বিয়ের আগেই ফিজিক্যাল রিলেশন করতে হবে এটা কেমন কথা।বাবা মাও আপত্তি করছে না।ওনারা বলছে কদিন পরেই তো বিয়ে।কথাটা রিফাত ঐভাবে বলেনি
বলেছে আবাসিক হোটেলে যেতে হবে রিয়াকে।রিফাত আমেরিকার সিটিজেন ও যেই হোটেলে উঠেছে ঐ হোটেলে রিয়ার যেতে হবে।রিয়ার খুব খারাপ লাগছে ওর লাইফে একটাও ছেলের সাথে কোন রিলেশনে জড়ায় নি,কারন ও ওর পরিবারের বিপক্ষে বিয়ে করবে না।এটা কেমন কথা হলো কদিন পরেই বিয়ে তো আজ কি জন্য যেতে বলছে।আজকাল বাঙালী ছেলেরাই দুদিন প্রেম করলেই রুমডেট করতে চায় আর সে তো দশ বছর আমেরিকায় ছিল।
রিফাত রিয়ার বড় বোনের বরের বন্ধু।আপুর বিয়ের সময়ই নাকি রিয়াকে দেখে রিফাতের খুব ভালো লেগে যায়।এই তো কয়েক মাস আগেই বিয়ের কথা পাকাপাকি হলো।বড় আপু খুব খুশি রিয়ার বিয়ে হলে দু বোন একসাথে থাকতে পারবে।প্রবাসী জীবন অনেক কষ্টের তাই ছোট বোনটা পাশে থাকলে ভালো হবে।বড় আপুও বলছে যা কিছু হবে না।তুই সব ব্যপারে একটু বেশি ঘাবড়ে যাস।
একটা নীল শাড়ি পরে বাবা মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে চললো হোটেলের উদ্দেশ্যে।গাড়ি থেকে নেমে হোটেলের ভিতর ঢুকলো।লিফটে করে সোজা দশ তলায় চলে গেল।রুমের কলিংবেল বাজাতে গিয়ে রিয়ার হাত কাপছিল।অনেক ভয় করছিল।
বেল দেয়ার আগেই দরজা খুলে গেল।রিফাত বললো ওয়েলকাম রিয়া দেখলো Do not Disturb বোর্ড লাগিয়ে দিচ্ছে।রিয়ার বুক আরও ধুকধুক শুরু করলো।
রিফাত বলে উঠল আপনি ঘামছেন কেন।রিয়া বললো কই না তো।নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই।আমরা হবু স্বামী স্ত্রী।কি খাবেন তাই বলুন।জী আমি কিছুই খাবো না।কোল্ড ড্রিঙ্কস নিন।রিয়া সোফায় বসল।রিফাত ওর কাছাকাছি যাচ্ছে একদম ঠোঁটের কাছাকাছি রিয়া চোখ বন্ধ করে ফেললো .........
আর অমনি হা হা করে হেসে উঠলো রিফাত।আমাকে অতটা নিচ ভাববেন না।আমি মেয়েদের সম্মান করতে জানি।আপনি তখনই পুরোপুরি আমার হবেন যখন কালিমা পড়ে আমাদের বিয়ে হবে।আসলে আপনাকে চমকে দিতে এভাবে আসতে বলা।আমেরিকায় থেকেছি অনেক বছর আমাকে কেমন ভাবেন তা জানার জন্য এসব করা।আপনার বাবা মাও জানে এ ব্যপারটা।আপনি অনেক আনইজি ফিল করছেন,ওকে চলুন এখন যাওয়া যাক।
রিয়া উঠে দরজা খুলতে যাবে এমন সময় হাত ধরে এক টানে রিফাতের বুকের সামনে নিয়ে আসলো।রিয়ার চুলগুলো সরিয়ে একটা ডায়মন্ডের হার পরিয়ে দিল।রিয়া তো অবাক।একটা থ্যাংকস দিয়ে দৌড়ে চলে এলো।বাসায় এসে আয়নায় নিজেকে দেখছে ভালোই মানিয়েছে।রিফাতকে যতোটা বাজে ভেবেছিল তা নয় বরং ওর এই রোমান্টিকতা রিয়াকে মুগ্ধ করেছে।ওকে ভালোওবেসে ফেলেছে।
বিয়ের দিন চলে আসলো বিয়েও হলো বাসর রাত রিয়া অপেক্ষা করছে তার স্বামীর জন্য।যার সাথে তার একটু আগে বিয়ে হয়েছে।রিয়া চায় একজন পারফেক্ট বৌ হতে।রিফাত এলো রুমে কিছুই বলছে না।
রিয়া অনেক সময় অপেক্ষা করে বললো আপনার শরীর ঠিক আছে তো কপালে হাত দিতে যাবে এমন সময় ঠাস করে একটা চড় দিল।রিয়া হতবাক।রিয়ার দুই গাল জোরে চাপ দিয়ে বললো আমরা কাল রাত আটটার ফ্লাইটে আমেরিকা যাবো।রিয়া বললো না আমি যাবো না ।রিফাত বললো তোর বাপ যাবে।চুলের মুঠি ধরে বিছানায় ফেলে দিল বললো এই কথা যদি কেউ জানতে পারে তবে তোর খবর আছে।রিয়া কিছুই বুঝলো না রিফাত কেন এমন করছে।চুপ করে কাঁদতে লাগল।
রিয়ার মুখ ভার দেখে মা অনেকবার জানতে চেয়েছেন কিন্তু রিয়া কিছু বলে নি।কারন একথা শুনলে বাবা অনেক কষ্ট পাবেন এমনেই উনার হার্টের অসুখ। প্লেনে উঠবার সময় খুব কান্না পাচ্ছিল রিয়ার। এ কোন মানুষের সাথে দেশ পার করছে।যে কিনা বাসর রাতেই তাকে মারধর করে।
চলে এল আমেরিকা।খুব সুন্দর।রাস্তাঘাট খুব পরিস্কার কোন জ্যাম নেই।রিফাতের বাড়িটাও খুব সুন্দর।রিয়া ফ্রেশ হয়ে নুডলস রান্না করে রিফাতকে ডাকতে গেল যা দেখল,ওর মাথা ঘুরিয়ে গেল।রিয়ার ছবিতে রিফাত একটা একটা করে তীর ছুড়ছে..................
পর্ব-২
রিয়া হতবাক হয়ে গেল তাহলে কি রিফাত তাকে খুন করতে চায়।এই দূর দেশে ওকে মেরে ফেললেও কেও জানবে না।কিন্তু কেন এত ঘৃণা রিয়ার উপর ও জানতেই পারল না।রিয়া দরজা নক করল
__খেতে আসেন
__তুই খেয়ে শুয়ে পর।আমার চিন্তা তোর করতে হবে না
রিয়ার মুখ দিয়ে খাবার গলায় নামছে না।তারপরেও অল্প একটু খেয়ে বিছানায় শুয়ে পরল।রিফাত আস্তে আস্তে একটা বালিশ নিয়ে রিয়ার মুখের উপর ধরে চাপ দিল রিয়ার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।ও খুব হাত পা ছড়াছড়ি করছে সেদিকে রিফাতের কোন খেয়াল নেই।
রিয়া লাফ দিয়ে উঠল।ওহ্ স্বপ্ন ছিল।রিয়া উঠে এক গ্লাস পানি খেল।কান্নার শব্দ শুনতে পেল।গিয়ে দেখল রিফাত কাঁদছে।রিয়া কিছুই বুঝলাম না।কেন ওর সাথে বাজে ব্যবহার করছে আর এখন কেনই বা কাঁদছে।রিয়া আবার শুয়ে পরলো।এক ঘুমে সকাল।জানালা দিয়ে বাহিরের আকাশ দেখছে।কত স্বপ্ন ছিল আমেরিকা আসবে স্বামীর সাথে কত ইনজয় করবে ঘুরে বেড়াবে কিন্তু তা আর হলো না।রিফাত উঠে গেছে, ও শাওয়ার নিচ্ছে।রিয়া একটা কালো শার্ট বের করে রাখল।নাশতা রেডি করল।রিফাত সেই শার্টটা পড়েছে।খুব সুন্দর লাগছে ওকে।মুখটা খুব রাগী রাগী।দেখেই ভয় পায় রিয়া।ওরা নাশতা খাচ্ছে এর মধ্যে কলিং বেল বেজে উঠল।রিফাত গেল দরজা খুলতে।রিয়ার বড় বোন রূপা এসেছে।রিয়াকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল,
__কতদিন পর দেখা তোর সাথে আজ পাঁচ বছর হতে চলল।বাবা মা কেমন আছে রে।
ভালই আছে আপু তুই কেমন আছিস তাই বল।আছিরে ভালই।
__আচ্ছা আপি চল বেড রুমে গিয়ে কথা বলি
__হুম চল।এই তোমরা দুজন এখানে গল্প কর রিফাত আর নিখিলকে বললো।
__আচ্ছা আপি তুই কত দিন যাবৎ চিনিস রিফাত কে
__পাঁচ বছর ধরেই।এখানে এসেই পরিচয়।আমাদের বাসায় খুব যেত।তোর ভাইয়া বিয়ের কথা বলতেই বললো আপনার সেলিকাকে করলে কেমন হয়।নিখিল ওকে অনেক দিন ধরে চেনে।আমাদের বিয়েতে ও নাকি গিয়েছিল তখনই তোকে দেখছে।আমিও দেখলাম ভালো ছেলে আগে পিছে কেউ নেই।বাবা মা মরে গেছে ছোটবেলায়।চাচা চাচার কাছে মানুষ।বিবির লটারি আমেরিকায় আসতে পেরেছে।কেন রে?
রিয়া কিছু বলার আগেই রিফাত বললো
__এই শুনে যাও।রিয়া কাছে গেলে ওর হাত ধরে অন্য রুমে নিয়ে গিয়ে বলল এই শোন ওরা যেন কিছু বুঝতে না পারে।ওদের সামনে তুমি করে কথা বলবি।
__আচ্ছা ব্যথা পাচ্ছি ছাড়ুন।
রিয়া হাত ডলতে ডলতে রুপার কাছে আসল।কথা এড়িয়ে অন্য অনেক গল্প করলো।দু বোন মিলে রান্না করলো।সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করলো।রূপা বললো আমরা দু বোন একসাথে ঘুমাব।রিফাত একটু ভয় পেয়ে বললো কেন আপু।হ্যাঁ অনেক দিন পর আমরা একত্রে।তুমি কিছু মনে করো না প্লিজ।রিফাত চোখ দিয়ে ইশারা করে বললো কিছু যাতে না বলে।রিয়াও ভয় পেয়ে কিছু বললো না।
এই গল্পটি নেক্সট পার্ট এই গল্প লেখক আইডির টাইম লাইনে দেয়া হবে। গল্প লেখক আইডি ছাড়া এই গল্পটি অন্য কোন আইডিতে দেওয়া হলে ভাববেন কপি করছে ।
পরের দিন বিকেলে ওরা সবাই ঘুরতে বের হলো।অনেক আনন্দ করল।রিয়ার মনে হচ্ছে রিফাত ঠিক হয়ে গেছে।ওখান থেকে রুপারা ওদের বাসায় চলে গেল।রিয়া রিফাত ও বাসায় চলে আসলো।বাসায় এসেই রিয়ার হাত ধরে জোরে টান দিয়ে বললো কি বলেছিস তোর বোনের কাছে।আমি কিছুই বলিনি।সত্যি বলছি।রিফাত চড় মারার জন্য হাত উঠাতেই রিয়া ধরে ফেলল
আর একটা আঘাত আপনি আমাকে করবেন না।অনেক সহ্য করেছি এ কদিনে।নিরাপরাধ ভাবে আমাকে এতো মারতে পারবেন না।তোর অনেক সাহস হয়েছে তাই না বড় বোন আসছিল তাই।তুই আমার হাত ধরিস।এই বলে রিয়াকে অনেকগুলো চড় দিল।বললো বের হয়ে যা আমার বাসা থেকে।ওকে ঘর থেকে বের করে দিল।রিয়া অনেক কান্না করতেছে আর আস্তে আস্তে হাঁটছে কই যাবে এতো রাতে।রাস্তার দিকে এগোতেই দেখে কয়েকটা লোক মাতালের মতো আসছে ঐ রাস্তায়।রিয়া ওদের দেখে ভয় পেয়ে জোরে জোরে এগোতে থাকল।ঐ লোকগুলোও রিয়ার পিছন পিছন আসতে লাগল
রিয়া খুব ভয় পাচ্ছে।বাংলাদেশই রক্ষা পাওয়া যায় না আর এখানে ঐ মাতালরা যদি ওকে ধরে ফেলে ও কি করবে ভাবতে পারছে না ভয়ে দৌড়াতেও পারছে না।আর ও কিছু চিনেও না।পিছন দিকে না তাকিয়ে সামনে এগুতে থাকল।
এর মধ্যে পিছন থেকে কে যেন হাত ধরল।ও ছাড়ুন বলে পিছনে তাকিয়ে ভয়টা কমে গেল।এ যে রিফাত।তার মানে মনে ঠিকই জায়গা আছে কিন্তু প্রকাশ করে না।ওর হাত ধরে টেনে বাসায় নিয়ে গেল ।
রিয়া ভয়ে কাঁপছে।কোন কথা বেরচ্ছে না।বাইরে স্নো ফল হচ্ছিল তাই ঠান্ডায় এমন করছে রিয়া।রিয়াকে চাদর দিয়ে চেপে ধরেছে যাতে শরীরটা জলদি গরম হয়ে যায় । ওকে জড়িয়ে ধরল।রিফাত ও রিয়ার পিঠে হাত বুলিয়ে দিল।রিয়া বলল তুমি কি করে আমাকে এতো রাতে বের করে দিতে পারলে।যদি কিছু হয়ে যেত। ওরা যদি আমার ক্ষতি করতো।
আমি থাকতে তোর ক্ষতি অন্য কেউ করবে তা হতে পারে না ।রিয়া রিফাতের পা জড়িয়ে ধরল প্লিজ বলো আমার অপরাধ কি।কেন আমাকে বিয়ে করে এতো কষ্ট দিচ্ছো। __তোকে তিল তিল করে মারার জন্য।তোকে যত কষ্ট দেই ততই আমার শান্তি।আমার অপরাধটা কি? তোকে কতবার যে আমার মেরে ফেলতে মন চায় কিন্তু তোর মুখের দিকে তাকালে কেমন যেন মায়ায় পরে যাই।কারন প্রথম দেখায় তোকে আমার ভালো লেগে যায়।আবার ঐ মুখের দিকে তাকালে আমার ঘৃনাও বেড়ে যায়।তবুও শুনতে চাইছিস শোন
আমার বাবা মা মারা গেছে। একটা ছোট বোন আমার হাতে তুলে দিয়ে গেছে।ওর নাম রায়না।চাচির বাসায় থাকি চাচি দুমুঠ একমুঠ যা দেয় তাই খাই।আমি চাচার বাসায় থেকে টিউশনি করে নিজেও পড়াশোনা করেছি ওকেও পড়িয়েছি।হঠাৎ ভাগ্যক্রমে ডিবির লটারি পেয়ে এখানে আসার সুযোগ হয়।ভাবছিলাম বোনকে এখানে নিয়ে আসবো।
কিন্তু তা আর হলো না।এক ঝড় এসে সব লন্ডভন্ড হয়ে গেল।রায়না নরম স্বভাবের ছিল।অল্পেই কাউকে বিশ্বাস করে ফেলতো।রায়না যখন আই এ ফাস্ট ইয়ারে পড়ে তখন নাকি এক ছেলের সাথে রিলেশন হয়।ঐছেলে ওকে অনেক বড় ধোঁকা দেয়।রায়নার অশ্লীল পিক অনলাইনে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় ।এটা শুনে রায়না সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে।
একথা বলে রিফাত অনেক কান্নাকাটি করে।রিয়া ওর কাছে গিয়ে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করে ।রিফাত ওর হাত সরিয়ে দিয়ে বলে তুই জানিস সেই ছেলে কে? ঐ ছেলে আর কেউ নয় "তোর ভাই"রিয়াদ কি বলছো এসব আমার ভাই এক্সিডেন্টে মারা গেছে।হুম এই কান্ড করার পর আল্লাহ্ ও সহ্য করতে পারেনি।তাই তো তোর ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে তবে আমার আশা ছিল নিজ হাতে তোর জানোয়ার ভাইকে শেষ করার তা হলো না।সেদিনই শপথ করেছি ওকে পাইনি ওর ছোট বোনকে দিয়েই সেই সাধ পূরন করবো।তিল তিল করে শেষ করবো তোকে বুঝলি। যা এখন আমাকে একা থাকতে দে
সকালে মাথাটা ভার হয়ে আছে রিফাতের। অনেক কেদেছে তাই হয়তো।এই রিয়া এক কাপ চা দে তো।অনেক সময় হলো কোন উত্তর এলো না।
রিফাত বিছানা ছেড়ে লাফ দিয়ে উঠল।সারা বাড়িতে খুলছো রিয়া নেই।রুপার কাছে কল দিয়ে বললো আপু রিয়া আছে আপনার ওখানে।না তো ও তো চিনেই না এখানে আসবে কি করে। আচ্ছা আচ্ছা আমি খুঁজে দেখছি।রিফাতের মাথা ঘুরাচ্ছে কিচ্ছু চিনে না কোথায় গেল মেয়েটা।হঠাৎ ফোন বেজে উঠল.............
শত্রুতা
পর্বঃ১+২
Ai post ta puro Tai porase Mon dia golpo ta Porta onk vlo karap 2 Tai Misha gasa next ki hoisa janta issa korsa porer post ta paila published korben plz,,,,