গল্প :- রোদের পর বৃষ্টি
পর্ব :- ০২
.
.
.
-: জারিফের বুকের সাথেই মেয়েটা লেগে ছিল। ও এবার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটা ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। জারিফ মুচকি হাসি দিয়ে মেয়েটাকে দেখছে। ওর লাইফে ও বহু মেয়েকে দেখেছে। শুধু দেখেছে বললে ভুল হবে তাদের শরীরের স্বাদ ও নিয়েছে। কিন্তু এই মেয়ের মতো কাউকে ও দেখেনি। মেয়েটা আস্তে করে ওর চোখ খুলে জারিফের দিকে তাকায়।
লাবণ্যময় দুধে আলতা রঙের মুখখানায় আছে বড় বড় পাপড়ির আড়ালে ভাসানো মুক্তার মতো নয়নজোড়া। সুন্দর একটা নাক। অসম্ভব মিষ্টি গোলাপি ঠোঁটটার কোণায় আছে একটা ছোট্ট কালো তিল। যেটা জারিফকে খুব বেশি টানছে। জারিফের মনে চাচ্ছে আজ নওরিনের বদলে ওকেই ভোগ করবে। দেহের গড়নও একদম মনমাতানো। জারিফের অসম্ভব নেশা ধরেছে। এই নেশা এই অপরিচিতা মেয়েকে ভোগ না করা পর্যন্ত শেষ হবে না। জারিফের মাথায় এখন এই অপরিচিতা ছাড়া আর কেউ নেই।
মেয়েটা আস্তে আস্তে করে অন্যদিকে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। জারিফের মতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে ওর দিকে মুচকি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা মুহূর্তেই দূরে সরে দাঁড়ায় আর বলে,
~ আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না। তাও অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি আজ একটা মেয়ের জীবন বাচিঁয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জারিফের ঘোর কাটে মেয়েটার মধুর কণ্ঠে। তবে ভোগ করার নেশাটা না। ও কিঞ্চিৎ হাসি দিয়ে বলে,
- আরে এটা তো আমার দায়িত্ব। থ্যাংকস দিতে হবে না।
~ না না থ্যাংকসটা আপনার প্রাপ্য। সত্যি আপনি খুব ভালো। আচ্ছি আমি এখন আসি। ভালো থাকবেন?
- কিছু মনে না করলে আমি আপনাকে নামিয়ে দিয়ে আসি? অনেক রাত হয়েছে। এমন আছে সামনে ওরা আবার থাকতে পারে।
মেয়েটা ওদিকে তাকিয়ে ভয় পায়। অসহায় ভাবে বলে,
~ আপনার কোন সমস্যা হবে না? বোধহয় কোথাও যাচ্ছিলেন।
- মোটেও সমস্যা হবে না। আসুন না।
~ অনেক উপকার করলেন আপনি। আচ্ছা চলুন।
জারিফ হাসি দিয়ে ওর পাশের সিটের দরজাটা খুলে দিয়ে মেয়েটিকে বসিয়ে ও অন্যপাশে ওর সিটে গিয়ে বসে। আর বলে,
- তা আপনার বাসা কোথায়?
~ ৭ নং এ।
- ওকে চলুন।
জারিফ গাড়ি চালাচ্ছে আর আঁড় চোখে মেয়েটাকে বারবার দেখছে। এই মেয়েকে ওর চাই ই চাই। যেভাবে হোক চাই। জারিফের মাথায় অনেক কিছু চলছে। ও মেয়েটার সম্পর্কে জানার জন্য বলে,
- আপনার নামটা জানতে পারি? যদি কিছু মনে না করেন?
মেয়েটা জারিফের দিকে তাকায়। বেশ হ্যান্ডসাম গুড লুকিং একটা ছেলে। প্রথম দেখায় ভালো লাগার মতো একজন। স্টাইলিশ সিল্কি কালো চুল। ঘন কালো চাপ দাঁড়ি। ফর্সা মুখ। উচা লম্বা সুঠাম দেহ। আর বেশ মার্যিত স্বভাব। মেয়েটা এসব দেখে আস্বস্ত হয় যে ছেলেটা ভালো। জারিফের উত্তরে মেয়েটা বলে,
~ জ্বী জানতে পারেন। আমি নাদিয়া ইসলাম। আপনি?
- আমি জারিফ খান। নাম তো শুনেছেন হয়তো?
~ উমম, জ্বী। আর আপনাকে দেখেছি দেখেছি মনে হয়৷
- রোলেক্সের ব্রান্ড অ্যামবাসেডর আমি। দেখবেন না আবার।
~ ওওও। আপনি অনেক ধনী।
- এভাবে বললেন যে? ধনীদের পছন্দ করেন না?
~ সত্যি বলতে না। তারা খুব স্বার্থপর হয়। তবে আপনি ভালো।
- হাহা। কিন্তু আমাকে ভালো মনে হলো কেন?
~ এই যে আমাকে হেল্প করলেন এখন আবার বাসায়ও দিয়ে আসছেন। তাই আপনি ভালো। কারণ একজন ভালো মানুষই এভাবে হেল্প করে।
নাদিয়া জারিফের এই হাসির কারণ বুঝতে পারে না। তবে নাদিয়ের কাছে জারিফের হাসিটা ভালো লাগে। একটু পর নাদিয়া আস্তে করে বলে উঠে,
~ থামান। এটাই আমার বাসা।
জারিফ গাড়ি থামায়। নেমে দরজা খুলে দেয়। নাদিয়া নেমে বলে,
~ অনেক থ্যাংকস আপনাকে। আজকে আপনি না থাকলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতো।
- আরে ও কিছুনা। সাবধানে থাকবেন।
~ আচ্ছা। তাহলে আমি আসি। ভালো থাকবেন।
- আপনিও।
নাদিয়া একটা মনমাতানো হাসি দিয়ে চলে যায়। জারিফ ওর গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পকেট থেকে ভ্যাপটা বের করে দুইটা টান দেয়। ধোঁয়া গুলো হাওয়ায় উড়ে মিলিয়ে যায়। ফোনটা বের করে দেখে নওরিনের অনেকগুলো কল। জারিফ নাদিয়ার বাসাটা আর আশপাশটা একবার দেখে চলে আসে ক্লাব কুলাবাতে। এতোক্ষণ পর নওরিন জারিফকে দেখে অস্থির হয়ে বলে,
~ কি ব্যাপার কই ছিলে? কতগুলো ফোন দিলাম ধরলে না?
- আরে চিল বেবি। একটু হারিয়ে গিয়েছিলাম। চলো উপরে যাই।
~ কি হয়েছে তোমার? ড্রিংকস করবে না?
- নাহ। আজ মজা করবো শুধু। চলো।
নাদিয়ার রেশটা জারিফ নওরিনকে দিয়ে কাটাতে চাচ্ছে। কিন্তু তা কি সম্ভব? জারিফ নিজেও জানে না।
পরদিন সকালে,
~ তুমি এরকম পাষাণ হলে কীভাবে জারিফ? আমার পুরো শরীর ব্যথা করছে। আমার কথা একটু ভাবলে না?
জারিফের মাথা ঠিক নেই নাদিয়াকে দেখার পর থেকে। নওরিনকে রাতে পশুর মতো গিলে খেয়েও ও শান্তি পায় নি। ওর নাদিয়াকে চাই যেভাবে হোক। জারিফ বিরক্ত হয়ে বলে,
- না ভাবি নাই। মজা পাইছস না। আবার কথা শুনাস! যাহ আর কখনো আমার সামনে আসবি না। নাহলে গুলি করে মেরে ফেলবো। যতসব ****
নওরিনকে রেখে উঠে জামা কাপড় পরে ফেলে জারিফ। নওরিন কান্না করছে। ও জারিফের কাছে গিয়ে কান্না করতে করতে বলে,
~ প্লিজ ভুলে বলেছি। সরি সরি। তুমি রাগ করো না। আমি আর কিছু বলবো না। তুমি যেভাবে চাও যা চাও তাই হবে। তাও আমাকে ছেড়ে যেও না। প্লিজ।
জারিফ নওরিনকে বিছানায় ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ওর উপর চরে ওকে চেপে ধরে বলে,
- চুপ....আর একটা কথা বলবি না। বলছি না আমি আগুন। আমার কাছে আসতে চাবি না। যা হয়েছে সব ভুলে যা। নাহলে শেষ হয়ে যাবি।
বলেই জারিফ বেরিয়ে পড়ে। নওরিন সেখানে বসে কান্না করছে। ও এখন বুঝতে পারছে কি ভুল ও করেছে। ও ভেবেছিলো জারিফকে ওর শরীর দিয়ে আটকে রাখবে। কিন্তু তা আর হলো না।
আমাদের সমাজের বর্তমান চিত্রটা কিন্তু ঠিক এমনই। প্রেমিকা তার প্রেমিককে ধরে রাখার জন্য তার সবকিছু বিলিয়ে দেয়। দিনশেষে তার সবকিছু কেড়ে নিয়ে প্রেমিক চলে যায়। আর মেয়েটা সব হারিয়ে চুপচাপ চোখের পানি ফেলে। আর স্মৃতির পাতায় কালো এক অধ্যায় নিয়ে বেঁচে রয় না হয় আবার একটা ভুল করে। যে ভুলের জন্য তাকে পরকালেও পস্তাতে হবে।
আজকে জারিফের শুটিং আছে। কিন্তু সেটার পাত্তা ওর কাছে নাই। ওর মাথায় এখন শুধু নাদিয়া আর ওর শরীর। নাদিয়াকে দেখার পর থেকে ওর কোনকিছুই ভালো লাগছে না। যেভাবে হোক নাদিয়াকে জারিফ ওর বেডে আনবেই। ও বাসায় গিয়ে দ্রুত ফ্রেশ হয়। শুটিং হলো ১২ টার পর। কিন্তু এখন বাজে ১০ টা। ও একদম টিপটপ রেডি হয়ে চোখে সানগ্লাসটা লাগিয়ে বেড়িয়ে পড়ে নাদিয়ার উদ্দেশ্য। কারণ ওর কাছে এমন একটা জিনিস আছে যার জন্য ও আবার নাদিয়ার সাথে দেখা করতে পারবে।
সে জিনিসটা হলো নাদিয়ার ভার্সিটির আইডি কার্ড। গতকাল রাতে এটা নাদিয়া জারিফের গাড়িতে ভুলে রেখে যায়। ওর চোখে এটা রাতেই পড়েছিল। কিন্তু ও ইচ্ছা করেই দেয় নি। জারিফ আইডি কার্ড থেকে ভার্সিটির নাম দেখে সেখানে চলে যায়। নাদিয়া একটা পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ে। জারিফ ওর গাড়ি নিয়ে ভার্সিটি এরিয়ায় ঢুকতেই সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। আর যারা চিনে তারা বলছে, দোস্ত জারিফ খান এখানে!
জারিফ গাড়ি পার্ক করে বাইরে বের হয়। আশেপাশে মেয়েরা ওকে দেখে ক্রাশ খেতে খেতে একেকজন যায় যায় অবস্থা। জারিফ তা ওর কালো সানগ্লাসের আড়ালে সব দেখছে। ওর চোখ শুধু নাদিয়াকে খুঁজছে।
অন্যদিকে,
~ এই হলো রাতের কাহানী বুঝলি? উনি না থাকলে হয়তো আমার একটা খারাপ কিছু হয়ে যেতো।(নাদিয়া)
~ হুম বুঝলাম। আচ্ছা সে দেখতে কেমন ছিলো রে? এতো রিচ বয় সে। বলনা। (ঈশিতা)
~ আর বলিস না। আমি যখন প্রথম তাকে দেখি আমি সক খাই। অসম্ভব হ্যান্ডসাম সে। স্টাইলিশ সিল্কি কালো চুল। গালে চাপ দাঁড়ি। জানিস তার চোখগুলো উফফফ! মানে প্রিন্স একটা। ক্রাশ খাওয়ার মতো।
~ কিরে তুই কি তাঁর প্রেমে পড়েছিস নাকি?(মজা করে)
~ আরে না। ক্রাশ আর কি। বাদ দে৷ হঠাৎ বৃষ্টির মতো সেও হারিয়ে গিয়েছে। উফফ, আইডি কার্ডটা যে কোথায় হারালাম তাই বুঝতে পারছি না দোস্ত। এখন কি হবে?
~ আচ্ছা তোর ক্রাশ এর গাড়িটা কি কালো ছিল রে?
~ হ্যাঁ। বাট তুই জানলি কেমনে?(অবাক হয়ে)
~ ঘুরে তাকিয়ে দেখ। নিচে কে এসেছে। বোধহয় তোকেই খুঁজছে।
নাদিয়া ঘুরে নিচে তাকিয়ে দেখে জারিফ। ও তো পুরো সকড। দূর থেকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে জারিফকে।
~ কিরে পাথর হয়ে গিয়েছিস নাকি? চল নিচে যাই।দেখি সে এখানে কেন।
~ যাবিইই?
~ হ্যাঁ। চল।
~ ওকে চল চল।
নাদিয়া খুব এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছে। এতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে ওর ভার্সিটিতে। নাদিয়া নিচে নেমে দেখে জারিফের সামনে অনেকগুলো মেয়ে। নাদিয়া আস্তে করে ওর বান্ধবী ঈশিতাকে বলে,
~ চল উপরে যাই। আমাদের এখানে কোন কাজ নেই।
~ আরে কি বলিস! একটু দেখা করি। উফফ! আসলেই অনেক হ্যান্ডসাম রে।
~ উপরে চল। নাহলে রাগ করবো।
~ একবার জিজ্ঞেস করি কেন এসেছে।
~ না। দরকার নেই৷ আমাদের জন্য সে আসে নি। দেখিস না মেয়েদের সাথে কীভাবে কথা বলছে।
~ শুধু তোর বেস্টি বলে তাকে ত্যাগ করলাম। চল উপরে যাই।
~ থ্যাংকস।
নাদিয়া আর ঈশিতা যেই ঘুরে উপরে যেতে নেয় ওমনি ওদের পিছন থেকে একটা শক্ত পুরুষালি কণ্ঠ ভেসে আসে।
নাদিয়া পাথরের মতো দাঁড়িয়ে যায়। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না। ও ওর বান্ধবীর দিকে তাকায়। ইশারায় বলে, সত্যি ডাক দিয়েছে? ওর বান্ধবী মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। নাদিয়া আস্তে আস্তে ঘুরে তাকায়। এরমধ্যে জারিফ এসে নাদিয়াদের কাছে দাঁড়ায়। জারিফ একদম নাদিয়ার সামনে। ওরা একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। জারিফের মুখে মুচকি হাসি। নাদিয়ার মুখে বাকরুদ্ধতার ছাপ। নাদিয়াকে চুপ দেখে জারিফ বলে উঠে,
- আপনাকেই খুঁজছিলাম এতক্ষণ। যাক এ্যাট লাস্ট পাওয়া গেল।
~ আমাকে খুঁজছিলেন!
- জ্বী।
~ কেন!
- ওয়েট...এই যে এটার জন্য।
নাদিয়া অবাক হয়ে জারিফের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর আইডি কার্ড। মুহূর্তেই ও খুব খুশী হয়ে যায়। আইডি কার্ডটা নিয়ে ও বলে,
~ এটা আপনি পেলেন কই?(অবাক হয়ে)
- আমার গাড়িতে কাল রাতে রেখে গিয়েছিলেন। তাই নিয়ে আসলাম।
~ ওও। থ্যাঙ্কিউ থ্যাঙ্কিউ। আপনি সত্যিইই অনেক ভালো। আমার আবারও হেল্প করলেন। থ্যাঙ্কিউ ইউ সো মাচ।
- হাহা। এতো থ্যাংকস দিতে হবে না। হেল্প করতে আমার ভালোই লাগে।
নাদিয়া কিছুটা লজ্জা পাচ্ছে। কথা ঘুরানোর জন্য বলে,
~ এটা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ঈশিতা। ঈশিতা উনি সেই জারিফ খান। যে গতরাতে আমার সব বাচিঁয়েছে।
জারিফ এ কথা শুনে মুচকি হাসি দিয়ে মনে মনে বলে,"হাহা আমি বাচিঁয়েছি আবার আমিই তোমার সব কেড়ে নিব। যে নেশা লাগিয়েছো তার শোধ নিব সব সুদে আসলে। জাস্ট ওয়েট বেবিইই। তোমাকে পটিয়ে নি খালি।" ঈশিতা জারিফকে বলে,
~ থ্যাংকস আমার বেস্টিটাকে বাঁচানোর জন্য।
- ওয়েলকাম। আপনাদের ক্লাস কি শেষ?
~ আজ আমাদের ক্লাস নেই। স্যার আসে নি। তাই চলে যাবো।
- ওহ। তাহলে চলুন এককাপ করে কফি হয়ে যাক। না করবেন না। আমার পক্ষ থেকে কিন্তু।
ঈশিতা বুঝতে পারে জারিফ যেহেতু নাদিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছে তাই ওদের একসাথে পাঠানো উচিৎ। ঈশিতা বলে উঠে,
~ ভাইয়া আমারতো একটু কাজ আছে। আপনি নাদিয়াকে নিয়ে যান।
~ আরে কি বলিস তুই! তোকে ছাড়া যাবো নাকি। না না আমিও যাবো না।
ঈশিতা নাদিয়ার কাছে এসে কানে কানে বলে,
~ আরে বোকা সে তোকে ডেটে নিয়ে যেতে চাচ্ছে বুঝিস না কেন। এরকম ছেলের সাথে ঘুরতে যাওয়া মেয়েদের স্বপ্ন। আর তুই কিনা। চুপ থাক বোকা।
~ ভাইয়া ও যাবে। ওকে নিয়ে যান।
- কি যাবেন? নাকি সমস্যা আছে?
~ না না নেই। যাবো যাবো।
- ঈশিতা আপনি আসলে কিন্তু ভালো হতো।
~ আরেকদিন।
- ওকে। নাদিয়া চলুন যাওয়া যাক।
~ জ্বী। চলুন। (লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে)
জারিফ নাদিয়াকে নিয়ে সবার সামনে ওর গাড়িতে বসায় ওর পাশেই। সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। অনেক মেয়ে হিংসায় জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। নাদিয়া সব বুঝতে পারছে। জারিফ গাড়িতে বসে ওর ফোনটা বের করে কাকে যেন কল দিয়ে বলে,
নাদিয়া শুধু জারিফের দিকে তাকিয়ে আছে আড় চোখে। লজ্জায় মেয়েটা শেষ। জারিফ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে লাউড হোলারে পুরো ভার্সিটি দাপিয়ে নাদিয়াকে নিয়ে চলে আসে। ও মনে মনে বলছে,
- রেডি থাকো নাদিয়া বেবিইই। আজ তোমাকে একটু সারপ্রাইজ দিব। মিষ্টি সারপ্রাইজ। হাহা।
.
.
চলবে...............♥
গল্প :- রোদের পর বৃষ্টি পর্ব :- ০২ . . . -: জারিফের বুকের সাথেই মেয়েটা লেগে ছিল। ও এবার মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটা ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। জারিফ মুচকি হাসি দিয়ে মেয়েটাকে দেখছে। ওর লাইফে ও বহু মেয়েকে দেখেছে। শুধু দেখেছে বললে ভুল হবে তাদের শরীরের স্বাদ ও নিয়েছে। কিন্তু এই মেয়ের মতো কাউকে ও দেখেনি। মেয়েটা আস্তে করে ওর চোখ খুলে জারিফের দিকে তাকায়।
লাবণ্যময় দুধে আলতা রঙের মুখখানায় আছে বড় বড় পাপড়ির আড়ালে ভাসানো মুক্তার মতো নয়নজোড়া। সুন্দর একটা নাক। অসম্ভব মিষ্টি গোলাপি ঠোঁটটার কোণায় আছে একটা ছোট্ট কালো তিল। যেটা জারিফকে খুব বেশি টানছে। জারিফের মনে চাচ্ছে আজ নওরিনের বদলে ওকেই ভোগ করবে। দেহের গড়নও একদম মনমাতানো। জারিফের অসম্ভব নেশা ধরেছে। এই নেশা এই অপরিচিতা মেয়েকে ভোগ না করা পর্যন্ত শেষ হবে না। জারিফের মাথায় এখন এই অপরিচিতা ছাড়া আর কেউ নেই।
মেয়েটা আস্তে আস্তে করে অন্যদিকে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। জারিফের মতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে ওর দিকে মুচকি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা মুহূর্তেই দূরে সরে দাঁড়ায় আর বলে,
~ আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না। তাও অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি আজ একটা মেয়ের জীবন বাচিঁয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জারিফের ঘোর কাটে মেয়েটার মধুর কণ্ঠে। তবে ভোগ করার নেশাটা না। ও কিঞ্চিৎ হাসি দিয়ে বলে,
মেয়েটা ওদিকে তাকিয়ে ভয় পায়। অসহায় ভাবে বলে,
~ আপনার কোন সমস্যা হবে না? বোধহয় কোথাও যাচ্ছিলেন।
জারিফ হাসি দিয়ে ওর পাশের সিটের দরজাটা খুলে দিয়ে মেয়েটিকে বসিয়ে ও অন্যপাশে ওর সিটে গিয়ে বসে। আর বলে,
জারিফ গাড়ি চালাচ্ছে আর আঁড় চোখে মেয়েটাকে বারবার দেখছে। এই মেয়েকে ওর চাই ই চাই। যেভাবে হোক চাই। জারিফের মাথায় অনেক কিছু চলছে। ও মেয়েটার সম্পর্কে জানার জন্য বলে,
মেয়েটা জারিফের দিকে তাকায়। বেশ হ্যান্ডসাম গুড লুকিং একটা ছেলে। প্রথম দেখায় ভালো লাগার মতো একজন। স্টাইলিশ সিল্কি কালো চুল। ঘন কালো চাপ দাঁড়ি। ফর্সা মুখ। উচা লম্বা সুঠাম দেহ। আর বেশ মার্যিত স্বভাব। মেয়েটা এসব দেখে আস্বস্ত হয় যে ছেলেটা ভালো। জারিফের উত্তরে মেয়েটা বলে,
~ জ্বী জানতে পারেন। আমি নাদিয়া ইসলাম। আপনি?
~ উমম, জ্বী। আর আপনাকে দেখেছি দেখেছি মনে হয়৷
~ ওওও। আপনি অনেক ধনী।
~ সত্যি বলতে না। তারা খুব স্বার্থপর হয়। তবে আপনি ভালো।
~ এই যে আমাকে হেল্প করলেন এখন আবার বাসায়ও দিয়ে আসছেন। তাই আপনি ভালো। কারণ একজন ভালো মানুষই এভাবে হেল্প করে।
নাদিয়া জারিফের এই হাসির কারণ বুঝতে পারে না। তবে নাদিয়ের কাছে জারিফের হাসিটা ভালো লাগে। একটু পর নাদিয়া আস্তে করে বলে উঠে,
~ থামান। এটাই আমার বাসা।
জারিফ গাড়ি থামায়। নেমে দরজা খুলে দেয়। নাদিয়া নেমে বলে,
~ অনেক থ্যাংকস আপনাকে। আজকে আপনি না থাকলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতো।
নাদিয়া একটা মনমাতানো হাসি দিয়ে চলে যায়। জারিফ ওর গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পকেট থেকে ভ্যাপটা বের করে দুইটা টান দেয়। ধোঁয়া গুলো হাওয়ায় উড়ে মিলিয়ে যায়। ফোনটা বের করে দেখে নওরিনের অনেকগুলো কল। জারিফ নাদিয়ার বাসাটা আর আশপাশটা একবার দেখে চলে আসে ক্লাব কুলাবাতে। এতোক্ষণ পর নওরিন জারিফকে দেখে অস্থির হয়ে বলে,
~ কি ব্যাপার কই ছিলে? কতগুলো ফোন দিলাম ধরলে না?
নাদিয়ার রেশটা জারিফ নওরিনকে দিয়ে কাটাতে চাচ্ছে। কিন্তু তা কি সম্ভব? জারিফ নিজেও জানে না।
পরদিন সকালে,
~ তুমি এরকম পাষাণ হলে কীভাবে জারিফ? আমার পুরো শরীর ব্যথা করছে। আমার কথা একটু ভাবলে না?
জারিফের মাথা ঠিক নেই নাদিয়াকে দেখার পর থেকে। নওরিনকে রাতে পশুর মতো গিলে খেয়েও ও শান্তি পায় নি। ওর নাদিয়াকে চাই যেভাবে হোক। জারিফ বিরক্ত হয়ে বলে,
নওরিনকে রেখে উঠে জামা কাপড় পরে ফেলে জারিফ। নওরিন কান্না করছে। ও জারিফের কাছে গিয়ে কান্না করতে করতে বলে,
~ প্লিজ ভুলে বলেছি। সরি সরি। তুমি রাগ করো না। আমি আর কিছু বলবো না। তুমি যেভাবে চাও যা চাও তাই হবে। তাও আমাকে ছেড়ে যেও না। প্লিজ।
জারিফ নওরিনকে বিছানায় ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ওর উপর চরে ওকে চেপে ধরে বলে,
বলেই জারিফ বেরিয়ে পড়ে। নওরিন সেখানে বসে কান্না করছে। ও এখন বুঝতে পারছে কি ভুল ও করেছে। ও ভেবেছিলো জারিফকে ওর শরীর দিয়ে আটকে রাখবে। কিন্তু তা আর হলো না।
আমাদের সমাজের বর্তমান চিত্রটা কিন্তু ঠিক এমনই। প্রেমিকা তার প্রেমিককে ধরে রাখার জন্য তার সবকিছু বিলিয়ে দেয়। দিনশেষে তার সবকিছু কেড়ে নিয়ে প্রেমিক চলে যায়। আর মেয়েটা সব হারিয়ে চুপচাপ চোখের পানি ফেলে। আর স্মৃতির পাতায় কালো এক অধ্যায় নিয়ে বেঁচে রয় না হয় আবার একটা ভুল করে। যে ভুলের জন্য তাকে পরকালেও পস্তাতে হবে।
আজকে জারিফের শুটিং আছে। কিন্তু সেটার পাত্তা ওর কাছে নাই। ওর মাথায় এখন শুধু নাদিয়া আর ওর শরীর। নাদিয়াকে দেখার পর থেকে ওর কোনকিছুই ভালো লাগছে না। যেভাবে হোক নাদিয়াকে জারিফ ওর বেডে আনবেই। ও বাসায় গিয়ে দ্রুত ফ্রেশ হয়। শুটিং হলো ১২ টার পর। কিন্তু এখন বাজে ১০ টা। ও একদম টিপটপ রেডি হয়ে চোখে সানগ্লাসটা লাগিয়ে বেড়িয়ে পড়ে নাদিয়ার উদ্দেশ্য। কারণ ওর কাছে এমন একটা জিনিস আছে যার জন্য ও আবার নাদিয়ার সাথে দেখা করতে পারবে।
সে জিনিসটা হলো নাদিয়ার ভার্সিটির আইডি কার্ড। গতকাল রাতে এটা নাদিয়া জারিফের গাড়িতে ভুলে রেখে যায়। ওর চোখে এটা রাতেই পড়েছিল। কিন্তু ও ইচ্ছা করেই দেয় নি। জারিফ আইডি কার্ড থেকে ভার্সিটির নাম দেখে সেখানে চলে যায়। নাদিয়া একটা পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ে। জারিফ ওর গাড়ি নিয়ে ভার্সিটি এরিয়ায় ঢুকতেই সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। আর যারা চিনে তারা বলছে, দোস্ত জারিফ খান এখানে!
জারিফ গাড়ি পার্ক করে বাইরে বের হয়। আশেপাশে মেয়েরা ওকে দেখে ক্রাশ খেতে খেতে একেকজন যায় যায় অবস্থা। জারিফ তা ওর কালো সানগ্লাসের আড়ালে সব দেখছে। ওর চোখ শুধু নাদিয়াকে খুঁজছে।
অন্যদিকে,
~ এই হলো রাতের কাহানী বুঝলি? উনি না থাকলে হয়তো আমার একটা খারাপ কিছু হয়ে যেতো।(নাদিয়া)
~ হুম বুঝলাম। আচ্ছা সে দেখতে কেমন ছিলো রে? এতো রিচ বয় সে। বলনা। (ঈশিতা)
~ আর বলিস না। আমি যখন প্রথম তাকে দেখি আমি সক খাই। অসম্ভব হ্যান্ডসাম সে। স্টাইলিশ সিল্কি কালো চুল। গালে চাপ দাঁড়ি। জানিস তার চোখগুলো উফফফ! মানে প্রিন্স একটা। ক্রাশ খাওয়ার মতো।
~ কিরে তুই কি তাঁর প্রেমে পড়েছিস নাকি?(মজা করে)
~ আরে না। ক্রাশ আর কি। বাদ দে৷ হঠাৎ বৃষ্টির মতো সেও হারিয়ে গিয়েছে। উফফ, আইডি কার্ডটা যে কোথায় হারালাম তাই বুঝতে পারছি না দোস্ত। এখন কি হবে?
~ আচ্ছা তোর ক্রাশ এর গাড়িটা কি কালো ছিল রে?
~ হ্যাঁ। বাট তুই জানলি কেমনে?(অবাক হয়ে)
~ ঘুরে তাকিয়ে দেখ। নিচে কে এসেছে। বোধহয় তোকেই খুঁজছে।
নাদিয়া ঘুরে নিচে তাকিয়ে দেখে জারিফ। ও তো পুরো সকড। দূর থেকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে জারিফকে।
~ কিরে পাথর হয়ে গিয়েছিস নাকি? চল নিচে যাই।দেখি সে এখানে কেন।
~ যাবিইই?
~ হ্যাঁ। চল।
~ ওকে চল চল।
নাদিয়া খুব এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছে। এতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে ওর ভার্সিটিতে। নাদিয়া নিচে নেমে দেখে জারিফের সামনে অনেকগুলো মেয়ে। নাদিয়া আস্তে করে ওর বান্ধবী ঈশিতাকে বলে,
~ চল উপরে যাই। আমাদের এখানে কোন কাজ নেই।
~ আরে কি বলিস! একটু দেখা করি। উফফ! আসলেই অনেক হ্যান্ডসাম রে।
~ উপরে চল। নাহলে রাগ করবো।
~ একবার জিজ্ঞেস করি কেন এসেছে।
~ না। দরকার নেই৷ আমাদের জন্য সে আসে নি। দেখিস না মেয়েদের সাথে কীভাবে কথা বলছে।
~ শুধু তোর বেস্টি বলে তাকে ত্যাগ করলাম। চল উপরে যাই।
~ থ্যাংকস।
নাদিয়া আর ঈশিতা যেই ঘুরে উপরে যেতে নেয় ওমনি ওদের পিছন থেকে একটা শক্ত পুরুষালি কণ্ঠ ভেসে আসে।
নাদিয়া পাথরের মতো দাঁড়িয়ে যায়। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না। ও ওর বান্ধবীর দিকে তাকায়। ইশারায় বলে, সত্যি ডাক দিয়েছে? ওর বান্ধবী মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। নাদিয়া আস্তে আস্তে ঘুরে তাকায়। এরমধ্যে জারিফ এসে নাদিয়াদের কাছে দাঁড়ায়। জারিফ একদম নাদিয়ার সামনে। ওরা একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। জারিফের মুখে মুচকি হাসি। নাদিয়ার মুখে বাকরুদ্ধতার ছাপ। নাদিয়াকে চুপ দেখে জারিফ বলে উঠে,
নাদিয়া অবাক হয়ে জারিফের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর আইডি কার্ড। মুহূর্তেই ও খুব খুশী হয়ে যায়। আইডি কার্ডটা নিয়ে ও বলে,
~ এটা আপনি পেলেন কই?(অবাক হয়ে)
~ ওও। থ্যাঙ্কিউ থ্যাঙ্কিউ। আপনি সত্যিইই অনেক ভালো। আমার আবারও হেল্প করলেন। থ্যাঙ্কিউ ইউ সো মাচ।
নাদিয়া কিছুটা লজ্জা পাচ্ছে। কথা ঘুরানোর জন্য বলে,
~ এটা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ঈশিতা। ঈশিতা উনি সেই জারিফ খান। যে গতরাতে আমার সব বাচিঁয়েছে।
জারিফ এ কথা শুনে মুচকি হাসি দিয়ে মনে মনে বলে,"হাহা আমি বাচিঁয়েছি আবার আমিই তোমার সব কেড়ে নিব। যে নেশা লাগিয়েছো তার শোধ নিব সব সুদে আসলে। জাস্ট ওয়েট বেবিইই। তোমাকে পটিয়ে নি খালি।" ঈশিতা জারিফকে বলে,
~ থ্যাংকস আমার বেস্টিটাকে বাঁচানোর জন্য।
~ আজ আমাদের ক্লাস নেই। স্যার আসে নি। তাই চলে যাবো।
ঈশিতা বুঝতে পারে জারিফ যেহেতু নাদিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছে তাই ওদের একসাথে পাঠানো উচিৎ। ঈশিতা বলে উঠে,
~ ভাইয়া আমারতো একটু কাজ আছে। আপনি নাদিয়াকে নিয়ে যান।
~ আরে কি বলিস তুই! তোকে ছাড়া যাবো নাকি। না না আমিও যাবো না।
ঈশিতা নাদিয়ার কাছে এসে কানে কানে বলে,
~ আরে বোকা সে তোকে ডেটে নিয়ে যেতে চাচ্ছে বুঝিস না কেন। এরকম ছেলের সাথে ঘুরতে যাওয়া মেয়েদের স্বপ্ন। আর তুই কিনা। চুপ থাক বোকা।
~ ভাইয়া ও যাবে। ওকে নিয়ে যান।
~ না না নেই। যাবো যাবো।
~ আরেকদিন।
~ জ্বী। চলুন। (লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে)
জারিফ নাদিয়াকে নিয়ে সবার সামনে ওর গাড়িতে বসায় ওর পাশেই। সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। অনেক মেয়ে হিংসায় জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। নাদিয়া সব বুঝতে পারছে। জারিফ গাড়িতে বসে ওর ফোনটা বের করে কাকে যেন কল দিয়ে বলে,
আজকে সব ক্যান্সেল করে দেও। আমি বিজি আছি। আর একটা ম্যাসেজ করে দিচ্ছি সেটা যেন ঠিকঠাক মতো রেডি থাকে।
ওকে স্যার।
নাদিয়া শুধু জারিফের দিকে তাকিয়ে আছে আড় চোখে। লজ্জায় মেয়েটা শেষ। জারিফ গাড়ি স্টার্ট দিয়ে লাউড হোলারে পুরো ভার্সিটি দাপিয়ে নাদিয়াকে নিয়ে চলে আসে। ও মনে মনে বলছে,