বিশ্বজুড়ে নীল রঙের সাপ বিরল। আবার বিরল রঙের কারণে এই সাপ মুগ্ধতাও ছড়ায়। এমন একটি সাপ ‘ব্লু পিট ভাইপার’। এই সাপের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সাড়া ফেলেছে। নীল সাপটি এমনিতেই সুন্দর। লাল গোলাপের ওপরে বসে থাকায় সৌন্দর্য যেন আরও বেড়েছে।
সমস্যাটা সেখানে নয়। বাইরের সৌন্দর্য দেখে অনেকে গলে যান। মুগ্ধ হয়ে কেউ ব্লু পিট ভাইপারের কাছ ঘেঁষলেই বিপাকে পড়তে হবে। মারাত্মক বিষধর এই সাপ ছোবল মারলে শরীরের ভেতরে-বাইরে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হতে পারে। পরিণতিতে হতে পারে মৃত্যু। সাপসহ লাল গোলাপটা কেউ একজন হাতে ধরে রেখে ভিডিওটি ধারণ করেছেন বলে দৃশ্যমান। ভিডিওটি দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুগ্ধতা প্রকাশ করতে ভোলেননি হাজারো মানুষ। পাশাপাশি সতর্ক থাকার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, টুইটার, রেড্ডিটসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি কোথায় ধারণ করা, তা জানা যায়নি। তবে মস্কো চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, নীল রঙের সাপটি ‘হোয়াইট-লিপড আইল্যান্ড পিট ভাইপার’ গোত্রের একটি জাত। এই গোত্রের অন্য জাতগুলোর রং হয়ে থাকে সবুজ। প্রকৃতিতে সেগুলোর সচরাচর দেখা মিললেও নীলরঙা সাপের দেখা মেলে খুবই কম। এ ধরনের সাপ সাধারণত পাওয়া যায় ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তিমুরে। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে মাঝেমধ্যেই এ ধরনের বিষধর সাপের দংশনের খবর আসে।
মস্কো চিড়িয়াখানার মহাপরিচালক সেভেতলানা আকুলোভা বলেন, ‘আশ্চর্যের কথা হচ্ছে, এক জোড়া নীলরঙা সাপ জন্ম দিতে পারে সবুজ বাচ্চা। আর হোয়াইট-লিপড পিট ভাইপারগুলো ডিম পাড়ার বদলে সরাসরি বাচ্চার জন্ম দেয়।’
টুইটারে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে ‘লাইফ অন আর্থ’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে। তারা ভিডিওটির ক্যাপশনে লিখেছে, ‘অবিশ্বাস্য সুন্দর ব্লু পিট ভাইপার’। টুইটারে প্রকাশের এক দিনের মধ্যে ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৫২ হাজারের বেশি বেশি। আর রেড্ডিটে দেখা হয়েছে ২২ লাখের বেশি বার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা সাপটির অসাধারণ সৌন্দর্যের বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। তবে বিপজ্জনক হওয়ায় এ ধরনের সাপ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।
রেড্ডিট ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, ‘ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখেছি, ব্লু পিট ভাইপার অত্যন্ত বিষধর। এই সাপ আক্রমণাত্মক আচরণের জন্য কুখ্যাত। গোলাপ ফুলটা যার হাতেই থাকুক না কেন, তিনি নিশ্চয় কাজটা ভালো করছেন না।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এটা একই সঙ্গে ভয়ংকর, আবার অপরূপ দৃশ্য।’
অস্ট্রেলিয়ার সাময়িকী ‘অস্ট্রেলিয়ান জিওগ্রাফিক’ বলছে, ব্লু পিট ভাইপার আগ্রাসী শিকারি হিসেবে পরিচিত। এই সাপের ছোবলে মৃত্যু ঘটতে পারে, না–ও পারে। তবে বিষটা ‘হেমোরেজিক’। অর্থাৎ শরীরের ভেতরে-বাইরে রক্তক্ষরণ ঘটায়। তীব্র যন্ত্রণার পর দেহ ফুলে যেতে পারে।