আমার_তুমি❤

লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤

পর্ব:- ২০

কি করবে ভেবে পাচ্ছে না আরুশি? সোনালীটা ও নাই ও থাকলে কিছু করতে পারতো। আমাদের ক্লাস রুমের দিকেই তো আসছে। এই রুমে থাকা যাবে না লুকাতে হবে কোথায় লুকাই। আচ্ছা কমন রুমে গেলে কেমন হয় ওইখানে নিশ্চয়ই যাবে না।

ব্যাগটা কাধে চেপে উঠে দাড়ায়। ওমনি ক্লাস কাপ্টেন অরিন দাড়িয়ে যায়।

--একি তুমি কোথায় যাচ্ছো? স্যার এখনি এসে যাবে বের হচ্ছো কেন !

কি বলবে ও বিপদের উপর বিপদ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে কাছা কাছি চলে এসেছে। না আর এক মুহূর্তে ও দাড়ানো ঠিক হবে না। দুই কদম যেতেই চিৎকার কানে এলো,

--কি অসভ্য মেয়ে তুমি? ভালো ভাবে জিগ্গেস করলাম তাও কিছু বলছো না ওকে না বললে স্যার কে বলে তোমার উচিত শিক্ষা দেবো।

আরুশি ভয়ার্ত চোখে অরিনের দিকে তাকালো,

--আই এম সরি প্লিজ কিছু মনে করো না আমার একটু জরুরি কাজ আছে আমি স্যার আসার আগেই চলে আসবো।

--তো ভালো করে বললে কি হয়? এতো বার জিগ্গেস করতে হয় কেন এবারের মতো ক্ষমা করলাম নেক্মট এমন করলে দেখে নেব তোমাকে।

আরুশি আর কিছু না বলে মাথার স্কার্প টা ভালো ভাবে মাথায় সাথে মুখের এক সাইট ঢেকে দরজা দিয়ে বেরিয়ে এলো আর পেছনে তাকিলো না সোজা কমন রুমে এসে দম নিলো।

ভয়ে হাত পা এখন ও কাপঁছে ওর সময় মতো না দেখতে পারলে কি হতো? মামিকে সব বলে দিতো জোর করে আবার বিয়ের জন্য জোর করতো। আল্লাহ রক্ষা করছে আজ বাসায় যায় দুইদিন আর আসবো না কলেজে।

জানালা দিয়ে উকিঁ দিলো আরুশি জন্টুকে কোথায় ও দেখা যাচ্ছে না চলে গেল নাকি। বুঝতে পারছে না চারপাশে দেখছে নাকি আমাদের ক্লাস এ গিয়ে আমাকে খুজছে আচ্ছা কাউকে জিগ্গেস করলেই তো বলে দেবে আমি এখানে আছি। ওদের তো আমি বলে এসেছি।

কমন রুমে থেকে ও বের হয়ে গেল এখানে থাকা সেভ না। কোথায় যাবো হঠাৎ স্ট্রর রুমের দিকে চোখ যায় হ্যা এখানে যাই। দরজা খুলে ঢুকে পরে দরজা চাপিয়ে দাড়িয়ে আছে কাশি আসছে প্রচণ্ড নোংরা এই জায়গা। স্কার্প দিয়ে নাক মুখ ধরে আছে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো এখন আবার কে ফোন দিলো ব্যাগে থেকে ফোন হাতে নিতেই চোখে পরলো সোনালীর নাম্বার।

--হ্যালো,

--কোথায় তুই আরুশি? আজ কি কলেজে আসিস নি নাকি।

--এসেছি তুই কোথায়?

--আমি তো ক্লাসে। তুই কোথায়?

সোনালী ক্লাসে ওকেই জিগ্গেস করি অপরিচিত কেউ ক্লাসে আছে কিনা।

-- আচ্ছা সোনালী কোন অপরিচিত কেউ কি আমার খোজ করতে ক্লাসে এসেছে।

--জানি না তো আমি এই মাএ এলাম। কেন কি হয়েছে?

কিছু না বলে ফোন রেখে দিলো। স্টর্র রুমের দরজা খুলে উকিঁ দিলো জন্টু গেটের কাছে দাড়িয়ে আছে কানে ফোন ধরে কারো সাথে এ কথা বলছে।

হাফ ছেরে বাচঁলো বড় একটা নিশ্বাস ফেলে বেরিয়ে এলো গেমে একাকার অবস্থা ওর। সব রুমে স্যার দেখে আর ক্লাসে গেল না প্রচণ্ড ভয়ে ক্লাস করার ইচ্ছে মরে গেছে।

কমনরুমে ঢুকে বসে রইল।

এর মাঝে সোনালীর আগমন ও এসেই একশ প্রশ্ন শুরু করে দিয়েছে এখানে কেন বসে আছি। ক্লাসে কেন গেলাম না ও নাকি অরিন মেয়েটার থেকে জেনেছে আম কমন রুমে আছি আমি চুপ করেই রইলাম কিছু বললাম না।

পরের ক্লাস করে বাসায় চলে এলাম। সারাটা সময় ভয়ে ভয়েই ছিলাম এই বুঝি ধরা পরে যাব।

বিকেলে চিন্তিত হয়ে বসে আছি। হঠাৎ কেউ পাশে এসে বসলো। আমি আমার বারান্দায় বসে ছিলাম এখানে কে এলো ভেবেই পাশে তাকিয়ে দেখি রাইয়্যান। আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি তাকাতেই ব্রু নারিয়ে কিছু জিগ্গেস করলো, আমি কিছু বুঝলাম না আসলে বুঝতেই চাইছি না আমি তো ভাবছি জন্টুকে নিয়ে। অন্য সময় হলে কিছু বলতাম। আমাকে চুপ থাকতে দেখে রাইয়্যান বলে উঠলো,

--কি হয়েছে আরু তোমাকে চিন্তিত লাগছে কেন? কি নিয়ে টেনশন করছো বলো আমাকে।

--আমি তার দিকে তাকালাম সে বুঝলো কি করে আমি টেনশন করছি। নিজেকে স্বাভাবিক করে বললাম, কই না তো টেনশন করতে যাব কেন?

--আরো তুমি মিথ্যে বলছো তোমার মুখ দেখে আমি বুঝেছি তুমি চিন্তিত কিন্তু কি নিয়ে বলো।

--আমার কথা বলতে ভালো লাগছে না।

--হোয়াট কিন্তু কেন?

--আমি একা থাকতে চাই প্লিজ যান। আর আমাকে নিয়ে এতো ভাবতে হবে না এমনিতেই অনেক করেছেন আমার জন্য যার ঋণ কখনো সুদ করতে পারবো না।

--এভাবে বলছো কেন? তোমাকে কি কেউ কিছু বলেছে বলো?

--না কে কি বলবে সবাই খুব ভালো এতো এতো ভালোবাসা দিয়েছে যা আগে কখনো পাইনি।

--তাহলে,,

-- আমার কথা বলতে ভালো লাগছে না।

রাইয়্যান আর কথা বারালো না। আজ শো আগেই শেষ করে চলে এসেছে আরুর সাথে সময় কাটাতে কিন্তু, আরুর কিছু তো হয়েছে কি এমন মুখটি মলিন কেন, কথা গুলো ও কেমন যেন শুনালো।

রাতে আরুশির চিন্তা কমমে একটু তবুও বেশি খেলো না। পরদিন রাইয়্যান আরুশিকে কলেজে ড্রপ করার জন্য ওর অপেক্ষা করছে সোফায় বসে কিন্তু আরু তো আজ যাবে না। সেটা তো আর রাইয়্যান জানে না ও অধৈর্য হয়ে আরুর রুমে এসে নক করলো আরু পরতাছিলো।

কলেজে না গেলে ও ভালো করে পরতে হবে। পরিক্ষা এসে পরেছে। হঠাৎ রাইয়্যান রুমে ঢুকায় অবাক হয়ে তাকায়।

--আপনি এখানে কি করছেন?

রাইয়্যাধ তো রেগে বোম হয়ে তাকিয়ে আছে ও এতো ক্ষন অপেক্ষায় ছিলো আর এখন ও এসে দেখছে ঐনি কিছু ই হয়নি পরতাছে।

--কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?

--আরু তুমি এখন ও রেডি হওনি কেন।কতোক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি জানো তুমি? আর তুমি এভাবে বসে আছো। ভাবতে পারবেনা কতোটা রাগ হচ্ছে আর?

--কি সব বলছেন রাগ হবে কেন আর অপেক্ষা কেন করছেন কোথায় যাবো।

--কলেজে যাবে না।[ দাতেদাত চেপে বলল]

--নাহ

--হোয়াট?

রাইয়্যান রেগে মেগে চলে গেল। আরুশি হা হয়ে যাওয়া দেখছে।

দুইদিন পর

দুইদিন আরুশি আর কলেজে যায় নি কি কারণে এমন করলো রাইয়্যান শত বার জিগ্গেস করে ও জানতে পারলো না।

পারবে কি করে আরুশি তো জানাতেই চায় না।

সকালে উঠে আরুশি আজ আগেই রেডি হয়ে নিলো দুইদিন যায় নি। আজকেই আগেই রাইয়্যানের সাথে যাবে একা যেতে ভয় করে সেটা তো আর রাইয়্যানকে বলবে না তাই নিজেই আগে রেডি হয়ে বেরিয়ে আসে।

এখন রাইয়্যানের রুমে যাবে সে রেডি হয়েছে নিশ্চয়ই। দরজায় কাছাকাছি এসে ভাবছে রাইয়্যান অনেক বার জিগ্গেস করবে আমি এতো আগেই কেন রেডি হয়েছি,

কি বলবে তাও ভেবে রেখেছে বলবে? দুইদিন যায় নি এ জন্য আজ আগে গিয়ে নোট নিবে সামনে এক্মাম। এই সব বলে ম্যানেজ করবে।

দরজা খোলা কেন? ভেতরে তাকাতেই চোখ পরে রাইয়্যান আর তানিশার দিকে তানিশা রাইয়্যাকে জরিয়ে ধরে কিছু বলছে। সাথে সাথে দুটো পিছিয়ে নিলাম। রাইয়্যানের একটা কথা কানে এলো,, আমিও তোকে ভালো বাসি।

কথা কানে আসতে চোখ দুটো জ্বালা করা শুরু হলো আমি তো আগেই জেনেছি এরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে কিন্তু তবুও এভাবে দেখে। রাইয়্যানের মুখে ভালোবাসি শুনে আমার কষ্ট হচ্ছে কেন? কাদঁতে মন চাইছে কেন? এই কষ্ট কেন হচ্ছে আমার।

সিড়ি দিয়ে নামছি আর নানান ভাবনা ভেবে যাচ্ছি হঠাৎ অসাবধানতায় পরে যেতে নিলে কেউ ধরে নেয়।

--কিরে আরুশি এভাবে চলছিস কেন এখনি পরে যাচ্ছিলি।

--ঠিক আছি আমি।

বলেই সিড়ি দিয়ে ঠিক হয়ে নামলো চাচি ধরেছিলো আমাকে।

কলেজে এসে ও মন মরা হয়েই বসে আছি ভালো লাগছে না কিছু চাপা কষ্ট হচ্ছে।

সোনালী বারবার করে ওর বাসায় যেতে বলছে ভালো লাগছে বিধায় রাজি হয়ে গেলাম।আজ তিনটা ক্লাস হয়েছেএর পর সোনালীর সাথে ওর বাসায় এসেছি। দুটোর দিকে।

--চারটা বাজে এবার যেতে দে প্লিজ রাত হয়ে যাবে বাসার যেতে।

--আর একটু থাক আজকে থাকতে বললাম তা তো থাকবিই না।

--থাকা যাবে না রে। অন্য একদিন থাকবো এসে।

-- আচ্ছা।

সারে চারটার দিকে বেরিয়ে এলাম ওর বাসায় থেকে।

অটোতে উঠে বসছি। কিছু দূর যাওয়ার পর বুঝতে না।পারলাম এটা বাসার দিকে যাচ্ছে না।

--আপনি কোথায় যাচ্ছে?

--সট কার্ট রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি।

--সর্ট রাস্তায় দরকার নাই। এই রাস্তায় কেমন নিরিবিলি এদিকে যাচ্ছেন কেন?

--কথা শুনছে না কেন।

লোকটা আর কথা বলছেনা আরুশি একেরপর এক কথা বলেই যাচ্ছে।

হঠাৎ গাড়িটা থেমে গেল আরুশি তারাতারি নামে যায় নেমেই যাকে দেখে ভয়ে কুকরে উঠে,

--আপনি এখানে,

--খুব গোল খাইয়েছিস আমাকে তোকে খুজতে আমার এতো দিন লেগেছে। তোকে বউ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু না তোকে বউ করবো না। এমন অবস্থা করবো যে সমাজে আর মুখ দেখাতে পারবি না। খুব দৌড়ে পারিয়েছিস আমাকে তুই।

বলেই হাত ধরে নেয় জন্টু মুখে তার বিচ্ছিরি হাসি। আরুশি হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।

রাইয়্যান শো শেষ করে আগেই বাসায় এসেছে। আরু আসে নি দেখে অনেক বার কল ও করেছে কিন্তু ফোন টা বেজে বেজে অফ হয়ে গেছে। কোথায় আছে চারটা বাজে।

এবার ভয় হচ্ছে কোন বিপদ হয় নি তো।

সকালে ও আরুশিকে দেখে নি রাইয়্যান চিন্তা শেষ ও আর বসে না থেকে ও কাউকে ফোন করে। আরুশির ফোন ট্যাগ করে সে তারপর জায়গায় নাম বলতেই রাইয়্যানের ভয় বেরে যায় এটা অনেক টা দূরে।

রাইয়্যান ঠিকানা মতো আসতে আসতে ঘরির কাটায় সারে পাচটা বেজে গেছে। লোকেশন মতো এই জায়গার দেখা যায়। কিন্তু রাস্তায় তো কাউকে দেখছি না রাইয়্যান চোখ চারপাশে আরুশিকে খুজে যাচ্ছে।

হঠাৎ কিছুদূরে কিছু পরে থাকতে দেখে সেদিকে যায় আর দেখে একটা ব্যাগ পরে আছে। এটা তো আরুর ব্যাগ এখানে পরে আছে কেন ও কোথায়?

চলবে❤

4
$
User's avatar
@Mdemon456 posted 3 years ago

Comments