♥♥মিথ্যা অপবাদ♥♥
#লেখক_কামাল
//part_21//
আমি চোখের পানি মুছতে মুছতে,,।মেসে চলে আসলাম,,,.।
জানি না রিমি আমার চলে যাওয়ার খবর সুনে কি করে বসে।খুব ভয় হচ্ছে।আর চিন্তাও হচ্ছে।আমি এখানে চলে আসাটা শুধু রাহুলই জানে।রাহুল আমাকে মেস খুজে দিতে সাহায্য করেছিল।আর প্রমিস করেছিল রিমিকে বলবে না আমি যে এখানে আছি।
আসলেই কি বেকার ছেলেরা প্রেম করতে পারে না?
আসলেই,,,,।ছেলেটা যতই ভালো আর সুন্দর হওক,,আংকেল আন্টির যতই পছন্দের হওক কিন্তু ছেলেটা ত বেকার। আমি বেকার না হলেও,,,রিমির পরিবার অনেক ধনী পরিবার।আর আমার ত বর্তমানে কোনো পরিবারই নেই।
এমন ছেলের সাথে ত রিমির পরিবার বিয়ে দিবে না।যার ভালো ভবিষ্যতের কোনো নিশ্চয়তা নেই। তার কাছে কিভাবে মেয়েকে তুলে দিবে।
আমি জানতাম এরকম কিছু হবে?রিমি আমার সম্পর্ক কেউ মেনে নিবে না।তার পরও পারি নি রিমিকে ভালোনা বেসে থাকতে।কারন ভালোবাসা ধনী গরিব দেখে না।মনের সাথে মনের মিল হলেই হয়ে যায়।
তবে আমি আজ সবাইকে বলবো,,,প্রেম ভালোবাসা কোনো ছেলে খেলা নয়।এমন প্রেম করবেন না যাকে পাওয়া টা আমার মতই প্রশ্নবিদ্ধ। প্রেমটা ক্যারিয়ার গঠনের আগে পর্যন্ত বন্ধ রাখুন।আর ধনীর মেয়ে,,ধনীর ছেলেদের সাথে প্রেম করতে ভেবে করুন।কারন প্রেমটা সত্যি হতে পারে পরিবার কিন্তু মেনে নিবে না।,,, আপনাদের আশেপাশে তাকালেও দেখতে পাবেন কত ছেলে চাকরির অভাবে তাদের ভালোবাসার মানুষটিকে অন্যের হতে দেখছে।।
ভালোবাসা শুধু কাছে পাওয়া নয়।ভালোবাসা হলো ভালোবাসার মানুষ টিকে ভালো রাখা।সে যদি অন্য কোথাও ভালো থাকবে মনে করেন তাহলে তাকে অন্য কোথাও যেতে দিন।আর নিজের ভিতর একটা কবর খুরে নিন।সব কষ্ট সেখানে কবর দিন।কারন ছেলেদের সবার সামনে কাদতে নেই।
রাতে ঘুম হলো না রিমির কথা ভেবে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছি।ঠিক করলাম কয়েকদিন ভার্সিটিতে যাবো না।আর আংকেলের অফিসেও না। কারন রিমির সাথে দেখা হওয়ার এই দুই মাধ্যম।আমার মনে হয় কয়েকদিন আমাকে না দেখলে হয়ত রিমি আমাকে ভুলে যাবে।ভুল বুজবে আমার প্রতি ঘৃনা জন্মাবে।
যেই রকম চিন্তা সেই রকম কাজ,,দুই দিন হয়ে গেলো।ভার্সিটি, অফিস কোথাও যাই নাই।রাহুল কে দেখছি খুব তারা হুরা করে আমার দিকে আসছে।
-- কিরে কি হয়েছে,,এত তারাহুরা করে কেন আসছিস?(আমি)
-- আসিফ তারাতারি হাসপাতলে চল,,কাল রাতে নাকি রিমি অনেক গুলো ঘুমের ঊষুধ খেয়ে ফেলেছে।(রাহুলের কথা সুনে বুক কাপতে লাগলো।)
-- কি বলিস এইসব কোন হাসপাতালে চল প্লিজ?(আমার মাথা ঘুরছিল রিমির যদি কিছু হয়ে যায়)
রাহুল আমাকে হাসপাতলে নিয়ে গেল,,,আংকেল আন্টি কেবিনের বাহিরে বসা।আমি গিয়ে জিজ্ঞাস করলাম?
-- কি হয়েছে আন্টি,,রিমি নাকি ঘুমের ঊষুধ খেয়ে ফেলছে?(আমি)
-- হা আসিফ,তুমি চলে যাওয়ার পর দুই দিন খাওয়া দাওয়া করে নাই।আমরা অনেক বুজাই কিন্তু রিমি কিছুতেই বুজতে চায় নি।রিমি বলছিল তোমাকে না পেলে রিমি আর বাচবে না।তাই তোমার আংকেল রিমিকে চর বসিয়ে দেয়।পরের দিন সকালে উঠে দেখি রিমি ঘুম থেকে উঠছে না।রুমে গিয়ে দেখি অনেক গুলো ঘুমের ঊষুধ খেয়ে নিয়েছে।(আন্টি)
-- ডাক্তার কি বলেছে?(আমি)
-- রিমিকে ওয়াস করা হইছে।এখনো জ্ঞান ফিরে নাই।(আন্টি)
-- আসিফ আমার মেয়েটার যেন কিছু না হয়ে যায়।আমি কথা দিচ্ছি তোমার সাথেই রিমির বিয়ে দিব?আমি বুজতে পারছি টাকা পয়সা কিছুই না যদি আমার মেয়ে হারিয়ে যায়।(আংকেল কান্না করছিল)
এমন সময় ডাক্তার এসে বললো,,,
-- রোগীর জ্ঞান ফিরেছে আপনারা চাইলে দেখা করতে পারেন?(ডাক্তার)
রিমির ছোট ভাই এক দৌরে রিমির কাছে চলে গেল।আর রিমিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিল।আংকেল আন্টির সাথে আমিও গেলাম।সাথে রাহুল আশাও ছিল।
রিমিকে দেখে আটকে উঠি একি অবস্থা হয়েছে রিমির।রিমি একনজর আমাদের দিকে তাকাতেই যখন আমার দিকে চোখ পড়ে।অন্য দিকে ফিরে যায়।,,,,
সবাই বুজতে পেরে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।,,
আমি রিমির কাছে যাই,,,
আমি কোনো কিছু না ভেবে রিমিকে জড়িয়ে ধরি
-- রিমি আমি সরি,আমি বুজতে পারি নাই?(জড়িয়ে ধরে কান্নামাখা কন্ঠে)
-- ছাড়ো বলছি আমাকে,,তুমি এখানে কেন?আমাকে ত তুমি ভালোবাসো না তাহলে কেন এসেছো?(রিমি অভিমানি সুরে বললো)
-- আমার জানটা যে আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিল?(আমি)
-- কে তোমার জান?যাও এখান থেকে আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই না।(রিমি কান্না করছিল)
রিমি অনেক রাগ, অভিমান করে আছে।
-- রিমি আমি জানতাম না তুমি এরকম কিছু?(আমাকে আটকে দিয়ে)
-- আম্মু আম্মু,,,(রিমি আন্টিকে ডাকতে শুরু করে দিছে)
-- কি হয়েছে রিমি?(আন্টি, আংকেল সবাই রুমে এসে)
-- আম্মু আসিফ কে যেখানে চলে গেছিল সেখানেই যেতে বলো?(রিমি)
আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি,,, রিমি কি অভিমান করে বলছে নাকি সত্যিই চলে যেতে বলছে।
-- রিমি আসিফের কোনো দুষ নেই,,সব কিছু আমাদের জন্য করেছে।বাসায় চল সব বলছি?(আংকেল)
-- তোমাদের জন্য মানে?(রিমি)
-- বাসায় চল,,,সব কিছু বলবো?(আন্টি)
রিমি চুপ মেরে গেছে।,,
বাসায় আসার পর,,রিমি জানতে চাইলো,,
-- এবার বলো,,(রিমি)
-- আসলে আমরা আসিফকে বলেছিলাম,,,তোর সাথে যেন অন্য কোনো সম্পর্কে না জরায়।আর যখন জড়িয়ে গেছে।যেন তোকে ভুলে যায়,আর তুই ভুলে যাওয়ার জন্য যা দরকার তাই করবে।(আন্টি)
রিমি আমার দিকে তাকিয়ে আবার সুনতে লাগলো,,,
-- আমরা জানতাম না আমাদের অহংকার তোমাকে হারিয়ে ফেলছিল,,,আর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।আসিফের সাথেই তোমার বিয়ে দিবো,,।রিদয়ের সাথে কথা হয়েছে।(আংকেল)
-- সত্যি বলছো আব্বু,,,(রিমি আনন্দে মেতে উঠলো)
-- হুম সত্যি বলছি,,,আর আসিফ তুমি আবার বাসায় চলে আসো।আজ রাতেই তোমাদের বিয়ে।(আংকেল)
বিয়ের কথা সুনে মনে আনন্দ যেন আর ধরে না।।এটা যেন অসাধ্যকে সাধ্য করা।কিন্তু আমি কিছুই করি নাই।সব কিছু রিমির পাগলামি।
-- আংকেল আপনি মেনে নিছেন এতেই হবে? বিয়েটা না হয় পরেই করি?(আমি একটা বিষয় ভাবছিলাম)
-- কেন?আজ রাতেই হবে।নয়ত আবার ঘুমের ঊষুধ খাব?(রিমি)
-- না মানে বলছিলাম লেখাপড়া শেষ করে না হয়।বিয়েটা করি?(আমি)
-- না,না আব্বু তুমি আজই বিয়ের আয়োজন করো?(রিমি)
ভাবছি আমার বিয়েতে আব্বু আম্মু,ভাইয়া ভাবি,সুমি আপু কেউ থাকবে না। আর কিভাবে থাকবে আমার ত এখন সেই সমপর্ক নাই।আর রিমিকে বিয়ে করার এই সুযোগ টা হারানো মনে হয় ঠিক হবে না।
-- আচ্ছা ঠিক আছে?(আমি)
রাহুল,,আশা,আর কিছু ভালো বন্ধুদের দেওয়া হলো বিয়ের সব দায়ীত্ব।
প্রানপন চেস্টায় বিয়েটা হয়েই গেলো,,,।বন্ধু বান্ধব অনেক কথা বলছিল।আর হাসছিল।কথা গুলো আসলে বলা যাবে না।বুজতেই পারছেন কথা গুলো কি হতে পারে।,,তবে আংকেল আন্টির মুখে হাসি দেখে মন ভরে গেলো।কারন আংকেল আন্টির মনে কষ্ট দিয়ে হয়তো কখনো আমরা সুখি হতে পারতাম না।
বাসর ঘর সাজিয়ে বন্ধু বান্ধব গুলো। বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কেউ কেউ কার্ড নিয়ে বসে পরেছে।,,,আজ নাকি কিছু হবে না আজ শুধু আড্ডা হবে।। সালারা ত কখনো বিয়ে করে নাই কেমনে বুজবে আমাদের মনে কি চলছে।
-- দোস্ট ১;৩০ বাজে এবার ত যা?(আমি)
-- না বন্ধু আজ কিছুই হবে না,,,তুমি চাইলে শুরু করতে পারো আমরা এখানেই আছি।নয়ত আমাদের সাথে খেলতে আসো?(রাহুল,,সাথে আশা,ইভা সবাই সায় দিচ্ছে। আর হাসা হাসি করছে)
-- অকে তোরা কার্ড খেল আমরা লুডু খেলছি।(রিমি)
-- অই দাড়া আমিও খেলবো তোদের সাথে (আশা)
-- দাড়া আমিও আসছি।(রাহুল)
-- অকে খেলার আগে একটা শর্ত আছে বলে নেই।(আমি)
-- কি শর্ত,,,,
-- আমরা জিতলে তোরা রুম থেকে বের হয়ে যাবি।আর তোরা জিতলে সারারাত আড্ডা চলবে?(আমি)
-- আচ্ছা ঠিক আছে আমরা রাজি?(আশা)
আশাকে একটু আসতে করে বললাম,,,
-- আশা একটু বুজার চেস্টা কর,,,একটু কম খেলিস,,রাহুলে ত ছাড় দিবে না।(আমি)
-- আচ্ছা,,,৫০০ দিতে হবে?(আশা)
--কাল সকালে পেয়ে যাবি প্রমিস।(আমি)
খেলা শুরু হলো,,,আমার খেলার বাজে অবস্থা,,রিমি ভালোই খেলছে।।সবসময়ই রিমিই সব কিছুতে এগিয়ে থাকে।তানাহলে হয়ত আজ বিয়ে টা করতে পারতাম না।
আশাকে যা বলছি তাই করছে। তার পর ও পেরে উঠতে পারছি না।অন্য সবাই আকর্ষন দিচ্ছে।সবাই আমাদের বিরুদ্ধে। যাক আশার হেল্প এর জন্য শেষ পর্যন্ত আমরাই জয়ী হলাম।
-- এবার ত রুম খালি করতে হবে,,যাও? (রিমি)
-- হুম যাচ্ছি,,,(আশা)
রুম খালি করে,, সবাই চলে গেলো।
-- আচ্ছা আশা এত বাজে কি ভাবে খেললো?(রিমি)
-- ৫০০ টাকা ঘুষ ছিল?(আমি)
-- তাই,,,ভালো করেছো,,,(রিমি)
-- হুম,,(আমি)
-- তুমি দেখছো কিভাবে তোমাকে আমার করে নিলাম?(রিমি)
-- আংকেল আন্টি না চাইলে কখনো সম্ভব হতো না।(আমি)
-- তুমি জানো আমি এত গুলো ঘুমের উষুধ খাই নাই।২টা খেয়েছিলাম বাকি গুলো বাহিরে ফেলে দিছি(রিমি)
-- ২ টা খেয়েই এই অবস্থা?(আমি ত অবাক)
-- না আমি অভিনয় করেছিলাম (রিমি)
-- অভিনয়,,,
-- হুম তোমার সাথে আব্বু আম্মুর সব কথাই আমি