পেঁপের যত ঔষধি গুণাগুণ

1 1
Avatar for alma45
Written by
3 years ago

পেঁপের যত ঔষধি গুণাগুণঃ-

পেঁপে কাঁচা হোক বা পাকা এর ঔষধি গুণ নিমিষেই শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে। তবে জেনে নিন কোন কোন রোগের মহাষৌধ পেঁপে-

১। রক্ত আমাশয় নিরাময়ে

প্রত্যেহ সকালে কাঁচা পেপের আঠা ৫/৭ ফোঁটা ৫/৬ টি বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। ২/৩ দিন খাওয়ার পর রক্তপড়া কমতে থাকবে।

২। ক্রিমি ধ্বংসে

যেকোনো প্রকারের ক্রিমি হলে, পেঁপের আঠা ১৫ ফোঁটা ও মধু ১চা চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এরপর আধা ঘন্টা পরে উঞ্চ পানি আধ কাপ খেয়ে তারপরে ১ চামচ বাখারি (শসা-ক্ষীরার মতো এর স্বাদ) চুনের পানি খেতে হয়। এভাবে ২ দিন খেলে ক্রিমির উপদ্রব কমে যাবে।

৩। আমাশয় নিরাময়ে

আমাশয় ও পেটে যন্ত্রনা থাকলে কাঁচা পেপের আঠা ৩০ ফোঁটা ও ১ চামচ চুনের পানি মিশিয়ে তাতে একটু দুধ দিয়ে খেতে হবে। একবার খেলেই পেটের যন্ত্রণা কমে যাবে এবং আমাশয় কমে যাবে।

৪। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে

কাঁচা পেঁপে দেহের সঠিক রক্ত সরবরাহে কাজ করে। দেহে জমা থাকা সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে যা হৃদপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী। চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ বছরের পর থেকে মানুষের রক্তচাপসংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয় । হয়তো রক্তচাপ বাড়ে নয়তো কমে। রক্তচাপ বাড়লে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। হঠাৎ পড়ে গেলে শরীরের কোনো অংশ অকেজো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, শরীরে অসাড়তা দেখা যায়। উচ্চ রক্তচাপ আক্রান্তরা কাঁচা বা পাঁকা পেঁপে ব্যবহার করতে পারেন।

দুটোই উপকারি। তবে খাবেন কয়েক টুকরো এবং নিয়মিত। কয়েক মাস খেয়ে যেতে হবে। আশা করা যাই নিয়মিত পেঁপে খেলে উচ্চ রক্ত চাপের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এমনকি এতে করে হৃদপিণ্ড জনিত যেকোনো সমস্যার সমাধান হয়।

৫। ক্ষুধা ও হজম শক্তিতে

প্রত্যেকদিন সকালে ২/৩ ফোঁটা পেপের আঠা পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে এর দ্বারা ক্ষুধাও বেড়ে যাবে এবং হজমও ঠিকভাবে হবে।

৬। পেট ফাঁপায়

কয়েক টুকরো পাকা পেপের শাঁষ, আর সামান্য লবন এবং একটু গোলমরিচের গুঁড়ো। একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা পেট ফাঁপার উপশম হয়।

৭। প্রবল জ্বরে

দেড় চামচ পেঁপে পাতার রস এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। জ্বরের বেগ, বমি, মাথার যন্ত্রণাসহ শরীরে দাহ কমে যাবে। জ্বর কমে গেলে আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

৮। মাসিক ঋতু বন্ধে

যাদের মাসিক ঋতু বন্ধ হওয়ার সময় হয়নি অথচ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অথবা যেটুকু হয় তা না হওয়ারই মত, সেক্ষেত্রে ৫/৬ টি পাকা পেঁপের বিচি গুঁড়ো করে রোজ সকালে ও বিকালে দু’বার পানিসহ খেতে হবে। এর ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই মাসিক ঋতু ঠিক হয়ে যাবে, তবে অন্য কোনো কারণে এটা বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

৯। দাঁদ

সে যে কোনো প্রকারের দাদ হোক না কেন, কাঁচা পেঁপের/গাছের আঠা দাঁদে লাগিয়ে দিতে হবে, একদিন লাগিয়ে পরের দিন লাগাতে হবে না, এরপরের দিন আবার লাগাতে হবে, এইভাবে ৩/৪ দিন লাগালে দাঁদ মিলিয়ে যাবে।

১০। একজিমায়

যে একজিমা শুকনো অথবা রস গড়ায় না, সেখানে ১ দিন অথবা ২ দিন অন্তর পেঁপের আঠা লাগালে ওটার চামড়া উঠতে উঠতে পাতলা হয়ে যায়।

১১। উকুন হলে

১ চামচ পেঁপের আঠার সঙ্গে ৭/৮ চামচ পানি মিশিয়ে ফেটিয়ে নিতে হয়। তারপর ওই পানি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর মাথা ধুঁয়ে ফেুঁন। এইভাবে একদিন অন্তর আর একদিন বা ২ দিন লাগালে উকুন মরে যায়।

১২। ওজন নিয়ন্ত্রণে

শরীরের মেদ ঝরাতে যারা তৎপর তাদের খাদ্য তালিকায় পেঁপে রাখুন। একদিকে যেমন কম ক্যালরি আছে, অন্যদিকে থাকা আঁশ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে সবজি হিসেবে পেঁপে অনন্য।

১৩। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায়

দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারে ভূমিকা রাখে পেঁপে। নিয়মিত পেঁপে খেলে সাধারণ রোগবালাই দূরেই থাকে।

১৪। ডায়াবেটিস রোগের পথ্য

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ফল। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে শুধু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যই প্রয়োজনীয় ফল নয়, ডায়াবেটিস রোগ এড়ানোর জন্যও পেঁপে খান।

১৫। দৃষ্টিশক্তি

অপথ্যালমোলজি আর্কাইভস প্রকাশিত একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, প্রতিদিন তিনবার পেঁপে খেলে চোখের বয়সজনিত ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। বয়স্কদের মধ্যে দৃষ্টি ক্ষতি প্রাথমিক কারণ, প্রতিদিনের খাবারে তুলনামূলকভাবে কম পুষ্টি গ্রহণ করা। পেঁপে চোখের জন্য উপকারি এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ, সি, ও ই এর উপস্থিতির কারণে।

১৬। ক্যান্সারের ঝুঁকি

পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন আছে। এছাড়াও আরো বহু পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারি। ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

১৭। ব্রণের দাগ

ব্রনসহ মুখের অন্যান্য যেকোনো দাগ যেমন মেছতা, ফুস্কুরির দাগ খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে পেঁপে। মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করার পাশাপাশি পেঁপে ফলটি মুখের উজ্জ্বলতাও ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।

১৮। শরীর শুকিয়ে গেলে

কোনো কারণ নেই অযথা শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে, এমন অবস্থায় মুখোমুখি অনেককেই হতে দেখা যায়। বিশেষ করে অল্পবয়সীদের ক্ষেত্রে এ উপসর্গের প্রকোপ বেশি। শরীরে অবসাদজনিত ক্লান্তি, একটা মনমরা ভাব, পড়াশোনা বা কাজকর্মে অনীহা প্রভৃতি উপসর্গ এর সঙ্গেই আসে।

প্রায়ই এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য। এক্ষেত্রে পেঁপে খুবই ফলপ্রসূ। কাঁচা বা পাকা যে অবস্থায়ই হোক। সকালে ও বিকেলে প্রতিদিন কয়েক টুকরো করে খেতে হবে। অন্তত এক মাস নিয়মিত খেতে হবে।

2
$ 0.12
$ 0.12 from @TheRandomRewarder
Avatar for alma45
Written by
3 years ago

Comments