ছোট্ট বেলার বউ
4th part..
এমন সময় কল কল কেটে গেল। ব্যালেন্স শেষ। শালার ব্যালেন্স শেষ হওয়ার আর সময় পায়নি।
তসিবা তসিবার কি হলো? মন টা কেমন যেন করতে লাগল। খারাপ কিছু হয়নি তো। না আমার এখনি যাওয়া উচিত।
দৌড় দিলাম। ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাসে যেতেই আমি অভাক হয়ে গেলাম।
সবাই একসাথে বলে উঠল। Happy birthday to you happy birthday to you dear shohrab..happy birthday to you..
আমি অভাক হয়ে গেলাম। আজকে আমার জন্মদিন নিজেরও মনে ছিল না।
শাওন এগিয়ে আসল,
শাওনঃ কিরে কেমন লাগল সারপ্রাইজ?
আমিঃ তোরাও পারিস বটে। thank you রে thank you so much.
শাওনঃ শালা আমরা কিছুই করিনাই। সব তসিবা করেছে।
আমিঃ কিহ তসিবা?
শাওনঃ হুম।
আমি তসিবার কাছে গেলাম। আজ তসিবা শাড়ি পড়েছে। লাল শাড়ি। অস্থির লাগছিল তসিবা কে।
আমিঃ এসবের কি দরকার ছিল?
তসিবাঃ এমনিই করেছি। আচ্ছা চলুন কেক কাটবেন
আমিঃ হুম।
তারপর কেক কাটলাম। সবাই অনেক আনন্দ করল।
তসিবাঃ ট্রিট দিবেন না?
আমিঃ ও হ্যা। চলো আমার সাথে।
তসিবাকে নিয়ে রেষ্টুরেন্ট গেলাম। দুপুরের লাঞ্চ করলাম।
লাঞ্চ শেষে।
তসিবাঃ তাহলে আজ আমি চলি?
আমিঃ আমি দিয়ে আসব।
তসিবাঃ তার প্রয়োজন হবেনা আমি একাই যেতে পারব।
আমিঃ না আজ আমি তোমাকে দিয়ে আসব এটাই আমার শেষ কথা।
তসিবাঃকিন্তু
আমিঃ কোনো কিন্তু নয়
তারপর তসিবা কে বাসার দিকে রওনা হলাম।
তসিবার বাসার সামনে আসতেই।
তসিবাঃ বাইক থামান। এটাই আমার বাসা
আমি বাইক থামালাম। তসিবা নেমে গেল
আমিঃ তাহলে আমি চলি
তসিবাঃ সে কি বাসায় আসবেন না?
আমিঃ আজ নয় অন্যদিন।
তসিবাঃনা না তা হবেনা। বাসায় আসতেই হবে আপনার।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে চলো।
তসিবা একটা হাসি দিল।
আমি বাইক সাইট করে তসিবার বাসায় গেলাম।
কলিং চাপতেই তসিবার আম্মু দরজা খুলে দিল,,
আমিঃ আসসালামু আলাইকুম আন্টি?
তসিবার আম্মুঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। আসো ভিতরে আসো।
ড্রয়িং রুমে বসলাম। তসিবা আন্টির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। তারপর ভিতরে গেল ফ্রেশ হতে।
আমি আর আন্টি কথা বলতে লাগলাম।
এক পর্যায়ে আমার নজর পড়ল দেয়ালে। সেখানে একটা ছবি টাঙানো। বুঝাই যাচ্ছে ফ্যামিলি ফটো। একটা মুখে আমার চোখ আটকে গেল।
আমি উঠে ছবিটার কাছে গেলাম। এ ছবিটা এখানে কি করে?
আন্টিঃ কি দেখছ?
আমিঃ আন্টি এরা কারা?
আন্টিঃ ওখানে আমি তসিবার আব্বু আর তসিবা তসিবার ভাই। আমাদের ফ্যামিলি ফটো। তসিবার ছোট বেলার।
আমিঃ ওহ খুব সুন্দর।
আমার মাথায় ডুকছেনা। আমার সাথে কি হচ্ছিল এতদিন।
আমি; আচ্ছা আন্টি আমি আজ আসি
আন্টিঃ সে কি কিছুই খাওনি এখনও
আমিঃ পরে আরেকদিন খাব
আর কিছু বলতে না দিয়ে সোজা আমি বাসা থেকে চলে আসলাম।
বাসার উদ্দেশ্যে চললাম। বাসায় চলে আসলাম।
রুমে শুয়ে শুয়ে ভাবছি। এটা কি করে সম্ভব। জারার ছোট বেলার ছবি তসিবার বাসায় কি করে? তারমানে তসিবাই জারা। কিন্তু আমার ফ্যামিলি যে জারার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল সে কে ছিল? সে যেহোক তসিবাই যে আমার জারা তার কোনো সন্ধেহ নেই।
হঠাৎ সবাই আমার রুমে প্রবেশ করল।
একসাথে সবাই জন্মদিনের উইশ করতে লাগল।
কাউকে কিছু বললাম এ বিষয়ে। সবার সাথে আনন্দ করলাম।
সবাই চলে যাওয়ার পর জারা শুধু জারা থাকল।
জারাঃ সোহরাব আই লাভ ইউ
বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরল।
আমি ছাড়িয়ে নিলাম।
আমিঃ ভালো লাগছেনা প্লিজ। এখন আসো আমি বিশ্রাম নিব।।
জারাঃ আচ্ছা ঠিক আছে ( মন খারাপ করে)
ও চলে গেল।।
সিদ্ধান্ত নিলাম যদি তসিবাই জারা হয় তাহলে কালকে সবাইকে সারপ্রাইজ করে দিব।
তসিবাকে কল দিলাম।। তসিবা রিসিভ করল।
আমিঃ তসিবা
তসিবাঃ হ্যা
আমিঃ কাল ঠিক ৯ টার সময় ভার্সিটির পুকুর পাড়ে আমার জন্য অপেক্ষা করবা।।
তসিবাঃ কেন? এমনিতেই তো লাইব্রেরি তে আপনি আমাকে পড়ান।
আমিঃ এত কথা বলিও না। যা বলেছি করবা।।
ফোন রেখে দিলাম।
এখন শুধু কাল হবার পালা।
তারপরদিন,,,
সময়মত আমি চলে গেলাম। গিয়ে দেখলাম আমার আগেই তসিবা ওখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমি কাছে গেলাম।
তসিবাঃ এখানে কেন ডেকেছেন?
আমিঃ আমি কিছু প্রশ্ন করব সুন্দর করে উত্তর দিবা
তসিবাঃ ব্যাপার কি। আপনাকে এত সিরিয়াস দেখা যাচ্ছে কেন?
আমিঃ সে আছি। এখন বলো তোমার পুরো নাম কি?
তসিবাঃ কেন
আমিঃ কোনো প্রশ্ন নয়। যা জিগাসা করেছি বলো
তসিবাঃ জারা আহমেদ তসিবা
আমিঃ তোমার বাবার নাম এমদাদুল হক?
তসিবাঃ হুম।
আমিঃ নাটক খুব ভালো পারো তাই না। আমাকে এতদিন কেন বলো নি তুমিই আমার আসল জারা?।
ও আমার দিকে তাকালো। জিগাসু দৃষ্টিতে তাকালো।
আমিঃ যদি কাল তোমার বাসায় না যেতাম আর ওই দেয়ালের ছবিটা না দেখতাম। তাহলে তো কখনও জানতেই পারতাম না তুমিই আমার আসল জারা। না জেনে হয়ত ঐ নকল জারা কে বিয়ে করে ফেলতাম। তুমি আমার সাথে এমন করতে পারলে?
তসিবা চুপ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।।
আমিঃচুপ করে দাড়িয়েই থাকবা নাকি কিছু বলবা?
তসিবা এক ঝাটকায় আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমিও জড়িয়ে ধরলাম।।
তসিবাঃ এত সহজে আপনাকে পেয়ে যাব কল্পনাতেও আসেনি।
আমিঃ মানে
তসিবাঃ ছোট বেলায় তো আমাদের বিয়ে হয়েছিল। সেই থেকেই মা আমাকে শিখিয়েছে আপনিই আমার স্বামী। আমিও তাই মেনেছি। আস্তে আস্তে বড় হয়েছি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আপনি আমার খোজ না নিলেও আমি নিতাম। প্রায়ই আপনাকে দেখতে যেতাম। যখন জানতে পারলাম আপনাকে আপনার ফ্যামিলি মিথ্যা বলে জারা নামে আরেকটা মেয়ের সাথে বিয়ে দিচ্ছে। তখনি আমি সিদ্ধান্ত নেই আপনাকে বুঝাব। কিন্তু হঠাৎ বললে আপনি কিভাবে নিবেন। সেই চিন্তা করে ভার্সিটি তে ভর্তি হলাম। আপনার কাছাকাছি যাওয়ার জন্য আপনার কাছে পড়তে শুরু করলাম।ইমপ্রেস করতে চেষ্টা করলাম।
আমিঃ থাক আর বলতে হবেনা। আমার ছোট্ট কালের বিয়ে করা বউটা আমাকে এত ভালোবাসে তা জেনেই আমি মহাখুশি।
তসিবাঃ আপনি তো আমাকে ভালোবাসেন না।
আমিঃকে বলেছে?
তসিবাঃ ভালোবাসলে ওই বাজে মেয়েটাকে বিয়ে করতে রাজি হতেন না
আমিঃ ওরে আমার অভিমানি বউটা রে।
বলেই আমি জড়িয়ে ধরলাম।
To be continue
0
42
আলোচ্য গল্পটি পড়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম। গল্পটি খুবই সুন্দর। গল্পটা লেখার জন্য লেখককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আরো গল্প পাবো আলোচ্য গল্পের মত।