Ex গার্লফ্রেন্ড যখন অফিসের বস

0 38
Avatar for kamal16
3 years ago

গল্পঃ Ex গার্লফ্রেন্ড যখন অফিসের বস

পর্বঃ ১৩

আজ শুক্রবার। সকালবেলা আরাম করে ঘুমাচ্ছিলাম। কিন্তু জান্নাত এসে

জান্নাত- ভাইয়া উঠ??

আমি........

জান্নাত- ভাইয়া তুই উঠবি না আমি পানি দিব??

আমি- হুমমমমম(ঘুম চোখে)

জান্নাত- কিছু না বলে আমার জামা ধরে টান দেওয়া শুরু করল।

আমি- ধুর কোন রাস্তা না পেয়ে উঠতেই হল।( রাক্ষসী মনে মনে)

জান্নাত- নে এইবার ফ্রেশ হয়ে আয়। আমি খাবার নিয়ে বসে আছি।

আমি- কেন??? আজ কে কি??

জান্নাত- কিহ???? তুই জানিস না আজকে কি???(রেগে)

আমি- ওহ মনে পরছে আজ তো শুক্রবার।

জান্নাত- হুম। আমার লক্ষি ভাইয়া।

আমি- হুহ।।।।

জান্নাত এর নতুন নিয়ম। নতুন না, অনেক আগেই তৈরি হয়েছে। প্রতি শুক্রবার তাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে।

আমি কি আর তার উপরে কিছু বলতে পারি বলেন। যে গুন্ডি মেয়ে।

এইসব ভাবতে ভাবতে ফ্রেশ হয়ে খেতে

গেলাম। খাবার সময় তেমন কোন কথা হয় নি। তাই আর লিখলাম না।

আমি আর জান্নাত একটা রিক্সা নিয়ে পুরো শহর ঘুরলাম। জান্নাতকে নিয়ে বের হলে সহজে বাসায় আসতে চায় না। কারন সপ্তাহে একদিন ঘুরতে বের হয়তো তাই।

রাতে বাসায় এসে জান্নাত বই পরতে বসল।

আর আমি আমার রুমে বসে ফোন চালাচ্ছিলাম। তখন রাত প্রায় ১২ টা বেজে ৩ মিনিট।

এমন সময় আমার মোবাইলে একটা

মেইল এল।

আমি ভাবলাম কোন ফ্রেন্ড হয়ত

মেইল করেছে।

তাই কিছু না ভেবে মেইলটা চেক করলাম।

আমি মেইলটা দেখে অবাক।

আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিল না।

হুম এটা আমার চাকরির মেইল।

আমার চাকরি টা কনফার্ম হয়েছে।

এতে তো আমার খুশী হবার কথা,, কিন্তু

আমার মনের মাঝে ছোট একটা রাগ/ভয় কাজ করছে।

প্রথম কারন- যে আমায় বিশ্বাস করে নাই। আমি এখন তার অফিসেই চাকরি করব।

দ্বিতীয় কারণ- শিমলা মনে হয় প্রতিশোধ নেবার জন্য আমায় চাকরি দিছে।

এইসব আর কিছু না ভেবে জান্নাত এর রুমে গেলাম।

গিয়ে দেখি আপু বই পড়ে।

আমি- আপু একটা দুঃখের খবর ছিল।

জান্নাত- হুম বল

আমি- আপু আমার চাকরিটা হয়ে গেছে?

জান্নাত- তুই কি সিরিয়াস???

আমি- মোবাইলটা এগিয়ে দিলাম..

জান্নাত কিছু না বলে গলা জরিয়ে ধরে বলে

জান্নাত- কংগ্রেস ভাইয়া

আমি- ধুর

জান্নাত- ভাইয়া তুই খুশী না??

আমি- না

জান্নাত- কেন??

আমি- সারাদিন বাইরে থাকতে হবে??তোকে দেখতে পারব না..

জান্নাত- ভাইয়া তুই এখনো আমায় নিয়ে ভাবছিস???

আমি- তো কার জন্য ভাববো?? তুই হলি

আমার কিউট আপু।

জান্নাত- হয়েছে। আর শোন? আমি অত কিছু শুনতে চাই না? তুই কাল থেকে অফিসে যাচ্ছিস এটা ফাইনাল।

আমি- তোর সাথে কি আর আমি পারব??

জান্নাত- হুহ (ভাব নিয়ে)

আমি- আপু তুই এখন ঘুমা।

জান্নাত- হুম। তুইও

এরপর জান্নাত এর রুমে থেকে বের হয়ে,

আমার রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম।

শুয়ে পরে ভাবতে লাগলাম--

শিমলা আমায় চাকরি দিলো।

তাও আবার ৬ বছর পরে দেখা।

আমার মনে হয় ওর বেবি ও হয়ে গেছে।

যেহেতু অনেক আগে বাপ্পি বলছিলো ওর বিয়ের কথা।

এরপর আমি সকল ফ্রেন্ডদের আমার চাকরির খবির জানিয়ে দিলাম।

হারামি গুলো সকলে শুধু ট্রিট চায়।

আমি কি আর পারি ওদের সাথে। তাই আমি ঠিক করলাম কিছুদিন পরে ট্রিট দিবো।

এরপর কাল সকালে কি পরে অফিসে যাব,?? সেটা আলাদা গুছিয়ে রাখলাম।

এরপর সেই পূরনো কিছু কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে জান্নাত এর ডাকে ঘুম ভেঙে গেল।

আপু রান্না করে রাখছে। তাই ফ্রেশ হয়ে

৯ টার দিকে আমি আর জান্নাত বের হলাম আমার অফিস + আপুর স্কুল এর উদ্দেশ্যে।

রাস্তায়----

আমি- আপু স্কুলে গিয়ে ভালোভাবে চলবি??

জান্নাত- হুহ। আর আমার ভাইকে আজ তো পুরা হিরোর মতো লাগছে। দেখিস কারো নজর যেন না পরে। (আমার মাথা নিচু করে, কি সব ফু দিলো)

আমি- হাহাহাহা

জান্নাত- হিহিহি।

এরপর জান্নাতকে ওর স্কুলে রেখে আমি আবার রওনা দিলাম। আসলে আমার বাসা থেকে অফিস অনেক দূরে।

তাই একটু তারাতাড়ি বের হলাম।

কিছুক্ষণ পরে পৌছে গেলাম অফিসে।

অনেক বড় অফিস। আমি অফিসের সামনে এসে দেখি কালকের ছোট ভাই

রহিম।

রহিম- কি ভাই চাকরিটা হয়ে গেল??

আমি- হুম ভাই। তোমারো??

রহিম- হুম ভাই। ভিতরে চলেন...

আমি- হুম চলো....

আমরা ভিতরে গেলাম। গিয়ে অফিসটা ঘুরে দেখতেছিলাম।

তখন পিয়ন চাচা এসে বলল

পিয়ন চাচা- স্যার আপনাদের ম্যাডাম ওই রুমে যেতে বলছে...

আমি- চাচা আপনি আমার বাবার মতো। আপনি আমায় স্যার না ডাকলে খুশী হব।

রহিম- হ্যা চাচা। ভাই একদম ঠিক বলছে।

পিয়ন চাচা- ঠিক আছে বাবা। তোমাদের মতো যদি সবাই হতো।(চোখে জল নিয়ে)

আমরা একটা হাসি দিয়ে চলে এলাম। যে রুমে আমাদের যেতে বলা হয়েছে।

ভিতরে ঢুকে দেখি ---

দুইজন মেয়ে আর একজন ছেলে বসে আছে।

মেয়ে দুইজন আমার থেকে ছোট হবে। আর ছেলেটা বোধহয় আমার বয়সী।

আমি- হাই এভরিওয়ান...

সবাই- হায়।

এরপির আমরা পরিচয় পর্বটা সেরে ফেললাম।

(মেয়ে দুটির নাম- রুহি আর সিথি। ছেলেটির নাম রুবেল)

এরপর আমরা কিছু কথা বলতেছিলাম।

তখন রুমে সেই চিরচেনা মেয়েটি প্রবেশ করল।

আমরা সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম।

সকলকে বসতে বলা হল।

আমিও বসে গেলাম।

এরপর ম্যাডাম (শিমলা) বলল---

ম্যাডাম - আপনাদের পাচ জনকে আমি সিলেক্ট করেছি।

সবাই- ধন্যবাদ ম্যাম।

ম্যাডাম- আপনারা সকলে মন দিয়ে কাজ করবেন। আর আমি কিন্তু কাজে ফাকি একদমই পিছন্দ করি না।

সবাই- জ্বী ম্যাডাম।

ম্যাডাম- আর আমার একজন পিয়ে লাগবে। তো কে হতে চান??

সবাই- আমার কথা বলল।(সকলের ভিতরে বড় তো তাই বোধহয়)

আমি- না। রুবেল ভাই ভালো আমার চেয়ে??

ম্যাডাম- আপনার যদি কোন প্রবলেম থাকে তো আপনি বলতে পারেন??আর দরকার হলে চাকরি ছেরে দিন।

আমি- না না ম্যাম। আমার কোন প্রব্লেম নাই।

ম্যাডাম- ওকে তাহকে ওই কথাই রইল।

সবাই- হুম ম্যাডাম

ম্যাডাম - আমি পিয়ন চাচাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তিনি আপনাদের ডেস্ক দেখিয়ে দিবে??

সবাই- ওকে ম্যাডাম।

এই বলে ম্যাডাম চলে গেল। আমরা সবাই হাপ ছেরে বাচলাম

রহিম- ম্যাডাম কি রাগি??

রুবেল- হুম ভাই

আমি- ভাই তোমরা আমায় দেখিয়ে দিলে কেন??

রুবেল- ভাই এই বাঘিনীর সামনে কে যাবে??

সবাই- হাহাহাহা

আমি- চুপ চুপ। আস্তে

এরপর আরো কিছু সময় হাসাহাসি করে আমরা পিয়ন চাচার সাথে নিজেদের ডেস্কে চলে গেলাম।

সবার ডেস্ক এক জায়গায়। কিন্তু আমরটা আলাদা। কিছুটা দূরে। ম্যাডামের রুমের পাশে। কারন আই তার পিয়ে লাগি। (নোয়াখালী 😉)

আমি গিয়ে আমার ডেস্কে বসে পরলাম।

প্রথম দিন তেমন কোন কাজ নেই। তাই একটু পরিচয় হয়ে নিলাম সকলের সাথে।

অফিস থেকে বিকাল ৪ টার সময় আমরা সকলে বের হয়ে গেলাম।

প্রথম দিন ভালোই কাটল।

আমি ভাবলাম শিমলা মনে হয় আমাকে

দয়া করে চাকরি দিছে। আমার জন্য ভালোই হলো।

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দিলাম।

রাতে জান্নাত এর ডাকে ঘুম ভাংল।

আমরা দুইজনে রাতে ডিনার করে নিলাম।

জান্নাত- ভাইয়া প্রথম দিন কেমন কাটল??

আমি- খুব ভালো

জান্নাত- আর ভাইয়া কি পোস্টে তুই চাকরি করবি??

আমি- ম্যাডামের পিয়ে।(এই সম্পর্কে ধারনা নেই৷ তাই বেশি লিখলাম না)

জান্নাত- ভাইয়া দেখিস ম্যাডাম আবার তোর উপরে ক্রাশ না খায়

আমি- জান্নাত তুই কিন্তু বেশি পাকনামি করছিস??

জান্নাত- বুঝি বুঝি সব বুঝি।

আমি- দিলাম দৌরানি। কিন্তু ওকে আর কে পায়।

আমি এসে রুমে শুয়ে পরলাম।

আর কিছু সময় ফেসবুকিং করলাম।

আরে আপনাদের তো বলাই হল না। আমার বেতন ৩৬ হাজার টাকা করে।

বেশ খুশী কিন্তু আমি। আর শিমলার উপরে আমার রাগ নেই। আছে অভিমান। কারন যেখানে আমার পরিবারই বিশ্বাস করে নি। সেখানে আর শিমলার তো কোন প্রশ্নই আসে না। এরপর ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে যথা নিয়মে চলে গেলাম অফিসে।

কিন্তু অফিসে গিয়ে শিমলা আমার সব ধারণা পাল্টে দিলো.....

চলবে...???

1
$ 0.00
Avatar for kamal16
3 years ago

Comments