চাহিদা

0 9
Avatar for kamal16
4 years ago

গল্প :- চাহিদা

পর্ব :- ০৩

.

--কিহ্ অবাক হচ্চো?

অবাক হবার কিছু নাই কারণ সিমা আমার কথামত এসব করেছে।

এই সবকিছু আমার ই প্লান আমার।(লিজা)

হঠাৎ লিজার এমন কথা শুনে সাদিক পুরা থ হয়ে গেলো কি বলছে এসব লিজা?

আর লিজার কথাতেই এসব করছে সিমা?

নিশ্চুপ হয়ে বিছানায় বসে পরে সাদিক।

বসে বসে ভাবছে আমি জানতাম একজন স্ত্রী তার সব কিছু ভাগ অন্য কাউকে দিতে পারে।

কিন্তু তার স্বামীর ভাগ সে কখনো কাউকে দিতে চায় না। এমনকি দেয়ও না।

কিন্তু লিজা নিজে থেকে সিমাকে আমার কাছে পাঠিয়েছে?

সাদিক কিছুতেই যেন ভুঝতে পারছে না লিজা এসব করলো কেন? ।

তারপর কিছুক্ষনের জন্য সাদিক ভুলেই গেছে যে একটু আগে সে তার বউ লিজার পরোকিয়া সম্পর্কে জানতে পারলো। কারণ সাদিকের মাথায় শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরছে লিজা আসলে কেন সিমাকে আমার কাছে পাঠালো।

তারপর সাদিকের মনে পড়তে থাকে সিমার সাথে কাটানো প্রথম সেই দিনের কথা।

যেদিন সিমা নিজেই এসেছিলো সাদিকের কাছে।

আজ সাদিক কিছুটা বুঝতে পারছে সিমা কেন সেদিন নিজে থেকে সাদিকের সাথে ওসব করতে চায়। ।

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা চলুন সর্ট কার্ট সে ঘটনা যেনে নেয়া যাক)

-সেদিন।

যখন সাদিক আর লিজার বিয়ের ৩ বছর চলছিলো। তখনো সামিরার জন্ম হয়নি। লিজা একটু কাজের জন্য বাইরে যায়। বাসায় শুধু সাদিক আর সিমা ছিলো।

সাদিক রুমে বসে কাজ করছিলো আর সিমা বার বার রুমে আসা যাওয়া করছিলো।

কিন্তু সাদিকের সে দিকে কোন মনোযোগ ছিলো না।

সে তার মতো কাজ করছিলো।

তার কিছুক্ষন পর সিমা সাদিকের সামনে এসে বসে এমনি এমনি কিছু প্রশ্ন করতে লাগলো এই যেমন।

--কি করছেন,, কেন করছেন,, এখন আপনার মুড কেমন,,এইসব। (সিমা)

আর সাদিকের দিকে তাকিয়ে মিটমিটিয়ে হাসছিলো। ওর হাসির মধ্যে একটা চাহনি ছিলো যেটা সাদিক কেন যে কোন পুরুষ ই বুঝতে পারতো।

সাদিকও বুঝতে পারে। কিন্তু সে কোন রিয়েক্ট করে নাই। কারণ ওর এসবের মধ্যে কোন ইন্টেরেস্ট ছিলো না। এভাবে অনেক্ষন চলতে থাকে কিন্তু সিমা এমন কিছু কাজ করছিলো যা হতে দেখে কোন পুরুষ আর ঠিক থাকতে পারতো না। সাদিক তাহলে কিভাবে পারবে?

সেও পারলো না। সারা দিলো সিমার ইশারায়।

তবে এক শর্তে। ও যেন কাউকে কিছু না বলে।

সেই থেকে প্রায়ই তারা লিজাকে লুকিয়ে দেখা করতো।কিন্তু ওসব যে লিজার প্লান ছিলো ভুলেও সাদিক বুঝতে পারে নি।

--কি হলো সাদিক বসে আছো কেনো?(লিজা)

(লিজার কথায় বাস্তবে ফিরলো সাদিক)

--হুমম হা বলো। (সাদিক)

--আমি বলবো নাকি তুমি বলবে?(লিজা)

--আমি আর কি বলবো? তুমিতো সব ই জানো।

আর আমি তো এই গল্পের মাস্টার মাইন্ড না, আমিও তোমার হাতের পুতুল এই গল্পে। তাই তুমিই বলো।(সাদিক)

--হুমম কিন্তু এটা কেন করেছি সেটা জানো?(লিজা)

--নাহ.!

সেটাই জানতে চাচ্ছি। সাথে তুমি শাওন,শিপন এদের সাথে সম্পর্ক রাখছো কেন সেটাও?(সাদিক)

--সাদিক তোমার দুইটা প্রশ্নের উত্তর একটাই আমার কাছে।

আমি এগুলো করেছি তার কারণ অনেকটা তুমিই।

হ্যাঁ অনেক টা তুমি। আর কিছুটা আমার ভাগ্য

আর সবচেয়ে বড় করণ টা হলো একটা মেয়ের চাহিদা,, আকাংক্ষা,, ইচ্ছা,, সখ,, স্বপ্ন,, সাধনা, এসব কিছু পূরনের জন্য।

আর একটা কথা কি জানো?

আমি আসলে এসব করতে চাই নি। কিন্তু করতে বাধ্য হয়েছি। অনেক ভেবেছি তার পর পা বাড়িয়েছি।(লিজা)

এদিকে সাদিক লিজার কথা যতই শুনছে ততই যেন অবাক হচ্ছে।

--কি বলছো এসব লিজা? তুমি বাধ্য হয়ে করেছে মানে? আমি কি তোমাকে কখনো অপুর্ন রেখেছি?(সাদিক)

--হ্যাঁ রেখেছিলে। হ্যাঁ তুমি অপূর্ণ রেখেছো। আর কি অপুর্ণ রাখছো জানতে চাও?(লিজা)

--হুমম প্লিজ লিজা বলো আমি জানতে চাই।(সাদিক)

তারপর লিজা কোন কথা না বলে সাদিকের হাত ধরে সাদিক-কে টেনে পাশের রুমের দরজার কাছে নিয়ে জায়। নিয়ে গিয়ে পাশের রুমে বসে বসে পড়তে থাকা সামিরার দিকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিয়ে বলে।

--ওই মেয়েটাকে দেখছো? (লিজা)

--হুমমম ও তো আমাদের মেয়ে সামিরা।(সাদিক)

--হুম আমার এসব করার পিছনে আর একটা কারণ হচ্ছে ওই পিচ্ছি মেয়ে টা।(লিজা)

--What......(সাদিক)

--হুম সাদিক.(লিজা)

--কিন্তু……….(সাদিক)

--প্লিজ সাদিক এখান থেকে চলো সামিরা এখন অনেকটা বড় হয়ে গেছে। সামিরার ৪ বছর এখন।

তাই আমি চাই না ও এসব শুনুক।

আর আমি চাই না তোমার আমার কোন কিছুই আমার মেয়ের জীবনকে প্রভাবিতো করুক।

তাই চলো রুমে চলো। আর ডিনারের টাইম তো হয়ে এসেছে তাই চলো সবাই আগে ডিনার করে নেই তার পর তোমাকে সব বলবো। হ্যাঁ আজ আমি সব বললবো তোমাকে।(লিজা)

তারপর সবাই যে যার যার মতো ডিনার সেরে নিলো।

লিজা,, সাদিক,, সামিরা,, সিমা সবাই।

ডিনার সেরে সামিরাকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে লিজা রুমে চলে আসলো সাদিক আগে থেকেই বসে ছিলো রুমে।লিজা রুমে প্রবেশ করতেই সাদিক একটু নরেচরে বসলো। আর লিজাও এসে বসে পড়লো কেউ কিছু বলছে দুজনেই চুপ এভাবে প্রায় ২০ মিনিট চলে গেলো তারপর লিজা উঠে এক গ্লাস পানি পান করলো আর সাদিক-কে বললো তুমি পানি খাবে?

--নাহ থাক। আমার পানির পিপাশা পায়নি। (সাদিক)

--ওকে। (লিজা)

--হুমমম এবার বলো। (সাদিক)

--হুম বলছি।

আচ্ছা সাদিক ছেলেরা তার বউয়ের থেকে কি চায় বলো তো।(লিজা)

--কেন জানো নাহ? (সাদিক)

--প্রশ্ন করো কেন? যা জানতে চাচ্ছি তাই বলো।(লিজা)

--একটা ছেলে তার বউয়ের থেকে সব চেয়ে বেশি যেটা আশা করে সেটা হলো অধিক বিশ্বাস আর ভালোবাসা।(সাদিক)

--হুমমম আর মেয়েরা?(লিজা)

--মেয়েরা কি চায় তার স্বামীর থেকে?(সাদিক)

--মেয়েরাও সেটাই চায়।

ট্রাসটিং,কেয়ারিং,সেয়ারিং এই সব। হুমমম কিন্তু মেয়েরা যে এসবের থেকেও আর একটা জিনিস বেশি চায় সেটা কি জানো?(লিজা)

--নাহ.। কি চায় বলো তো?(সাদিক)

--সেটা হলো একটা বাচ্ছা।

সাদিক তুমি দুনিয়ায় এমন কোন মেয়ে পাবে নাহ। যে মেয়ে মা হতে চায় না। সব মেয়েই চায় তার একটা বাচ্ছা হোক। আর সেটা যে কোন মূল্যই। আর মা হবার ইচ্ছাটা এতই অদ্ভুদ। যে দেখো না খবরের কাগজে বাচ্চা প্রসব করতে গিয়ে কতো মেয়ে মারা যায়। তবুও কোন দিন কোন মেয়ের মুখে শুনছো যে সে বলছে আমি মা হবো না?(লিজা)

লিজার কথা শুনে সাদিক কিছুটা থ হয়ে গেলো।

মনে মনে ভাবছে লিজা তো সত্যি কথাই বলছে।

এতো কিছুর পরেও মেয়েদের মা হবার আকাংক্ষা, কমে না। তারপর আবার দুজন কিছুক্ষনের জন্য চুপ।

কেউ কিছু বলছে না।

তার ঠিক ১০ মিনিট পর নিরোবতা ভেঙ্গে লিজা বললো।

--আচ্ছা সাদিক তুমি কি জানো সামিরা কার মেয়ে?

--কার আবার আমাদের মেয়ে। মানে তোমার আর আমার মেয়ে।

--নাহ সাদিক সামিরা আমার মেয়ে সেটা ঠিক।

কিন্তু তোমার নাহ্।

--মানে

--হুমম সামিরার বাবা তুমি নও। ওর বাবা অন্য কেউ।

--What…!!!

.

.

চলবে…………………♥♥

(পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন। গল্পটি ভাল না লাগলে এড়িয়ে চলো। পুরো গল্প না পড়ে বিতর্কিত মন্তব্য করবেন না।)

1
$ 0.00
Avatar for kamal16
4 years ago

Comments