কেয়া_পাতার_নৌকা

পর্ব_০২

writing_ছন্দহীন_কাব্য(ছদ্মনাম)

আহান ভাইয়া আমাকে এক ঝটকায় নিজের কাছে টেনে নিলো যেন পুরা শরীরের টা উনার । আমি বলতে লাগলাম ভাইয়া আপনি ঠিক আছেন তো ? ভাইয়া বললো এই আমার মিহু পাখিটা, তোমার কাজল রাঙা চোখদুটো আমার লাজুক চেহারাকে দিয়ে দাও। এক পলক ফেলতেই আমার চোখ তার চোখের মনিতে ফন্দি আটলো, আমি দেখছি যে, আমার সামনে এক আকাশ ভরা মায়াবী চেহারা যে, আমাকে না পাওয়ার যন্ত্রণায় ও হারানোর ভয় তাকে সব সময় কুরে কুরে খাচ্ছে। ছোটবেলা থেকে যাকে নিয়ে হাজার ও স্বপ্ন এঁকেছি আমার শান্ত এই দুর্বল মনে। সেই আমার আহান ভাইয়া টা আমাকে এতোটা ভালোবাসে আমি কখনো বুঝতেই পারিনি । কি ভাবে বুঝবো বলুন?

সব সময় আমাকে ঝাড়ি দিতো। কিন্তু তার এই ঝাড়ির ভিতরে এতো ভালোবাসা লুকিয়ে ছিলো আমি কখনো অনুমান করতে পারি নাই । আমি স্বপ্নের পলকে নিজের ভবিষ্যতের সুন্দর পৃথিবীর দৃষ্টিগোচর করছি। মনে হচ্ছে আমার কষ্টে কাটানো মূহুর্তগুলো আহান ভাইয়ার পৃথিবীতে নেই । যখনি আহান ভাইয়া নিচের দিকে তাকিয়েছে আমি একটুও দেরি করি নাই। ভাইয়ার সেই নরম ঠোঁটে আলতো করে চুমু বসিয়ে দিলাম। আহান ভাইয়া লজ্জায় লাল হয়ে চলে গেলো অন্য রুমে। আমি কিছুক্ষণ সোফায় শুয়ে রেস্ট নেওয়ার চিন্তা ভাবনা করলাম তখনি অর্পা চলে এলো আমার রুমে । এসে আমাকে বললো আপু কেমন আছো, কি করতেছো এখন ? আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি তার এই সব প্রশ্ন করার কারণ গুলো কি ! আমি বললাম ভালো আছি ।

তো তুই আমার কাছে কি কাজে এসেছিস? ইতিপূর্বে কখনো তো এইভাবে আমার ভালো থাকার উপর জিজ্ঞাসাবাদ করিস নাই, আজ হঠাৎ এতো কিছু জিজ্ঞেস করার কারণ কি ? অর্পা বললো আপু! তোমার ভালো খারাপ শুনা যাবে না বুঝি আমার ? হুম যাবে । এখন মুল বিষয় টা আমাকে খুলে বল কেন আসছিস আমার কাছে ? অর্পা বললো আপু কাউকে বলবে না তো ? আর কাজ টা খুবই সিক্রেট তোমার করে দিতেই হবে ।

ওকে কাউকে বলবোনা বল এবার । অর্পা যা বললো তা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো,। খানিকটা রাগ হয়লো তবে হাসিমুখে কথা বললাম।অর্পা বলছে আমার আহান ভাইয়া কে খুব ভালো লাগে, ভাইয়ার সাথে আমার রিলেশন টা করে দিবে আপু ? আমি ভাইয়া কে আমার জীবন সঙ্গী বানাতে চাই । আমি রাগান্বিত চোখে বললাম কেন দেশে আর কোনো মানুষ পেলিনা আহান ভাইয়াকেই করতে হবে ?

আপু তুমি এতো রাগান্বিত হচ্ছো কেন ? আমি বললাম তোর এখনো বয়স হয় নাই তুই তো একটা পুচকি মেয়ে তাই রাগ হচ্ছে। ওহ্ ,,,,,,,,, তবে আমি কিন্তু বকা নয় , আমি কিছুই বুঝিনা এমন কিছু নেই। সব বুঝি সব সব ''''''''''''''' আমিও চাই চাই চাই চাই ,,,,❤️

আমি বললাম কি চাস তুই ? এমন লাজুক নম্র ভদ্র মায়াবী চেহারাওয়ালা মানুষকে যে কেউ সারাজীবন আদর ও ভালোবাসা দিয়ে নিজের মনের মতো করে রাখতে চাওয়া টাই স্বাভাবিক । আমি বললাম তুই এখন চলে যা আমার রুম থেকে , অর্পা চলে গেলো । """""""""""""""""""""""""" যায় হোক, বিয়ে বাড়ীর আনন্দ উৎসব আমার ভালো লাগছে না । শরীরটাও কেমন যেন খুব টায়ার্ড লাগছে , লাগবে না কেন? আহান ভাইয়া কাজ করে নিয়েছে , আর মুচকি অর্পার কথাগুলো ভেবে আরো ভালো লাগছে না । আবার বাহিরেও যেতে পারছি না সবাই আমাকে খালি গাঁয়ে থাকার কথা বলে হাসতেছে ‌। এইসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গিয়েছি কখন আমি জানি না । 🛌🛌

৩:৩০ বেজে গেছে আমাকে কে যেন ডাকছে , আমি চোখ খুলে দেখি আমার মা ‌। আমাকে বললো তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাও সবাই রেডি হয়ে তোমার জন্য ওয়েট করছে ‌। আমি খুব তাড়াহুড়ো করে বের হলাম হালকা সাজে,, কারণ বরের ছোট বোন একটু তো সাজগোজের প্রতি লক্ষ্য রাখতেই হবে।

তবে পরিহিত কাপড়ের কালার চয়েস করে দিয়েছে আহান ভাইয়া।

,,বর্ননা,, নিল শাড়ি ম্যাচিং ব্লাউজ পিংক কালারের লিপস্টিক চুলগুলো বাঁধা ও অল্প গহনা। রুম থেকে বের হয়ে সর্ব প্রথম চোখ গিয়ে পড়ে আমার স্বপ্নের ভালোবাসা আহান ভাইয়ার দিকে।

আহান ভাইয়াকে নীল রঙের পাঞ্জাবিতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে, গাড়িতে উঠতে নিয়ে কে যেন আমার চুল টা খুলে দিলো বুঝতে পারলাম না ‌। ভাবির বাসায় পৌঁছে গেলাম । গেইট ধরেছে মেয়ে পক্ষের কিছু ছেলে মেয়ে, সব কিছু ক্লিয়ার করে আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম। আমার খালি গাঁয়ে থাকার পরিস্থিতি হয়ে যাওয়ার পর থেকে আহান ভাইয়ার সামনাসামনি খুব কমই যায় লজ্জায়, তবে দূরে থেকে সব সময় চোখে চোখ রাখি এবং সব সময় আমাকেও দেখার চেষ্টা করে আমি সেটা বুঝতে পারি । আমার ভাইয়ার প্রায় অনেকগুলোই শালী আছে।

তারা আমার প্রপার্টির সাথে কথা বলছে কিন্তু এটা আমার দেখে খুব খারাপ লাগছে । আমার আর এখানে থাকতে ইচ্ছা করছেনা দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তো সব কিছু শেষ করে আমরা ভাবিকে আমাদের বাসায় নিয়ে চলে আসলাম। তবে গাড়িতে আসার সময় আহান ভাইয়ার পাশের ছিটে ভাবির ছোট বোন বসে আসবে । তাই হলো 😔 বাসায় এসে যে যার রুমে চলে যাচ্ছে, আমি ও যাচ্ছি আমার রুমে,,,,,, হঠাৎ আমার হাতের মুঠোয় কে যেন একটা চিরকুট ধরিয়ে দিলো । আমি বুঝতে পারছি যে, আহান ভাইয়া ছাড়া এটা আর কারো কাজ নয়। রুমে এসে আমি আগে ওয়াশ রুমে গেলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য , শুধু চিরকুট টার কথা মনে পড়ছে‌ ।

ভিতরে কি লেখেছে ? অন্তরে প্রশ্ন হচ্ছে আমার । তাড়াতাড়ি করে বের হয়ে এসে পড়া শুরু করলাম। প্রিয়োসি তোমাকে আজ সব থেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় লেগেছে । তোমাকে দেখে আমি ক্রাশ খাইছি , বাঁধা চুলগুলো খুলে দেওয়ার পরে । কারণ আমার মনের মতো করে আজ তুমি সাজগোজ করেছো । চিরকুট টি পড়ার সাথে সাথে বাহিরে বাগানে চলে আসবে । আমি গিয়ে দেখি আহান ভাইয়া আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমাকে দেখে বললো এতো কষ্ট কেন দিলে ? আমি বললাম কখন ,,,, চিরকুট দেওয়ার পর থেকে । শুধু একবার তোমাকে দেখবো বলে,,,,,,,,,,,, এই আমার মিহু পাখিটা ,,,, তুমি সারাজীবন আমার খাঁচায় বন্দী হবে ? এটা বলে একদম শরীরের কাছে এই পরিমাণ টেনে নিলো যে, মাঝে একটা সুই ধুকবেনা । এক ঠোট অপর ঠোঁটে ঝাঁপিয়ে পড়লো । যার দরুনে ফুল বাগান টাও লজ্জিত হচ্ছিলো 😁 । আমি বললাম,,,,,,,,,,,

চলবে ,,??

আপনাদের মূল্যবান কমেন্ট একজন লেখকের অনুপ্রেরণা যোগায়, ভালো কিছু প্রকাশিত করায় । ভালো লাগলে অবশ্যই জানাবেন। ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। __আমার গল্প গুলো সব সময় পড়বে এবং আমাকে সাপোর্টে দিবে , এমন কিছু এক্টিভ ফ্রেন্ডের খুবই প্রয়োজন।

১ম পর্ব একনজরে ঘুরে আসতে পারেন। https://m.facebook.com/groups/424459835037805?view=permalink&id=811890499628068

1
$
User's avatar
@Mdemon456 posted 3 years ago

Comments