সাইকো_লাভার

সজীব মাহমুদ নীল পর্ব=০২

কিছু সময় পর সঞ্চারী আবার ঘরে ফিরে এলো।কিন্তু, মেঘ কোথায়, পাগলের মতো এদিক ওদিক খুঁজে, দেখল মেঘ আলমারির কোনায়, মাথা হেলিয়ে দিয়েছে।মনে শান্তি ফিরে পায়।মেঘের কাছে গিয়ে দেখে, মাথার সামনের চুলগুলো থেকে তখনও টুপটুপ করে জল পরছে।গায়ের কালো রঙের টি-শার্ট টা পুরো ভিজে গায়ের সাথে আটকে গেছে।কিন্তু, গায়ে হাত দিতেই সঞ্চারী পুরো চমকে উঠল।গায়ে ভীষণ জ্বর।সঞ্চারী তারাতারি বায়রে বেড়িয়ে এসে,ওর সিকিউরিটি গার্ডদের ডাকে।ওরা এসে মেঘকে খাটে তোলে।মেঘের কোনো সার নেই। সঞ্চারী ডাক্তারকে কল করল।ঘরে বড়ো আলোটা এখন জ্বলছে।

প্রায়, আধ ঘন্টা পর ডাক্তার সোম এলেন।উনি মেঘ কে দেখে বললেন নরম‍্যাল ফিবার।কয়েকটি মেডিসিন প্রেসক্রিপসানে লিখে দিলেন।এবং কপালে জলপট্টি দিতে বললেন কয়েকবার, তারপরও যদি কোনো উন্নতি না হয়,তাহলে কাল আরও একবার কল করতে। ডাক্তার চলে গেলে সঞ্চারী মেডিসিন গুলো আনতে দেয়।এবং নিজে একটি রুমাল আর বাটিতে জল নিয়ে মেঘের মাথায় জলপট্টি দিতে থাকে। এবার পাঠকদের কাছে মেঘের বর্ণনা আমি পরিষ্কার করে বলছি। পুরো নাম মেঘবর্ণ চক্রবর্তী।বয়স বত্রিশ এর কোটায়।নম্র এবং ভদ্র।মিষ্টিভাষী একটি ছেলে।তাকে দেখে মনে হয়, এই তেয়িশের আশেপাশে তার বয়স‌।বেশ লম্বা।সুঠাম দেহ।দুধেআলতা গায়ের রঙ।টানা টানা চোখদুটো আরো সুন্দর করে তুলেছে তার ভ্রূ-যুগল এবং বড়ো বড়ো চোখের পাতা।ঠোঁট দুটি পুরো রসগোল্লার মতো ফোলাফোলা,এবং গোলাপি রঙের।তাকে দেখে যেকোনো মেয়েই তার প্রেমে পড়ে যাবে।সেখানে সঞ্চারী তো বাচ্চা মেয়ে। তিনি বায়োলজির বোটানির পার্টটা পড়ান। তিনি ব‍্যোটানির ওপর মাস্টার্স করেছে।এবং বর্তমানে সে এই বারাসাত গর্ভমেন্ট কলেজের শিক্ষক। তবে বন্ধুরা, আমাদের সঞ্চারী কে দেখতেও কিন্তু খারাপ নয়।খুবই মিষ্টি একটি মেয়ে।শ‍্যামবর্ণ গায়ের রঙ।টানা টানা চোখ।আর সেই চোখে রয়েছে যেন এক মায়াবি দৃষ্টি।অত্যন্ত নরম মনের মেয়ে এই সঞ্চারী। কাউকে একটা শুচ ফোটাতেও তার হাত কাঁপে।কলেজে আসার পর তাকে অনেক রকম ভাবে র‍্যাগিং করা হয়েছে। কিন্তু,বলে না,আমরা যাকে একবার নিজের বলে গ্রহণ করে নেই,আর তাকেই শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রাখতে চাই।সেটাই ঘটছিল সঞ্চারীর জীবনেও। ও ছোট থেকেই বাবা মা কে কাছে পায়নি।বাবা মায়ের আদর কি জিনিস সেটা সঞ্চারী জানেনা। যখন এসকারসানে গিয়ে, মেঘবর্ণ সঞ্চারীকে ধর্ষণ হ‌ওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে নিয়েছিল, সেদিন থেকেই সঞ্চারী মেঘের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ে।ও মনে করেছিল, মেঘ যদি ওর জীবনে আসে তাহলে,ওর এলোমেলো হয়ে যাওয়া জীবনটা,একটু সুন্দর হতে পারে। সুন্দর ভাবে বাঁচার অধিকার সবার কাছে, তাহলে সঞ্চারী কেন এর বায়রে যাবে।আর যেই মেয়েটা ছোটো থেকে কারো ভালোবাসা পায়নি সে যদি আজ কারোর ভালোবাসা পেতে চায়, সেখানে তো কোনো দোষ নেই। ঢং ঢং ঢং......... ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সঞ্চারী দেখল বাড়োটা বাজে। মেঘের গায়ে হাত দিল,এখন জ্বরটা অনেক নেমেছে।মেঘ কিছু বিরবির করছিল।সঞ্চারী কানটা মেঘের ঠোঁটের কাছে নিয়ে গেল। "আমাকে ছেড়ে দাও সঞ্চারী, আমাকে যেতে দাও।আমার লাগছে সঞ্চারী।" সঞ্চারী মেঘের থেকে সরে এলো।মেঘের ঠোঁটের দিকে তাকাল।ঠোঁট দুটো পুরো ফুলে ফুলে উঠেছে। তার সাথে কেটেও গেছে।নিজের ওপর ভীষণ রাগ হলো সঞ্চারীর।পাসের দেওয়ালে ক্রমাগত ঘুসি চালাচ্ছে।মেঘের ঘুম ভেঙেছে।

"কি করছ এগুলো তুমি।আহ্"

"না মেঘ আমি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি।আমাকে এখন তুমি কষ্ট পেতে দাও।"

"সঞ্চারী আমার কথা শোনো।এমন কোরোনা।তোমার হাতের থেকে রক্ত পড়ছে।আহঃ মা"

( টলতে টলতে মেঘ বিছানা থেকে নেমে সঞ্চারীর কাছে আসতে যায়।কিন্তু, শরীর দূর্বল থাকার কারণে মাথা ঘুড়িয়ে পড়েই যাচ্ছিল, সঞ্চারী ধরে নেয়। )

"আমাকে কষ্ট পেতে দাও মেঘ,আমি তোমার সাথে অন‍্যায় করেছি।আমি খুব খারাপ।আমাকে মরে যেতে দাও।তাহলে তুমি মুক্তি পেয়ে যাবে।আমাকে মরে যেতে দাও।"

সঞ্চারী মেঘকে মেঝের মধ্যে বসিয়ে দিয়ে, ওকে দুই হাত দিয়ে ধরে কথাগুলি বলতে থাকে।চোখ দিয়ে ক্রমাগত জল গড়িয়ে পড়ছে সঞ্চারীর। মেঘ সঞ্চারীর ঠোঁটে আঙ্গুল রাখে।আর কিছু বলতে পারে না সঞ্চারী।ঈশৎ কেঁপে ওঠে সঞ্চারীর দেহ।কোনো পুরুষ মানুষের ছোঁয়া প্রথম সে নিজের শরীরে পেল। নিঃপাপ,একটি মেয়ে।সঞ্চারীকে দেখে মায়া হয় মেঘের।সঞ্চারীর কপালে একটা চুমু খায় মেঘ চোখের জলটা মুছে বুকের মধ্যে চেপে ধরে মেয়েটিকে।সঞ্চারী ও যেন একটা আশ্রয় পেয়ে সেই ছায়ায় নিজেকে ঢেকে নেয়।

সঞ্চারীর হাত দিয়ে এখনও রক্ত গড়াচ্ছে।সঞ্চারী কে একটু শান্ত করে ওকে ধরেই আস্তে খাটের দিকে এগিয়ে যায়।মেঘ জানে ও যা বলবে সঞ্চারী তাই করবে।খাটের ওপ‍র বসে সঞ্চারী কে ফাস্ট‌এড বক্স আনতে বলে।সঞ্চারী বাধ্য মেয়ের মতো বক্সটা নিয়ে আসে।তারপর মেঘ সঞ্চারীর হাতে ব‍্যান্ডেজ করে দেয়।

"আমার আঘাত লাগলে তুমি যদি আমাকে তোমার কাছে টেনে নাও মেঘ।তাহলে আমি তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বারবার আহত হবো।"

"আর একটা কথাও তুমি বলবে না।অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পড়ো।"

"আমাকে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরো মেঘ,আমি ঘুমিয়ে পড়বো।"

"তুমি ঘুমাও আমি তোমার পাসে বসে আছি।"

"না,আমাকে জড়িয়ে ধড়ো মেঘ।প্লিজ"

না,সঞ্চারী কে মেঘ আজ নিজের থেকে দূরে সরাতে পারেনি।বাচ্ছাদের মতো মেয়েটা মেঘের বুকে আশ্রয় নিয়েছে।শক্ত করে ধরে আছে মেঘের বুকের কাছটা সঞ্চারী।বায়রে ভীষন জোড়ে বৃষ্টি নেমেছে।অসময়ে বৃষ্টি।ঠিক যেমন সঞ্চারী মেঘকে গলিয়ে দিচ্ছে ধীরে ধীরে।বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছে মেঘের দেহ।ইচ্ছা করছে এই শিশুসুলভ মেয়েটিকে নিজের বুকের মাঝে আরও শক্ত করে চেপে ধরতে।

না,মেঘ সেটাও পারলোনা।কারন মেঘ বিবাহিত।নন্দিনী যদি এইসব জানতে পারে তাহলে কি হবে। কিন্তু, মেঘ আজ সঞ্চারীর জন্য যতটা ফিল করছে, নন্দিনীর জন্যে কখনও এমনটা মনে হয়নি।নন্দিনী সবসময়ই কেমন যেন এলোমেলো।আরেঞ্জ ম‍্যারেজ হয়েছে ওদের।তবে এই একবছরে ওদের সম্পর্ক এতোটুকু স্বাভাবিক হয়নি।যত দিন যাচ্ছে তত জটিল হচ্ছে।কথায় বলে ঘি আর আগুন একসাথে থাকলে,তা দপ করে উঠবেই।তাই মেঘ তার নিজের দেহের কামাগ্নি নন্দিনীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার ওপর বরষেছে। নন্দিনীর মধ‍্যেও কেমন যেন একটা রহস্য লুকিয়ে আছে।মেঘকে লুকিয়ে কয়েকবার কথাও বলতে শুনেছে।তবে মেঘ ভেবেছে হয়ত নন্দিনীর কোনো পুরনো বন্ধু হবে হয়ত,যার কথা নন্দিনী এখনও মেঘকে বলে উঠতে পারে নি।একটু মন দিয়ে পড়ুন--পরবর্তী পর্ব অর্থাৎ শেষ পর্ব অন্য আরেকটি গ্রুপে দেয়া আছে, পুরো গল্পটি পড়তে চাইলে নিচের (See More) এ ক্লিক বা টাচ করুন,তারপর ওই গ্রুপে জয়েন হয়ে পড়েনিন-ধন্যবাদ! .....See More 👈 💝চিনি বউ🐜পিঁপড়া বর💝 এই গ্রুপে দেয়া আছে, জয়েন হয়ে পড়েনিন। আর বলবেই বা কখন। নন্দিনী সবসময়ই নিজেকে মেঘের থেকে সরিয়ে রেখেছে। না,না এ আমি কি ভাবছি,আমি একটা বায়রের মেয়ের জন্য নিজের স্ত্রী কে সন্দেহ করছি।সঞ্চারী ওপরেও রাগ হলো,আর নিজের ওপরেও রাগ হলো।মনে মনে বলল বড্ড বেশি গায়ে পড়া এই সঞ্চারী মেয়েটি।

সত্যিই কি তাই, কি পাঠক বন্ধুরা কি মনে হয়??😊

সঞ্চারী কে নিজের থেকে নামিয়ে দিতে গেল।কিন্তু ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আর পারলনা ওকে,নিজের থেকে সরাতে। মেঘ বুঝতে পারছে সে এই মেয়েটির প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ছে। এতে মেঘের‌ই বা দোষ কোথায় বলুন।দীর্ঘ দিন থেকে শুষ্ক মাটিতে যখন জল পড়ে তখন সেই মাটি যেমন সম্পূর্ণ জল শুষে নেয়, ঠিক তেমনি মেঘের মা মারা যাবার পর কারোর চোখে নিজের জন্য যদি সে সত্যিকারের ভালোবাসা, মায়া দেখে থাকে, তাহলে সেটা সঞ্চারীর চোখে। সত্যিই মেয়েটা অনেক মায়াবী।যে কোনো পুরুষ‌ই এমন ভালোবাসা পেলে দূর্বল হয়ে পড়বে। না,আর সরায়না সে সঞ্চারী কে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে 4:15 a.m..... তাও,তার চোখ ভীষণ ভাবে জ্বলছিল।সে খাটের কিনারায় নিজের মাথাটা এলিয়ে দেয়।তার আবার ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে।জ্বরটা হয়ত আবার আসছে। অন‍্যদিকে ছেলের চিন্তায় দুচোখের পাতা এক করতে পারে নি মনিকান্ত চক্রবর্তী।স্ত্রী কে হারানোর পর এই মেঘ‌ই তার একমাত্র সম্বল।বড্ড আদরে মানুষ করেছে সে মেঘকে।মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি কখনও।মেঘ‌ও কখনও এমনটা করেনি, কিন্তু,আজ সে অসহায়।আর চুপ করে বসে থাকতে না পেরে সারে পাঁচটা নাগাদ বৌমাকে ডাক দেন। নন্দিনী তো আকাশ থেকে পড়ল মেঘ কালকে বাড়ি ফেরেনি শুনে।সে ভেবেছিল মেঘ হয়ত তার বাবার সাথে কাল রাতে শুয়েছিল। নন্দিনীর এমন অস্বাভাবিক আচরন দেখে সত্যিই মনিকান্ত বাবু আজ হতাশ হলেন।সে কার হাতে তার ছেলেকে তুলে দিয়েছে।

ছেলে ব‌উ এর সম্পর্ক ঠিক নেই সেটা মনিকান্ত বাবু জানত,তবে সেটা যে এতোদূর সেটা সে ভাবতে পারে নি। সে একরাশ হতাশা নিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসে। তার এক বন্ধু, আছে সেই সংলগ্ন থানায়।তাকেই ফোন করে, সব জানাল মনিকান্ত বাবু।প্রথমবার ফোন রিসিভ না করলেও পড়ে ধরেন এবং আশ্বস্ত করেন সে ডিউটি যাওয়ার সময় তাদের বাড়ি হয়ে যাবেন। কি মনে হয় পাঠক বন্ধুরা কি হতে চলেছে পরের পর্বে।সঞ্চারী কি মেঘকে হারাতে চলেছে, নাকি নন্দিনী হারাতে চলেছে মেঘকে। সারে আট টা নাগাদ মেঘের ঘুম ভাঙল।না সঞ্চারী ঘরে নেই।দরজা টাও লক করা।দিনের আলোয় ঘরটা বড্ড সুন্দর লাগছে।পরিপাটি করে সাজানো। মেঘ ভাবতে লাগল কিভাবে এখান থেকে পালানো যায়।বাবার কথা খুব মনে পড়ছে মেঘের।নন্দিনীর কথাও মনে পড়ছে।মেঘ আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে ওয়াসরুমে যায়।চোখে মুখে জল দেয়, একটা নতুন ব্রাশ রাখা ছিল, মেঘ দাঁত মেজে ফ্রেশ হয়ে বায়রে আসে।কাল রাতে ভিজে যাওয়ার পর সঞ্চারী হয়ত ওর ড্রেস চেঞ্জ করিয়েছে। মেঘ ফ্রেশ হয়ে বিছানার ওপর বসে থাকে।কোনোকিছু ওর হাতে নেই, কিছুক্ষণ পর সঞ্চারী ঘরে এল,এবং মেঘের সামনে খাবার সার্ব করার টেবিল টা রাখল‌।মেঘ খাটের একটা কোনায় দুটো হাটু ফাকে নিজের মাথা রেখে বসেছিল।বড্ড অসহায় লাগছে নিজেকে।ধিক্কার জন্মাচ্ছে নিজের ওপর। "মেঘ খাবার।" "আমি খাব না।আমার ইচ্ছা করছে না।" ( মাথা না তুলেই কথাদুটো বলল মেঘ। ) 'মেঘ তোমাকে ওষুধ খেতে হবে।" "বললাম তো আমি খাব না।এতো কেন জোড় খাটাও তুমি।" "মেঘ তোমাকে ওষুধ টা খেতে হবে।আচ্ছা আসো আমি তোমাকে খাইয়ে দিই।" (সঞ্চারী মেঘের আর একটু কাছে সরে বসে,একটুকরো ব্রেড নিয়ে মেঘের মুখে তুলে দিতে যায়।মেঘ সঞ্চারীর হাত টা শক্ত করে ধরে ব্রেডটা নিচে ফেলে দেয়।) "মেঘ,বড্ড বাড়াবাড়ি করছ।তুমি কি ভাবছ,তুমি এমন করলে আমি তোমাকে ছেড়ে দেব।সে আশা ছেড়ে দাও।তুমি এখান থেকে বের হতে পারবেনা।" "সঞ্চারী আমার স্ত্রী আছে।তুমি যা চাইছ,তা কখনোই তুমি পাবেনা।আমার দাম্পত্য জীবনে তুমি এভাবে ঝড় তুলো না।" "oh really,আমি তোমার দাম্পত্য জীবনে ঝড় তুলছি।আর তুমি আমার মনে যে ঝড় তুলেছ তার কি হবে। একটা কথা খুব ভালো করে শুনে এবং ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে রাখো।তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবোনা, আর আমি বাঁচতে চাই,হ‍্যাঁ, আমি বাঁচতে চাই মেঘ,তোমার সাথে বাঁচতে চাই।তোমাকে যদি না পাই,তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলব।" ( সঞ্চারী মেঘের,হাত দুটো শক্ত করে ধরে কথাগুলো বলতে থাকে।চোখের থেকে যেন আগুন ঝড়ছে ওর। ) "তোমার যা খুশি করো,এটা তুমিও যেনে রাখো,আমার দেহে প্রান থাকতে,তুমি কখনোই আমিকে পাবেনা।আমি শুধুই নন্দিনী আমার স্ত্রী কে ভালোবাসি। " ( দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো বলল মেঘ। ) তুমি আমাকে ভালোবাসো না তাই তো?? তুমি তোমার স্ত্রীকে ভালোবাসো।

তুমি জীবিত থাকতে আমাকে গ্রহণ করবে না। আমিও যে কারোর কাছে হারতে শিখিনি মেঘ।তোমাকে যদি আমি না পাই........

কথাটা শেষ না করেই ঘর থেকে ছিটকে বেড়িয়ে যায় সঞ্চারী।কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগছিল ওকে।মেঘের কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায়।হ‍্যাঁ, ওর হাত মারাত্মক ভাবে আহত হয়ছিল।ও নিজে ব‍্যান্ডেজ করে দিয়েছিল।সেই হাত নিয়ে সঞ্চারী আমার জন্য ব্রেকফাস্ট বানিয়েছিল।আর,আমি ওকে,এতোটা খারাপ ভাবে বললাম।আমিই বা কি করতে পারি।আমার স্ত্রী, আমার বাবা তাদের কাছে যে আমায় ফিরতেই হবে। কিন্তু, মেয়েটা এমন ভাবে ছুটে গেল কোথায়।যাক গে যেখানে গেছে যাক।আমি কেন ভাবব ওর জন্য এতো।ও কেউ হয়না আমার। কিন্তু, আজ অবদি নন্দিনী কখনও এমনভাবে আমায় খাইয়ে দেয় নি।আর এই আমার কেউ না হয়েও আমার জন্য এতো চিন্তা করছে।আমি ঠিক করলাম না ওর সাথে এতো খারাপ ব‍্যাবহার করে। অন‍্যদিকে মনিকান্ত বাবুর বন্ধু তাদের বাড়ি এসে,সমস্ত রকম তথ‍্যাদি জেনে গেছে।এবং একটি মিসিংডায়রিও মনিকান্তবাবুকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছেন।তারা আজ থেকেই কাজে লাগবেন এমন ভাবেই আশ্বস্ত করে গেছে। কিন্তু, বাবার মন ছেলের জন্য কেবলই ব‍্যাকুল হয়ে রয়েছে।যতক্ষণ না মেঘ তার সামনে আসছে,কোনোভাবেই সে শান্তি পাচ্ছে না। ইতিমধ্যে মেঘের পিসি সার্থকীদেবী দাদার জন্যে চা বানিয়ে নিয়ে এসে রেখেছেন।এই কাজটা এতোদিন নন্দিনীই করত,আজ বোন চা এনেছে দেখে মনিকান্ত বাবু অবাকই হয়েছেন। পড়ে নন্দিনীর কথা জানতে চাওয়ায় সে বললেন নন্দিনী নাকি সকালে কোথায় বেড়িয়েছে। অবাক হন মনিকান্ত বাবু। এদিকে সঞ্চারী বেড়িয়ে যাওয়ার পর মেঘ কাঁচ দিয়ে ঘেরা ব‍্যালকনিটার সামনে দাঁড়িয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে। এমন সময় হঠাৎই সঞ্চারীর বাড়ির এক বয়স্ক লোক ছুটে আসে এই ঘরে,তিনি হাপাতে হাপাতে বলেন, নাকি মারাত্মক অঘটন ঘটে গেছে।

সঞ্চারী................................ ক্রমশ,চলবে

2
$
User's avatar
@Mdemon456 posted 3 years ago

Comments