গল্প : নেতার মেয়ে..
পার্ট ০৬ (অন্তিম পর্ব)
লেখক : রাকিবুল হাসান
.
.
তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।একটু শুনবা।(রাইসা)
হুম।বল..(আমি)
আমার সাথে সারাজীবন ফ্রেন্ডশিপ রাখবা...??(মাথা নিচু করে বলল)
হুম।আপনার সাথে সারাজীবন ফ্রেন্ডশিপ রাখবো।
ধন্যবাদ তোমায় রাকিব।আর আসল কথা হল আমার বিয়ে।আগামি মাসের ১২ তারিখে।তুমি কিন্তু অবশ্যই আসবা....না করতে পারবা না।(একটা কার্ড বাড়িয়ে দিয়ে)
ওহ।খুব ভালো কথা।আমি আসার জন্য চেস্টা করবো।
হুহ।চেস্টা না।তোমাকে আসতেই হবে। আর সাথে তোমার বউ কেও।
আমি টাসকি খেলাম রাইসার কথা শুনে।ও আবার জানলো কিভাবে আমার বউ আছে।আর বউ আবার বউ আসলো কোথা থেকে....?আমি তো বিয়ে করি নি।তাহলে....??এত কথা ভাবার চেয়ে রাইসাকে জিজ্জাসা করলেই তো হয়।তাই রাইসাকে জিজ্জাসা করলাম.....
আ..আমার বউ মানে.....??(আমি)
মানে হল ইশিতার সাথে তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে।(রাইসা মুচকি হেসে বলল)
তু..তুমি জানলা কিভাবে......?(তোতলাতে তোতলাতে বললাম)
আমি জানবো না তো কে জানবে হুম....??ইশিতা আমার আপন চাচাতো বোন।আমি এতদিন বিদেশে ছিলাম।এই বছর ই আসলাম।তারপর ইশিতার আব্বু আমাকে বলল তোমার কথা কয়েকদিন আগে বলেছে।আর ৭০ জনের কি অবস্থা করেছো তা আমি জানি।আর ভালো করেছো।ইশিতার জায়গায় আমি থাকলে ওদের ভিডিও দিয়ে ওদের ই বারোটা বাজাতাম।আর ইশিতা মেয়েটা খুব সহজ সরল।ওর মনে এত প্যাচ ছিলো না।আমি সব জানতাম সাকিবের সম্পর্কে ওকে না করেছিলাম রিলেশন করতে।কিন্তু ও হয়তো অনেক ভালোবেসে ফেলেছিলো।আর এটাই ওর জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল।আর এটাই সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে ওকে।আমি জানি না কেন তুমি রাজী হয়েছো এই বিয়েতে।কিন্তু যাই করো প্লিজ ইশিতাকে কস্ট দিয়ো না।অনেক কস্ট সহ্য করেছে মেয়েটা।প্লিজ রাকিব কস্ট দিয়ো না.......!(কেঁদে কেঁদে বলল রাইসা)
আমি রাইসার কথা গুলো শুনছিলাম। রাইসা মিথ্যা বলে নি।ইশিতা মেয়েটা অনেক বোকা।কিন্তু অসম্ভব ভালো।ইশিতা আমাকে বলল না কেন যে রাইসা ওর বোন।ইশিতা তো দেখেছিলো রাইসা আর আমাকে তাহলে ও বলল না কেন......?আমার ভাবার সময় রাইসা বলল.......
কি হল....??দাও কথা দাও......(রাইসা)
হুম।দিলাম কথা।ইশিতাকে আমি কস্ট দিবো না।(ভাবনা থেকে ওঠে)
খুব খুব খুব ধন্যবাদ তোমায়।
হুম।
আর কাল সকালের বাসে আমরা যাবো।তুমি আর তোমার বউ একসাথে আসবা।আর কয়টার সময় আসবা তা আমিই বলে দিবো।
আচ্ছা।
এখন যাই।আল্লাহ হাফেজ
আল্লাহ হাফেজ...
.
দুপুর ৩টা ২০.....
কফি বানিয়ে নিয়ে বারান্দায় আসলাম।ব্যাস্ত নগরির রাস্তাঘাট একটু শান্ত লাগছে।রাস্তায় গাড়ির এত চাপ নেই।গাড়ি গুলো ছুটে চলছে আপন গতিতে,নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে।গাড়ি গুলোতে হয়তো কারো প্রিয়জন কারো বাবা।অথবা কারো মা।কেউ বা যাচ্ছে কাজে আবার হয়তো কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছে।কিন্তু আর যাই হোক সবার ই নির্দিষ্ট গন্তব্য আছে।কিন্তু আজ আমার মনটা গন্তব্য ছাড়া ঘুরছে।হটাৎ মোবাইলের আওয়াজে ভাবনার ছেদ পরলো।কফির মগটা রেখে ফোনটা ওঠাতেই দেখি ইশিতার ফোন।ওর কথাই ভাবছিলাম।তারপর ফোনটা ধরলাম....
হ্যালো...ইশিতা বল....(আমি)
কান্নার শব্দ আসছে।
হ্যালো ইশিতা তুমি কান্না কারছো কেন......?
আ..আমায় মাফ করে দাও রাকিব...(কেঁদে বলল)
আমি অবাক হলাম ইশিতার কথা শুনে।ও তো কিছু করেনি।তাহলে মাফ চাচ্ছে কেন.....?কিছু বললাম না।সুধু বললাম.....
কেন.......?
আমি তোমায় মিথ্যা বলেছি।আমি রাইসা আপুকে চিনি।ও বিদেশে থাকতো।আর ও আমাকে বলতে বারণ করেছিলো যে ও আমার বোন।(কেঁদে কেঁদেই বলল)
কিন্তু কেন.....?
আমি জানি না।সত্যিই বলছি আমি জানি না কেন আপু ওই রকম করেছে।কিন্তু রাকিব Trust me আমি তোমাকে বলতাম।কিন্তু ও আমাকে না করেছিলো বলে বলতে পারি নি।প্লিজ রাকিব......মাফ করে দাও।প্লিজ....(ফোফাতে ফোফাতে বলল..)
আমি মনে মনে একটু হাসলাম।মেয়েটা আসলেই বোকা।নিজেই নিজেকে #অপরাধী বানায়।তারপর ওকে বললাম........
তুমি আমার সাথে মিথ্যা বলেছো।আমি তোমার সাথে কথা বলবো না।(মিথ্যা অভিমানের অভিনয় করে)
আমি এর উত্তর শুনলাম না।ইশিতা কাদঁতে থাকলো।আমি চুপ করে আছি। একটু মজা নিবো হি হি হি।তারপর হুট করে ফোন কেটে গেলো।ফোনটা কাটতেই আমার বুকে কেমন করে যেনো ধাক্কা লাগলো।আমি কিছু মনে না করে আমার কাজে মনোযোগী হলাম।
.
পরের দিন.....
পরের দিন আমি রেডি হয়ে রওনা হলাম ইশিতাদের বাসার উদ্দশ্যে।ইশিতাকে নিয়ে তারপর যাবো।কিন্তু ইশিতা কেমন আছে কে জানে।কারন ও আমার কাছে মাফ চেয়েছিলো।কিন্তু আমি করিনি।আর ও আমায় ওর বেস্ট ফ্রেন্ড মনে করে।আর আমি রাগ করলে ওর সাথে কথা বলবো না।আর ও এটা সহ্য করতে পারে না।তাই।এই সব কথা ভাবতে ভাবতে ইশিতাদের বাসায় চলে আসলাম।বাসার ভিতরে ঢুকলাম।আজ সব কিছু কেমন যেনো শান্ত শান্ত লাগছে।চাচা নেই কোথাও।আমি সোজা ইশিতার ঘরে গেলাম।ইশিতার ঘরে অবাক হয়ে গেলাম।চাচা ইশিতার পাশে বসে আছে।চাচার চোখ এ পানি।আমি এবার ভয় পেয়ে গেলাম। ইশিতা আবার কিছু করে বসে নি তো??
..
সরি ইশিতা।
আমাকে মাফ করেছো।
হুম।
আমার কিস কোথায়......??কত দিন দাও না।দাও কিস দাও...(বাচ্চাদের মত আবদার করে গাল পেতে দিলো।)
উম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মম্মহ.......হয়েছে.....??
উহু...না।হয়নি।মাত্র তো একটা আর কাল যে অপরাধ করেছো তার জন্য আরও দিতে হবে......
ইশশ....নিজে মনে হয় কিছুই করনি।তুমিও অপরাধ করেছো .... (পল্ট্রি নিলাম)
ওওওও....তাই...??তাহলে এই নাও.......উম্মম্মম্মমাহহ.. (আমার ঠোটে কিস করলো)
আমি আমার গায়ে ৪২০ ভোল্টের মত শকড লাগলো।আর সাথে টাসকি খেয়ে গেলাম।ইশিতা কিস করার কথা গালে কিন্তু ও করলো ঠোটে।তারমানে রাইসার কথাই সত্যিই।হুম।ব্যাপারটা বুঝতে হবে........????তারপর ইশিতার দিকে তাকালাম।ও লজ্জায় লাল হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।ওর গাল দুটো লাল টমেটোর মত হয়ে গিয়েছে। বিনোদন পাচ্ছিলাম আমি।তারপর হটাৎ...........
আমি আসতে পারি.........???
তাকিয়ে দেখি চাচা খাবার নিয়ে দরজার সামিনে খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে দাড়িয়ে।তারপর আমি বললাম......
আরেহ...চাচা তুমি এসো ভিতরে এসো।
হুম।খাবারটা নে।আর এই টাকাগুলো রাখ।তুই তো মাত্র চাকরী পেলি।হাতে তো আর টাকা নেই।এই গুলো রাখ।আর ফেরত দেওয়ার চেস্টা করলে মার খাবি......(আমার হাতে টাকার পেকেট দিয়ে)
আচ্ছা।(টাকা আর প্লেট টা নিলাম)
হুম।আর সাবধানে যাবি।
আচ্ছা।চাচা।
আসিরে মা।ভালো থাকিস....!!
আচ্ছা বাবা।তুমিও ভালো থেকো....(ইশিতা)
আচ্ছা।খোদা হাফেজ।(চাচা)
খোদা হাফেজ....(আমরা একসাথে)
তারপর চাচা চলে গেলো।চাচা চলে যেতেই ইশিতা বলল........
রাকিব...খুব খুদা লেগেছে তো.....
হুম।হাত ধুয়ে এসো।
তুমি হাত ধোও....
কেন.....???(হালকা অবাক হয়ে)
বারে.....আমি কাটা বাছতে পারি না তো।যদি কাটা গলায় ঢুকে যায়...??তখন.....???
ওওওওওওও......তাও তো ঠিক।
হুম।যাও হাত ধুয়ে এসে আমাকে খাইয়ে দাও......
হুম।
তারপর প্লেট রেখে আমি হাত ধুতে গেলাম।হাত ধুয়ে এসে ইশিতাকে খাইয়ে দিতে লাগলাম........, !!!!!
.
ওই তোমার কতক্ষন লাগবে.....??৫০ মিনিট তো হয়ে গেলো।
আর....একটু।
ধুর...বাবা।এতক্ষন যে কি করে কে যানে......
তারপর অপেক্ষা করতে লাগলাম।পাক্কা ৫০ মিনিট হয়ে গেলো মহারানির কোন খবর নেই।তারপর ১০ মিনিট পরে মহারানি বের হল।ইশিতাকে দেখে আমি আবার ক্রাস নামক বাঁশ খেলাম।ইশিতা একটা কালো শাড়ী পরেছে।আর মেকাপ করে নি। তাহলে এত দেড়ি হল কেন.....?? তাই একটু জিজ্জাসা করলাম......
তোমার এত দেরি হল কেন....???(আমি)
দেড়ি হল মানে.......??(ইশিতা)
মানে সাজলা না কিন্তু এত দেড়ি হল কেন......????
আরে....আমি শাড়ি পড়তে পারি না।আর ইউটিউব দেখে পড়তেই তো এত দেড়ি হল.......!!!
ওহ।চলো তাহলে.......!!!!
হুম চল।
তারপর আমরা বাস স্টেন্ড এ গেলাম।গিয়ে দেখি রাইসা অপেক্ষা করছে।তারপর আমরা বাসে ওঠলাম।আমি আর ইশিতা,রাইসা আর তার বাবা। ওর বাবা কেন আসলো বুঝলাম না।আমি আর ইশিতা এক সিটে যাচ্ছি। যেতে যেতে কাল সকাল হয়ে যাবে।আমি বাসে ঘুমিয়ে পড়লাম।ঘুম থেকে ওঠতেইঈ আমি অবাক হয়ে গেলাম।কারন আমি ইশিতাকে জড়িয়ে ধরে আছি আর ইশিতা আমাকে।তারপর ইশিতাকে ছাড়িয়ে নিলাম।ইশিতাকে ছাড়াতেই ইশিতা জেগে গেলো।ইশিতা আমাকে বলল........
পানি খাবো রাকিব। পানি দাও।(ইশিতা)
তারপর বেগ থেকে পানি বের করে ইশিতাকে দিলাম।ইশিতা পানি খেয়ে আমাকে আবার জড়িয়ে ধরলো।আমি পানির বোতল রাখতে যাবো এমন সময় সময় ইশিতা আমাকে টান দিয়ে বসিয়ে বলল.....
এ দেখ।আবার যদি ওঠিস।তাহলে মার খাবি কুত্তা।চুপচাপ বসে থাক।(রেগে তুই করে বলল)
আচ্ছা।
ইশিতা রেগে গিয়েছে তাই আর কিছু বললাম না।বসে পড়লাম।আর ইশিতাও আমায় জড়িয়ে ধরলো।ইশিতার শরির থেকে একটা মিস্টি আসছে।সেই গন্ধ আমাকে...........!!!!!!
....
পরের দিন সকাল ১০টায়.....
রাইসার ডাকে ঘুম ভাংলো। ঘুম থেকে ওঠতেই রাইসা বলল আমরা এসে পড়েছি।তাই ইশিতাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে বাস থেকে নামলাম।তারপর ইশিতার মুখ ধুইয়ে দিয়ে আমার মুখও ধুলাম। পরে রাইসা অটোতে করে ওদের বাসায় নিয়ে এলো। বাসায় ঢুকে সবার সাথে পরিচিত হলাম।তারপর রাইসা আমাকে আর ইশিতাকে পাশাপাশি আলাদ রুম দেখিয়ে দিলো।তারপর ঘরে এসে ফ্রেস হয়ে নিলাম।পরে একটা ঘুম দিলাম।তারপর হটাৎ পানির ছিটা আমার মুখে পড়ায় আমার ঘুম ভেংগে গেলো।তারপর তাকাতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম।ইশিতা শাড়ি চেঞ্জ করেছে। মিস্টি রংয়ের একটা শাড়ি।আর হালকা মেকাপ। এক কথায় মিস্টি মেয়েটাকে মিস্টি পরির মত লাগছিলো।আমার এই ভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে হয়তো ও লজ্জা পাচ্ছিলো।তাই আবার আমার মুখে পানি মেরে দৌড়ে পালালো........................!!
..
.
ইশিতা আমার মুখে পানি মেরে আবার দৌড়ে পালালো।আমি একটু হাসলাম।মেয়েটা একদিনেই কেমন করে চাঞ্চল্য হয়ে গিয়েছে। ভালোই লাগছে।
...
ফ্রেস হয়ে বাহিরে বের হলাম।কাল গায়ে হলুদ তাই আজ সব কিছু গুছাবার তোড়জোড় চলছে।আমি আনন্দের। সহকারেই তা উপভোগ করতে লাগলাম।
.....
আস্তে আস্তে বিয়ের দিন এসে পড়লো। রাইসা আর তার বর আবিরের বিয়ে হয়ে গেলো।বিয়েতে যখন রাইসা "কবুল" নামক (3 golden word's) বলছিলো তখন ওর চোখে পানি দেখেছিলাম।হয়তো চিন্তা করছিলো ছেলেটা কেমন বিয়ের পরে ওর সাথে মেচ করবে কিনা...???বা ছেলেটা ভালো হবে কিনা.......??????অবশ্য আমি আমার সোর্স আর মাধ্যমে খবর নিয়েছিলাম।ছেলেটা ভালো।শুধু ভালো না খুব ভালো।সেটা অবশ্য রাইসাকে বলেছিলাম কিন্তু নিজের তো চিন্তা হয়।তাই হয়তো করছিলো।
......
বিয়ে শেষ হয়ে গেলো।রাইসাকে নিয়ে চলে গিয়েছে।যাওয়ার সময় রাইসা শুধু এতটুকুই বলেছিলো আমাকে "ইশিতার চোখের একফোট পানিও যেন মাটিতে না পড়ে।আর যদি পড়ে তাহলে দেখো কি করি আমি"।। আমি তখন এমন করলাম যে রাইসা কান্নার মাঝেও হেসে দিয়েছিলো।এমন কি শুধু রাইসা না।যারা যারা এই খানে ছিলো তারা আমাদের কথা না শুনলেও আমার মুখ দেখেও হেসে দিয়েছিলো।তারপর রাইসা ইশিতার কানে কানে কি যেন বলল।তারপর চলে গেলো।
.......
রাইসার বিয়ের ১ দিন পর আমরাও চলে আসলাম।তারপর থেকে আবার সেই পুরোনো রুটিনে চলতে লাগলাম।সপ্তাহে ১ দিন কলেজে যাবা।ইশিতার সাথে ঘুরা, রাতে কথা বলা,মেসেজিং করব,শেয়ারিং,কেয়ারিং,মজা,মাস্তি,আড্ডা এভাবেই চলে গেলো ২ টা বছর..................
............................২বছর পর.............................
আজ অফিসে যাবার জন্য বের হব এমন সময় ফোন বেজে ওঠলো।ফোনটা তুলে দেখি চাচার ফোন।তারপর ফোনটা ধরলাম.......
আসসালামু আলাইকুম চাচা।(আমি)
ওয়ালাইকুম ..... তো ২ বছর তো হয়ে গেলো।কি ভুলে গেলি নাকি.....??
না।চাচা ভুলি নাই।মনে আছে।
হারামজাদা। চাচা না বাবা বলবি বাবা।
আচ্ছা।বাবা বাবা বাবা ।
হুম।আজ রাতে বিয়ে বড় করে করবো না।বাসায় কাজি ডেকে বিয়ে পড়াবো।আর এতিমখানা আর মসজিদে মিলাদ পড়িয়ে দিবো।
হুম।চাচা এটাই ভালো হবে।
আবার চাচা.......??
নাহ।থুক্কু বাবা।
হুম।আল্লাহ হাফিজ।
আল্লাহ হাফিজ।
ফোনটা কেটে দিলাম।চাচার প্রতি সম্মান আমার আবার বেড়ে গেলো। কারন চাচা লোক খাওয়ানোর মত অযথা টাকা নস্ট করার চেয়ে। এতিমখানায়। দিচ্ছে।সেলিউট চাচা।
......
বিয়েটা হয়ে গেলো।ইশিতাকে নিয়ে আমার বাসায় আসলাম।আর ভাবছেন ইশিতা আগে থেকেই জানতো?????আসলে তা না।ইশিতাকে চাচা থুক্কু বাবা বলেছিলো আজকেই। আমি জানি ইশিতা আমায় ভালোবাসে তাই না করবে না।কিন্তু ইশিতাকে বাবা অনেক কস্টে রাজি করিয়েছিলো।ইশিতা যখন রাজি হচ্ছিলো না।তখন বাবা নাকি বলেছিলো যে ২ বছর আগে থেকেই ঠিক করা।তখন নাকি ইশিতা রাগি গলায় বলেছিলো "আমি রাজি।আর রাকিবের খবর আছে"। বাবা আমাকে এই নিয়ে সাবধান করেছিলো।ইশিতার কিছু বান্ধবি এসেছিলো ইশিতার সাথে। তারা ইশিতার সাথে কথা বলে শেষ করে।যাবার সময় আমাকে বলল......
"বিড়ালকে আপনার মারতে হবে।আজকে বিড়লাই আপনাকে মেরেদিবে"
এই বলে ওর হাসতে হাসতে চলে গেলো।আমি ওদের এই কথার মানে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি।তারপর আমি সবার আমার বাঁশ উফ সরি বাসর ঘর।আজ আমার জন্য যম এর ঘর বললেও ক্ষতি নেই।ইশিতা যেই ভাবে ফায়ার হয়ে আছে।তাতে করে ফায়ার সাভর্িস এসেও ওর আগুন নিভাতে পারবে কি না সন্ধেহ আছে।তারপর ঢুকলাম।ঢুকতেই আমি অবাক।একি বউ কই.....???আমার পাশে তাকাতেই দেখি ইশিতা আর্জেন্টিনার জার্সি আর টাওজার পরেছে।আর টাওজার টাও হাঁটু পর্যন্ত।ওকে এই অবস্থায় দেখে আমার নিজের ও লজ্জা লাগছিলো।আমাকে দেখেনি।আর যখন আমাকে দেখলো তখন বলল........
ওই....কি হইসে???? এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন.....???(ইশিতা)
বাবু হইসে...থুক্কুক্কু....কিছু না।(এই রে কি বলে দিলাম)
বাবু....??কোথায়...??এখন ও ইই হল না আবার বাবু।হুহ।আর তোর কপাল টা আজ ভালো।যে আর্জেন্টিনার খেলা আছে। না হলে তোর খবর ছিলো।যাইই হোক।এখন লক্ষি ছেলের মত আইস্ক্রিম এনে দে। খাবো আর খেলা দেখবো।
রাত ১টা বাজে আইস্ক্রিম কোথায় পাবো....??
কিহ??রাত ১টা???খেলা তো শেষ। উহুহুহুহুহুহুহুহুহুউউউউউউউউউউউউ.....আব্বব্বব্বব্ববুউউউউউউউ..........খেলা শেষ......... আমাকে আগে বললা না।কেন উহুহু.......(কান্না জুড়ে দিলো)
আমার মনে ছিলো না।তো সরি।
তুমি ইচ্ছা করে বলনি।উহুহুহু.....(কান্না করতে করতে)
সত্যিই.... বলছি।আমিও তো আর্জেন্টিনার সাপোর্টার।আর কাল তো রিপিট দিবেই।তখন না হয় দেখে নিবো।(অবস্থা বেগতির দেখে বললাম)
তুমি।চুপ থাকো।একটা কথাও বলবা না।আমার খুদা লেগেছে।বিরিয়ানি আন। আর আইস্ক্রিম আনো।
বিরানির সাথে আইস্ক্রিম.....???
হুম।যাও।
আচ্ছা।
.........
হি হি হি।আইস্ক্রিম তো ফ্রিজে অনেক আছে।আর আসার সময় বিরানির প্যাকেট ও এনেছি।বেঁচে গেলাম। হুহ।তারপর আইস্ক্রিম আর বিরানির প্যাকেট নিয়ে ঘরে গেলাম। ঘরে যেয়ে একটু শব্দ করতেই ইশিতা ভয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠলো।তারপর আমাকে দেখে বলল..........
তু....তু....মি????এত তারাতারি কিভাবে আসলা.....????(ইশিতা)
হি হি হি।নিচে যাবো কেন.....???বাসায় ই তো সব ছিলো।
কুত্তা,।আগে আনবা না আরও। কত ক্ষুদা লেগেছে।সারাদিন রাগে কিছুই খাই নি।
আমি আর কথা না বলে বাড়িয়ে দিলাম খাবারগুলো।ইশিতা টপাটপ খেতে শুরু করলো।আমি যে তাকিয়ে তাকিয়ে হাসছি তার কোন খেয়াল নেই।হটাৎ খাওয়া থামিয়ে আমার দিকে তাকালো।আমি সাথে সাথে হাসি বন্ধ করে দিলাম।না হলে খবর আছে।কিন্তু ও মনে হয় দেখে ফেলেছে।আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল........
তুমি খাবা না......??(ইশিতা)
হুম।(আমি)
কখন....???
তুমি খেয়ে নাও।তারপর।
না।তা হবে না।এখন থেকে আমরা একসাথে খাবো।
আচ্ছা।
হইসে।এখন এখানে আমার সামনে বস।আমি তোমাকে আর তুমি আমাকে খাইয়ে দাও।
জু।হুকুম রানী।
তারপর ইশিতা আমাকে আর আমি ইশিতাকে খাইয়ে দিলাম।খাওয়া শেষ করার পর ইশিতা গেলো প্লেট ধুতে।আমি অবশ্য না করেছিলাম কিন্তু শোনেনি।প্লেট ধুতে যাবেই।প্লেট ধুয়ে ইশিতা ঘরে আসলো।তারপর মাথাও ওড়না দিলো।আমি আগে থেকেই দাড়িয়ে ছিলাম।ইশিতা আমাকে সালাম করলো।আমি ওকে ওঠাতেই ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।আর কাদতে লাগলো।আমি ওর কান্না দেখে ওকে বললাম.....
কাদঁছো কেন....???(আমি)
তুমি।আমাকে কেন বিয়ে করলে রাকিব...???তুমি আরও ভালো মেয়ে পেতে।কেন নিজের জিবনটা নিস্ট করলা ...?? কেন....??? (কেঁদে কেঁদে বলল)
ভালোবাসি. . বলে ...!! (মাথাটা নিচু করে বললাম)
হাহাহা... ভালোবাসো.....???কেন..??কি আছে আমার.....???তোমায় দেবার মত কিছু নেই আমার মাঝে....!!!! (কান্নার বেগ বেড়ে গেলো)
আছে। তোমায় ওই মনটা আছে।ওই চোখ গুলো আছে।ওই মায়াবী চোখের মায়াবীনিকে চাই। তোমার মিস্টি মনটা চাই।আমার তোমাতে চাই আমাতে।আমার রাজ্যের রাণির জায়গাটা খালি তো।তুমি এসে পূর্ণ কর সেই জায়গা।তোমায় ছাড়া যে সেখান কার অধিকার আর কারও নেই ইশিতা।ভালোবাসি।ভালোবাসি বলেই তোমাকে চাই।মন পিঞ্জরায় খুব যতনে সাজিয়েছি তোমায়।ভালোবাসি।(হাঁটু গেড়ে বসে বললাম)
আমাকে কস্ট দিবা নাতো.....??? আমাকে অনেকগুলা ভালোবাসবা তো...???(আমাকে উঠিয়ে বলল)
কস্ট দিবো না।আর এত্তত্তত্তত্তত্তত্তত্তত্তত্ত্রগুলা ভালোবাসবো তোমায়।(দুই হাত বাড়িয়ে বললাম)
ভালোবাসি তোমায় রাকিব ......... (জড়িয়ে ধরলো)
আমিও ভালোবাসি তোমায় ইশিতা।
আমিও জড়িয়ে নিলাম ইশিতাকে আমার ভালোবাসার চাদরে।
.
.
.
★★★★আসলে সব গল্পের সমাপ্ত দেওয়া যায় না।কিছু কিছু গল্পে সমাপ্ত শব্দটা বেমানান।তাই সমাপ্ত ছাড়াই শেষ করতে হয় কিছু গল্প।কিছু কল্পনা।★★★★
⚠এমন আরো গল্প পড়তে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন⚠
গল্প : নেতার মেয়ে.. পার্ট ০৬ (অন্তিম পর্ব) লেখক : রাকিবুল হাসান . .