দুই বধু এক স্বামী৫

0 9
Avatar for kamal16
3 years ago

দুই বধু এক স্বামী

.

৫ম পর্ব

.

- আমি না হয় তখন একটা ভুল করে ফেলেছি, তাই বলে আপনি আমার সাথে এই রকম করলেন।(কাঁদতে কাঁদতে বলল)

.

-দেখ নীলা এখন আমায় ছাড়, এখন কেঁদে কোন লাভ নাই,এটা তোমার আগেই বুঝার দরকার ছিল(আমি)

.

নীলা কিছু না বলে এখনো আমায় জড়িয়ে ধরে কাঁদছে, আমার শার্টের বুকের পাশটা প্রায় ওর চোখের লোনা জলে ভিজে গেছে।

.

-আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচবনা,আমার সাথে এমনটা করবেন না, আমি যদি আপনাকে না পাই, সত্যি আমি মরে যাব।(ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলল)

.

-ছাড়োতো নীলা তোমার এই নেকামি গুলো আমার আর ভালো লাগেনা, তখনতো বুঝলেনা এখন কি জন্য বুঝতে আসছো।

বিয়ের তিনমাস পর্যন্ততো তুমার মনে ছিলনা আমার জন্য একটুও জায়গায় তবে এখন কেন। তুমার এই নেকামি গুলো বন্ধ কর, আমার অসহ্য লাগছে। ভাবছিলাম বাসায় আরো একদিন থাকব,কিন্তু আর থাকা হলো না বিকেলের দিকে রওনা দিব।(কথাটা একটু জোরে বলে, নীলাকে আমার বুক থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম, ধাক্কা সামলাতে না পেরে খাটের উপর গিয়ে পরল।)

.

-সত্যি বলছি আপনি যদি না থাকেন আমার জীবনে, তাহলে আমিও আর আমার জীবন রাখবনা। খুব ভালোবেসে ফেলেছি আপনাকে,নিজের জীবনের চাইতে ও বেশী। (কান্না আরও বাড়িয়ে দিল)

.

-রাখ তুমার নেকামি(ধমক দিয়ে রুম থেকে চলে আসলাম)

.

বাহিরে আসতেই মা বলল-

-কিরে এতো চেঁচামেচি করতেছস কেন?কিছু হইছে নাকি?

.

-কই নাতো কিছু হয়নাই,মা একটু বাহিরে যাচ্ছি(কথাটা বলে ঘর থেকে বের হয়ে আসলাম)

.

নদীর পাড়ে বসে আছি। নিজের থেকে খুব বেশী কান্না আসছে,নীলার সাথে বেশী বাজে

রিয়েক্ট করে ফেলছি। কি করব এখন আর কিছু করার নাই আমার, আমিও নীলাকে ভালোবাসি। কিন্তু মিমিকে এর থেকেও বেশী, মিমি আর বড় জোর পাঁচ মাস এই পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে, নিজের হাতের ঘরে উঠা সংসার রয়েছে আর মাত্র পাঁচ মাস। নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের করে পাবে আর মাত্র পাঁচ মাস, তারপর আমাকে ছেড়ে চলে যাবে অন্ধকার জীবনে।

.

যখন নীলার সাথে রাগ করে চলে আসব ঢাকায়, তখন যেই অফিসে জয়েন করব সেই অফিসের মালিক হলো মিমির বাবা অর্থাৎ আংকেল। চাকরি বদলি করার সময় ওনার সাথে কথা হলো,অনেকদিন পর দেখলাম তাকে,আংকেল আমার আর মিমির সম্পর্কটা জানতেন যে আমরা কলেজ লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড। যখন আমি চলে যাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আর মিমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমাদের মাঝে দূরুত্ব বাড়তে থাকে। আমি চলে আসার পর মিমি কখনো নিজের থেকে বেশী ফোন দিতনা, তাই রাগ করে আমি সিমটা বদলিয়ে ফেলি। মিমি আমাকে বেস্ট ফেন্ড থেকে বেশী কিছু মনে হয় ভাবতনা, কিন্তু আমি ওকে বেস্ট ফ্রেন্ড থেকে বেশী কিছু ভাবতাম,মানে মিমিকে আমি ভালোবাসতাম।

.

কখনো বলতে পারতামনা যে আমি তোকে খুব ভালোবাসি, ভয় হতো যদি মিমি রাজি না হয় তাহলে আমাদের এতদিনের বন্দুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। যাইহোক,,,,,,,,,,

.

আংকেলকে মিমির কথা জিজ্ঞাসা করতেই,আংকেল কান্না শুরু করে দেয়। কান্নার কারন জিজ্ঞাসা করলে আংকেল বলে--

.

-বাবা আমার মেয়েটা এই পৃথিবীতে আর অল্পদিনের জন্য রয়েছে, বড়জোর সাতমাস।

.

কথাটা শুনে কেমন জানি বুকের বাম পাশটা চিন চিন করে ব্যাথায় অনুভব করলাম।

.

-আংকেল কি হয়েছে মিমির ।(উত্তরের আসায় আংকেলের মুখের পানে তাকিয়ে আছি)

.

-মিমির ব্রেইন-টিওমার (কথাটা বলে আরও জোরে কান্না করতে লাগল)

.

ওনাকে কি সান্তনা দেব, আমি নিজেকেই কনট্রোল করতে পারছি না, আমার পায়ের তলা থেকে কে যেন মাটি নিয়ে যাচ্ছে।

.

-আংকেল মিমি জানে এইসব।

.

-না ও জানেনা।বাবা তুমি গেলে ওকে একটু সময় দিও, মেয়েটা যাতে না বুঝতে পারে এই সব।

.

-আচ্ছা ঠিক আছে।

তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে নীলা যেহেতু আমাকে মেনে নিতে পারেনি, তাহলে আমি মিমিকে বিয়ে করব। মিমি এখনো বিয়ে করেনাই, ওর বাবা ওকে যখন বিয়ের কথা বলত তখন উত্তরে সে বলত বাবা এখনো একজনের অপেক্ষায় আছি। আমি জানতাম কার অপেক্ষায় আছে মিমি । সেটা হলাম আমি, কারন আমাকে ছাড়া মিমি আর কোন ছেলের সাথেই কথা বলতনা।

.

তাই আমি আমার প্লান মতো ওকে বিয়ে করি দুরে থেকে বেশী সুখি রাখতে পারবনা, তাই নিজের চোখের সামনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওকে বিয়ে করেছি। ওর অনিশ্চিত জীবনটাকে একটু সুখ দেওয়ার জন্য হলে ও ওর পাশে থাকার দরকার আমার। আপনাদের এত কিছু বলতে বলতে কখন যে বিকেল ঘনিয়ে আসল তা খেয়াল করিনি। আমি মিমিকে এতো বেশী ভালোবেসে ফেলেছি যে নীলাকে ভালোবাসার জায়গাটা দিতে পারবনা ইচ্ছা থাকলেও। তাই নীলাকে আজকে এতো কথা শুনাইছি যে, সে যাতে নিজের থেকে আমাকে ডিবোর্স দিয়ে দেয়। মিমি চলে যাওয়ার পর ওর ভালোবাসার স্মৃতি টুকু নিয়ে বেছে থাকতে চাই।

.

পকেটের ভিতর মোবাইল কাপাকাপি শুরু করল। কেউ মনে হয় ফোন দিছে তাই কাপাকাপি শুরু হয়ে ছিল।ফোনটা বের করে দেখি মা ফোন করছে....

.

-হ্যালো মা বলো।

.

ফোনের ঐ পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে।

.

-মা কোন কিছু হইছে, কান্না করতেছ কেনো?

.

-বাবা তুই তারাতারি হাসপাতালে চলে আয়(মা)

.

-কেনো মা,বাবার কিছু হয়নিতো (আমি)

.

-না....

.

এর পর মা যা বলল তা শুনার জন্য প্রস্তুত ছিলামনা, নীলা এমনটা কেন করলো??

............

1
$ 0.00
Avatar for kamal16
3 years ago

Comments

দুই বধু এক স্বামী বর্তমান সমাজে এটি অহরহ। কেউবা একটি ছেড়ে একটি আবার কেউবা একসাথে দুইটি। তবে গল্পটি খুব সুন্দর হয়েছে।

$ 0.00
3 years ago

আর্টিকেলটা খুবই সুন্দর ছিল। আগুন গল্প পড়তে কার না ভালো লাগে। এরকম গল্প আরো পড়তে চাই। এরকম গল্প লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

$ 0.00
3 years ago

Your story are good. Write more and enjoy. Write more articles get more points. Thank you.

$ 0.00
3 years ago

This article is very good and pleasant. It is the mind blowing story. Thank you for your writing. I think that your creativity come again.

$ 0.00
3 years ago

This airtucle is realy good. This article means our daily life story.Thank you so much to writing a beautiful story..I think that you creativity come again.

$ 0.00
3 years ago

গল্পটি খুবই সুন্দর ছিল। দুই বধু এক স্বামী বর্তমান সমাজে এটি অহরহ। তবে গল্পটি খুব সুন্দর হয়েছে। এরকম গল্প লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

$ 0.00
3 years ago

story ta valo holeo ager porbo gula miss korlam...ami notun tai...thanks writter k amon story likhar jonno & vobisshoteo asa kori likhe jaben...

$ 0.00
3 years ago