রান্নায় স্বাদের মূল রহস্য লুকিয়ে থাকে মশলায়। তেলে মশলা পুড়িয়ে রান্নায় তেল এবং মশলা উভয়ের পুষ্টিগুণাগুণ নষ্ট করে ফেলা হয়। তাই বিনাতেলে রান্নায় মশলা শুধুমাত্র স্বাদবর্ধনই করবে না, মশলার পুষ্টিগুণও বজায় রাখে। আজ জেনে নেই প্রয়োজনীয় কিছু মশলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
=>আদাঃ আদায় আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল প্রপার্টিজ, উপকারি ফ্যাটি এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস সহ নানারকম উপকারি উপাদান, যা মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারি। আদা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন কমাতেও অনেক সাহায্য করে।
=>রসুনঃ প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়েটিক সমৃদ্ধ রসুনে রয়েছে প্রোটিন, ফ্যাট, মিনারেল, ফাইবার, আয়োডিন, সালফার, ক্লোরিনের মতো উপাদান যা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাইড করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মানবদেহের শিরা-উপশিরায় প্লাক জমতে বাঁধা প্রদান করে।
=>হলুদঃ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলুদ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে। হলুদ দেহকে অ্যালঝাইমার এবং ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে। হলুদের কারকিউমিন নামক উপাদান দেহে অতিরিক্ত মেদ জমতে দেয় না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
=> মরিচঃ লাল মরিচে ক্যাপসেচিন, ভিটামিন সি, এ, বি-৬ ও ই, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, আয়রন, ফ্লাভোনেয়ড ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভৃতি নানা উপাদান রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। মরিচ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
=> লবঙ্গঃ ঝাঁঝালো স্বাদের লবঙ্গ অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল প্রপার্টিজ এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে সমৃদ্ধ, যা দাঁতের ব্যাথা সহ শরীরের যে কোনো ব্যাথা উপশমে দারুণ কার্যকরী। যাদের ধূমপান বা পান খাওয়ার অভ্যাস আছে, তারা মুখে লবঙ্গ দিয়ে অভ্যাস দূর করতে পারেন।
=> দারুচিনিঃ দারুচিনিতে আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল উপাদানসহ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, অতিরিক্ত ওজন কমাতে, স্মরণশক্তি বাড়াতে, অ্যাসিডিটি কমাতে এবং পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস দূর করতে দারুচিনি দারুণ কার্যকরী। এছাড়াও ঠান্ডায় গলা ব্যাথা বা খুসখুসে কাশি দূর করতেও দারুচিনি দারুণ উপকারি।
=> এলাচিঃ এলাচি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় ডিটক্সিফিকেশনের মাধ্যমে শরীরকে বিষমুক্ত রাখে। এলাচি পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামে পরিপূর্ণ।
=> জিরাঃ জিরাতে প্রচুর আয়রন আছে, যা এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, কপার ইত্যাদির মতো খনিজও রয়েছে।
সবাই রান্নায় প্রাকৃতিক মশলা ব্যবহার করুন। গুড়া মশলা এয়ারটাইট বক্সে রাখুন। সম্ভব হলে গুড়া মশলাও ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষন করুন। এতে করে মশলার গুণাগুণ অক্ষুন্ন থাকবে। বাটা মশলা, যেমন আদা-রসুন ফ্রেশই রান্না করুন।