#বোকা_বরের_দুষ্টু_বউ
#পর্ব/-০১
মোবাইলে রিং হচ্ছে......
ধুরু ভাল্লাগে না। কেউ কি একটু শান্তিতে ফ্রেশ হতেও দিবে না। দেখতেছে ফোন টা রিসিভ করছি না। তাহলে মানুষটির বোঝা উচিত যার কাছে ফোন করছি তিনি হয়তো ব্যস্ত ও থাকতে পারেন। কিন্তু না একের পর এক কল করেই যাচ্ছে । অবশেষে বিরক্তির ভাব নিয়ে ফোনটা ধরলাম.....
হ্যালো!(আমি)
ওই যে মিষ্টার। ফোন ধরতে এত সময় লাগে? (অচেনা মেয়ে কন্ঠে)
দুঃখিত! আপনি যার কাছে ফোন করেছেন তিনি এখন ওয়াশরুমে ইয়ে করতে ব্যস্ত আছে । অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পরে ফোন করুন ।(আমি)
এই বলে আমি ফোন টা কেটে দিলাম । এরপর আমি আবার চলে গেলাম ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে । এই ফাঁকে আমি আমার পরিচয় টা দিয়ে ফেলি। আমি ইবাদত হোসাইন আফনান(আমারর আগের নামম চন্জ করে এই নাম দিছি কারন এটা আমার মায়ের দেওয়া নাম..) ভারসিটিতে আফনান বললে এককালে সবাই এক নামে চিনতো। মেয়েদের ক্রাশ ও পড়াশোনায় ভাল হওয়ার কারণে হয়তো এতটা সেলিব্রেটি ছিলাম সবার মাঝে। পরিবার বলতে বাবা-মা ও ছোট্ট একটি বোন আছে। বোনটি সবে মাত্র এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পড়াশোনায় ভাল ছিলাম বিধায় আব্বু-আম্মু এসএসসি পরীক্ষার পর পরই শহরে পাঠিয়ে দেয়। জাতীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেনেজমেন্টের উপর মাস্টারস্ করে বের হয়েছি সবেমাত্র ১ বছরের থেকে বেশি কিছু সময় হচ্ছে । রেজাল্ট ভাল থাকার কারণে ভারসিটি থেকে বের হওয়ার এক মাসের মধ্যেই একটা বেসরকারি ব্যাংকে অনেক ভাল পদে চাকরি পেয়ে যায়। নিজের যোগ্যতা ও পরিশ্রম দিয়ে এই এক বছরের মধ্যেই ব্যাংকের অনেক উচ্চ পদে নিজের অবস্থান টা করে নিয়েছি । আর বেতনের কথা নাই বা বললাম। কারণ আমি যে বেতন পায় তা দিয়ে পরিবারসহ কয়েকটা বউ চালোনো যাবে। তাইতো আব্বু আম্মু এ চাকরি পাওয়ার পর পরই বিয়ে কর বিয়ে কর বলে প্যারা দিচ্ছে ।আর আমি সবসময় কোন না কোন সমস্যা দেখিয়ে বিয়েগুলো ক্যান্সেল করে দি। সারাদিনের পরিশ্রম করে ব্যাংক থেকে ফিরার পর রাতে ইনজয় ও খাওয়া ধাওয়ার করে বিছানায় গা লাগিয়ে দিতেই হারিয়ে যায় এক গভীর ঘুমের রাজ্যে। আর আমার একটা বাজে অভ্যস হলো রাতে ঘুমানোর আগে এফবি তে গল্প লিখে পোষ্ট করা। আপনারাই বলুন এরকম বিন্দাস লাইফ রেখে কোন দরকার আছে বিয়ে করে নিজের জীবন কে প্যারাময় করা। তারপরে ও আম্মু আজ পায় পায় করে বলে দিয়েছে কাল নাকি পাত্রী দেখতে যাবে আমার জন্য তাই যেন ভোরের ট্রেনেই বাড়ি রওনা দি। তাই আজই ব্রান্স ব্যাংক ম্যানেজার থেকে আগামী দুই দিনের ছুটি নিয়ে নিয়েছি।
ফ্রেশ হতে আর আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে এতক্ষণ ধরে যে ওয়াশরুমে রয়ে গেছি খেয়াল ই করি নি। প্রায় ২৫ মিনিট পর ওয়াশরুম থেকে বের হলাম ।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ফোন টা হাতে নিতেই আমি তো অবাক । এ ২৫ মিনিটে ৪০ টা মিসকল।মোবাইলের স্কিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই ফোন টা আবার বেজে উঠলো...
হ্যালো!! (আমি)
এই যে হাদারাম!!ওয়াশরুমে ইয়ে করতে এতক্ষণ লাগে নাকি?(অচেনা মেয়েলি কন্ঠে)
হ্যা আমার লাগে। তা আপনি কে গো মা?(আমি দুষ্টমি করে)
আমি মিষ্টি ।(অচেনা মেয়েলি কন্ঠে)
স্যরি রং নাম্বার । আমি কোন মিষ্টির দোখানে মিষ্টি অর্ডার করি নি। (আমি)
আরে বোকা আমি আপনার বউ মিষ্টি ।(অচেনা মেয়েলি কন্ঠে)
ওমাগো আমি আবার বিয়ে করলাম কবে?(আমি অবাক হয়ে)
ছি ছি বিয়ে করে নিজের বউকেই চিন্তে পারছেন না?(অচেনা মেয়েলি কন্ঠে)
আপু গো আপনার পায়ে পড়ি এসব কথা বইলেন না।আমি তো কোন মেয়েকে বিয়ে করা তো দূরের থাক মেয়েদের সাথে কথা বলতেও লজ্জা পায়।(আমি)
আহারে!আর লজ্জা পেতে হবে না। একবার আপনার সাথে আমার ফুলশয্যটা হোক তারপর সব লজ্জা শরম চলে যাবে। (অচেনা মেয়েলি কন্ঠে)
দেখুন ফাজলামির একটা সীমা আছে। আমি আপনাকে ভাল করে চিনি না পর্যন্ত । আর আপনি বলছেন আপনি আমার বউ।আর হে আমি এখনো বিয়ে করি নি। তবে খুব শিগ্রই করতে যাচ্ছি। তারজন্য আগামীকাল পাত্রী ও দেখতে যাচ্ছি। ফোন রাখুন । আর একদম ফোন দিয়ে আমায় ডিস্ট্রাব করবেন না ।(আমি রেগে)
ওই একদম ফোন কাটবেন না। কিহ্ আমায় ছেড়ে আপনি অন্য কাউকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন? আপনার পা কেটে রেখে দিবো ।আমি ও দেখবো আপনি আমায় ছেড়ে অন্য কাউকে কিভাবে বিয়ে করেন।আর হ্যা রাত অনেক হলো খেয়ে ধেয়ে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়েন। এফবি তে যেন অন্য মেয়েদের সাথে টাংকি না মারেন।(অচেনা মেয়েলি কন্ঠে)
তারপর সাথে সাথে ফোন টা কেটে যায়। মেয়েটার খুব রাগ হচ্ছিলো। বলে কিনা আমার বউ। যাই বলি না কেন মেয়েটার গলার বয়েজ টা কিন্তু খুব সুন্দর ।
অবশেষে খেয়ে ধেয়ে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়লাম ।কারণ পরেরদিন ভোরবেলা ট্রেন ধরতে হবে।
পরেরদিন...
অবশেষে ভোরবেলার ট্রেন ধরে নিজ গ্রামে চলে আসলাম। বাড়িতে পৌঁছাতে পৌছাতে প্রায় সকাল ১০ বেজে গেলো।
কাধে বেগ নিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকছি এমন সময়...
আফনান বাবা কেমন আছিস? (আম্মু)
আমি কেমন আছি সেটা পরে যেন আম্মু ।আগে সত্যি করে বলো তো আম্মু আমি কি আগে বিয়ে করেছি?আমার কি বউ আছে?(আমি)
পাগলের মতো এসব কি যা তা বলছিস। মনে হয় তুই এতটা পথ যারনিং করে এসেছিস তাই তোর মাথাটায় খারাপ হয়ে গিয়েছে।তুকে আজ পর্যন্ত একটা মেয়ে ও পচন্দ করাতে পারলাম না তারপর বলছিস আগে বিয়ে করেছিস । (আম্মু)
নিশ্চুপ হয়ে ভাবছি ।(আমি)
কি এত ভাবছিস। রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। আমি খাবার দিচ্ছি। খেয়ে ধেয়ে রেস্ট নে। বিকালে আবারে পাত্রী দেখতে যেতে হবে।(আম্মু)
তারপর আমি সেখান থেকে ফ্রেশ হতে নিজের রুমে চলে গেলাম।
বিকালবেলা....
আব্বু আম্মু, ছোট বোন সহ মিলে পাত্রী দেখার জন্য পাত্রীর বাড়ি যাচ্ছি।শুনেছি পাত্রী নাকি আব্বুর বন্ধুর মেয়ে । আব্বুর গ্রামের মধ্যে ভাল একটা ব্যাবসা আছে।
অবশেষে একটা গাড়িতে করে পাত্রীর বাড়ির সামনে চলে আসলাম। পাত্রী পক্ষের কিছু লোক খুব সাদরে আমাদের বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলো।
আমাদের নাস্তা পানি দিয়ে খুব ভাল করে আপ্যয়ন করা হলো। অনেক্ষণ ধরে আমরা গেইস্ট রুমে বসে আছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত পাত্রী আসার নাম'ই নেই। আমার অসহ্য বিরক্ত লাগছিলো এসব । ইচ্ছে করেছিলো এক্ষনি চলে যায়। শুধু মাত্র আব্বু-আম্মুর সম্মানের কথা ভেবে চুপ করে আছি ।
অবশেষে পাত্রী কে নিয়ে আসা হলো। দুইপাশে দুইটা রমনি ঘুমটা পড়া পাত্রীর হাত ধরে আমাদের সামনে নিয়ে আসলো।তখন...
0
4