"ঠোঁটে চুমু খেলে কি বেবি হয় রোদ ভাইয়া?"
জুহির কথায় রিতিমত বিস্মিত হয়ে যায় রোদ। রোদ পড়ে ক্লাস এইটে। আর জুহি পিচ্চি মেয়ে মাএ ক্লাস ফাইভে পড়ে সে কি বললো এটা। চুমু খেলে নাকি বেবি হয়! রোদ হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। রোদের হুশ ফিরে জুহির কথায়,
-কি হলো কথা বলছো না কেন?
-কিসব বলছিস তুই? ঠোঁটে চুমু খেলে বেবি হবে কেন?
-তাহলে তুমি আমার ঠোঁটে চুমু খেলে কেন? এ্যাঁ এ্যাঁ তুমি আমার ঠোঁটে চুমু খেয়েছো কিন্তুু এখন বলছো বেবি হবে না এ্যাঁ এ্যাঁ। আমার বেবি চাই।
এক প্রকার ফুঁপিয়ে কান্না করতে লাগলো জুহি। আস্তে আস্তে জুহির কান্নার শব্দ বেড়েই চলছে। কেই শুনে ফেললে কি যে হবে কে জানে। পরিস্থিতি সামলাতে রোদ জুহি কে বললো।
-আরে কান্না করিস না। হ্যাঁ ঠোঁটে চুমু খেলে বেবি হয়। তোর ও বেবি হবে।
-ইয়াহু আমি এক্ষুনি মামনি আম্মু আব্বু সবাইকে বলবো আমার বেবি হবে। হিহিহি কি মজা কি মজা।
রোদের মাথায় হাত। মেয়ে বলে কি সবাইকে বলে দেবে রোদ ওর ঠোঁটে চুমু খেয়েছে। ছিঃ ছিঃ কেলেংকারি হয়ে যাবে। রোদ খুব রেগে যায়।
-তুই কাউকে এই কথা বলবি না জুহি।
-বলবো আমি কি মজা আমার বেবি হবে। সবাইকে বলবো।
-বলবি না বলছি।
-না বলবো।
রোদ রেগে গিয়ে জুহি কে ইচ্ছে মতো মারে আর ভয় দেখায় সে যদি এই কথা কাউকে বলে তাহলে জুহি কে একদম মেরে ফেলবে। জুহি খুব ভয় পেয়ে যায়।
-তুমি খুব পচাঁ আমাকে মারো। আমাকে প্রতিদিন বকো আমাকে ভয় দেখাও। আর থাকবো না তোমার কাছে। খুব দূরে চলে যাবো তোমার থেকে। তুমি খুব খারাপ।
কান্না করতে করতে রোদ কে এই কথা গুলো বলেছিলো জুহি। সেদিন হয়তো ওর কষ্ট টা বেশি ই ছিলো।
-হ্যাঁ রে জুহি তুই ঠিকি বলেছিস আমি খুব খারাপ। তোকে অনেক মারতাম বকতাম। কখনো তোর মূল্য টা বুঝতে পারি নি। কিন্তুু যেদিন তুই তোর বলা কথাটা সত্যি করে না বলে সত্যি সত্যি আমাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেলি। তারপর থেকে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম আসলে তুই আমার জীবনে কি ছিলি।
জুহির ছোট বেলার ফ্রেমে বাঁধানো ছবি টার দিকে তাকিয়ে রোদ হারিয়ে গিয়েছিলো তার অতীতে। একদৃষ্টিতে ছবি টার দিকে তাকিয়ে এই কথা গুলো ভাবছিলো রোদ। অতীতে ডুব দেওয়ার কারণে রোদের বর্তমানের কোনো খেয়াল ই নেই।
-স্যার........
-জ্বী ক ক কে!
-স্যার আমি আপনার ম্যানেজার।
-ও আ'ম সরি। আসলে......
-কি দেখছিলেন স্যার ছবিটার দিকে এমন করে।
-না কিছু না। আপনি কখন আসলেন ম্যানেজার সাহেব।
-যখন আপনি ছবিটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন তখন এসেছিলাম। অনেক বার আপনাকে ডাকলাম ও কিন্তুু আপনার কোনো রেসপন্স নেই....
-আ'ম সরি। তা কি জন্য এসেছেন ম্যানেজার সাহেব?
-স্যার এই ফাইল গুলো তে আপনার সিগনেচার দরকার ছিলো।
-ওহ আচ্ছা দিন আমি সিগনেচার করে দিচ্ছি।
-জ্বী।
অতঃপর রোদের সিগনেচার নিয়ে ম্যানেজার সাহেব রোদের কেবিন ত্যাগ করে। রোদ জুহির ছবি টা একপাশে সযত্নে রেগে দেয়। আজ কোনো এক অজানা কারণেই জুহির কথা খুব মনে পড়ছে রোদের। বড্ড মিস করছে সে জুহি কে।
আজ রোদ অনেক বড় বিজনেসম্যান হয়ে গেছে। জুহি ও আর ছোট নাই। আজকে তার ১৮ তম জন্ম দিন। জুহির চলে যাওয়ার পর রোদের কাছে জুহির ছবি টাই ছিলো ওর শেষ স্মৃতি। ছবিটির ছোট্ট জুহি কে রোদ নিজের মতো কল্পনা করে নিয়েছে। রোদ জুহি কে নিজের মতো করে সাজিয়ে হৃদয়ের মাঝে খুব যত্নে রেখে দিয়েছে।
কখনো আর জুহির দেখা পাবে কি না সেটা রোদ জানেনা। কিন্তুু তার যে জুহি কে খুঁজে পেতেই হবে।
এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ রোদের ফোন টা বেজে উঠে। ফোন রিসিভ করে ওপাশ থেকে কানে ভেসে আসা। কথাগুলো শুনে রোদ খুশিতে আত্মহারা.........
চলবে------------
#কাছে_পাশে
#পর্ব_১
5
9
সর্বপ্রথম লেখককে ধন্যবাদ জানাই গল্পটা লেখার জন্য। মানুষ তার আশেপাশের সব সময় মানুষ পেতে চাই। গল্পটি আমার খুব ভালো লেগেছে।