"আমি প্রেগনেন্ট ,ফাহিম।আমার মাঝেও একজন বেড়ে উঠছে,,,".
.
তিন বছরের সম্পর্ক আমাদের ।কখনো তাকে জড়িয়ে পর্যন্ত ধরিনি আর সে কি না এখন বলছে সে মা হতে চেলেছে ।সে নিশ্চই মজা করছে হয়তো ।তাই বললাম,,
--এ কেমন মজা ,প্রীতি ?সব কিছুর একটা লিমিট থাকে ।আর এসব বিষয়ে ফাজলামো করার তো প্রশ্ন ই উঠে না তাই না ?(ফাহিম)
--এটা একদম সত্য ।বিশ্বাস না হলে এই যে রিপোর্ট গুলো ধরো ।আর এই যে উপরে দেখো আমার নাম টা ই লেখা ।(প্রীতি)
প্রীতির সব কাগজ পত্র দেখে মাথা ঘুরাতে শুরু করলো ।এ কিভাবে সম্ভব ?ওর সাথে তো আমি শারীরিক কোনো সম্পর্ক করিনি ।তার মানে কি সে অন্য কারো সাথে,,।এসব ভাবতে ভাবতেই বললাম,,
--তা আমার সাথে টাইম পাস করে কি মজা পেলে ?(ফাহিম)
প্রীতি একদম নিশ্চুপ ।আমি ভালো মতো খেয়াল করলাম সে কাদঁছে ।জানি এই কথার কোনো উওর আসবে না ।আমি একগাল হাসি দিয়ে বললাম,,,
--কি সমস্যা ?কাদঁছো কেনো ?তোমার বফ তোমাকে রেখে চলে গেছে তাই না ?কোনো চিন্তা করো না ।এই গরীব ছেলেটাই তোমাকে বিয়ে করবে ।আর তুমি তো তাকে বিশ্বাস করেছিলে তাই না ?ঠকেছো তো কি হইছে আমি তো আছি না ?এই একবার বিশ্বাস রাখো আমার উপর তোমার সব ঠিক হয়ে যাবে ।(ফাহিম)
--ফাহিম,তুমি এটা মোটেও আশা করোনি তাই না ।তুমি না বুঝেই এমন করছো ।আগে আমার পুরো কথাটা শুনো ,,,,(প্রীতি)
--আমার অতীত শুনতে ভালো লাগে না ।আমি তোমাকে নিয়েই থাকবো ।চিন্তা করো না ।শুধু তোমার বাবা মা কে একটু ম্যানেজ করো ।আমার পরিবার আমি নিজেই বুঝবো ।(ফাহিম)
--তুমি সব কথা না শুনেই এমন সমস্যায় কেনো জড়াচ্ছো ?(প্রীতি)
--তুমি বাসায় যাও তো এখন সব ঠিক হয়ে যাবে ।(ফাহিম)
এভাবেই দিন যাচ্ছিলো ।আমি প্রীতিকে এতো ই ভালোবাসতাম যে তার সকল কিছু ই মেনে নিয়েছি ।সে তার সেই প্রেমিক এর কথা বলবে ,কিন্তু সেটা শুনতে চাই না ।আমি নতুন করেই সব কিছু সাজাতে চাই ।প্রীতি তার ফ্যামিলিকে বুঝাতে পেরেছিলো ।সে তার পরিবারকে বলেছিলো যে এটাই ফাহিমের বাচ্চা ।দুই পরিবারের কেউ ই মেনে নেয়নি ।সবাই তাদের সম্মানের কথা ভেবে ই বিয়েটা দিয়ে দেয় ।সব কিছু ভালো ই চলছিলো তাদের ।কিন্তু ফাহিম বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই প্রীতির সাথে খুব একটা কথা বলে না ।অফিস যায় আসে ।দরকার ছাড়া কেউ কথা ই বলে না ।এভাবে কি থাকা যায় ?বিয়ের প্রায় দুই মাস পর এক রাতে দুজনেই ঘুমাচ্ছিলো হঠাৎ প্রীতি চোখ মেলে দেখে ফাহিম নেই ।সে ভাবে হয়তো ওয়াশ রুম গেছে কিন্তু অনেকক্ষন হলো ফিরছে না ।সে একটা অজানা চিন্তায় পড়ে যায় ।সে বিছানা থেকে উঠে ধীর পায়ে বারান্দায় যায় ।যেয়ে দেখে ফাহিম কার সাথে যেনো ফোন এ কথা বলছে ।প্রীতি ফাহিম এর একটা কথা শুনে পুরো থমকে গেলো ।সে বলছিলো,,
--মামুনি,তোমার পরিক্ষা ভালো করে দিও ।ভালো রিজাল্ট করলে চকলেট কিনে দিবো,,
প্রীতি এই কথাটা একদম ই মেনে নিতে পারেনি ।তার মানে কি ফাহিম এর আগেও বিয়ে করেছে ?তাহলে কি সে আমাকেও পন্য হিসেবে ব্যাবহার করছে ?প্রীতির মনে হাজার প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে ।কিন্তু কোনো কিছুর সমাধান পাচ্ছে না ।প্রীতি তারাতারি ঘুমিয়ে যায় ।সকালে শুধু তার মাথায় এই একটা কথা ই আসছে ।কি করবে এখন সে ভেবে ই পাচ্ছে না ।সেদিন সকালে প্রীতি ফাহিমকে বললো,,
--তুমি কি আমার কাছে কোনো কিছু লুকাচ্ছো ?
--কই না তো ।তোমাকে আবার কি লুকাবো ?এত কিছুর পরও তোমাকে ভালোবাসি বলেই তো বিয়ে করেছি তাই না ?
প্রীতি ভাবে আসলেই তো এটা তো ঠিক ।কিন্তু সে এমনও করতে পারে যে ভুগ করার জন্য আমাকে ব্যাবহার করছে ।প্রীতির প্রশ্নের সমাধান খুজেঁ পায় না ।সেদিন সন্ধায় ফাহিম ফোন বাসায় রেখে বাহিরে গেছিলো ।হঠাৎ একটা কল আসে তাতে লিখা তাসফিয়া,,।প্রীতি ভেবেছিলো হয়তো সে অফিসের কোনো পরিচিত কেউ ।কিন্তু কল রিসিভ করতেই সে যা শুনলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না ।তার মানে প্রীতির সব ধারনাই ঠিক ।ফাহিম আগেও বিয়ে করেছে ,তার আরেকটা পরিবার আছে ।সে যা শুনলো তা হলো,,,
--আব্বু,আমি ভালো পরিক্ষা দিয়েছি চকলেট কিনে দিতেই হবে ।কবে আসবে আব্বু?
প্রীতি কোনো কিছুর সমীকরন মেলাতে পারছিলো না ।সে ভাবছিলো ফাহিম এমন বেঈমানিটা কিভাবে করলো ?সে শুধু এটাই ভাবছিলো সমাজে হয়তো বেচেঁ থাকার কোনো রাস্তা নেই ।এসব ভাবতে ভাবতেই সে অনবরত কান্না করছিলো ।তখন ই ফাহিম এসে বলে,,
--তুমি আমার ফোন ধরলে কেনো ?
প্রীতি ভয়ে একদম নিশ্চুপ হয়ে গেলো,,,
--তুমি আমার ফোন ধরলে কেনো ?
প্রীতি ভয়ে একদম নিশ্চুপ হয়ে গেলো,,,।কি বলবে এখন কিছুই বুঝতে পারছে না ।ফাহিম একটানে তার ফোনটা টেনে নিলো ।প্রীতি চুপচাপ এক জায়গায় বসে রইলো ।ফাহিম কোনো কিছু না বলেই ঘর থেকেই বেরিয়ে গেলো ।ফাহিমের কোনো আচরন ই প্রীতির একদম ই ভালো লাগছে না ।প্রীতির এখন অনেক খারাপ লাগছে কিন্তু কোনো কিছু ই সে প্রকাশ করছে না ।সে ভাবে এই ভাবে আর কত ?নিজে তো এর আগেই শেষ হয়েছি এখন ই কেনো আবার এমন হবে ।সবাই প্রতারক ,কেউ ভালো না ।ঠিক তখন ই ফাহিম রুমে প্রবেশ করলো ।প্রবেশ করেই বলতে শুরু করলো,,,
--কার সাথে কথা বলেছো জানো ?বিয়েতে একটা সুন্দর মেয়ে এসেছিলো না ?দেখেছিলে না?
--হ্যা,সে তোমার মেয়ে হয় ।এর থেকে বেশি কিছু জানার ইচ্ছা আমার নেই ।তোর মতো শয়তান কে বিয়ে করে অনেক বড় ভুল করেছি ।তুই ও সেই নরপিশাচটার মতো ই ।তুই ও খারাপ ।আমার অসহায় এর সুযোগ নিয়েছিস,,
এই কথা বলেই প্রীতি তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ফাহিম কে চর মারলো।চর মেরেই প্রীতি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ।ফাহিম কোনো কিছু ই বুঝতে পারছে না ।ফাহিম শুধু ভাবছে ই কি এমন করলো যে এমন ভাবে তাকে চর মারলো ।ফাহিম কোনো কিছু না ভেবেই বারান্দায় চলে গেলো ।ফাহিম ভাবছে সেদিনকার কথা যেদিন তাদের প্রথম প্রেমের শুরু হয় ।এভাবেই দুই বছর প্রেম করে তারা হঠাৎ একদিন প্রীতি তার সাথে দেখা করবে বলেছিলো কিন্তু সেদিন সে আসেনি এরপর থেকেই প্রীতির পরিবর্তন ঘটে ।মন খারাপ করেই থাকতো সব সময়। এমন কি তিন মাস তাদের দেখা বা কথা পর্যন্ত হয়নি ।ফাহিম এই দিন গুলো একদম পাগল হয়েই যাচ্ছিলো ।তারপর তারা দেখা করে ,সব আগের মতো ই চলছিলো ।তবে সে যে এই ক দিনে অন্য একটি রিলেশনে জড়িয়েছে তা ভাবতেও পারেনি ।আর তার ভালোবাসা তো মাথ্যা ছিলো না তবুও তাকে বিতারিত হতে হচ্ছে ।সেই প্রতারনার এক বিশেষ চিহ্ন তার গর্ভে পাচঁ মাসের বাচ্চা ।তবুও তাকে ফাহিম ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো ।সব কিছু ভুলে এক সাথে থাকতে চেয়েছিলো ।কিন্তু কি কারনে তাকে এভাবে প্রীতি চর মারলো এটাই বুঝে পাচ্ছে না ।ফাহিম এক রকম একা ই ঠাই দাড়িয়ে এগুলো ই ভাবছেন ।সেদিন রাতে তারা ঘুমিয়েছে ঠিক ই কিন্তু কেউ কারো সাথে একটা কথাও বলেনি ।এরপর দিন সকালে প্রীতি ব্যাগ গোছিয়ে চলে যাচ্ছিলো ।হঠাৎ ফাহিম বলে উঠলো,,
--কোথায় যাচ্ছো ?এত বড় ব্যাগ গুছিয়ে ?
--তুমি কি ভেবেছো বলোতো ?আমি নষ্টা ?এই পেটে কি পাপের ফল ?হ্যা,আমি তাই ই,,সবাই তো আমার চরিত্র নিয়েই কথা বলবে ।তুমিও তো সেই সুযোগ নিয়েছো ।আমাকে বিয়ে করেছো দয়া দেখানোর জন্য ।তোমার বউ,সন্তান আছে সেটা আমি জেনে গেছি ।তুমি সুধু আমাকেই ধোকা দাও নি তোমার পরিবারকেও দিয়েছো।তোমার সাথে থাকতে আমার ঘৃনা করছে ।দয়া করে আমার মতো পাপি কে আর শেষ করে দিয়ো না ,,
এই কথা বলেই প্রীতি হনহন করেই চলে যায় ।ফাহিম কত রিকুয়েষ্ট করলো সেদিন সে ফিরেও তাকায়নি সেদিন ।এর মাঝেই ফাহিম তার বাসায়ও যায় তার বাবা মাও তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে ।কিছু দিন পর ফাহিম অফিসের কাজে ছয় মাসের জন্য চলে যায় বিদেশ ।প্রীতির সাথে কথা দেখা কোনো কিছু ই হয় না তার ।প্রীতিও একা একা ই থাকতো ।হঠাৎ একদিন প্রীতি ওর খালার বাসায় যাচ্ছিলো হঠাৎ আচমকা তার সামনে চলে আসে শাকিল ।প্রীতির সাথে অনেক কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু সে কোনো কথা না বলেই চুপচাপ চলে যায় ।শাকিল ফাহিম আর প্রীতির সব বিষয় ই জেনে যায় ।প্রীতিক তার পরিবার থেকে সবাই অকথ্য বাসায় কথা শুনতে হয় ।এভাবে অনেক দিন কাটে প্রীতির ,শাকিলও ফলো করতে থাকে ।এর মাঝেই একদিন প্রীতির প্রসব বেদনা উঠে ।ভাগ্যের এক পরিহাস তার একটা মৃত মেয়ে জন্ম হয় ।প্রীতি সামান্য একটুও মন খারাপ করেনি ।প্রীতি বাসায় একা একা ই থাকতো ।পরিবারের সবার উপর আর ভালোবাসার উপর তার বিশ্বাস একদম ই চলে গেছে ।সে সুধু ভাবে জীবনটা কিভাবে যাবে ।কিন্তু শাকিল এর মাঝে ঘটালো এক অঘটন ।সে তার পরিবার নিয়ে প্রীতির বাসায় প্রস্তাব পাঠালো ।প্রীতি সবার সামনেই এসব বিয়ে ভেঙে দেয় ।সে তার বাবা মায়ের সাথে সিলেট চলে যায় ।সিলেটে এসে একা একা ই থাকতো আর ভাবতো ফাহিম তাকে এই দিন গুলোতে একবার ও খোজ নেয়নি ।তার জীবনটা এমন হয়ে যাবে সে কল্পনাও করতে পারেনি ।ফাহিমের উপর শুধু তার ঘৃনা হচ্ছে ।সেও নিজে আরেক বিয়ে করলো কিভাবে ।এসব ভেবেই তার কান্না আসে ।সে ভাবে তার এই কর্মের জন্য তো সে একদম ই দায়ী না ।তার ভাগ্য ই তো তাকে এমন করেছে ।কিন্তু বিপত্তি ঘটলো সেখানেও শাকিল যেয়ে উপস্থিত ।প্রীতি তার সাথে মোটেও কথা বলতো না ।কিন্তু সে প্রতিদিন প্রীতিদের বাসায় আসা যাওয়া করতো ।প্রীতির বাবা মা এর মন ঠিক ই জয় করে নিয়েছে শাকিল ।অবশেষে বাবা মা এর জোড়ে বিয়ে ঠিক হয় শাকিল এর সাথে ।প্রীতি শুধু কান্না করতে করতে বলেছিলো,এখনো আমার আর ফাহিমের ডিভোর্স হয়নি ।প্লিজ এসব বন্ধ করো ।একা ই জীবন কাটিয়ে দিবো,,
কিন্তু কেউ শোনেনি তাদের কথা ।বিয়ের কার্ড পাঠানো হয় ফাহিমের বাসায় ।ফাহিম এর পরের দিন ই বাসায় এসেই কার্ড দেখে কেদেঁ উঠে ।সিলেট ময়মনসিংহ হতে অনেক দূরের পথ ।তবুও ফাহিম বিদেশ থেকে ফিরেই চলে যায় সিলেটে ।বাসায় অপমান ছাড়া কিছুই পায়নি ফাহিম ।যখন সে বাসা থেকে বের হয় তখন ই দেখতে পায় শাকিল প্রীতির হাত ধরে হেটে আসছে ।ফাহিম শুধু সামনে যেয়ে একটা কথাই বলেছিলো,,
--১০ মিনিট কথা বলার সময় হবে ?
শাকিল এই কথায় ই ফাহিম এর উপরে হাত তুলে ।প্রীতি যান্ত্রিক রোবটের মতো সেই সব দেখছিলো ।হঠাৎ বলে উঠলো ঠিক আছে,,,,
এখন ফাহিম আর প্রীতি ছাদে দাড়িয়ে আছে ।ঠান্ডা বাতাসে ফাহিম বলে উঠলো,,,
--যেই হাত আমার ধরে থাকার কথা সেই হাত অন্য কেউ ধরে রেখেছে ।মূল কথা য় আসি ।আমার একটা বন্ধু ছিলো সে বিয়ে করেছিলো ঠিক ই কিন্তু তার সন্তান হচ্ছিলো না ।প্রথম বউ চলে যায় ,দ্বীতিয় বার বিয়েটা অনেক জোড় করে দেই ।যখন বন্ধুর বউ এর বাবু হবে ঠিক তিন মাস আগেই বন্ধু গাড়ি দূর্ঘটনায় মারা যায় ।বাচ্চা টা হয় ঠিক ই এর ঠিক এক বছর পর ওর মাও ক্যান্সার এ আক্রান্ত হয় ।তার বউ একদিন বাসায় এসে বললো,আপনার বন্ধুর খুব সখ ছিলো একটা মেয়ে হওয়ার ।কিন্তু আমিও হয়তো থাকবো না ।আপনি উনার প্রিয় বন্ধু আমি চাই না আমার মেয়ে অনাথ হিসেবে বড় হোক ।যদি বেচেঁ না থাকি আপনি দেখে রাখবেন ।একদিন চলে গেলো ভাবী ।আমি ঢাকায় থাকার সময় মেয়েটাকে নিয়েই থাকতাম ।যখন সে ক্লাস টু তে পড়ে তখন ই আমাদের বিয়ে ঠিক হয় ।তাকে ঢাকায় পাশের বাসার এক আন্টির কাছে রেখে এসেছিলাম ।সে প্রতিদিন কল দিতো ।কান্না করতো অনেক ।আব্বু ই ডাকে আমাকে ।তুমি সেদিন কলটা ধরে ছিলে ঠিক ই কিন্তু কোনো কিছু বলার সুযোগ দাওনি ।
ঠিক তখন ই একটা সুন্দর মেয়ে আমাদের সামনে এলো ।প্রীতি কিছু বুঝে উঠার আগেই ফাহিম বলে উঠলো ,এই সেই মেয়ে তাসফিয়া ।
--আব্বু,এটাই তো আম্মু না ?(তাসফিয়া)
--হ্যা,তুমি একবার দেখতে চেয়েছিলে এই একবার ই শেষ ।আর কখনো বলবে না ।(ফাহিম)
প্রীতি কোনো কিছুর জন্যই প্রস্তুত ছিলো না ।তাসফিয়া এক দৌড়ে প্রীতিকে জড়িয়ে ধরে ।আর কেদেঁ কেদেঁ বলতে থাকে,,,
--আম্মু তুমি যয়ো না ।আমি অনেক কান্না করি তোমার জন্য ।তোমাকে নিয়ে যাবো ক্লাসের সবাইকে দেখাবো যে আমারও আম্মু আছে,,,
প্রীতি একটু শব্দও করেনি ।তাসফিয়াকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে আবার তারা হাটতে থাকে ।প্রীতি এর মাঝেই বলতে লুরু করে,,,
--তুমি কি জানো আমার জীবনের কেনো এমন পরিনতি ?আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকেই ভালোবাসিনি বিশ্বাস করো একবার ,,আর বাচ্চাটাও নষ্ট হয়ছে ।এতে খুশি হয়েছি ঠিক ই কিন্তু তোমাকে তো হারালাম,,
--তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসতে সেটা প্রমান এর জন্য ই তো তার কাছে গিয়েছিলে কিন্তু সে ধোকা দিয়েছে,,,
তখন ই শাকিল বলে উঠলো পিছন থেকে ১০ মিনিট তো অনেক হলো ।এবার তুই যাবি এখান থেকে ?প্রীতি কর্নপাত না করেই বলতে শুরু করলো,,
--আমার সব কথা শোনো আমি সব সত্যি বলছি ,,
কিন্তু ততোক্ষনে ফাহিম কে আবার মারতে থাকে শাকিল ।কথা বলা হয়ে উঠেনা প্রীতির ।ফাহিম চলে যায় ।গাড়িতে উঠতেই তাসফিয়া বল উঠলো,,
--দাড়াও আম্মুকে নিয়ে আসি ,,
ফাহিম তাকে একটা ধমক দেয় ।সে কান্না করতে করতে একটা কথাই বলছিলো,,,
--আম্মুকে আর একবার দেখবো ,আর একবার ।নিয়ে যাবো আমাদের সাথে ।আমি যাবো না তোমার সাথে ।।
কিন্তু গাড়ি থামে না ।চলছে তার মতো ই ।ফাহিম ভাবছে হোক না সব কিছু আগের মতো ।সুখী থাকুক প্রিয় মানুষ ।কত দূরে নিয়ে যাবো এই স্বপ্ন গুলো থাক না অপূর্ন ।তাসফিয়া কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে যায় ।ফাহিম ভাবছে সত্য কথা তো বলতে পেরেছে এটাই শান্তি ।হয়তো আজকেই হবে তাদের সুখী জীবনের শুরু ।হয়তো আর কখনই দেখা হবে না,,,
মনোযোগ দিয়ে পড়ুন,,পরের সব গুলো পর্বের জন্যে এই লিংকে ক্লিক করেন 👉https://www.facebook.com/groups/488898965223580/
দুইমুখী
পর্ব:১
লেখক:ঐশি
"আমি প্রেগনেন্ট ,ফাহিম।আমার মাঝেও একজন বেড়ে উঠছে,,,". . তিন বছরের সম্পর্ক আমাদের ।কখনো তাকে জড়িয়ে পর্যন্ত ধরিনি আর সে কি না এখন বলছে সে মা হতে চেলেছে ।সে নিশ্চই মজা করছে হয়তো ।তাই বললাম,, --এ কেমন মজা ,প্রীতি ?সব কিছুর একটা লিমিট থাকে ।আর এসব বিষয়ে ফাজলামো করার তো প্রশ্ন ই উঠে না তাই না ?(ফাহিম) --এটা একদম সত্য ।বিশ্বাস না হলে এই যে রিপোর্ট গুলো ধরো ।আর এই যে উপরে দেখো আমার নাম টা ই লেখা ।(প্রীতি) প্রীতির সব কাগজ পত্র দেখে মাথা ঘুরাতে শুরু করলো ।এ কিভাবে সম্ভব ?ওর সাথে তো আমি শারীরিক কোনো সম্পর্ক করিনি ।তার মানে কি সে অন্য কারো সাথে,,।এসব ভাবতে ভাবতেই বললাম,, --তা আমার সাথে টাইম পাস করে কি মজা পেলে ?(ফাহিম) প্রীতি একদম নিশ্চুপ ।আমি ভালো মতো খেয়াল করলাম সে কাদঁছে ।জানি এই কথার কোনো উওর আসবে না ।আমি একগাল হাসি দিয়ে বললাম,,, --কি সমস্যা ?কাদঁছো কেনো ?তোমার বফ তোমাকে রেখে চলে গেছে তাই না ?কোনো চিন্তা করো না ।এই গরীব ছেলেটাই তোমাকে বিয়ে করবে ।আর তুমি তো তাকে বিশ্বাস করেছিলে তাই না ?ঠকেছো তো কি হইছে আমি তো আছি না ?এই একবার বিশ্বাস রাখো আমার উপর তোমার সব ঠিক হয়ে যাবে ।(ফাহিম) --ফাহিম,তুমি এটা মোটেও আশা করোনি তাই না ।তুমি না বুঝেই এমন করছো ।আগে আমার পুরো কথাটা শুনো ,,,,(প্রীতি) --আমার অতীত শুনতে ভালো লাগে না ।আমি তোমাকে নিয়েই থাকবো ।চিন্তা করো না ।শুধু তোমার বাবা মা কে একটু ম্যানেজ করো ।আমার পরিবার আমি নিজেই বুঝবো ।(ফাহিম) --তুমি সব কথা না শুনেই এমন সমস্যায় কেনো জড়াচ্ছো ?(প্রীতি) --তুমি বাসায় যাও তো এখন সব ঠিক হয়ে যাবে ।(ফাহিম) এভাবেই দিন যাচ্ছিলো ।আমি প্রীতিকে এতো ই ভালোবাসতাম যে তার সকল কিছু ই মেনে নিয়েছি ।সে তার সেই প্রেমিক এর কথা বলবে ,কিন্তু সেটা শুনতে চাই না ।আমি নতুন করেই সব কিছু সাজাতে চাই ।প্রীতি তার ফ্যামিলিকে বুঝাতে পেরেছিলো ।সে তার পরিবারকে বলেছিলো যে এটাই ফাহিমের বাচ্চা ।দুই পরিবারের কেউ ই মেনে নেয়নি ।সবাই তাদের সম্মানের কথা ভেবে ই বিয়েটা দিয়ে দেয় ।সব কিছু ভালো ই চলছিলো তাদের ।কিন্তু ফাহিম বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই প্রীতির সাথে খুব একটা কথা বলে না ।অফিস যায় আসে ।দরকার ছাড়া কেউ কথা ই বলে না ।এভাবে কি থাকা যায় ?বিয়ের প্রায় দুই মাস পর এক রাতে দুজনেই ঘুমাচ্ছিলো হঠাৎ প্রীতি চোখ মেলে দেখে ফাহিম নেই ।সে ভাবে হয়তো ওয়াশ রুম গেছে কিন্তু অনেকক্ষন হলো ফিরছে না ।সে একটা অজানা চিন্তায় পড়ে যায় ।সে বিছানা থেকে উঠে ধীর পায়ে বারান্দায় যায় ।যেয়ে দেখে ফাহিম কার সাথে যেনো ফোন এ কথা বলছে ।প্রীতি ফাহিম এর একটা কথা শুনে পুরো থমকে গেলো ।সে বলছিলো,, --মামুনি,তোমার পরিক্ষা ভালো করে দিও ।ভালো রিজাল্ট করলে চকলেট কিনে দিবো,, প্রীতি এই কথাটা একদম ই মেনে নিতে পারেনি ।তার মানে কি ফাহিম এর আগেও বিয়ে করেছে ?তাহলে কি সে আমাকেও পন্য হিসেবে ব্যাবহার করছে ?প্রীতির মনে হাজার প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে ।কিন্তু কোনো কিছুর সমাধান পাচ্ছে না ।প্রীতি তারাতারি ঘুমিয়ে যায় ।সকালে শুধু তার মাথায় এই একটা কথা ই আসছে ।কি করবে এখন সে ভেবে ই পাচ্ছে না ।সেদিন সকালে প্রীতি ফাহিমকে বললো,, --তুমি কি আমার কাছে কোনো কিছু লুকাচ্ছো ? --কই না তো ।তোমাকে আবার কি লুকাবো ?এত কিছুর পরও তোমাকে ভালোবাসি বলেই তো বিয়ে করেছি তাই না ? প্রীতি ভাবে আসলেই তো এটা তো ঠিক ।কিন্তু সে এমনও করতে পারে যে ভুগ করার জন্য আমাকে ব্যাবহার করছে ।প্রীতির প্রশ্নের সমাধান খুজেঁ পায় না ।সেদিন সন্ধায় ফাহিম ফোন বাসায় রেখে বাহিরে গেছিলো ।হঠাৎ একটা কল আসে তাতে লিখা তাসফিয়া,,।প্রীতি ভেবেছিলো হয়তো সে অফিসের কোনো পরিচিত কেউ ।কিন্তু কল রিসিভ করতেই সে যা শুনলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না ।তার মানে প্রীতির সব ধারনাই ঠিক ।ফাহিম আগেও বিয়ে করেছে ,তার আরেকটা পরিবার আছে ।সে যা শুনলো তা হলো,,, --আব্বু,আমি ভালো পরিক্ষা দিয়েছি চকলেট কিনে দিতেই হবে ।কবে আসবে আব্বু? প্রীতি কোনো কিছুর সমীকরন মেলাতে পারছিলো না ।সে ভাবছিলো ফাহিম এমন বেঈমানিটা কিভাবে করলো ?সে শুধু এটাই ভাবছিলো সমাজে হয়তো বেচেঁ থাকার কোনো রাস্তা নেই ।এসব ভাবতে ভাবতেই সে অনবরত কান্না করছিলো ।তখন ই ফাহিম এসে বলে,, --তুমি আমার ফোন ধরলে কেনো ? প্রীতি ভয়ে একদম নিশ্চুপ হয়ে গেলো,,, --তুমি আমার ফোন ধরলে কেনো ? প্রীতি ভয়ে একদম নিশ্চুপ হয়ে গেলো,,,।কি বলবে এখন কিছুই বুঝতে পারছে না ।ফাহিম একটানে তার ফোনটা টেনে নিলো ।প্রীতি চুপচাপ এক জায়গায় বসে রইলো ।ফাহিম কোনো কিছু না বলেই ঘর থেকেই বেরিয়ে গেলো ।ফাহিমের কোনো আচরন ই প্রীতির একদম ই ভালো লাগছে না ।প্রীতির এখন অনেক খারাপ লাগছে কিন্তু কোনো কিছু ই সে প্রকাশ করছে না ।সে ভাবে এই ভাবে আর কত ?নিজে তো এর আগেই শেষ হয়েছি এখন ই কেনো আবার এমন হবে ।সবাই প্রতারক ,কেউ ভালো না ।ঠিক তখন ই ফাহিম রুমে প্রবেশ করলো ।প্রবেশ করেই বলতে শুরু করলো,,, --কার সাথে কথা বলেছো জানো ?বিয়েতে একটা সুন্দর মেয়ে এসেছিলো না ?দেখেছিলে না? --হ্যা,সে তোমার মেয়ে হয় ।এর থেকে বেশি কিছু জানার ইচ্ছা আমার নেই ।তোর মতো শয়তান কে বিয়ে করে অনেক বড় ভুল করেছি ।তুই ও সেই নরপিশাচটার মতো ই ।তুই ও খারাপ ।আমার অসহায় এর সুযোগ নিয়েছিস,, এই কথা বলেই প্রীতি তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ফাহিম কে চর মারলো।চর মেরেই প্রীতি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ।ফাহিম কোনো কিছু ই বুঝতে পারছে না ।ফাহিম শুধু ভাবছে ই কি এমন করলো যে এমন ভাবে তাকে চর মারলো ।ফাহিম কোনো কিছু না ভেবেই বারান্দায় চলে গেলো ।ফাহিম ভাবছে সেদিনকার কথা যেদিন তাদের প্রথম প্রেমের শুরু হয় ।এভাবেই দুই বছর প্রেম করে তারা হঠাৎ একদিন প্রীতি তার সাথে দেখা করবে বলেছিলো কিন্তু সেদিন সে আসেনি এরপর থেকেই প্রীতির পরিবর্তন ঘটে ।মন খারাপ করেই থাকতো সব সময়। এমন কি তিন মাস তাদের দেখা বা কথা পর্যন্ত হয়নি ।ফাহিম এই দিন গুলো একদম পাগল হয়েই যাচ্ছিলো ।তারপর তারা দেখা করে ,সব আগের মতো ই চলছিলো ।তবে সে যে এই ক দিনে অন্য একটি রিলেশনে জড়িয়েছে তা ভাবতেও পারেনি ।আর তার ভালোবাসা তো মাথ্যা ছিলো না তবুও তাকে বিতারিত হতে হচ্ছে ।সেই প্রতারনার এক বিশেষ চিহ্ন তার গর্ভে পাচঁ মাসের বাচ্চা ।তবুও তাকে ফাহিম ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো ।সব কিছু ভুলে এক সাথে থাকতে চেয়েছিলো ।কিন্তু কি কারনে তাকে এভাবে প্রীতি চর মারলো এটাই বুঝে পাচ্ছে না ।ফাহিম এক রকম একা ই ঠাই দাড়িয়ে এগুলো ই ভাবছেন ।সেদিন রাতে তারা ঘুমিয়েছে ঠিক ই কিন্তু কেউ কারো সাথে একটা কথাও বলেনি ।এরপর দিন সকালে প্রীতি ব্যাগ গোছিয়ে চলে যাচ্ছিলো ।হঠাৎ ফাহিম বলে উঠলো,, --কোথায় যাচ্ছো ?এত বড় ব্যাগ গুছিয়ে ? --তুমি কি ভেবেছো বলোতো ?আমি নষ্টা ?এই পেটে কি পাপের ফল ?হ্যা,আমি তাই ই,,সবাই তো আমার চরিত্র নিয়েই কথা বলবে ।তুমিও তো সেই সুযোগ নিয়েছো ।আমাকে বিয়ে করেছো দয়া দেখানোর জন্য ।তোমার বউ,সন্তান আছে সেটা আমি জেনে গেছি ।তুমি সুধু আমাকেই ধোকা দাও নি তোমার পরিবারকেও দিয়েছো।তোমার সাথে থাকতে আমার ঘৃনা করছে ।দয়া করে আমার মতো পাপি কে আর শেষ করে দিয়ো না ,, এই কথা বলেই প্রীতি হনহন করেই চলে যায় ।ফাহিম কত রিকুয়েষ্ট করলো সেদিন সে ফিরেও তাকায়নি সেদিন ।এর মাঝেই ফাহিম তার বাসায়ও যায় তার বাবা মাও তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে ।কিছু দিন পর ফাহিম অফিসের কাজে ছয় মাসের জন্য চলে যায় বিদেশ ।প্রীতির সাথে কথা দেখা কোনো কিছু ই হয় না তার ।প্রীতিও একা একা ই থাকতো ।হঠাৎ একদিন প্রীতি ওর খালার বাসায় যাচ্ছিলো হঠাৎ আচমকা তার সামনে চলে আসে শাকিল ।প্রীতির সাথে অনেক কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু সে কোনো কথা না বলেই চুপচাপ চলে যায় ।শাকিল ফাহিম আর প্রীতির সব বিষয় ই জেনে যায় ।প্রীতিক তার পরিবার থেকে সবাই অকথ্য বাসায় কথা শুনতে হয় ।এভাবে অনেক দিন কাটে প্রীতির ,শাকিলও ফলো করতে থাকে ।এর মাঝেই একদিন প্রীতির প্রসব বেদনা উঠে ।ভাগ্যের এক পরিহাস তার একটা মৃত মেয়ে জন্ম হয় ।প্রীতি সামান্য একটুও মন খারাপ করেনি ।প্রীতি বাসায় একা একা ই থাকতো ।পরিবারের সবার উপর আর ভালোবাসার উপর তার বিশ্বাস একদম ই চলে গেছে ।সে সুধু ভাবে জীবনটা কিভাবে যাবে ।কিন্তু শাকিল এর মাঝে ঘটালো এক অঘটন ।সে তার পরিবার নিয়ে প্রীতির বাসায় প্রস্তাব পাঠালো ।প্রীতি সবার সামনেই এসব বিয়ে ভেঙে দেয় ।সে তার বাবা মায়ের সাথে সিলেট চলে যায় ।সিলেটে এসে একা একা ই থাকতো আর ভাবতো ফাহিম তাকে এই দিন গুলোতে একবার ও খোজ নেয়নি ।তার জীবনটা এমন হয়ে যাবে সে কল্পনাও করতে পারেনি ।ফাহিমের উপর শুধু তার ঘৃনা হচ্ছে ।সেও নিজে আরেক বিয়ে করলো কিভাবে ।এসব ভেবেই তার কান্না আসে ।সে ভাবে তার এই কর্মের জন্য তো সে একদম ই দায়ী না ।তার ভাগ্য ই তো তাকে এমন করেছে ।কিন্তু বিপত্তি ঘটলো সেখানেও শাকিল যেয়ে উপস্থিত ।প্রীতি তার সাথে মোটেও কথা বলতো না ।কিন্তু সে প্রতিদিন প্রীতিদের বাসায় আসা যাওয়া করতো ।প্রীতির বাবা মা এর মন ঠিক ই জয় করে নিয়েছে শাকিল ।অবশেষে বাবা মা এর জোড়ে বিয়ে ঠিক হয় শাকিল এর সাথে ।প্রীতি শুধু কান্না করতে করতে বলেছিলো,এখনো আমার আর ফাহিমের ডিভোর্স হয়নি ।প্লিজ এসব বন্ধ করো ।একা ই জীবন কাটিয়ে দিবো,, কিন্তু কেউ শোনেনি তাদের কথা ।বিয়ের কার্ড পাঠানো হয় ফাহিমের বাসায় ।ফাহিম এর পরের দিন ই বাসায় এসেই কার্ড দেখে কেদেঁ উঠে ।সিলেট ময়মনসিংহ হতে অনেক দূরের পথ ।তবুও ফাহিম বিদেশ থেকে ফিরেই চলে যায় সিলেটে ।বাসায় অপমান ছাড়া কিছুই পায়নি ফাহিম ।যখন সে বাসা থেকে বের হয় তখন ই দেখতে পায় শাকিল প্রীতির হাত ধরে হেটে আসছে ।ফাহিম শুধু সামনে যেয়ে একটা কথাই বলেছিলো,, --১০ মিনিট কথা বলার সময় হবে ? শাকিল এই কথায় ই ফাহিম এর উপরে হাত তুলে ।প্রীতি যান্ত্রিক রোবটের মতো সেই সব দেখছিলো ।হঠাৎ বলে উঠলো ঠিক আছে,,,, এখন ফাহিম আর প্রীতি ছাদে দাড়িয়ে আছে ।ঠান্ডা বাতাসে ফাহিম বলে উঠলো,,, --যেই হাত আমার ধরে থাকার কথা সেই হাত অন্য কেউ ধরে রেখেছে ।মূল কথা য় আসি ।আমার একটা বন্ধু ছিলো সে বিয়ে করেছিলো ঠিক ই কিন্তু তার সন্তান হচ্ছিলো না ।প্রথম বউ চলে যায় ,দ্বীতিয় বার বিয়েটা অনেক জোড় করে দেই ।যখন বন্ধুর বউ এর বাবু হবে ঠিক তিন মাস আগেই বন্ধু গাড়ি দূর্ঘটনায় মারা যায় ।বাচ্চা টা হয় ঠিক ই এর ঠিক এক বছর পর ওর মাও ক্যান্সার এ আক্রান্ত হয় ।তার বউ একদিন বাসায় এসে বললো,আপনার বন্ধুর খুব সখ ছিলো একটা মেয়ে হওয়ার ।কিন্তু আমিও হয়তো থাকবো না ।আপনি উনার প্রিয় বন্ধু আমি চাই না আমার মেয়ে অনাথ হিসেবে বড় হোক ।যদি বেচেঁ না থাকি আপনি দেখে রাখবেন ।একদিন চলে গেলো ভাবী ।আমি ঢাকায় থাকার সময় মেয়েটাকে নিয়েই থাকতাম ।যখন সে ক্লাস টু তে পড়ে তখন ই আমাদের বিয়ে ঠিক হয় ।তাকে ঢাকায় পাশের বাসার এক আন্টির কাছে রেখে এসেছিলাম ।সে প্রতিদিন কল দিতো ।কান্না করতো অনেক ।আব্বু ই ডাকে আমাকে ।তুমি সেদিন কলটা ধরে ছিলে ঠিক ই কিন্তু কোনো কিছু বলার সুযোগ দাওনি । ঠিক তখন ই একটা সুন্দর মেয়ে আমাদের সামনে এলো ।প্রীতি কিছু বুঝে উঠার আগেই ফাহিম বলে উঠলো ,এই সেই মেয়ে তাসফিয়া । --আব্বু,এটাই তো আম্মু না ?(তাসফিয়া) --হ্যা,তুমি একবার দেখতে চেয়েছিলে এই একবার ই শেষ ।আর কখনো বলবে না ।(ফাহিম) প্রীতি কোনো কিছুর জন্যই প্রস্তুত ছিলো না ।তাসফিয়া এক দৌড়ে প্রীতিকে জড়িয়ে ধরে ।আর কেদেঁ কেদেঁ বলতে থাকে,,, --আম্মু তুমি যয়ো না ।আমি অনেক কান্না করি তোমার জন্য ।তোমাকে নিয়ে যাবো ক্লাসের সবাইকে দেখাবো যে আমারও আম্মু আছে,,, প্রীতি একটু শব্দও করেনি ।তাসফিয়াকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে আবার তারা হাটতে থাকে ।প্রীতি এর মাঝেই বলতে লুরু করে,,, --তুমি কি জানো আমার জীবনের কেনো এমন পরিনতি ?আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকেই ভালোবাসিনি বিশ্বাস করো একবার ,,আর বাচ্চাটাও নষ্ট হয়ছে ।এতে খুশি হয়েছি ঠিক ই কিন্তু তোমাকে তো হারালাম,, --তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসতে সেটা প্রমান এর জন্য ই তো তার কাছে গিয়েছিলে কিন্তু সে ধোকা দিয়েছে,,, তখন ই শাকিল বলে উঠলো পিছন থেকে ১০ মিনিট তো অনেক হলো ।এবার তুই যাবি এখান থেকে ?প্রীতি কর্নপাত না করেই বলতে শুরু করলো,, --আমার সব কথা শোনো আমি সব সত্যি বলছি ,, কিন্তু ততোক্ষনে ফাহিম কে আবার মারতে থাকে শাকিল ।কথা বলা হয়ে উঠেনা প্রীতির ।ফাহিম চলে যায় ।গাড়িতে উঠতেই তাসফিয়া বল উঠলো,, --দাড়াও আম্মুকে নিয়ে আসি ,, ফাহিম তাকে একটা ধমক দেয় ।সে কান্না করতে করতে একটা কথাই বলছিলো,,, --আম্মুকে আর একবার দেখবো ,আর একবার ।নিয়ে যাবো আমাদের সাথে ।আমি যাবো না তোমার সাথে ।।
কিন্তু গাড়ি থামে না ।চলছে তার মতো ই ।ফাহিম ভাবছে হোক না সব কিছু আগের মতো ।সুখী থাকুক প্রিয় মানুষ ।কত দূরে নিয়ে যাবো এই স্বপ্ন গুলো থাক না অপূর্ন ।তাসফিয়া কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে যায় ।ফাহিম ভাবছে সত্য কথা তো বলতে পেরেছে এটাই শান্তি ।হয়তো আজকেই হবে তাদের সুখী জীবনের শুরু ।হয়তো আর কখনই দেখা হবে না,,, মনোযোগ দিয়ে পড়ুন,,পরের সব গুলো পর্বের জন্যে এই লিংকে ক্লিক করেন 👉https://www.facebook.com/groups/488898965223580/
দুইমুখী
পর্ব:১
লেখক:ঐশি