obsession

Icche_Pakhi

Part: 01

--ছাড়ুন বলছি। আমি যাবো না আপনার সাথে। প্লিজ এমন করবেন না।

-- তোমাকে ছাড়ার জন্য তো এতো টাকা দিয়ে কিনিনি আমি।তোমাকে আমার সাথেই যেতে হবে। ইউ হ্যাব নো অপশন।

কান্না করা ছাড়া আর কি বা করার থাকতে পারে এই পরিস্থিতিতে আমার।

আমি ইচ্ছে। বাবা মা তো নেই এই এত বড় পৃথিবীতে রক্তের সম্পর্ক বলতে আমার কেউ নেই। একটা অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি আমি। কলেজ শেষ করেছি। ইচ্ছে ছিলো আরে পড়াশোনা করবো। নিজের পায়ে দাড়াবো।কিন্তু আমার মতো অনাথের কপালে বুঝি স্বপ্ন পুরন করার সৌভাগ্য নেই।

অনাথ আশ্রমের মালিক আমাকে চড়া দামে নিলামে তুলেছিলেন। পালানোর অনেক চেষ্টা করেছি।কিন্তু পারিনি। বিরাট অংকের টাকা দিয়ে আমাকে শেষ মেষ কিনে নিলেন এদেশের সনামধন্য ব্যবসায়ী মি. রাফিয়ান রাফি। না জানি কি আছে আমার ভাগ্যে।

আমি পালানোর একটা শেষ চেষ্টা করেছিলাম।কিন্তু মি.রাফিয়ান রাফি হাত থেকে বাচতে পারলাম না। তিনি এখন আমাকে জোর করে তুরে নিয়ে যাচ্ছেন।

আমার হাত,মুখ বাধা। পাশে উনি ফোনে কারো সাথে কথা বলছেন।

রাফি: হুম।সব রেডি তো? ওকে। আসছি আমি।

ভয়ে আমার গলাবুক শুকিয়ে যাচ্ছে।না জানি কোন নরক জীবন আমার জন্য অপেক্ষা করছে। একটা বিশাল বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামলে।আমাকে উনি কোলে করে ভেতরে নিয়ে গেলেন। আমি হাত পা ছুড়ছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। বিশাল আলিশান বাড়ি। বাহিরে যেমন সুন্দর ভেতরটা আরো চোখ ধাধানে। কিন্তু কোনো মানুষের আনাগোনা দেখা গেলো না।

একটা রুমে নিয়ে আমাকে বিছানায় বসিয়ে রেখে উনি চলে গেলেন। দরজাটা লক করে দিয়েছেন। হাত, মুখের বাধন খুলে দেন নি।আমি অঝোরে কাঁদছি। আজ যদি আমার বাবা মা থাকতো, পরিবার থাকতো। তাহলে হয়তো পরিনতি অন্যরকম হতো।ভাগ্যের কাছে আজ আমি অসহায়।

কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে কিছু মেয়ে এলো আর সাথে একজন ছেলে। মেয়েগুলোর হাতে বিভিন্ন জিনিস দেখা যাচ্ছে।ছেলেটি এসে আমার বাধন খুলে দিলো। আমি জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি। তখনই ছেলেটি বলে উঠলো-

-- আমি আদি। রাফি ভাইয়ের নিজের ভাই না হলেও বলতে পারেন আমিই তার ভাই, বডিগার্ড, পরিবার।

আমি চুপ করে আছি। এই লোকটাকেও আমার রাফির মতো সয়তান মনে হচ্ছে।

-- আমি বুঝতে পারছি আপনার মনের অবস্থা। ভাইয়ে একদম ঠিক হয়নি এরকম করা। কিন্তু ভাই যখন রেগে যায় কারো কথা শোনে না।ভাইয়ের হয়ে আমি সরি বলছি আপনাকে।

ছেলেটাকে এবার আমার নিরাপদ মনে হচ্ছে। একদম আলাদা রাফির থেকে। আমি এখনো চুপ করে আছি।

-- আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি আপনাকে কোনো সাহায্য করতে পারছি না। কিন্তু এটুকু বলতে পারি যা হচ্ছে আপনার জন্য মঙ্গলময়ই হবে। ওনারা আপনাকে রেডি করে দিবে।ভাইয়ের অর্ডার। আমরা সবাই নিরুপায়।

তোমারা সুন্দর করে ওনাকে ত্যরি করে নিচে নিয়ে আসো।

-- আমাকে আপনার ভাই মনে করতে পারেন। আপনার অস্মান আমি হতে দিবো এতোটুকু কথা দিতে পারি। আর একটা কথা ভাইকে যতটা খারাপ ভাবছেন উনি ততোটা খারাপ নন। সময় হলে নিজেই বুঝতে পারবেন। আসছি আমি।

চলে গেলেন আদি। মেয়েরা আমাকে ত্যরি করছে আর আমি পুতুলের মতো বসে আছি। এরপর আমাকে নিচে নিয়ে যাওয়া হলো।

নিচে এখন ঐ ছেলেটা আদি আর একজন কোর্ট পড়া লোক, একজন হুজুরও সাথে আছে। আর আমার সাথে উপরের মেয়েরা।উনিও আছেন।

আমাকে তার পাশে বসানো হলো। আমি পাথর হয়ে বসে আছি। কোনো অনুভূতিই আর কাজ করছে না আমার।

আমাকে একটা কাগজ উনি সাইন করে দিলেন। আর বললেন সাইন করতে। বললেন বললে ভুল হবে ধমক দিলেন তিনি। আমি ভয়ে কেপে উঠলাম।এরকম ধমক আমাকে কেউ কোনোদিন দেয়নি। আমি ভয়ে ভয়ে কাপা কাপা হাতে সাইন করে দিলাম। কিসে সাইন করলাম কিছুই জানিনা।

কিন্তু এরপর হুজুর যা বরতে থাকলেন তা শুনে আমি অবাকের সপ্তম আকাশে উঠে গেছি। তিনি আমাকে বিয়ে করছেন। আমি অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।

ওনার এরকম কাজের কোনো মানে আমি খুজে পাচ্ছি না। এত টাকা দিয়ে কিনলেন উনি আমাকে। আর এখন কি না আমাকে বিয়ে করছেন।কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।কি করতে চাইছেন উনি। কাজি সাহেব ওদিকে আমাকে কবুল বলতে বলছেন। কয়েকবার বলার পরও যখন আমার হেলদোল নেই তখন তিনি আমাকে আবার ধমক দিলেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে কবুল বলে দিলাম ভয়ে।

তিনিও কবুল বললেন। সাক্ষী দিলেন আদি আর একজন মেয়ে যারা আমাকে সাজাতে এসেছিলো তাদের একজন। বিয়েটা হয়ে গেলো আমার।

সবাই তারপর চলে গেলেন।বাড়িতে এখন ওনাকে ছাড়া আর কাউকে দেখছি না। উনি এখন ফোনো কথা বলছেন আমার থেকে কিছুটা দুরে। কথা শেষ করে এসে আমাকে কোলে তুলে নিলেন। কোনো কথা বললেন না।আমাকে অন্য একটি রুমে নিয়ে গেলেন। বিছানায় বসালেন। তিনি বাথরুমে চলে গেলেন। রুমটা সুন্দর করে সাজানো। একদম বাসর ঘরের মতো।

ওনার হয়তো আমাকে অবৈধভাবে ভোগ করতে রুচিতে বাধছিলো।তাই বিয়ে করে বৈধ করে নিলেন। আমার ও পালানোর পথ বন্ধ করে দিলেন। ব্যবসায়িক মানুষ কি না। বুদ্ধিতে তাকে কে হারাবে।

চলবে>>>>>