ধরে গোটা মল ঘুরতে লাগলো আমি অনেক বার কথা বলতে চাইছি বাট ও কোনো কথার উত্তর দিচ্ছে না। -- তিশা প্লিজ আমার হাতটা ছাড়ুন। (আমি) -- না ছাড়বো না, এই দেখো ওই টা কেমন। -- আমার হাতটা ছাড়ুন আগে, আর আপনি কি কিনবেন না কিনবেন আমার কি? -- এই কুত্তার বাচ্ছা কথা কানে যাই না। -- না না না মানে, ওই যে নীল শাড়িটা বেশ লাগছে। -- আচ্ছা ওটাই নিচ্ছি তাহলে। এবার ওই শাড়িটা নিয়ে তিশা চলে গেলো, কিছুক্ষন পর তিশা বাইরে বেরিয়ে এলো, আমি দেখে তো পুরাই ক্রাশ সত্যি যে মেয়েকে এতো জঘন্য লাগতো ওসব জিন্স টপ পড়লে আর সেই মেয়েকে আজ শাড়ি পড়তে খুব সুন্দর লাগছে। 😍😍😍😍 এবার আমার সামনে এসে... -- এই কেমন লাগছে। -- খুব সুন্দর লাগছে আপনাকে। -- তাই। -- জ্বি, এবার চলেন কোথায় যাবেন। -- আচ্ছা। এবার আমাকে নিয়ে সোজা পার্কে চলে এলো, আমি এখানকার তেমন কিছু জানিনা কারন আমি গ্রামের ছেলে আর এই শহরে পড়াশোনা করতে এসেছি, আর আমার পকেটে তেমন টাকাও থাকেনা যে এই শহরটা ভালো করে ঘুরে দেখবো, আমার জীবন তো আপনারা জানেন। পার্কে খুব গরম আমার গোটা শরীর ভিজে যাচ্ছে একটা গাছের নীচে গিয়ে বসা হলো, আমার এই অবস্থা দেখে তিশা ওর পার্শ থেকে রুমালটা বের করে আমার মুখে দিতে যাবে ঠিক তখনি আমি ওর হাতটা ধরলাম, কোনোদিন কোনো মেয়ের এভাবে হাত ধরিনি, খুব ভয় লাগছে তাই আমি আবার ছেড়ে দিলাম.... -- আমার হাত ধরলে কেন?(তিশা) -- না না মানে -- কি মানে? -- না না আমার মুখে আপনার রুমাল দেবেন প্লিজ। -- কেন দেবো না😡 -- আমি চাই না আমার মতো গরীব মানুষের ঘাম বড়োলোকের মেয়ের রুমালে লেগে থাকুক, আবার আপনাকে গিয়ে গোসল করতে হবে। -- অভ্র তুমি এমন কেন? -- জ্বি আমি এমনই। -- কেন কেন? আমার চোখের দিকে তাকাও কিছু বোঝো না তুমি? -- না, কি বোঝার আছে শুনি। -- সত্যিই কিছু বুঝো না। -- না। -- অভ্র আমি তোমাকে ভালোবাসি। এটা শুনেই আমার মাথা পুরা রেগে আগুন, সঙ্গে সঙ্গে আমি ওর কাছ থেকে উঠে চলে এলাম, এবার তিশা আমার সামনে এসে দুহাত মেলে..
-- এই যাবে না প্লিজ, আমার কথার জবাব দাও। -- কি জবাব দেবো। -- তুমি আমাকে ভালোবাসবে কিনা! -- না আমার পক্ষে সম্ভব না। -- কেন না -- জানি না আমার পথ ছাড়ো, আপনার সাথে আসাটাই আমার ভুল হয়েছে। -- কেন বলে যাও আগে। -- আমি তোমাদের মতো বড়োলোকদের সহ্য করতে পারিনা। -- কেন পারো না জানতে পারি কি? -- কারন আপনারা আমার মতো গরীব মানুষদের পেটের ভাত কেড়ে নেন, আর আপনাকে এতো বুঝা লাগবে না সোজা কথা আমি আপনাকে ভালোবাসিনা। -- আমি বুঝতে চাই না, আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। জানো তোমাকে আমার প্রথম থেকেই ভালো লাগতো, তখন ছিলো ওটা ভালো লাগা কিন্তু এই তিনদিন তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি তোমার ওই মিষ্টি মিষ্টি জাদু করা কথা গুলাতে। -- ফালতু বকবেন না প্লিজ। আমাকে যেতে দিন। -- না যেতে দেবো না। -- আমি কিন্তু সুইসাইড করবো তোমাকে না পেলে। -- যান গিয়ে করেন এসব ভয় আমাকে দেখাবেন না, আমার কিন্তু এবার সহ্যের সীমা হারিয়ে ফেলছেন আপনি। -- সত্যি বলছি আমি সুইসাইড করবো। -- যান গিয়ে মরেন সুইসাইড করেন আমার কিছু আসে যাই না। এবার আমি ওখান থেকে চলে এলাম, পুরা দিনটা খারাপ করে দিলো। দুপুরে বসে বসে ঘামছি রুমে কারন আমি যেই রুমে থাকি তাতে কোনো পাখা নেই, দিনে ঠিক মতো খাওয়া হয়য় না আবার রুমের ইলেক্টিকের বিল আসবে কোথা থেকে তাই পাখাও নেই। মাত্র একটা হাত পাখা আছে, ঠিক তখনি ফোন এলো একটা আননোন নাম্বার থেকে...... -- হ্যালো। (আমি) -- হ্যালো অভ্র।( একটা মেয়ের কণ্ঠ) -- জ্বি, আপনি কে? -- আমি রিতা, তিশার ফ্রেন্ড, অভ্র তুমি...... এই হসপিটালে তাড়াতাড়ি আসো, তিশা সুইসাইড করেছে। -- ফালতু বকো না। আমার এসব শোনার সময় নেই। -- প্লিজ অভ্র একবার আসো, সত্যি বলছি, তিশার এখন খুব অবস্থা খারাপ। তিশার শ্বাসপ্রশ্বাস ধীর গতিতে চলছে। -- ওই মেয়ে ড্রামা করেন কেন? প্লিজ আমাকে আর কল দেবেন না। এবার আমি কলটা কেটে দিলাম, আমাকে অনেকবার অনেক নাম্বার থেকে কল এলো একটাও রিসিভ না করে ফোনটা সুইচ অফ করে দিলাম, আমি জানি সব মজা করছে। সন্ধা নেমে এলো এবার, দেখি কতোগুলো লোক এলো আর আমার কলার ধরে তাদের গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে অনেক গালিগালাজ করতে লাগলো, আমি অনেক জানতে চাইলাম কিন্তু তারা আমার গালে থাপ্পড় মারতে থাকলো। চলবে নাকি..............! সাড়া পেলে আগামী পর্ব লেখার জন্য আগ্রহী হবো। like cmnt nd shre mst......... w8ng 4 nxt prt.....

2
$
User's avatar
@Mdemon456 posted 3 years ago

Comments