মিঃ আবির --(একজন অচেনা মানুষ)
পার্টঃ--02
--(রংধনুর _রং).
।
।
আবারও সে ন্যাপকিনের প্যাকটা একটু নেড়ে আমার
দিকে এগিয়ে দিলো ....
আমার প্রশ্নগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো
.....
নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।। আমি সত্যিই বিস্ময়ে
হতবাক হয়ে ভাবছি যে মিঃ আবির কিভাবে জানলো
আমার পিরিয়ড সম্পর্কে..?? আর তাকে কেনোই বা
এতটা শান্ত দেখাচ্ছে?? তাহলে কি আমার ভাবা
চিরায়ত ভাবনাগুলো আসলেই মিথ্যা?? তাহলে কি
আমিই ভুল ভাবছিলাম?? তাহলে কি ও অন্য আট দশটা
(আমার চেনা অন্য মনমানসিকতার?) ছেলেদের মতো
না?? নাকি শুধুমাত্র ক্ষনি কের ভালো মানুষী
দেখানো??
কিছুই ভাবতে পারছিলাম না?? অনেক প্রশ্ন এখন
আমাকে দাপিয়ে বেরাচ্ছে!!!
যাইহোক একটু লজ্জা লাগলেও নতুন একজনের কাছ থেকে
প্যাকটা আমি নিলাম।। প্যাকটা হাতে নিয়েই যেই
মাথা তুলেছি, দেখি হ্যাংলা টা আমার দিকে হা
হয়ে থাকিয়ে আছে,,,,
ভীষন লজ্জা পেলাম আমি।। কি বদজাত ছেলে,,,,!!!
লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছে মনে হয়। মনে হয় জীবনে
মেয়ে দেখেনি।।
আমি বাথরুমের দিকে যাওয়ার জন্য একটু নড়ে ওঠলাম,
তখনি সে সজাগ হয়ে আমার রাস্তা ছেড়ে দিলো।
যেনো এতক্ষণ ঘোরের ভেতর ছিলো।। তারপর আর কিছু
না ভেবে আমি বাথরুমে চলে গেলাম।।।
।
প্রায় বিশ মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে রুমে যাওয়ার জন্য
দরজা খুললাম।। সাথেই সাথেই কেউ একজন আমার
চোখদুটো ধরে আমাকে আড়াল করে নিলো,,,,
ভয়ে আমি চিৎকার দিয়ে ওঠলাম।। অমনি আরেক হাতে
আমার মুখটা চেপে ধরে বলে ওঠলো --- এই আমি
আমি........!!!প্লিজ চুপ করো, চুপ।।
ইস্স বদমাইশ ছেলেটা করছে কি?? ওকি আমাকে মেরে
ফেলবে নাকি??
ওর কথায় আমি চুপ হয়ে গেলাম।। তারপর ও আমাকে
এগিয়ে যাওয়ার জন্য বললো। আমি এগিয়ে যাচ্ছি লাম।।
হঠাৎ হ্যাংলা টা আমার কানের কাছে মুখ এনে
বললো ----
---যাক তুমি তাহলে বোবা না ...চিৎকার অন্তত দিতে
পারো?? (আবির)
--কিই,, কি বললেন আপনি?? আমি বোবা?? এই আমাকে
আপনার বোবা মনে হয়?? ছাড়ুন আমার চোখ ছাড়ুন
বলছি?? (আমি)
--এই সরি সরি সরি ....আমি বুঝে গেছি।। বুঝে গেছি।।
আরেকটু চলো না, তারপর চোখ ছাড়ি।। (আবির))
--কি বুঝেছেন আপনি, হ্যা??? (আমি)
--না মানে,,,, তু তু তুমি ,,, ঠিকি তো,, এই যে কথা বলতে
পারো।। আসলে সরি টা গ্রহন করে চলোনা আরেকটু ??
(আবির)
ইস্স কি সুন্দর করে কথা বলে হ্যাংলা টা!!!!! আসলে খুব
রাগে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম, তাই একটু রাগ
ঝাড়লাম আর কি?? তাছাড়া বাসর রাত তো দূরের কথা
অন্যরাতেও আমি এমন করে কথা বলতাম না।। আসলে
হ্যাংলা টা কি চাইছে কি কিছুই বুঝে ওঠতে পারছি
না?? আজ সারারাত কি এভাবেই জ্বালাতন করবে
নাকি,, ধুরর ভাল্গানে,!!??
এবার মিঃ আবির সাহেব আমাকে নিয়ে থেমে
গেলেন।। তারপর আস্তে করে চোখটা ছেড়ে দিয়ে
বললেন --
-- এবার চোখটি খোলো।।। (আবির)
আমি চোখদুটো খুললাম।।
চোখদুটো খুলেই আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম।। কিভাবে
সম্ভব?? আমি বিস্ময়ে অস্থিরর হয়ে গেলাম।। তাহলে
কি এইটাই আবির।। এরকমই আবির!! আমাকে এত বড়
সারপ্রাইজ করবে বলে এরকম করছিলো।।
নাহ্ তার সম্পর্কে আমার ধারনাটা ঠিক নয়।। এক অদৃশ্য
ভালো লাগা কাজ করতে থাকে আমার, আবিরের
ওপর।।। আমি তার দিকে ফিরে তাকালাম।।।
-- আপনি এতসব জানেন কিভাবে?? আর এত তাড়াতাড়ি
কিভাবে করলেন এতকিছু?? কথাটি বলতেই আনন্দে
আমার চোখে পানি চলে এলো।। আবির কিছুর উত্তর না
দিয়েই আমাকে আলতো করে ধরে বললো --
-- চলো কেকটা কাটা যাক।।।
আসলে আজ আমার জন্মদিন।। এত ঝামেলার মাঝে
দিনটির কথা আমার খেয়ালই ছিলো না।। আবির বিশ
মিনিটের ভেতরে এক অমায়িক ভালো বাসা দিয়ে
ঘরটি সাজিয়েছে।।। আর ওয়াল ব্যানারে ছোট করে
লেখা --------------তোমার মন খারাপের দেশে
---------------------তোমায় রাখবো ভালোবেশে
আর বড় করে লেখা ------
হ্যাপী বার্থডে টু ইউ মিরা
উইশ অনলি ফর ইউ বাই মি.
মনে হচ্ছিল জন্মদিনে এর চেয়ে বড় গিফট কেউ কাউকে
কোনোদিন দিতে পারে না।। নিমিষেই আমার মনটি
আনন্দময় হয়ে ওঠলো।।। তারপর শুধুমাত্র আমি আর আবির
মিলেই কেকটা কাটলাম।। ও হালকা ভাবে আমাকে
মুখে উইশ করলো।। তারপর কেকটা আমাকে খাইয়ে
দিতে লাগলো।। আমার চোখদুটো হঠাৎ ই ছলছল হয়ে
আসছিলো।। আমি কোনোমতো নিজেকে সামলে
ওকেও কেকটা খাইয়ে দিলাম।। দেখলাম ওর চোখে
মুখে এক প্রাপ্তির নেশা।।
হঠাৎ ই আবির আমাকে জড়িয়ে ধরলো।। আমি কিছুই
বললাম না।। জানিনা কেনো কিছু বলতে পারলাম না।।
শুধু নিজের মনকে আস্টপিষ্টে বাধতে চাইছিলাম
আমি।। কিন্তু কেনো,,,,,,,,???
এর উত্তর এই মুহুর্তে হয়তো কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব
নয়।।।।
।
আমি আবিরের বুক থেকে মুখটা উঠিয়ে ওর দিকে
চেয়ে বললাম
-- আপনি এতকিছু জানলেন কিভাবে?? আমার জন্মদিন,
আমার ভালোলাগা আর অন্যান্য বিষয়গুলি??
এবার কোনো কথা না বলেই আবির আমার কপালে
চুমো একে দিলো।। আমি কিছুটা শিওরে ওঠলাম।
তারপর সে বললো ...
-- খুব ঘুম পাচ্ছিলো না তোমার?? দেখছিলাম তখন ঘুমে
একদম নুইয়ে পড়ছিলে।। চলো ঘুমাবো এখন।। আমারও খুব ঘুম
পাচ্ছে।।
তারপর সুন্দর করে বিছানা করতে গেলো সে। আমাকে
আর কোনো কথার সুযোগ দিলো না।। আমিও বাধ্য
মেয়ের মতো সুইয়ে পড়লাম ওর পাশে।। মনে মনে
ভাবলাম এবার তাকে কথাগুলো আবার জিজ্ঞেস
করবো।। তাই তাকে আলতোভাবে ধাক্কা দিলাম।।
এ কি,,,, হ্যাংলা টা এই পাচ মিনিটের ভেতর ঘুমিয়ে
গেলো।। আমি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম।
কিন্তু না,,, সে তো ঘুমিয়েই গেছে।।
ধুরর ভাল্গানে,,,,!!! ফাযিল ছেলে একটা এরিরমধ্যে
ঘুমিয়ে গেলো।।
রাগে নিজের মাথার চুলগুলো ছিড়তে ইচ্ছে করছে।।
কিন্তু কি আর করার, আমার এখন ঘুমাতে হবে।।
তবে সকল কিছুর মাঝে একটা বিষয় ভেবে ভালো
লাগছে যে,, বিয়ে নিয়ে আমার ভাবা সকল বিষয়গুলি
আস্তে আস্তে মিথ্যে প্রমানিত হচ্ছে।। আমার ভাবনার
উল্টো বিষয়গুলিই আমার সাথে ঘটে চলেছে।। চোখ
বুজে কেনো জানিনা মা -বাবাকে একটা ধন্যবাদ
দিতে ইচ্ছে করছে।।।।
।
ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছিলাম বুঝতে
পারিনি।। হঠাৎ ই আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো।। ঘুম
ভেঙে আবারও বিস্ময়ের সম্মুখীন হলাম।। দেখি অবাক
চাহনি নিয়ে আবির আমার দিকে তাকিয়ে আছে??
চোখে চোখ পড়তেই ও চোখ সরিয়ে নিলো।।
তারমানে এত ক্ষণ ধরে আবির আমার দিকেই চেয়ে
ছিলো।। ভীষন অবাক হলাম আমি।। আমার জেগে ওঠা
দেখে আবির অপ্রস্তুতে পড়ে যায়,, যেনো আমার
চোখে কিছুতেই ধরা দিতে চায় না।। তারপর বলে
ওঠলো ----
সবার আগে গল্প পড়তে আমাদের, নীল ক্যাফের ভালোবাসা, অ্যান্ড, নীল ক্যাফের ডায়েরী, পেজের সাথেই থাকুন,ধন্যবাদ
----ছাদে যাবে মিরা?? (আবির)
ওর প্রশ্নে অবাক হলাম আবারও।। এতরাতে ছাদে যেতে
চাইছে, বুজলাম খুব রোমান্টিকতা ভর করেছে তার
ওপর।। কথাটি শুনে আমি কোনো প্রতিক্রিয়া
জানায়নি, শুধু চেয়ে ছিলাম তারদিকে।।
হঠাৎ ই আমাকে চমকে দিয়ে কোলে তুলে নিলো সে।।
তারপর হাটা আরম্ভ করলো ছাদের দিকে।।। আমি শুধুই
তার চোখের দিকে তাকিয়ে, তাকে জানার চেষ্টা
করছিলাম----
আমি কেনো যেকোনো মেয়েই তোমার সেই
মায়াবি চোখে হারিয়ে যাবে এক নিমিষেই।। এখন
পর্যন্ত প্রতিটা মুহুর্ত, তোমার সাথে কাটাতে আমার
নতুন করে ভাবতে হয়েছে,, কি আছে তোমার মাঝে,,,,!!!
আমি যেনো যুগ যুগান্তর ধরে তার সাথে পরিচিত
আছি।। যদিও সে ছিলো অনেকটা অপরিচিত আমার
কাছে মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও।।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ছাদে চলে এলাম।। ছাদে
এসে ও আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো।। এরপর
কিছু বলার জন্য আমার কাছাকাছি আসতে
চাচ্ছিলো,,,,,,,,
কিন্তু হঠাৎ ই ওর ফোনটা বেজে ওঠে,,,,। তারপর
ফোনের ওপাশ থেকে কেউ একজন তাকে কিছু একটা
বললো,,,,,
নিমিষেই তার হাসিখুশি চেহারার মাঝে এক অস্ফুট
মলিন আভা ফুটে ওঠলো।। যা কিছুতেই আমার কাছে
আড়াল করতে পারলো না সে ...............
.
.
(চলবে)
.
.
(রংধনুর _রং).
মিঃ আবির --(একজন অচেনা মানুষ)
পার্টঃ--02 --(রংধনুর _রং). । । আবারও সে ন্যাপকিনের প্যাকটা একটু নেড়ে আমার দিকে এগিয়ে দিলো .... আমার প্রশ্নগুলো অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে লাগলো ..... নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।। আমি সত্যিই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবছি যে মিঃ আবির কিভাবে জানলো আমার পিরিয়ড সম্পর্কে..?? আর তাকে কেনোই বা এতটা শান্ত দেখাচ্ছে?? তাহলে কি আমার ভাবা চিরায়ত ভাবনাগুলো আসলেই মিথ্যা?? তাহলে কি আমিই ভুল ভাবছিলাম?? তাহলে কি ও অন্য আট দশটা (আমার চেনা অন্য মনমানসিকতার?) ছেলেদের মতো না?? নাকি শুধুমাত্র ক্ষনি কের ভালো মানুষী দেখানো?? কিছুই ভাবতে পারছিলাম না?? অনেক প্রশ্ন এখন আমাকে দাপিয়ে বেরাচ্ছে!!! যাইহোক একটু লজ্জা লাগলেও নতুন একজনের কাছ থেকে প্যাকটা আমি নিলাম।। প্যাকটা হাতে নিয়েই যেই মাথা তুলেছি, দেখি হ্যাংলা টা আমার দিকে হা হয়ে থাকিয়ে আছে,,,, ভীষন লজ্জা পেলাম আমি।। কি বদজাত ছেলে,,,,!!! লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছে মনে হয়। মনে হয় জীবনে মেয়ে দেখেনি।। আমি বাথরুমের দিকে যাওয়ার জন্য একটু নড়ে ওঠলাম, তখনি সে সজাগ হয়ে আমার রাস্তা ছেড়ে দিলো। যেনো এতক্ষণ ঘোরের ভেতর ছিলো।। তারপর আর কিছু না ভেবে আমি বাথরুমে চলে গেলাম।।। । প্রায় বিশ মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে রুমে যাওয়ার জন্য দরজা খুললাম।। সাথেই সাথেই কেউ একজন আমার চোখদুটো ধরে আমাকে আড়াল করে নিলো,,,, ভয়ে আমি চিৎকার দিয়ে ওঠলাম।। অমনি আরেক হাতে আমার মুখটা চেপে ধরে বলে ওঠলো --- এই আমি আমি........!!!প্লিজ চুপ করো, চুপ।। ইস্স বদমাইশ ছেলেটা করছে কি?? ওকি আমাকে মেরে ফেলবে নাকি?? ওর কথায় আমি চুপ হয়ে গেলাম।। তারপর ও আমাকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বললো। আমি এগিয়ে যাচ্ছি লাম।। হঠাৎ হ্যাংলা টা আমার কানের কাছে মুখ এনে বললো ---- ---যাক তুমি তাহলে বোবা না ...চিৎকার অন্তত দিতে পারো?? (আবির) --কিই,, কি বললেন আপনি?? আমি বোবা?? এই আমাকে আপনার বোবা মনে হয়?? ছাড়ুন আমার চোখ ছাড়ুন বলছি?? (আমি) --এই সরি সরি সরি ....আমি বুঝে গেছি।। বুঝে গেছি।। আরেকটু চলো না, তারপর চোখ ছাড়ি।। (আবির)) --কি বুঝেছেন আপনি, হ্যা??? (আমি) --না মানে,,,, তু তু তুমি ,,, ঠিকি তো,, এই যে কথা বলতে পারো।। আসলে সরি টা গ্রহন করে চলোনা আরেকটু ?? (আবির) ইস্স কি সুন্দর করে কথা বলে হ্যাংলা টা!!!!! আসলে খুব রাগে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম, তাই একটু রাগ ঝাড়লাম আর কি?? তাছাড়া বাসর রাত তো দূরের কথা অন্যরাতেও আমি এমন করে কথা বলতাম না।। আসলে হ্যাংলা টা কি চাইছে কি কিছুই বুঝে ওঠতে পারছি না?? আজ সারারাত কি এভাবেই জ্বালাতন করবে নাকি,, ধুরর ভাল্গানে,!!??
এবার মিঃ আবির সাহেব আমাকে নিয়ে থেমে গেলেন।। তারপর আস্তে করে চোখটা ছেড়ে দিয়ে বললেন -- -- এবার চোখটি খোলো।।। (আবির) আমি চোখদুটো খুললাম।। চোখদুটো খুলেই আমি নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম।। কিভাবে সম্ভব?? আমি বিস্ময়ে অস্থিরর হয়ে গেলাম।। তাহলে কি এইটাই আবির।। এরকমই আবির!! আমাকে এত বড় সারপ্রাইজ করবে বলে এরকম করছিলো।। নাহ্ তার সম্পর্কে আমার ধারনাটা ঠিক নয়।। এক অদৃশ্য ভালো লাগা কাজ করতে থাকে আমার, আবিরের ওপর।।। আমি তার দিকে ফিরে তাকালাম।।। -- আপনি এতসব জানেন কিভাবে?? আর এত তাড়াতাড়ি কিভাবে করলেন এতকিছু?? কথাটি বলতেই আনন্দে আমার চোখে পানি চলে এলো।। আবির কিছুর উত্তর না দিয়েই আমাকে আলতো করে ধরে বললো -- -- চলো কেকটা কাটা যাক।।। আসলে আজ আমার জন্মদিন।। এত ঝামেলার মাঝে দিনটির কথা আমার খেয়ালই ছিলো না।। আবির বিশ মিনিটের ভেতরে এক অমায়িক ভালো বাসা দিয়ে ঘরটি সাজিয়েছে।।। আর ওয়াল ব্যানারে ছোট করে লেখা --------------তোমার মন খারাপের দেশে
---------------------তোমায় রাখবো ভালোবেশে
আর বড় করে লেখা ------ হ্যাপী বার্থডে টু ইউ মিরা উইশ অনলি ফর ইউ বাই মি. মনে হচ্ছিল জন্মদিনে এর চেয়ে বড় গিফট কেউ কাউকে কোনোদিন দিতে পারে না।। নিমিষেই আমার মনটি আনন্দময় হয়ে ওঠলো।।। তারপর শুধুমাত্র আমি আর আবির মিলেই কেকটা কাটলাম।। ও হালকা ভাবে আমাকে মুখে উইশ করলো।। তারপর কেকটা আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো।। আমার চোখদুটো হঠাৎ ই ছলছল হয়ে আসছিলো।। আমি কোনোমতো নিজেকে সামলে ওকেও কেকটা খাইয়ে দিলাম।। দেখলাম ওর চোখে মুখে এক প্রাপ্তির নেশা।। হঠাৎ ই আবির আমাকে জড়িয়ে ধরলো।। আমি কিছুই বললাম না।। জানিনা কেনো কিছু বলতে পারলাম না।। শুধু নিজের মনকে আস্টপিষ্টে বাধতে চাইছিলাম আমি।। কিন্তু কেনো,,,,,,,,??? এর উত্তর এই মুহুর্তে হয়তো কারো পক্ষেই দেয়া সম্ভব নয়।।।। । আমি আবিরের বুক থেকে মুখটা উঠিয়ে ওর দিকে চেয়ে বললাম -- আপনি এতকিছু জানলেন কিভাবে?? আমার জন্মদিন, আমার ভালোলাগা আর অন্যান্য বিষয়গুলি?? এবার কোনো কথা না বলেই আবির আমার কপালে চুমো একে দিলো।। আমি কিছুটা শিওরে ওঠলাম। তারপর সে বললো ... -- খুব ঘুম পাচ্ছিলো না তোমার?? দেখছিলাম তখন ঘুমে একদম নুইয়ে পড়ছিলে।। চলো ঘুমাবো এখন।। আমারও খুব ঘুম পাচ্ছে।। তারপর সুন্দর করে বিছানা করতে গেলো সে। আমাকে আর কোনো কথার সুযোগ দিলো না।। আমিও বাধ্য মেয়ের মতো সুইয়ে পড়লাম ওর পাশে।। মনে মনে ভাবলাম এবার তাকে কথাগুলো আবার জিজ্ঞেস করবো।। তাই তাকে আলতোভাবে ধাক্কা দিলাম।। এ কি,,,, হ্যাংলা টা এই পাচ মিনিটের ভেতর ঘুমিয়ে গেলো।। আমি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলাম। কিন্তু না,,, সে তো ঘুমিয়েই গেছে।। ধুরর ভাল্গানে,,,,!!! ফাযিল ছেলে একটা এরিরমধ্যে ঘুমিয়ে গেলো।। রাগে নিজের মাথার চুলগুলো ছিড়তে ইচ্ছে করছে।। কিন্তু কি আর করার, আমার এখন ঘুমাতে হবে।। তবে সকল কিছুর মাঝে একটা বিষয় ভেবে ভালো লাগছে যে,, বিয়ে নিয়ে আমার ভাবা সকল বিষয়গুলি আস্তে আস্তে মিথ্যে প্রমানিত হচ্ছে।। আমার ভাবনার উল্টো বিষয়গুলিই আমার সাথে ঘটে চলেছে।। চোখ বুজে কেনো জানিনা মা -বাবাকে একটা ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছে।।।। । ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছিলাম বুঝতে পারিনি।। হঠাৎ ই আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো।। ঘুম ভেঙে আবারও বিস্ময়ের সম্মুখীন হলাম।। দেখি অবাক চাহনি নিয়ে আবির আমার দিকে তাকিয়ে আছে?? চোখে চোখ পড়তেই ও চোখ সরিয়ে নিলো।। তারমানে এত ক্ষণ ধরে আবির আমার দিকেই চেয়ে ছিলো।। ভীষন অবাক হলাম আমি।। আমার জেগে ওঠা দেখে আবির অপ্রস্তুতে পড়ে যায়,, যেনো আমার চোখে কিছুতেই ধরা দিতে চায় না।। তারপর বলে ওঠলো ---- সবার আগে গল্প পড়তে আমাদের, নীল ক্যাফের ভালোবাসা, অ্যান্ড, নীল ক্যাফের ডায়েরী, পেজের সাথেই থাকুন,ধন্যবাদ ----ছাদে যাবে মিরা?? (আবির) ওর প্রশ্নে অবাক হলাম আবারও।। এতরাতে ছাদে যেতে চাইছে, বুজলাম খুব রোমান্টিকতা ভর করেছে তার ওপর।। কথাটি শুনে আমি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, শুধু চেয়ে ছিলাম তারদিকে।। হঠাৎ ই আমাকে চমকে দিয়ে কোলে তুলে নিলো সে।। তারপর হাটা আরম্ভ করলো ছাদের দিকে।।। আমি শুধুই তার চোখের দিকে তাকিয়ে, তাকে জানার চেষ্টা করছিলাম---- আমি কেনো যেকোনো মেয়েই তোমার সেই মায়াবি চোখে হারিয়ে যাবে এক নিমিষেই।। এখন পর্যন্ত প্রতিটা মুহুর্ত, তোমার সাথে কাটাতে আমার নতুন করে ভাবতে হয়েছে,, কি আছে তোমার মাঝে,,,,!!! আমি যেনো যুগ যুগান্তর ধরে তার সাথে পরিচিত আছি।। যদিও সে ছিলো অনেকটা অপরিচিত আমার কাছে মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও।। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ছাদে চলে এলাম।। ছাদে এসে ও আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো।। এরপর কিছু বলার জন্য আমার কাছাকাছি আসতে চাচ্ছিলো,,,,,,,, কিন্তু হঠাৎ ই ওর ফোনটা বেজে ওঠে,,,,। তারপর ফোনের ওপাশ থেকে কেউ একজন তাকে কিছু একটা বললো,,,,, নিমিষেই তার হাসিখুশি চেহারার মাঝে এক অস্ফুট মলিন আভা ফুটে ওঠলো।। যা কিছুতেই আমার কাছে আড়াল করতে পারলো না সে ............... . . (চলবে) . . (রংধনুর _রং).