গল্পঃবাবার_বন্ধুর_মেয়ে_যখন_বউ

0 16
Avatar for kamal16
3 years ago

#গল্পঃবাবার_বন্ধুর_মেয়ে_যখন_বউ।

পর্বঃ7

তারপর আমি ও নিচে গেলাম, তারপর সিড়ি দিয়ে নামতেছি হঠাৎ মাথা টা কেমন করে উঠলো। আর কিছু মনে নেই, চোখ খুলে দেখি আমি আমার রুমে শুয়ে আছি, আর পাশে সবাই বসে আছে। আমার হাতে ও ব্যান্ডেজ করা কিছু বুঝলাম না আমি এখানে কিভাবে এলাম,,

---- কার সাথে কী হইছে আমাকে বল( আম্মু)

----- কোন মেয়ের সাথে কথা বলিস,যে তার জন্য এমনটা করতে হলো( বড় আপু)

---- কি হইছে তার সাথে ( ছোট আপু)

আমি আব্বুর দিকে তাকিয়ে আছি, তখন আব্বু সবাইকে বললো,,,,

---- ছেলেটা সবে মাত্র সুস্থ হইলো আর তোমার ও শুরু করে দিছো। যা তোমারা সবাই এখান থেকে আমি ওর সাথে কথা বলতাছি।

সবাই চলে গেল।

---- আচ্ছা বাবা আমাকে বলতো জারার সাথে তোর কী হইছে।

---- কিছু না।

---- আমাকে বল কাওকে বলবো না।

---- তোমার সব কথা আমি শুনছি, প্লিজ এইটা জানতে চেও না।

---- বলবি না তুই

---- না বলবো না।

---- আচ্ছা ঠিক আছে।

সবাই চলে গেল। আমি দরজা বন্ধ করে দিলাম। মনে হয় অনেক রক্ত বেরোনোর জন্য অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম। জারা আমাকে এতটা কষ্ট কিভাবে দিতে পারলো,,৷

ওইদিকে।

জিদান তুমি কেনও বুঝছো না, তুমি একটা ভুল ধারনা নিয়ে বসে আছো। তুমি হাত কাটটে গেলে কেনও? তুমি হয়তো জানো না আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি। সত্যি টা না জেনেই তুমি সেদিন ওইভাবে চলে গেলা। এখন আমার কিছু ভাল লাগছে না। ভালো লাগবে কিভাবে তোমার সাথে কথা না বললে যে আমি থাকতে পারি না। কেনও তুমি আমার উপর অভিমান করে ওইসব বাজে জিনিস খাও। কেনও জিদান কেনও।।।।

আপুর বিয়ের আর তিন দিন বাকি, সব কিছু এ্যারেন্জমেন্ট করতাছি। একটা বন্ধু ফোন দিলো৷ ফোন টা রিসিভ করলাম,, ফোনটা কাটতে যাবো তখনই জারা একটা পিক সামনে চলে এলো, পিকটা দেখে মনের ভেতর মোচড় দিলো, মনটা খারাপ হয়ে গেল,,, একটা ফোন দিয়ে দেখি তো বউটা কি করে,,,,

ফোনটা ওয়েটিং বলছে, যাক তাহলে এখন সে ভালোই আছে। আমাকে কষ্ট দিয়ে সে ভালো থাকে৷

পরের দিন বাসায় অনেক মেহমান এলো। সব বন্ধুরা ও চলো এসেছে,, জারা, আংকেল, আন্টি সবাই আসছে, একি ছেলেটা ও আসছে দেখছি, আমি আমার বন্ধু দের সাথে ব্যাস্ত। ওদের নিয়ে ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছি, তখন দেখি ছেলেটা আর জারা ছাদের এক পাশে দাড়িয়ে আছে,,

---- মামা ওইদিনের ছেলেটা না?( মারুফ)

----- হুম মামা।

---- এরা এখানে কী করে, মেয়েটা তো তোর বাবার বন্ধুর মেয়ে, তাহলে ছেলেটা কে?

---- জানি না মামা,, বাদ দে না মামা, তোর কাছে সিগারেট আছে।

---- হুম আছে।

---- দে তো।

---- কিন্তু তুই তো ওইসব খাওয়া ছেড়ে দিসোস।

---- আজকে কেনও জানি খুব খেতে ইচ্ছে করছে দে না মামা।

---- এই নে।

জারা কে দেখিয়ে দেখিয়ে সিগারেট খেতে লাগলাম, তখন ছাদে একটা মেয়ে আসলো, আসলে মেয়েটা আমার ফুপাতো বোন তানিয়া।,,

---- একি তুই সিগারেট খাস কেনও।

---- এমনি খাই তুমি খাবে?

---- সর শয়তান। একটু নিচে আয় তোর সাথে কথা আছে।

---- হুম চলো।

যাওয়ার সময় জারার দিকে একবার তাকিয়ে ছিলাম, দেখি সে পুরা রাগে লাল হয়ে গেছে,,, মনে একটা প্ল্যান চলে আসলো।

---- কী আপু বলো( তানিয়া আমার দুইবছর বড়, কিন্তু দেখতে মনে হয় আমার ছোট)

---- আমাকে একটা হেল্প করবি?

---- কী হেল্প বলো?

---- আসলে ভাই আমি আমার bf কে ইনভাইট করছি এখন ওকে এখানে এনে কী পরিচয় দিবো তা ভেবে পাচ্ছি না,

---- তো আমার কি করতে হবে তা বলো।

---- তুই ওকে তোর বন্ধুর পরিচয় দিবি। কেও জিজ্ঞেস করলে বলবি তোর বন্ধু।

---- ঠিক আছে কিন্তু তোমাকে ও আমার একটা হেল্প করতে হবে।

---- আমাকে আবার কী করতে হবে।

---- বিয়ের এই কয়েক দিন তোমাকে আমার gf এর অভিনয় করতে হবে।

---- সেটা আবার বলতে হয় নাকি, যে কেও আমাদের দেখলেই বুঝবে আমরা gf, bf।

---- হুম তারপরও তুমি একটু বেশি করে করবা।

---- ঠিক আছে কিন্তু কী কারনে সেটা তো বল।

---- না এখন বলবো না, সময় হলে জানতে পারবে।

---- ঠিক আছে,, বলিস।

তারপর আপু আমাকে তার বয়ফ্রেন্ডের পিক দেখালো, তাকে বাসায় আনলাম।

বিকালে সবাই ছাদে বসে আাছে, তানিয়া আপু আমার পাশে বসে আছে, জারা আমার সামনে দাড়িয়ে ফোন টিপছে, আমি তানিয়া আপুর কাধে মাথা রাখলাম,, ওমা জারার কী হলো, সে তো রাগে গোল মরিচ হয়ে গেছে।

রাতে সবাই একসাথে খেতে বসলাম, আমার একপাশে জারা, আর এক পাশে তানিয়া, তানিয়ার পাশে ওর bf আর জারার পাশে ছেলেটা,,

------- খালাম্মা তানিয়া কে বড় মাছটা দাও( কাজের বুয়া)

---- না আমি এতো বড় মাছ খেতে পারবো না।( তানিয়া)

---- কেনও?

--- আমি কাটা বাছতে জানি না।

---- দাড়াও আমি বেছে দিচ্ছি।

তানিয়া কে কাটা বেছে দিচ্ছি, জারা উঠে দাড়ালো মনে হয় রাগ করছে। করলে কার কী,,

---- একি জারা তুমি না খেয়ে উঠেলে কেনও?( আব্বু)

---- আংকেল আমার খুদা নেই মাথা টা কেমন জেনও করছে।

জারা ওর রুমে চলে গেল। ছোট আপু আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়।

আমি খাবার খেয়ে উঠলাম,, তারপর তানিয়ার bf কে বললাম,

--- ভাই আপনি কিছু মনে কইরেন না,তানিয়া আপু আমার দুবছরের বড়। তাছাড়া তাকে আমি সব সময় বড় বোন মনে করি। আজকে একজন কে রাগানোর জন্য এই অভিনয় করলাম।

---- নানা ভাই কিযে বলো কিছু মনে করিনি। তানিয়া তোমার কথা আমাকে অনেক বলছে।

---- আচ্ছা ঠিক আছে এখন ঘুমান, কালকে আবার সকালে উঠতে হবে।

---- হুম গুড নাইট।

সকালে ঘুম থেকে উঠলাম, নিচে গেলাম, দেখি জারার চোখের নিচে কালি পড়েছে মনে হয় মেয়েটা সারা রাত ঘুমায়নি,, অনেকটা রোগা রোগা মনে হচ্ছে। কালকে বিয়ে, আজকে আপুর গায়ে হলুদ। তাই কেক কিনতে যাবো,

---- তানিয়া তুমি আমার সাথে যাবে?

---- কই যাবো?

---- বাইরে কেক কিনতে।

---- হুম, আচ্ছা তাহলে একটু পরে রেডি থেকো।

সবাই বাইরে আছে, বাড়ি সাজানো দেখছে। আমি তানিয়া কে নিয়ে কেক কিনার জন্য যাব তাই বাইক বের করলাম,,,

---- তানিয়া উঠো।

( জারা আর ছেলেটা ও কই যেনো যাবে)

---- তুমি ভালে করে চালাতে পারো তো?

---- একবার উঠেই দেখো না, আর কোনও দিন নামতে মন চাইবে না। তানিয়া বাইকে উঠতে যাবে ঠিক তখনই,,,

---- বাইকের চাবিটা দিন আমরা বাইরে যাবো( জারা)

--- বাইকের চাবি দিবো মানে। আপনাদের বাইকের চাবি দিবো কেনও।

---- আমরা বাইরে যাবো তাই দিবেন।

---- গাড়িতে করে যান, আমি কাওকে চাবি দেই না।

--- --- চাবি দিবেন না মানি,,

---- আমার বাইক তাই দিবো না।

---- বাইকটা আমার বাবা কিনে দিছে ভুলো যাবেন না এটা ( অনেক জোরে বললো তাই সবাই শুনে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে)

----- তো এখন তো আমার৷

---- আপনের হলো কিভাবে কিনে তো দিছে আমার আব্বু। নিজে বাইক কিনে তারপর কোনও মেয়েকে পিছনে তুলেন, নেই তো সেই যোগ্যতা, অন্যোর দেয়া বাইক তুলতে আসছেন। দেন চাবি।

কোনও ভাষা খুঁজে পেলাম না। চাবিটা দিয়ে দিলাম, সেই সাথে আমার বুকে একটা ক্ষত হয়ে গেছে, সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আজকে বাসার সবার সামনে আমাকে অপমান করলো।

---- ধন্যবাদ জারা আপনাকে,, আসলে আমাকে আপনি জানিয়ে দিলেন আমার অবস্থান টা কই। যান আপনারা কোথায় যাবেন। আজকে সবার সামনে এভাবে অপমান টা না করলে ও পারতেন। হাজার হোক আমি আপনের,,,,,,,,,,

----- কী থামলি কেনও( তানিয়া)

---- কিছু না।

তারপর আমি সেখান থেকে চলে এলাম। বন্ধুরা আমার রুমে আছে, সেখানে গেলাম। গিয়ে স্পিকার চালু করে অনেক কান্না করলাম, জারা আজকে ও আমাকে অপমান করলো। না আজকের টা আর মেনে নেয়া যায় না। দুপুরে কিছু খেলাম না, একটু পরে আব্বু আমাকে ফোন দিয়ে বাইরে আসতে বললো,,

---- এই নে বাবা,,

---- কিসের চাবি এটা?

----- তোর জন্য আমি বাইক নিয়ে এসেছি।

--- আব্বু এসবের এখন আর আমার দরকার নেই।

---- বাবা আজকে তোকে অনেক কথা শুনতে হলো।

---- না আব্বু কই তেমন তো কোনও কথা শুনলাম না।

---- বাবা সব কিছু ভুলে যা।

----- হুম আব্বু।

জারা আমার কোনও মেয়ে বন্ধু কে পছন্দ করে না তাই ভাবছিলাম বিয়ে তে তাদের কে ইনভাইট করবো না, কিন্তু এখন তাদের সবাইকে ইনভাইট করলাম, সবাই বিকালে চলে এলো,আমি গেটের কাছে গিয়ে তাদের কে নিয়ে আমার রুমে চলে এলাম,, জারা আমার দিকে তাকিয়ে আছে,, লাভ নেই লাভ নেই তাকিয়ে, আজকে তুমি আমাকে অনেক বড় একটা কষ্ট দিছো। সন্ধা বেলা সবাই আপুকে হলুদের জন্য সাজাচ্ছে, তাই জারার সাথের ছেলেটা একা হয়ে গেছে, আমারা সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি, আর সে আবুলের মতো দাড়িয়ে আছে। থাকুক তাতে আমার কী। আপুকে সবাই হলুদ দিচ্ছে এবার আমাদের সব বন্ধু দের পালা, সবাই মিলে হলুদ দিলাম। আমি তানিয়া কে একটু দিয়ে দিলাম, তারপর সব বান্ধবী দের অদের বাসায় পৌছানোর ব্যবস্তা করলাম।

একটু পরে ছাদে চলে এলাম সবাই কারন একটু খানা পিনা হবে,, জারা ও ছাদের এক কোনে দাড়িয়ে আছে, আমরা সবাই চিলেকোঠার সামনে বসে পড়লাম তাই জারা চাইলে ও ছাদ থেকে যেতে পারবে না, ওমা সাথে ছোকরা টা ও আছে, এই শালায় কী ওর বডিগার্ড নাকি।

---- মামা প্যাক বানা,,( সাকিব)

---- আরে আমাকে পুরো বোতল দে।

আমি পুরো বোতল জারা কে দেখিয়ে দেখিয়ে খেতে লাগলাম, হাতে এখনো ব্যান্ডেজ করা, তাই তার উপর হালকা একটু ঠেলে দিলাম,

---- কি করছিস তুই জানিস না

কাটা স্থানে এ্যালকোহল দিলে কী যন্ত্রণা হয়।

---- হোক যন্ত্রণা, আমি যাই যন্ত্রণা পেতে পেতে আমি যেনও শেষ হয়ে যাই,,

জারা কে শুনিয়ে বললাম। জারা আমাদের সবার মাঝে দিয়ে চলে গেল। আর ছেলেটা দাড়িয়ে রইলো।

অনেক রাত হইছে তাই সবাই ঘুমাতে চলে এলাম। সকালে তাড়াতাড়ি করে উঠলাম, উঠে সবার সাথে কাজে হাত দিলাম,, আমাদের বাড়ি টা অনেক বড় তাই বাসায় সব কিছুর আয়োজন করেছে। সকল মেহমান আসলো, আপুর বিয়ের সকল কাজ সম্পন্ন হলো। আপুকে নিয়ে চলে গেল। আসতে আসতে সব মেহমান চলে গেল। সন্ধায় পুরো বাসা ফাকা হয়ে গেল, জারা ও চলে গেল। আমি অনেক ক্লান্ত তাই বিছানায় শুতে গেলাম, দেখলাম আমার টেবিলে একটা চিঠি আছে,,

মনে হয় আমার জন্য,, খুললাম চিঠিটা ,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,

1
$ 0.00
Avatar for kamal16
3 years ago

Comments

অনেক সুন্দর হয়েছে গল্পটা,হুম পরের পর্বের জন্যে অপেক্ষায় রইলাম,আশা করি খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবো,ধন্যবাদ

$ 0.00
3 years ago

ager porbo gula pai nai kintu samne aro valo kichu pabo asha korchi...dhonnobad lekhok vai

$ 0.00
3 years ago

বাবার বন্ধুর মেয়ে বউ এটা খুবই মজার বিষয়। গল্পটি পড়ে আবার অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ লেখককে আশা করি পরের পর্ব খুব শীঘ্রই পেয়ে যাব।

$ 0.00
3 years ago

গল্পটার হেডলাইন টা একটু অন্যরকম ছিল। হেডলাইন পড়ার পর গল্পটা সম্পর্কে অনেক কৌতুহল জাগলো নিজের ভিতর। গল্পটা সত্যিই অনেক মজাদার ছিল। এরকম গল্প আরো লিখবেন এই আশাই করি।

$ 0.00
3 years ago

এইটা সাধারণত অনেক সময় অনেক জায়গায় হয়ে থাকে। বাবার বন্ধু এর মেয়ের এর সাথে বিয়ে বা অন্য কিছু। আপ্নি যা লিখছেন তা সত্যি। ধন্যবাদ এইরকম কিছু লিখার জন্য।

$ 0.00
3 years ago

your articles is soo very much. it's really amazing.

$ 0.00
3 years ago