গল্প : নেতার মেয়ে
পার্ট ৪
লেখক : রাকিবুল হাসান
.
.
.
সকাল বেলা...
ঘুম থেকে ওঠলাম।চাচা সকালে দেখা করতে বলেছিলো।তাই দেখা করতে গেলাম.....চাচা আমাকে কলেজে এডমিট করিয়ে দিয়েছে।আর তার কাগজ ই আমাকে দিয়েছে।আমি চাচার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।তারপর রেডি হতে লাগলাম।ম্যাডাম এখন ও ঘুম থেকে ওঠেনি।তাই ম্যাডামকে ডাকতে ম্যাডামের ঘরে যেতে লাগলাম।চাচা দেখেছিলো।আর দেখে একটু মুচকি হেসেছিলো।আর কেন তা আপনারা জানেন। হি হি হি
তারপর ম্যাডামকে দেখি পা এর জায়গায় মাথা আর মাথা এর জায়গায় পা।মানে বালিশে পা আর খাটে মাথা।চুল গুলো মুখের উপর পরে আছে।দেখতে পেত্নির মত লাগছিলো।সেই পেত্নি টাকে কি যেনো বলে.......হু হু..মনে পড়েছে চুলওয়ালি পেত্নি হি হি হি।আপনারা আবার ওকে বইলেন না কিন্তু।তারপর ম্যাডামের কপালে ছোট করে একটা চুমু দিলাম।তারপর ডাক দিলাম........
ইশিতা....এই.... ইশিতা....ওঠো।কলেজে যেতে হবে....ওঠো..... (ওর সামনে ওকে ম্যাডাম বললে খবর আছে)
....(কোন সাড়া নাই)....
পানি ঢেলে দিবো কিন্তু...ওঠো...ওঠো....বলছি.....(আমি)
....(সাড়া নাই)....
বুঝেছি কি করতে হবে।শুয়ে থাকো দেখাচ্ছি মজা.....(মনে মনে বললাম আমি)
পানি আনতে যাওয়ার জন্য যখন ওঠে দরজার চোখ পড়লো।তখন দেখলাম কি যেনো একটা ছায়া সরে গেলো দরজা থেকে।আমি কিছু মনে না করে পানি নিয়ে আসলাম।কম না এক বালতি।তারপর ধুপ করে ইশিতার শরিরের উপর মারলাম...পানিটা অনেক ঠান্ডা ছিলো।পানির স্পর্শ পেতেই ইশিতা লাফ দিয়ে ওঠে চিৎকার দিতে যাবে এমন সময় আমি ওর মুখে হাত দিয়ে দিলাম।ও আমার দিকে রাগি দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে।আর আমি ভিলেন মার্কা হাসি দিলাম।তারপর ইশিতা.....
হু...হু.....হু....হু......আব্বুউউউউউ.....(কান্না করে দিছে)
হায় হায় এখন কি করি।ইশিতার কান্না শুনে চাচা দৌড়ে আসলেন।আর ইশিতাকে দেখে বললেন....
কীরে মা কাঁদছিস কেন????(চাচা)
দেখোনা বাবা রাকিব ভিজায়ে দিছে.....উহুহুহুহুহুহু.... (বাচ্চাদের মত কান্না করতে করতে বলল)
হা...হা..হা...রাকিব আরেক বালতি ঢেলে দে..
জ্বি...চাচা।তোমার কথা কি ফেলতে পারি নাকি আমি???
হুম...
চাচা চলে গেলো।ইশিতার দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আর আমি ভিলেন এর মত হাসছি।আর ইশিতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।ইশিতা আমার দিকে তাকিয়ে থাকায় মনে করেছে আমার হাতে বালতি আছে।আমার হাতে বালতি আছে ঠিক আছে কিন্তু তাতে পানি নেই।ইশিতা আমার এই ভাবে তাকিয়ে থাকা আর ওর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয় পেয়েছে হয়তো।তাই বলছে.....
এই...তু..তুমি.আ..আ..আমার দিকে এই ভাবে এগিয়ে আসছো কেন।???
(নিশ্চুপ আমি)
ক..ক...কি হল???কথা বল না কেন???
(নিশ্চুপ ভাবে ওর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি)
ওর খুব কাছাকাছি যখন আসলাম তখন ও আমাকে টান দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো।ও আমাকে এতই জোড়ে টান দেয় যে আমি ক্র উপরেই পড়ে যাই।কিন্তু আমি ওর উপরে পড়লাম ঠিক আছে।কিন্তু আমি পড়তেই ওর ঠোট এর সাথে আমার ঠোট এক হয়ে গেলো।কিছুক্ষন পরে ও আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে ঘরের এক পাশে গিয়ে দাড়ালো।তারপর আবার আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে আমার কাছে এসে আমার জামার
কলার ধরে উঠালো।তারপর আবার ফেলে দিলো।আমি পড়ে যাবার পর ও আমার উপরে উঠলো।তারপর আমাকে বলল......
পিচ্চি...পন্ডিত.....আমার।খুব পাজি হয়ে গেসো...
এই বলে আমার গাল দুটো টেনে দিয়ে দৌড় দিয়ে পালালো।আমি একটু আগের ঘটানা মনে করার চেস্টা করতেছি।কিন্তু মনে করতে পারতেছি না।তাই আর চেস্টা করলাম না।আবার তো কলেজে যেতে হবে।তাই রেড়ি হতে গেলাম।
।
রেড়ি হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে নিচে নামলাম।চাচা খবর দেখছে।আমিও গেলাম নাস্তা করতে।চাচা আমাকে দেখে বসতে বলল।আমি বসলাম।ঘরটা শুনে আমি অবাক হলাম।কারন খবরটা ছিলো এরকম...."একদিনেই ৭২ খুন।আর নিহতের সবাই ধর্ষনের শিকারক্তি দিয়েছে।আর সরকার সেই হত্যা কারীর শাস্তি প্রকাশ্যে মাফ করে দিয়েছে"
আমার ভিতরের অপরাধ বোধ কমে গেলো অনেক খানি।ইশিতাও কখন এসেছে জানি না।কিন্তু ওর মুখেও প্রশান্তির হাসি ঠোটের কোনে দেখা যাচ্ছে।অনেক দিন পরে আমি এই হাসিটা দেখলাম।
।
বের হলাম কলেজে যাবার জন্যই।তবে আজ পার্থক হচ্ছে আমি কলেজে যাচ্ছি।আর ইশিতাও।আজ ইশিতার ড্রাইভার না।বন্ধু হয়ে।কলেজে গেলাম।চাচা আগেই বলে দিয়েছিলো ক্লাস কোথায় পাবো।আমি ঢুকবো এমন সময় ইশিতা বলল....
তুমি তোমার ক্লাস তো তুমি চিনো না।চল আমি নিয়ে যাচ্ছি।(ইশিতা)
আমি চি...(আমার কথা শেষ হবার আগেই ইশিতা বলল)
চুপ।একদম চুপ।চল আমার সাথে।(রাগী কন্ঠে বলল)
মুখে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলাম।
এই তো গুড বয়।
তারপর ইশিতা আমার হাত ধরে ক্লাসে নিয়ে গেলো।ক্লাসের সবাই অবাক
আর হবেই বা না কেন???সেমিস্টারের ৬ মাস পরে কলেজে গিয়েছি তা আর কি হবে।পরে ইশিতাকে বিদায় দিয়ে ক্লাসে ঢুকলাম।ক্লাসে স্যার আসলো তখন আমাকে দেখে বলল দাড়াতে।আমি দাড়ালাম।পরে আমাকে বলল.....
আমার প্রিয় ছাত্র আর ছাত্রীরা এই হল তোমাদের নতুন বন্ধু রাকিবুল হাসান।তোমরা ওকে রাকিব বলে ডাকবা।(স্যার)
হাই....রাকিব.....(সবাই)
হাই..(আমি)
তারপর ক্লাসের পর ক্লাস শেষ হয়ে গেলো।কলেজ ছুটি হবার পরে ক্লাস থেকে বের হতে যাবো এমন সময় পিছন থেকে একটা মেয়ে আমাকে ডাক দিলো......
এই...যে রাকিব শোনছো???(অপরিচিতা)
জ্বি।বলুন।(একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে)
আমরা কি পরিচত হতে পারি???
জ্বি।আমি রাকিব...
আমি রাইসা ... আমরা তো ক্লাসমেট তুমি করে বলি???
আপনি বলতে পারেন।কিন্তু আমি তুমি করে বলতে পারবো না।
কেন???(অবাক হয়ে)
এমনি।
ওহ।আমরা কি বন্ধু হতে পারি???
ঠিক আছে।এখন বাই।
ওকে।ধন্যবাদ। বাই।
রাইসাকে বাই দিয়ে পিছনে ফিরতেঈ আমি অবাক হয়ে গেলাম......!!
।
আমি পিছনে তাকাতেই দেখি ইশিতা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আমি ইশিতার কাছে আসতেই ইশিতা বলল....
ওনি কে রাকিব???(ইশিতা)
আমার বন্ধু।আমার সাথে ওনার মাত্র বন্ধুক্ত হল।(আমি)
ওহ।চলো বাসায় যাওয়া যাক???
হুম।অবশ্যই।
তারপর ইশিতা আর আমি বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে খেয়ে একটু ঘুমালাম।তারপর ঘুম থেকে ওঠে গল্প লিখতে শুরু করলাম।গল্প লিখে পোস্ট করে ঘর থেকে বের হলাম।ইশিতার ঘর এ যাবার জন্য।ইশিতার ঘর এ যেয়ে নক করলাম।ইশিতা ভিতর থেকেই বলল..
হুম।আসো রাকিব।(ভিতর থেকে)
তারপর আমি ভিতরে গেলাম।ভিতরে গিয়ে ইশিতার দিকে তাকাতেই আমি ভয় পেয়ে গেলাম।ইশিতার চোখ লাল হয়ে আছে।চোখে কোনে পানি চিকচিক করছে।ইশিতা ওর দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে আমাকে বলল.........
কিছু বলবা রাকিব???(ইশিতা)
আমি এগিয়ে গিয়ে খাটের সামনে চেয়ার নিয়ে বসলাম।তারপর ইশিতাকে বললাম.....
কি হয়েছে তোমার????(আমি)
ক...ক..কই??কিছু না তো...আমার কিছু হয় নি তো।আর আমার কি হবে????(ইশিতা)
ইশিতা..মিথ্যা বলছো তুমি আমার সাথে???আমরা না ফ্রেন্ড।তুমি কস্ট পেয়ে কান্না করছো আর যার জন্য কান্না করছো তার কারনটা যানবার অধিকার ও কি নেই আমার???(আমি)
না..না..তুমি যা ভাবছো তা না।আসলে আমার না সাকিবের কথা খুব মনে পরছে।খুব মিস করছি। রাকিব ওকে না খুব ভালোবাসি।খুব।যানো কাল রাতে স্বপ্নে না ওকে দেখেছিলাম।কলেজে যেদিন ওকে প্রথম দেখি সেই দিনের মত একই হাসি একই লুক।বোকা বোকা আর টমেটোর মত কিউট গাল গুলা নিয়ে হাসি খুশি একটা ছেলে।কিন্তু.....
আর বলতে পারলো না কেঁদে দিলো।আমি কি বলবো।তাই ভাবছি।ওকে সমাবেদনা দেওয়ার মত ভাষা আমার নেই।ওর হাত টা শক্ত করে ধরলাম।তারপর ওর চোখের পানি মুছে দিলাম।ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো।কিছুক্ষন যাবার পরে ইশিতা বলল.....
রাকিব আমার একটা কথা রাখবা????(কান্নারত অবস্থায়)
হুম।বল...(আমি)
এভাবে আমার একটা ভালো বন্ধু হয়ে সারাজীবন থাকবা????
হুম।থাকবো।ইশিতা।(শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম)
ইশিতা আর কোন কথা বলল না।আমিও বললাম না।
...
সন্ধ্যায় আমি পড়তে বসেছি এমন সময় ইশিতা আমার ঘরে আসলো।আমি ইশিতাকে দেখে বললাম....
কিছু বলবা???(আমি)
হুম।(মাথা নেড়ে)
বল...
আমি তোমার সাথে পড়বো।(বাচ্চাদের মত করে বলল)
অবাক হলাম এমন আবদার শুনে।তারপর বললাম....
আচ্ছা আসো...
থ্যাংকিও....
তারপর আমার পাশের চেয়ারে বসে পড়তে লাগলো।আমার সন্ধেহ হচ্ছে ও। পড়তে আসছে নাকি আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে আসছে।আমি যখন ই তাকাই তখনি দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে।একটু পরে ইশিতা আমাকে বলল.....
রাকিইইইব...
কি??
এই পড়াটা বুঝায়ে দাও।(বই দেখিয়ে)
আচ্ছা।দাও দেখি...(ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে)
হুম।এই যে এটা।
তারপর আমি বইয়ের দিকে তাকিয়ে বুঝাতে লাগলাম।আমি বুঝাচ্ছি আর ও আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার একটু রাগ হল তাই বললাম.....
এই...তোমার সমস্যা কি হুম???তুমি পড়া বাদ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন????(ধমক দিয়ে)
এই...তুমি..আমাকে বকা দিলা??উহু হুহুহুহুহুহুহুহহুহ....তোমার সাথে আড়ি।তুমি পঁচা...আমাকে বকা দাও। উহুহুহুহুহুহুহুহুহু.....
বাচ্চাদের মত কান্না করতে করতে আমার ঘর থেকে চলে গেলো।মেয়েটা আসলেই কেমন যেন। একটু পাগলি পাগলি।
.
রাতে খাবার খেতে টেবিলে গেলাম।ইশিতা আমার সামনের চেয়ারে বসলো।আমাকে দেখে ভেংচি দিয়ে মুখটা ঘুরিয়ে খাবার নিয়ে ওর ঘরে চলে গেলো।বুঝলাম পাগলিটা অনেক রাগ করেছে।আমি খাবার খেয়ে ঘরে গেলাম।
.
রাত ২ টা...
ঘর থেকে বের হলাম ছাদে যাবো বলে।গভীর রাতে শহরের বাতাস টা ভালো লাগে।গায়ে শিহরন ধরিয়ে দেয় বাতাস টা।ঢাকার এই সময় টায় সমস্ত নিস্ত্বধতা চলে আসে মনে।এক অন্যরকম অনুভুতি। সুখ। সুখ।অনুভুতি। যা সবাই চায়।আমিও নেই।রোজ রাতে নেই । জোনাকি পোকার জি জি ডাক।আর বাঁদুরের ছুটাছুটি দেখতে খুব ভালোলাগে।আমি ছাদে দাড়িয়ে আছি এমন সময় কারো পায়ের আওয়াজ শুনলাম।আমি পিছনে তাকাতেই দেখি ইশিতা আসছে।ইশিতা ওঠতেই আমাকে দেখলো।তারপর ছাদের অন্য পাশে গিয়ে দাড়ালো।রাগ কমে নি।রাগ আমাকে ভাংগাতেই হবে।তাই আমিও গেলাম।ইশিতার কাছে যেয়ে বললাম.....
ইশিতা আমি সরি..
(নিশ্চুপ)
প্লিজ মাফ করে দাও???
প্লিজ...
২ মাত্র শর্তে মাফ করতে পারি....(অবশেষ এ মুখ খুললো)
সব শর্ত মানবো বলো....
১ / আমি যখন বলবো তখনি আমাকে কোলে নিতে হবে.....
২ / আমাকে পাপ্পি দিতে হবে.....
।
।
চলবে?
গল্প : নেতার মেয়ে পার্ট ৪ লেখক : রাকিবুল হাসান . . . সকাল বেলা... ঘুম থেকে ওঠলাম।চাচা সকালে দেখা করতে বলেছিলো।তাই দেখা করতে গেলাম.....চাচা আমাকে কলেজে এডমিট করিয়ে দিয়েছে।আর তার কাগজ ই আমাকে দিয়েছে।আমি চাচার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।তারপর রেডি হতে লাগলাম।ম্যাডাম এখন ও ঘুম থেকে ওঠেনি।তাই ম্যাডামকে ডাকতে ম্যাডামের ঘরে যেতে লাগলাম।চাচা দেখেছিলো।আর দেখে একটু মুচকি হেসেছিলো।আর কেন তা আপনারা জানেন। হি হি হি তারপর ম্যাডামকে দেখি পা এর জায়গায় মাথা আর মাথা এর জায়গায় পা।মানে বালিশে পা আর খাটে মাথা।চুল গুলো মুখের উপর পরে আছে।দেখতে পেত্নির মত লাগছিলো।সেই পেত্নি টাকে কি যেনো বলে.......হু হু..মনে পড়েছে চুলওয়ালি পেত্নি হি হি হি।আপনারা আবার ওকে বইলেন না কিন্তু।তারপর ম্যাডামের কপালে ছোট করে একটা চুমু দিলাম।তারপর ডাক দিলাম........