এইমাত্র মৌ এর সাথে খুব তৃপ্তির একটা সহবাস শেষ করে উঠলাম। উঠেই ফ্রিজ থেকে বিয়ারের ক্যান হাতে নিয়ে আবারো ওর পাশে শুয়ে পড়েছি। আমরা দুইজন ই পুরো নগ্ন অবস্থায়, কারো শরীরে একটা সুতা পর্যন্ত নেই। কত বছর পর এই দেহখানি আবারও ভোগ করলাম। ওর প্রতি এখন আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। ওর দিকে চোখ পড়তেই আবারো ঘেন্না লাগতে শুরু করলো। তাই বিয়ারে চুমুক দিয়ে চোখ দুইটা বন্ধ করে ফেললাম। .. .. .. চোখ বন্ধ রেখেই তিন বছর আগের সেই মুহূর্তে ফিরে গেলাম। হু ঠিক এভাবেই ওইদিন তার সাথে আমি শুয়ে ছিলাম। ওকে যে কি পরিমাণ ভালবাসতাম সেটা বলে বুঝানো আদৌ সম্ভব না। আমার পুরোটা দুনিয়া জুড়েই ছিল শুধু সে। হ্যা আমাদের মধ্যে এই নিষিদ্ধ সম্পর্কটি প্রায় সময়ই ঘটতো। জোড় করে যে করতাম তা না, উভয়ের ইচ্ছাতেই হতো। দুজনেই বেশ উপভোগ করতাম। যাইহোক এভাবে লাগামহীন মেলামেশার ফলে সে কিছুদিন পর জানতে পারে যে, ও প্রেগনেন্ট। আমি খুব একটা অবাক হই নি। ২৫ বছরের একজন পুরুষ আমি। তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে মোটামুটি একটা ভালো চাকরি করছি। ওকে বিয়ে করার সামর্থ্য আমার আছে। তাই বিয়ে করে নিব তাহলেই হয়ে যাচ্ছে। হ্যা ভালবাসার মানুষটিকে তো সারাজীবন পাশেই রাখতে হবে। সমাজের মানুষ হয়তো শুরুর দিকে একটু বাঁকা চোখে তাকাতে পারে কিন্তু কার কি যায় আসে। এই সমাজ আমাকে খাওয়ায় না, পড়ায় না। শুধু নিন্দাগুলোই ধরতে জানে। .. .. ওর দিকে তাকালাম। চোখ-মুখ দেখেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, সে বেশ ভয় পেয়ে গেছে। একটা মেয়ে প্রেগন্যান্ট তো ভয় পাবার ই কথা। আস্তে আস্তে মৌ এর হাতও কাঁপছে। এটা দেখে ওর হাত থেকে মেডিক্যাল রিপোর্টটা আমিই নিয়ে নিলাম। রিপোর্টে কিছুক্ষন চোখ বুলিয়ে নিয়ে আবার ওর দিকে তাকিয়ে থাকি। তারপর সাথে সাথেই বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললাম, -তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন? আমি আছি তো। আমি অন্যদের মত না যে তোমাকে এখন অ্যাবর্শন করতে বলব। চল আজ ই বিয়ে করে ফেলি। এরপর থেকে তো তুমি আমার বৌ হয়ে যাবা। শুধু মৌ থেকে হয়ে যাবা বৌ। তখন কেউ আঙ্গুল তুলে কিচ্ছু বলতে পারবে না। কথা শেষ হওয়ার মুহূর্তের মধ্যেই ও আমাকে একটু ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে বলে, -Are you mad Farabi! I’m just 22 years old. What are you talking about? It’s modern generation. Come on. Definitely I will go for abortion. এটা শুনার পর তো আমি আমার নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বলে কি এই মেয়ে! এখন তো আমার ই ঝিমানি ভাব চলে আসছে। আমি বললাম, -Hey hey are you serious! Don’t do that please. Let me explain. We have to sort out this problem. Abortion is not a solution. And immediately I’m going to marry you. -Sorry. I’m not ready. Right now my career, my futures are only in my mind. That’s all our mistake. -Yah that was our biggest mistake. But let it be right. Now we have to do the right thing. Please don’t go for abortion. It’s a murder. -সরি ফারাবী, আমি পারব না। আমাকে মাফ করে দিও প্লিজ। এটা বলেই সে হনহনিয়ে আমার সামনে থেকে চলে গেলো। এই যে গেলো, আজও গেলো, কালও গেলো, একদম ভাল করেই গেলো। তার ওপর সে তার ফোন নং, বাসার ঠিকানা সবকিছু চেঞ্জ করে ফেলেছে। কনটাক্ট করার আর কোনো উপায় রাখে নি। কিন্তু কেন এমন টা করলো সেটাই আমার মাথায় ধরলো না। কোনোভাবেই কোনো ‍কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না। .. .. এর এক সপ্তাহ পর ওর কোনো এক বান্ধবীর কাছ থেকে জানতে পারি যে, ও অ্যাবর্শন করে ফেলেছে। এটা শুনার পর ই মাথাটা একটা চক্কর দিয়ে উঠলো। সবকিছু কেমন জানি লাগছিলো। আমার মনে হচ্ছিল, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধী আমি। আমার অনেক বড় একটা ভুল হয়েছে। যেই ভুলের কিনা কোনো সমাধান নেই। এই দুজনের নিষিদ্ধ তৃপ্তির জন্য একটা প্রাণ এই পৃথিবীর আলো দেখতে পারলো না। জানি না নিজেকে আমি কখনো ক্ষমা করতে পারব কিনা। যাইহোক বিষয়টা ওখানেই শেষ নয়। এর সাত মাস পর ই শুনলাম যে ওর নাকি কার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে। এত বড় একটা ধাক্কা! সামলানোর মত না। তার না ক্যারিয়ার ছিল, ফিউচার ছিল। সাত মাসেই কি এসব শেষ হয়ে গেল নাকি। কত বড় একটা ধোঁকা খেলাম আমি। তাই না?? .. .. আচ্ছা এতকিছুর পরেও ওর জন্য ঠিকই আমার আফসোস হচ্ছে, কষ্ট হচ্ছে! ওর থেকে সম্ভাব্য যা যা পাওয়ার সব ই তো আমি পেয়েছি। ওর সাথে সব ধরনের সুখের অনুভুতির সাক্ষী আমি। তাকে অনেক ভোগও করেছি। এর থেকে তো আর বেশি কিছু চাওয়ার থাকে না আসলে। তাই না? নাহ কিছু একটা তো অবশ্যই বাদ আছে। যেটা আমি পাই নি ওর কাছ থেকে। এটা ভেবেই খুব কষ্ট হচ্ছে, কষ্টে বুক ফেটে যাওয়ার মত অবস্থা। বেশ কয়েকবার মনে হয়েছে- সুইসাইড করে ফেলি। কিন্তু এটা তো কোনো সমাধান হতে পারে না। তাহলে দুনিয়াও গেল, পরকালও গেল। এভাবে নিজেকে খুব কষ্টে একটু একটু করে টিকিয়ে রেখেছি। চাকরি টাও ছেড়ে দেই। মানে আমার অবস্থা পুরো বখে যাওয়ার মতে হয়ে পড়েছিল। এরপর আমাকে রিহ্যাবে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে মোটামুটি একটু ভাল অবস্থায় এসে তিন মাস পর ছাড়া পাই। তখন একটা বিজনেস শুরু করি। তারপর এতদিনে তিলে তিলে এখন ভালো একটা পজিশনে চলে আসি। আপাতত আর কোনো সমস্যা ছিল না। তবুও প্রতি রাতেই ঘুমাতে যাওয়ার সময় ঠিকই ওর কথা খুব মনে পড়তো। কিন্তু নিজেকে অনেক ভাবে শান্তনা দিয়ে রাখতাম। .. .. আচ্ছা যাইহোক সে তো ঠিক ই সব ছেড়ে-ছুড়ে দিয়ে অন্য একজনের সাথে সংসার সাজিয়েছে। কিন্তু না, এখানেও নাকি ঝামেলা শুরু হল। ওর স্বামীর সাথে ওর বনিবনা হচ্ছে না। কারণ ওর স্বামীর ই নাকি অন্য একটা মেয়ের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক আছে। ওকে নাকি টর্চারও করতো মাঝেমধ্যে। এরকম আরো অনেক সমস্যা। তারপর যা হবার তাই হলো। ওই স্বামীর সাথে সে আর থাকতে পারে নি। ওদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এই খবরটা শুনার পর খুব পৈশাচিক আনন্দ পেয়েছিলাম। যেটা বলে বুঝানোর মত না। .. .. .. তো এই মৌ আবার ঘুরে ফিরে সেই আমার কাছেই আসলো এখন। হেহেহে খুব মজার বিষয়। তাই না? হ্যা আমার কাছেই তো আসবে। কারণ এখন তো এটা ছাড়া আর কোনো অপশন নেই তার কাছে। তারপর এই যে দেখেন, এতদিন যে এতকিছু হলো কিন্তু ঠিকই ও সবকিছু ভুলে বিবস্ত্র হয়ে এখন আমার বিছানায় শুয়ে আছে। সে যে আবার আসতে চেয়েছিল আমি একবারের জন্যেও ওকে না করি নি। কেন না করি নি জানেন,? .. .. তার প্রতি আমার অনেক অনেক ক্রোধ, জেদ জমা হয়ে আছে। এই ক্রোধের প্রতিটি কণার উসল আমি তুলব। এক এক করে তুলব।

-

লেখকের কিছু কথাঃ কিছু কিছু জায়গায় শব্দচয়নের জন্য আমি দুঃখিত। কিন্তু এখানে প্রকাশ করার মত এর থেকে ভাল কোনো শব্দ ভান্ডার আমার জানা ছিল না। ------------(চলবে)-----------

“#জেদ” (প্রথম পর্ব)

1
$
User's avatar
@Mdemon456 posted 3 years ago

Comments