মহাকর্ষীয় বল

2 16
Avatar for alma45
Written by
3 years ago

সবচেয়ে পরিচিত বলটির নাম মহাকর্ষ। এত পরিচিত যে যিনি কোনােদিন বিজ্ঞান পড়েননি, তিনিও এই বলটির কথা জানেন। মহাবিশ্বের যে-কোনাে দুটো বস্তু বা বস্তুকণার মধ্যে এই বলটি কাজ করে। গাছ থেকে যে আম নিচের দিকেই পড়ে, পাখির মতাে উড়ে যায় না বা উচু জায়গা থেকে লাফ দিলে মানুষ যে আকাশে না উঠে ভূপাতিত হয় তার কারণ পৃথিবী এবং ওই আমটি বা মানুষটির মধ্যে ক্রিয়াশীল মাধ্যাকর্ষণ বা মহাকর্ষ বল। এসব কথা সবারই জানা। এই বল আছে বলেই গ্রহগুলাে সূর্যের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদি না ঘুরতাে, দিন-রাত হতাে কীভাবে? ঋতু পরিবর্তনই-বা কীভাবে হতাে? সােজা কথায় এই বলের অনুপস্থিতিতে প্রাণের উদ্ভবই অসম্ভব হয়ে পড়তাে। মহাবিশ্ব গঠিতই হতাে না, তার আবার প্রাণের উদ্ভব! শুধু তাই নয়,

এই আকর্ষণ বল না থাকলে মানুষ পৃথিবীতে থাকতেই পারতাে না। আমরা যে মাটিতে হেঁটে বেড়াচ্ছি তার কারণ তাে ওই আকর্ষণই, নইলে তাে মহাশূন্যে অবস্থিত পৃথিবী থেকে আমরাও মহাশূন্যেই ছিটকে পড়তাম! এই বলের কারণেই আমাদের ওজন আছে, আর ওজন না থাকলে আমরা স্রেফ শূন্যে ভেসে বেড়াতাম।যাহােক, এই বলের কাজকর্ম সম্বন্ধে বলে শেষ করা যাবে না, তার চেয়ে বরং এর কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে কথা বলা যাক।

সপ্তদশ শতকের শেষদিকে, ১৬৮৭ সালে, এই বলের ব্যাখ্যা দেন স্যার আইজাক নিউটন। বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল থেকে নিউটনের এই মহাকর্ষ সূত্রের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠে। এই সূত্রে বলা হয়েছে, মহাবিশ্বের যে কোনাে স্থানে অবস্থিত দুটে ভরবিশিষ্ট বস্তু পরস্পরকে একটি বল দিয়ে আকর্ষণ করে, এই বলের নাম মহাকর্ষ এবং এই বল বস্তু দুটোর ভরের গুণফলে সমানুপাতিক এবং এদের মধ্যেকার দূরত্বের ব্যঞ্জনুপাতিক। গাণিতিক সমীকরণে লিখলে এই সূত্রটির চেহারা দাঁড়ায় এরকম:

F=G x( m1 x m2 )/r^2

এখানে m1 & m2 হচ্ছে যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় বড় ভর এবং r হচ্ছে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব। আর G হলাে মহাকর্ষ ধ্রুবক যার মান:

G = 6.63x10^-11 Nm^2/kg^2

তাঁর এই সূত্র দিয়ে মহাকর্ষিক ঘটনাবলীর অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করা গিয়েছিল। মহাবিশ্বের যে-কোনাে গ্রহ-নক্ষত্রে অভিকর্ষজ ত্বরণের মানও নির্ণয় করা যায় এই সূত্রের মাধ্যমে, যদি এর ভর এবং ব্যাসার্ধ জানা থাকে। অভিকর্ষজ ত্বরণের মান প্রায় ৯.৮ মি/সে, আর চাঁদে এর মান প্রায় ১.৯৩ মি/সে। অভিকর্ষজ ত্বরণের সঙ্গে বস্তুর ভর গুণ। ধরা যাক আপনার ভর ৫০ কেজি, তাহলে পৃথিবীতে আপনার ওজন ৪৯০ নিউটন আর চাঁদে গেলে আপনার ওজন হবে ৯৭ নিউটনের কাছাকছি। মানে চাদে গেলে আপনি অনুভব করবেন, আপনার শরীর প্রায় পাখির পালকের মতাে হালকা হয়ে গেছে, কারণ যে ভার (ওজন) আপনি এখানে বয়ে বেড়াচ্ছেন, চাদে যে তার পাচভাগের এক

হয়ে যাবে! এসব মজার হিসাব নিউটনের এই সূত্র ব্যবহার করেই করা সম্ভব হয়েছে। তবে বিশ শতকের শুরুত এসে এই বলের এই নতুন ও অভিনব ব্যাখ্যা হাজির করেন আরেক মহাবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন।

মহাজাগতিক বস্তুগুলাে অর্থাৎ, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, তারা, গ্যালাক্সি সবই যে নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণশীল তাও ব্যাখ্যা করা গিয়েছিল নিউটনের সূত্র দিয়েই। শুধু একটি বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানীদের একটু অস্বস্তি ছিল সেটি বুধগ্রহের কক্ষপথের বিচিত্র আচরণ। আমরা তাে জানিই, গ্রহগুলাে যার যার কক্ষপথে (orbit) সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। এই কক্ষপথগুলাে কিন্তু স্থির,

অপরিবর্তনশীল। কিন্তু বুধগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু আলাদা। এর কক্ষপথও খানিকটা দোল খায়। এর কারণ কী? না, নিউটনের সূত্র দিয়ে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা যাচ্ছিল না। বিশ শতকের গােড়াতে, ১৯১৫ সালে, আইনস্টাইনের বিখ্যাত সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের এর ব্যাখ্যা মিললাে। এই তত্ত্বে মহাকর্ষকে ব্যাখ্যা করা হলাে একটু ভিন্নভাবে। তিনি জানালেন নিউটনের সূত্রের স্বল্প ভর সম্পন্ন বস্তুর আচরণ ব্যাখ্যায় দারুণ পারঙ্গম বটে, তবে কোনাে বস্তুর ভর যদি খুব বেশি হয় কিংবা বস্তুর গতিবেগ যদি অতিমাত্রায় বেশি হয় তাহলে ব্যাপারটা নতুন করে ভাবতে হবে। আমরা তাে সবসময়ই জেনে এসেছি মহাবিশ্বের স্থান হলাে সমতলীয় (flat), কিন্তু আইনস্টাইন জানালেন এক অভিনব এবং নতুন ধারণার কথা— অতিভর বিশিষ্ট বস্তুর উপস্থিতির

কারণে স্থান-কাল বেঁকে যায়, আর এই বক্র স্থান-কালই (space-time curvature) মহাকর্ষের মূল কারণ। ব্যাপারটা বােঝা একটু কঠিনই। ধরুন, মানে কল্পনা করুন, আপনার হাতে একটা বড়সড় রুমাল আছে। আচ্ছা, কল্পনা যখন করবেনই একটু বাড়িয়েই করুন। ধরা যাক, আপনার কাছে বর্গাকৃতির বা আয়তাকার বেশ বড়সড় একটা রাবারের শিট (rubber sheet)।

আছে। এর চার কোণায় সুতাে বেঁধে একটা শূন্য স্থানে টানটান করে ঝুলিয়ে দিন অনেকটা মশারী টানানাের মতাে করে। তবে বেশি ওপরে টানাবেন না, কারণ আরাে কিছু কাজ করতে হবে আপনাকে। এবার সেই ঝােলানাে রাবার-শিটের মাঝখানে ক্রকেটবল আকারের একটা লােহার বল রাখুন (ক্রিকেট বলও রাখতে পারেন, একটু ভারি বস্তু রাখতে চাইলে লােহা বা পিতলের শল (force নয়, ball-এর কথা বলছি) হলে বেশ ভালাে হয়। কী দেখতে পাচ্ছেন? রাবারের শিট-টা নিচের দিকে বেশ খানিকটা বেকে গেছে, তাই না? আপনি যদি রাবারের এই শিটটাকে স্থান-কাল হিসেবে এবং লােহার বলটিকে কোনাে গ্রহ বা নক্ষব্র হিসেবে ভেবে নেন, তাহলে সহজেই বুঝে যাওয়ার কথা- ভারি বস্তুর উপস্থিতির প্রভাবে স্থান-কালের বেকে যাওয়া বলতে কী বােঝায়! কিন্তু স্থান-কালের বক্রতা না হয় বােঝা গেল, এর সঙ্গে মহাকর্ষের সম্পর্ক বােঝার উপায় কী? ব্যাপারটা বােঝার জন্য লােহার বলটি তুলে নিন, রাবার-শিটটি ওরকমডাবে বাঁধাই থাকুক। এবার একটি ছােট্ট মার্বেল নিয়ে যথাসম্ভব দ্রুত গতিতে রাবার-শিটের যে-কোনাে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দিকে ছুঁড়ে দিন। কা দেখতে পেলেন? মানবলের ভর যেহেতু ক্ষুদ্র,

রাবার-শিটকে সে বাকাতে পারেনি বরং বেগের কারণে সে অপর প্রান্তে চলে গেছে। অর্থাৎ স্থানকালে যদি ভারি বস্তুর উপস্থিতি না থাকে তাহলে সেটি সমতল (flat) থাকবে এবং &উচ্চ বেগে গতিশীল বস্তু সরল রেখায় তার ভেতর দিয়ে চলে যাবে (আলাে সরলরেখায় চলে ছােটবেলায় পড়া এই তথ্যের কথা কি মনে পড়ছে?)। এবার পুণরায় লােহার বলটি রাবার-শিটের মাঝখানে

রেখে ওটাকে বাকিয়ে দিন, যেমনটি আগে একবার করেছিলেন। তারপর ফের মার্বেলটি ছুড়ে দিন একইরকম বেগে, ধ্রুত গতিতে, এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দিকে। এবার কি মার্বেলটি সরল রেখায় চলতে পারবে? যেতে পারবে অপর প্রান্তে? না। কারণ লােহার বলের কারণে রাবারের স্থানকাল নিচের দিকে বেঁকে গেছে, মার্বেলের জন্য এবার আর কোনাে সরলপথ নেই, সেও তাই অবধারিতভাবে বক্রপথ অনুসরণ করবে এবং লােহার বলটিকে গিয়ে আঘাত করবে। মার্বেলটি কেন বেঁকে গেল, পরীক্ষাটা আপনি করছেন বলে সেই রহস্যটা সহজেই ধরতে পারছেন। কিন্তু বাইরে থেকে কেউ যদি ঘটনাটিকে পর্যবেক্ষণ করে, তার মনে হবে মার্বেলটিকে লােহার বলটি আকর্ষণ করেছে। মানে মহাকর্ষ বল কাজ করছে এখানে! ঘটনা এখানেই শেষ নয় । ক্রিকেট খেলা দেখেন নিশ্চয়ই! স্পিনাররা যেমন বল ছোড়ার সময় বলটাকে কায়দা করে ঘােরান, মানে স্পিন করেন, আপনিও যদি আপনার মার্বেলটি ছোড়ার আগে ওভাবে ঘােরান, মানে স্পিন করান, তাহলে সেটি লােহার বলটিকে আঘাত করার আগে তার চারপাশে সর্পিল পথে দু-চারবার ঘুরবে। ঠিক যেমন গ্রহগুলাে ঘুরছে সূর্যের চারপাশে, ওরকম। আপনার মার্বেলের গতি যদি খুবই বেশি হয়, তাহলে মার্বেলটি, এমনকি বলের ওপর পতিত না হয়ে বেরও হয়ে যেতে পারে, তবে তার গতিপথ খানিকটা পরিবর্তিত হয়ে যাবে। অর্থাৎ লােহার বলের অনুপস্থিতিতে মার্বেলটি যে পথে এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে গিয়েছিল, এবার লােহার

বলের উপস্থিতিতে সৃষ্ট বক্রতার কারণে তার একই গতিপথ থাকবে না। এই যে গতিপথ পাল্টে গেল, অর্থাৎ নতুন গতিপথ তৈরি। হলাে, এই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেই অপর প্রান্তে থাকা একজন দর্শক বুঝতে পারবে (লােহার বলটির অস্তিত্ব সম্বন্ধে না জেনেও),

মার্বেলটি আসার পথে কোনাে একটি ভারি বস্তুর আকর্ষণ’ পার হয়ে এসেছে। আর এজন্যই সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলাে আসার সময় ঠিক সরল পথে আসে না, বুগ্রহের উপস্থিতির কারণে একটু বেঁকে আসে। কতটা বেঁকে আসে আইনস্টাইন সেটি হিসাব

করে দিয়েছেন, যা পরে প্রমাণিত হয়েছে। কৃষ্ণগহ্বরের সীমানায় কোনো বস্তু এসে পড়লে, এমনকি আলাের মতাে তীব্র গতিশীল কিছু এসে পড়লে কি তা আর এখান থেকে বেরোতে পারে না, তার কারণও ওই স্থান-কালের বক্রতা। কৃষ্ণগহ্বরের স্থান-কাল এতটাই বক্র যে, আলো কেবল এর ভিতর ঘুরপাক খেতে থাকে

এভাবেই আইনস্টাইন মহাকর্ষের ধারণা পাল্টে দেন, একে একটি 'বল' হিসেবে না দেখে স্থান-কালের বক্রতা

হিসেবে অভিহিত করেন। তবে হ্যা, তিনি তার সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব থেকে নিউটনের সূত্রও প্রতিপাদন করে দেখিয়েছিলেন।

যে, নিউটনের সূত্র আসলে সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের একটি বিশেষ রূপ। স্বল্প বেগ এবং ক্ষুদ্র ভরের জন্য নিউটনের সূত্রই প্রযােজ্য।

(বিদ্যুৎ চুম্বকীয় বল):-

আরেকটি মৌলিক বল- বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বল নিয়ে খানিকটা আলাপ করা যাক। তেমনই বলতে আবার একইরকম বুঝলে চলবে না। এদের মধ্যে পার্থক্য অনেক। যেমন ধরুন, দুটো ভরবিশিষ্ট বস্তুর মধ্যে মহাকর্ষ বল কাজ করে, কিন্তু বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বল কাজ করার জন্য প্রয়ােজন দুটো চার্জিত বস্তুর

চার্জিত কণার (যেমন ইলেকট্রন, প্রোটন)। মহাকর্ষ বল শুধুমাত্র আকর্ষণধর্মী কিন্তু বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বল আকর্ষণ-বিকর্ষণ দুই ধমই।প্রদর্শন করে। দুটো চার্জ যদি একই ধরনের হয় (যেমন দুটোই ধনাত্মক বা দুটোই ঋণাত্নক) তাহলে তাদের ভেতরে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলটি হবে বিকর্ষণধর্মী আর যদি চার্জ দুটো বিপরীতধর্মী হয় (একটি ধনাত্নক আরেকটি ঋণাত্নক) তাহলে বলটি হবে

আকর্ষণধর্মী। অন্য আরেকটা পার্থক্যের কথা বলি মহাকর্ষ খুব দুর্বল বল, ভর খুব বেশি না হলে এর অস্তিত্বই টের পাওয়া যায়, যে-কথা আগেই বলেছি। বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বল ততটা দুর্বল তাে নয়ই বরং মহাকর্ষের তুলানায় যথেষ্ট শক্তিশালী।উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি পরমাণুর ভেতরের একটি প্রোটন এবং একটি ইলেকট্রনের মধ্যে ক্রিয়াশীল মহাকর্ষ এবং বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলের তুলনা করেন, দেখবেন বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বলটি মহাকর্ষ বলের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ শক্তিশালী! ভাবা যায়? ব্যাপারটা আরাে সহজে বােঝা যাবে একটা উদাহরণ দিলে। ধরা যাক আপনার হাতে একটা চুম্বক এবং একটা লােহার পেরেক

(বা নিদেনপক্ষে একটা আলপিন) আছে। আলপিনটা কি আপনি বিনা চেষ্টায় শূন্যে ভাসিয়ে রাখতে পারবেন? না, পারবেন না। পৃথিবীর মহাকৰ্ষিক টানে সেটি নিচে পড়ে যাবে। কিন্তু আলপিনটি যদি আপনি চুম্বকের কাছাকাছি নিয়ে আসেন তাহলে দেখবেন

সেটি চুম্বকের সঙ্গে লেগে আছে, নিচে পড়ে যাচ্ছে না। এর মানে কী দাঁড়ায়? পৃথিবীর মতাে বিপুল ভরবিশিষ্ট এক গ্রহ আলপিনটিকে যে বল দিয়ে আকর্ষণ করছে তারচেয়ে ওই চুম্বকের আর্কষণ বল অনেক বেশি। হ্যা, বেশি। কারণ দুটো একই ধরনের বল নয়। একটি মহাকর্ষ আরেকটি বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বল, এবং দ্বিতীয় বলটি তুলনামূলকভাবে অনেক শক্তিশালী।যাহােক, একটি চাজিত কণা চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে কী ধরনের মিথস্ক্রিয়ায় লিপ্ত হবে, তা বােঝা যায় এই বল দিয়ে। এ

বলের কারণেই পরমাণুর ভেতরে ইলেকট্রনগুলাে নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আবার বস্তুর ভেতরকার পাশাপা পরমাণুগুলােকে একসঙ্গে বেঁধে রাখছে। আলাের শােষণ-বিকিরণ ইত্যাদিও ঘটছে এই বলের কারণে। বিদ্যুৎ এবং চুম্বক ব্যবহার তাে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনিবার্য অংশ, সেখানেও এই বলের খেলা।তাে, মহাকর্ষ বল গণণার জন্য নিউটন যেমন একটি সূত্র প্রতিপাদন করেছিলেন, এর প্রায় একশ' বছর পর, ১৭৮৫ সালে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বল গণনার জন্য ফরাসি পদার্থবিদ চার্লস কুলম্ব একটি সূত্র প্রণয়ন করেছিলেন। সূত্র দুটো অনেকটা একইর

এই সূত্রের দ্বারা দুটো চার্জিত কণার ভেতরকার বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল নির্ণয় করা যায়। এই বল চার্জ দুটির গুণফলের সমানুপাতিক এবং এদের মধ্যকার দূরত্বের ব্যঞ্জনুপাতিক। সূত্রের গাণিতিক রূপ এরকম: F=k x (q1 xq2)/r^2

এখানে q1 & q2 হচ্ছে যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় বর চার্জ এবং r হচ্ছে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব। আর k হলাে একটি ধ্রুবক এর মান

k =8.989x10^9 Nm^2/C^2

আগেই বলেছি, মহাকর্ষ বল খুব দূর্বল হলেও বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বল তুলনামূলকভাবে বেশ শক্তিশালী। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে এই বলটি শুধুমাত্র চার্জিত বস্তুর মধ্যেই কাজ করে, চার্জ-নিরপেক্ষ বস্তুর ক্ষেত্রে এই বলের কোনাে প্রভাব নেই, আর সেজন্যেই এই শক্তিশালী বলটি আমরা অনুভব করি না।

(সবল নিউক্লিয় বল):-

সবল নিউক্লিয় বল নিয়ে এখন একটু বলা যাক। আমরা তাে ইতিমধ্যেই পরমাণুর গঠন জেনে ফেলেছি। জেনেছি যে,পরমাণুর কেন্দ্রে থাকে নিউক্লিয়াস আর তার চারদিকে ইলেকট্রন ঘুরে বেড়ায়। আর নিউক্লিয়াসের ভেতরে থাকে প্রােটন আর নিউট্রন নামক দুই ধরনের কণা। নিউট্রন চার্জ-নিরপেক্ষ হলেও প্রোটন ধনাত্নক চার্জ বিশিষ্ট কণা, এও আমরা জানি। কিন্তু একই

ধরনের চার্জবাহী কণা তাে পরস্পরকে বিকর্ষণ করে, যার কথা বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বলের আলােচনায় আমরা বলেছি। এবং এই বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বিকর্ষণের মানও খুব সামান্য নয়, অন্তত মহাকর্ষের তুলনায় তাে অনেক বেশি। তাহলে, এত বিকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও একটা অতিক্ষুদ্র জায়গার মধ্যে (নিউক্লিয়াসের আকার ১০ মিটার) প্রােটনগুলো জড়াে হয়ে থাকে কীভাবে? সেটা কি মহাকর্ষ বলের প্রভাবে? মােটেই না। আগেই বলেছি, মহাকর্ষ খুবই দুর্বল বল, আর তাছাড়া, প্রােটন এতই ক্ষুদ্র কণা এবং তাদের ভর এতই কম যে মহাকর্ষ বল এক্ষেত্রে প্রায় শূন্য বলেই ধরে নেয়া যায়। তাহলে কী ঘটে? এমন কোনাে শক্তিশালী আকর্ষণ বল নিশ্চয়ই আছে যা বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বিকর্ষণের বিপরীতে দাঁড়িয়ে প্রােটনকে শক্ত করে বেঁধে রাখে! হ্যা, যে বলটি এই কাজটি করে তার নামই সবল নিউক্লিয় বল। ১৯৩৫ সালে জাপানি পদার্থবিদ ইয়ােকাওয়া (Hideki Yukawa) এই বলটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।বলটি কীভাবে কাজ করে? সে ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে এ পর্যায়ে একটি কথা না বললেই চলছে না। বিজ্ঞানীরা এসব। বলের আলোচনার সময় এগুলো কে বল না বলে ‘মিথস্ক্রিয়া' (interaction) বলে ডাকেন। শব্দটি নিঃসন্দেহে হৃদয়গ্রাহী। মিথস্ক্রিয়া মানে পরস্পরের মধ্যে ক্রিয়া, অনেকটা পরস্পরের প্রতি পরস্পরের অনুরাগ বা বিরাগের মতাে ব্যাপার আর কি! এই নামে ডাকার হয়তাে একটি কারণ আছে। একবার ভাবুন তাে- দুটো বস্তু কীভাবে পরস্পরকে (মহাকৰ্ষিক) আকর্ষণ করে? বা কীভাবে জানতে পারে যে পরস্পরকে আকর্ষণ করতে হবে? কি ভেবে দেখুন একটা প্রােটন কীভাবে 'বােঝে যে একটা ইলেকট্রন কে (বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয়) আকর্ষণ করতে হবে, কিন্তু আরেকটি প্রোটন কে করতে হবে বিকর্ষণ? মজার ব্যাপার হলাে, এই আকর্ষণ-বিকর্ষণ ঘটে এক ধরনের কণা বিনিময়ের মাধ্যমে। অর্থাৎ এক জোড়া ইলেকট্রন-প্রােটন, অথবা প্রােটন-প্রােটন, কিংবা ইলেকট্রন-ইলেকট্রন যখন বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় মিথছ্জ্রিয়ায় লিপ্ত হয় তখন তাদের ভেতরে ফোটন (photon) নামের এক ধরনের

কণার বিনিময় ঘটে। কিংবা বলা যায়- ফোটন নামের কণাটিই তাদের ভেতরে এই মিথস্ক্রিয়া ঘটায়। ফোটনের ভূমিকা এক্ষেত্রে যেন অনেকটা ঘটকের মতাে, তাই না? একইভাবে ধারণা করা হয়- দুটো বস্তুর ভেতরে মহাকর্ষিক মিথস্ক্রিয়া ঘটায় গ্রভিটন।

(graviton) নামের এক ধরনের কণা। গ্র্যাভিটনকে অবশ্য এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি, এটা এখনাে ধারণা-আকারেই আছে। একটি ফোটন-গ্র্যাভিটনের মতােই আরেক ধরনের কণা, যার নাম মেসন(meson), সবল নিউক্লিয় মিথস্ক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন

করে। এই মেসন কণাকে কখনাে কখনাে পায়ােন (pion) নামেও ডাকা হয়। তাে, তিন ধরনের মেসন কণা আছে, যথাক্রমে পাই প্লাস (ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট), পাই মাইনাস (ঋণাত্মক চার্জ বিশিষ্ট) এবং পাই জিরাে (চার্জ-নিরপেক্ষ)। এই কণাগুলাের বিনিময়ের মাধ্যমে প্রোটন-প্রোটন, প্রোটন-নিউট্রন, এবং নিউট্রন-ট্রিন কণার মধ্যে সবল নিউক্লিয় মিথস্ক্রিয়া ঘটে। নিউট্রন ভেঙে প্রােটন এবং পাই মাইনাস উৎপন্ন হয়, আবার প্রােটনটি পাই মাইনাস শােষণ করে নিউট্রনে পরিণত হয়। উল্টোটাও ঘটে। প্রােটন ভেঙে নিউট্রন এবং পাই প-সি উৎপন্ন হয়, আবার নিউট্রনটি পাইপ-সি শােষণ করে প্রােটনে পরিণত হয়। ব্যাপারটা

অনেকটা এরকম :

n---> p+ π এবং p + π---> n

এর উল্টো রূপান্তরটি এরকম :

p---> n + π এবং n + π---> p

এখানে n হলাে নিউট্রন, p হলাে প্রোটন, যা হলাে পাই মাইনাস আর তা হলাে পাই প্লাস।

অর্থাৎ প্রােটন ক্রমাগত নিউট্রনে এবং নিউট্রন ক্রমাগত প্রােটনে পরিণত হতে থাকে। খুব স্বাভাবিক একটা প্রশ্ন উঠতে পারে যে, এই রূপান্তর যদি সত্যিই ঘটে তাহলে কখনােই ভরের পার্থক্য দেখা যায না কেন? প্রােটন এবং নিউট্রনের ভর তাে সমান নয়! তাহলে নিউট্রন যদি প্রোটনের পরিণত হয় কিংবা প্রোটন পরিণত হয় নিউট্রনে তাহলে ভরের একটা পার্থক্য ঘটে যাওয়ার

কথা না? হ্যা, যাওয়ার কথা। কিন্তু এই রূপান্তরের ঘটনাগুলাে এত দ্রত গতিতে ঘটে

(এক মাইক্রোসেকেন্ডেরও কম সময়ে) যে,

এই ভর-পার্থক্য কখনােই ধরা পড়ে না। আবার উভয় ধরনের কণাই ক্রমাগত রূপান্তরের মধ্যে থাকে বলে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় নিয়ম অনুযায়ী নিজেদেরকে যে বিকর্ষণ করার কথা তা তাদের মনেই থাকে না। নিজেদের অস্তিত্ব নিয়েই যখন টানাটানি তখন

কি আর এত নিয়ম-কানুনের কথা মনে রাখা সম্ভব? (কথাটা মজা করে বললাম, নিউট্রন-প্রােটনের 'মন আছে, এ-কথা বললে তাে পদার্থবিদরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবেন!) যাহােক, সবল নিউক্লিয় বলকে আরেকটু ভালােভাবে বােঝার জন্য আরাে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ১৯৫০-এর দশকে বিজ্ঞানীরা কণা-তৃরকযন্ত্র (particle accelerator) তৈরি করতে সক্ষম হলেন। এই যন্ত্র দিয়ে যখন পরমাণু এবং নিউক্লিয়াস ভেঙে ফেলতে পারলেন বিজ্ঞানীরা, তখন পায়ােনের অস্তিত্বও পেলেন। মানে ইয়ােকাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী (prediction) সত্য বলে প্রমাণিত হলাে। একইসঙ্গে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন প্রােটিন এবং

নিউট্রন আসলে মৌলিক কণা নয়, এগুলাে কোয়ার্ক নামের আরেক ধরনের কণা দিয়ে তৈরি (এই কোয়ার্ক আবার বিভিন্ন ধরনের। সেই আলােচনায় আর না গেলাম)। সবল নিউক্লিয় বল এই কোয়ার্কগুলাকেই একসঙ্গে বেঁধে রাখে যার ফলে নিউক্লিয়াসে।

প্রোটন-নিউট্রন গুলো জমা হয়ে থাকতে পারে। যে-কথা একটু আগে বলছিলাম যে, সবল নিউক্লিয় বল বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় বলের চেয়ে অনেক শক্তিশালী, মহাকর্ষের চেয়ে তাে বটেই। সত্যি বলতে কি এটিই প্রকৃতির সবচেয়ে শক্তিশালী বল। তবে এটি কাজ করে ক্ষুদ্র দূরত্বের মধ্যে একটা নিউক্লিয়াসের আকার কতটুকু, এই বল কাজ করার সীমাও ততটুকু। যেহেতু এই শক্তিশালী বল দিয়ে প্রােটন-নিউট্রনগুলাে

নিউক্লিয়াসের ভেতরে বাধা থাকে, তাই যখন দুই বা ততােধিক হালকা নিউক্লিয়াস যুক্ত হয় (যাকে ফিউশন প্রক্রিয়া নামে অভিহিত করা হয়) অথবা একটি ভারী নিউক্লিয়াস ভেঙে যায় (এর নাম ফিশন প্রক্রিয়া) তখন নিউক্লিয়াস থেকে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়। সূর্য বা তারাদের শক্তির উৎসও এই নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া, যার পেছনে রয়েছে সবল নিউক্লিয় বলের একচ্ছত্র অবদান।

(দুর্বল নিউক্লিয় বল):-

বাকি রইলাে দুর্বল নিউক্লিয় বল। ভারি পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঘটনা অনেক আগেই আবিষ্কৃত হয়েছিল। আলফা (হিলিয়াম নিউক্লিয়াস) বিকিরণ, বিটা (ইলেকট্রন) বিকিরণ এবং গামা (ফোটন) বিকিরণের মতাে ঘটনা বিজ্ঞানীদের কাছে নতুন নয়। আলফা এবং গামা বিকিরণের ব্যাখ্যা দিতেও কোনাে সমস্যা হয়নি। কিন্তু নিউক্লিয়াস থেকে বিটা। কণা বা ইলেকট্রন কেন নির্গত হয়, তা ব্যাখ্যা করা সহজ ছিল না। কারণ নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রন থাকে না, থাকে বেশ কিছুটা দূরে তাদের নিজস্ব কক্ষপথে।তাহলে নিউক্লিয়াস থেকে ইলেকট্রন বিকিরণ হবে কেন? এই ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করার জন্য রীতিমতাে বৈপ-বিক এক ধারণার প্রবর্তণ করলেন পাউলি (Wolfgang Pauli), ১৯৩০ সালে। তিনি বললেন নিউট্রন ভেঙে গিয়ে প্রােটন, অ্যান্টি-নিউট্রিনাে এবং ইলেকট্রন উৎপন্ন হয় এবং এই অ্যান্টি-নিউট্রিনাে এবং ইলেকট্রনই বেরিয়ে আসে নিউক্লিয়াস থেকে। আবার অন্য ঘটনাও ঘটে। অর্থাৎ প্রােটন ভেঙে গিয়ে নিউট্রন, নিউট্রিনাে এবং পজিট্রন উৎপন্ন হয়। কেন এই ধারণাকে বৈপ-বিক বলছি? কারণ মানব-সভ্যতার ইতিহাসে এই প্রথম পজিটন এবং অ্যান্টি-নিউট্রিনাে নামের দুটো কণার কথা বলা হলাে, যারা আসলে কণা নয়, প্রতিকণা (anti particle)। পজিট্রন হলাে ইলেকট্রনের প্রতিকণা এবং এর ভর ইলেকট্রনে সমান হলে একটি ধনাত্মক চার্জ বিশিষ্ট। পজিট্রন শব্দটি এসেছে ‘পজিটিভ ইলেকট্রন' শব্দযুগল থেকে। তেমনই নিতনাে প্রতিকণা হলাে অ্যান্টি-নিউট্রিনাে। সত্যি বলতে কি, এই নিউট্রিনাে কণার ধারণাটিও ছিল একেবারেই নতুন। কারণ এই কণা কোনাে ধরনের বস্তুর সঙ্গেই মিথস্ক্রিয়া করে না, ফলে একে খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। এই ধারণা প্রবর্তনের দু-বছরের মাথায় পজিট্রনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে পরীক্ষাগারে, কিন্তু প্রায় পচাশি বছর পরও নিউট্রিনাের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। যাহােক, এগু

কণা-পদার্থবিজ্ঞানের আলােচনা, এ বিষয়ে এখানে আর কথা না বাড়ালাম। কলা বা ইলেকট্রন বিকিরণের জন্য অতি অবশ্যই আরেকটি বল সক্রিয় থাকে, বলাহবাহুল্য সেহ বলাট। নতাক্লয় বল তবে সবল নিউক্লিয় বলের মতো শক্তিশালী নয়। যেহেতু নিউক্লিয় বল হয়েও সে সবল বলের মতাে শক্তিশালী নয়।

তাহ তার নাম দেয়া হলাে দুর্বল নিউক্লিয় বল! দুর্ভাগ্যজনক নাম তার, নিঃসেন্দহে! এবং অন্য সব বলের মতাে এই বলের। মিথস্ক্রিয়ার জন্যও কণার ভূমিকা আছে। দেখা গিয়েছে W এবং Z বােসন নামক দু-ধরনের কণার বিনিময়ের ফলে এক ধরনের কোয়ার্ক অন্য ধরনের কোয়ার্কে পরিণত হয়। আরেকটু এগিয়ে বলি। এই যে নিউট্রন ভেঙে গিয়ে প্রােটন, অ্যান্টি-নিউট্রিনাে এবং ইলেকট্রন উৎপন্ন হয়, তারপর অ্যান্টি-নিউট্রিনাে আর ইলেকট্রন বেরিয়ে আসে, কিন্তু প্রােটন তাে রয়ে যায়। সেক্ষেত্রে নিউক্লিয়াসে প্রোটন-সংখ্যা বেড়ে যায় না? হ্যাঁ, যায় তবে! আর প্রােটন-সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ওই নিউক্লিয়াসটি ভিন্ন একটি

রাসায়নিক মৌলে পরিণত হয়। তার মানে, নক্ষত্রের ভেতরে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মৌল উৎপাদনে দুর্বল নিউক্লিয় বলে ভূমিকা অনস্বীকার্য। একইভাবে সুপারনােভা বিস্ফোরণেও এই বলের দারুণ ভূমিকা রয়েছে। যাহােক, দুর্বল নিউক্লিয় বল আসলে কতটা দুর্বল? তুলনা করলে বলা যায়, এটি সবল নিউক্লিয় বলের ১০ লক্ষ ভাগের এক ভাগ শক্তিশালী।

2
$ 0.94
$ 0.94 from @TheRandomRewarder
Avatar for alma45
Written by
3 years ago

Comments