গল্প---#ইমা।--
তৃতীয় ও অন্তীম পর্ব,
আগের পার্ট গ্রুপ এ আছে।
---------------------------------'
শুধু একটা কথাই ভেবেছিলাম যে,এতদিন মিথ্যে ভালোবাসার জন্য প্রকৃত ভালোবাসাকে তাড়িয়ে দিলাম।নিজেকে বড্ড অপরাধী লাগছিল।সকালে,ইমার দেখা পাই।ইমাকে আটকিয়ে বলি,
-ইমা আই এম রিয়ালি সরি।আসলে...
-থাক আর কিছু বলার নেই।আমাকে শুনাতে হবে না।আগামী সপ্তাহের শুক্রবারে আমার বিয়ে আশা করি আপনি আসবেন।
ইমা চলে যেতে শুরু করল।
-ইমা।থামো, জাস্ট একটা কথা জানার ছিল।
ইমা থেমে গেল।
-হুম বলেন কি?
-তুমি কি সত্যিই আমায় ভালোবাসো না?
ইমা কিছুক্ষন নিরম থেকে বলল,
-না।আমি বাসি।না।গুড বাই।
ইমা চলে গেল
অই অবস্থায় বসে পড়ি।বাসায় গিয়ে পর্যন্ত লুকিয়ে কান্না করি।বিকালে আমার রুমে কেউ নক করল।আমি দরজা খুলতেই আমার সব ফ্রেন্ডসরা সব হুট করে ডুকে পড়ল।আর মুখে মিষ্টি ডুকিয়ে দিল।
-কিরে হয়েছেটা কি বলবি।
-আরে তুই যে বিদেশে একটা চাকরীর জন্য এপ্লাই করেছিলি।
-হুম।
-সেটা তোর হয়ে গেছে।
-কি সত্যি।
-আরে হুম।
-কবে থেকে জয়েনিং?
-সেটা জানতে তোকে তো আগে যেতে কানাডা।
-কবে?
-পরের সপ্তাহ শুক্রবার।
-কি।শুক্রবার।
-হ্যা,তো কি হয়েছে
আমি তাদের ছেড়ে বারান্দায় আসি।ভাবতে থাকি শুক্রবার তো ইমারও বিয়ে।
-তো পরে কি হয়?(বৃষ্টি)
-পরে আর কি?ইমা তো আর আমাকে ভালোবাসে না।তাই অনেক কষ্ট থাকা সত্ত্ববেও আমি চলে যাই দেশ ছেড়ে।
-সো এই তোর গল্প।
-হুম।
-এরপর আর কোনো খোজ নিয়েছিলি?
-আর কি খোজ নেয়ার?তার তো বিয়ে হয়েই গেছে?
-সব ঠিকমত না জেনে এত সিউর কিভাবে তুই?
-মানে?
-একটু খোজ নিস।বাই থা ওয়ে আমার হাতে আজ আর সময় নেই।আর ইমার কোনো খোজ পেলে জানাস।
-আচ্ছা। মেহেদী আর কিছু না বলে বেড়িয়ে পরে বাসার জন্য।
বাসায় গিয়ে তার মার কাছে গিয়ে বলে,
-মা,একটা জিনিস জানাএ ছিলো?
-কি,বল।
-ইমার শশুরবাড়িটা কোথায় বলবে।অনেকদিন তার সাথে দেখা হয়নি দেখা করে আসবো নে।
-কি শশুরবাড়ি?
-হ্যা,শশুরবা-হ্যা,শশুরবাড়ি।
-পাগল নাকি।ইমা তো বিয়েই করে নি।শুশুরবাড়ি কিসের?
-তাইলে যে ঐ বিয়ে.....
-ও তোকে তো বলা হয়নি ইমার ঐদিন বিয়ে হয়নি।
-কি বিয়ে হয়নি?
-না।বিয়ের রাতেই ইমা বলে বসে সে বিয়ে করবে না।একদম বিয়ে করবে না।খুব আচরণ করতে থাকে।তার এই এই আচরন দেখে পরে বরপক্ষও আর রাজি হয়নি বিয়ে দিতে।
সম্রাট এই কথাটা শুনে অনেকটা শকড।
-তো এখন ইমা কোথায়?
-তুই যেদিন এসেছিলি সেদিন ই সে তার মামার বাড়ি চলে যায়।
মেহেদী ছাদে চলে যাই।মেহেদী বুঝতে পারল না ইমা এসব কেন করল।হঠাৎ কেউ একজন ডাকল।
-ভাইয়া।
মেহেদী তাকিয়ে দেখে একজন মেয়ে
-হুম,কি
-আপনাকে কিছু জরুরি কথা বলার ছিলো।আপনাকেই খুজছিলাম অনেকক্ষণ ধরে।
-কি বলবে।
-আসলে ইমা আপনাকে অনেক ভালোবাসে।ঐদিন অনেক অভিমানে আপনাকে বলে দিয়েছিল যে আপনাকে ভালোবাসে না।বিয়ের দিন শুধু আপনার অপেক্ষায় ছিলো যে আপনি এসে তাকে নিয়ে যাবেন।কিন্তু সে জানত না আপনি এ দেশে যে নেই।আপনার না আসায় পরে সে নিজেই এইই বিয়ে ভেঙ্গে ফেলে।ইমা আপনাকে এখনো অনেক ভালোবাসে কিন্তু তার এখনো মনে অনেক অভিমান।
-হুম,বুঝলাম তবে তুমি এতো কিছু জানো কিভাবে?
-কারন আমি তার বেস্ট ফ্রেন্ড।সে আমাকে তার সবকিছু শেয়ার করে।এসব কাউকে বলতে মানা করছিল কিন্তু আমি আপনাকে বললাম।
-তুমি আমাকে তার কাছে নিয়ে যেতে পারবে।
-হুম,আসেন আমার সাথে।
---------------------------------------
ইমা একা একা ছাদে বসে আছে।আর শহর টা একঘেয়ে দেখে যাচ্ছে।হঠাৎ তার পাশে কারো বসার শব্দ পায়।হঠাৎ তার দিকে কেউ একজন বাদাম বাড়িয়ে বলে,
-বাদাম খাবে?
ইমা তার পাশে তাকাতেই থ হয়ে যায়।
-আপনি এখানে?
-হুম
-কিভাবে আসলেন?
-সেটা জানা জরুরি নয়।
-আপনি এখান থেকে যান।
-না।আমি যাবো না।
-ওকে ফাইন, আমি ই চলে যাচ্ছি।
ইমা চলে যেতে থাকে।
-ইমা, আই এম রিয়ালি সরি।দেখো মানুষ মাত্রই ভুল।আমাকে প্লিজ ক্ষমা কর।আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।
ইমা যেতেই থাকে।
-দেখ তুমি ক্ষমা করা না পর্যন্ত কিন্তু এখানেই কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকব।
-আপনার যা খুশি তাই করেন।
ইমা চলে যায়।আকাশে কালো মেঘ জমতে শুরু করে।একঘন্টা পর অনেক বৃষ্টি শুরু হয়।ইমার মামি ঈমাকে ডেকে বলে,
-ইমা মা,যাতো ছাদে থেকে কাপড় গুলো একটু নিয়ে আয়।
-আচ্ছা মামি।
ইমা ছাদে উঠে দৌড়ে ছাতা নিয়ে ছাদে উঠে দেখে মেহেদী কানে ধরে ছাদে দাঁড়িয়ে ভিজছে।ইমা দ্রুত তার কাছে যায়
-একি আপনি যাননি।
-বলছিলাম না আমাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত যাবো না।
-আপনি আসুন।নইলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
-না।আমায় ক্ষমা না করা পর্যন্ত এক পাও নড়ব না।অসুস্থ হয়ে মরে....
ইমা হাত দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়।আর সাথে জড়িয়ে ধরে।
-সাবধান এসব কথা ভুলে মুখে আনবেন না।কেন করেন এসব আপনি কেনো কেনো।
এইগুলো বলে ইমা জড়িয়ে থাকা অবস্থায় মেহেদীর বুকে অনেক কিল মারতে থাকে।
-আহ। ব্যাথা লাগছে তো।
-লাগুক,এই কয়দিন মনে হয় আমি একটু ব্যাথা পাই নি।
মেহেদীও ইমাকে জড়িয়ে ধরে আর ইমার মাথায় আস্তে করে ইমার চুলগুলো কানে গুজে দেয়।
-তো ম্যাডাম হানিমুনে কবে যাবেন?আমি কিন্তু ছেলেমেয়ের নাম ঠিক করে ফেলেছি।
-আস্ত একটা ফাজি।এখনো বিয়েই হয়নি আর আসছে হানিমুন নিয়ে।
-তা এখানেই কি বৃষ্টিতে ভিজবেন?
-ভিজি না একটু আমার ভিজতে খুব ভালো লাগে।
-হ্যা তা তো বুঝতেই পারছি।আর আমার ভালো লাগে।খুব ভালো লাগে আমার এই বউকে।খুব
মেহেদী আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
ইমা আর মেহেদী দুজনেই বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে।এই বৃষ্টির মাঝ দুজনের ভালোবাসার পুর্নতা পায়।
----------সমপ্ত---------