মেয়েদের_মুখে_পুরুষের_মত_লোম_গজানোর_কারণ_ও_প্রতিকার

1 10
Avatar for alma45
Written by
3 years ago

#মেয়েদের_মুখে_পুরুষের_মত_লোম_গজানোর_কারণ_ও_প্রতিকার:

নারী-পুরুষ সবার শরীরেই কম বেশি লোম রয়েছে। এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু পুরুষ আর নারীভেদে লোমের ধরন ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির। নারীর ক্ষেত্রে লোম অনেক হালকা পাতলা ধরনের। পুরুষদের ক্ষেত্রে ঘন কালো, মোটা লোমই আমরা দেখতে পাই। এই ব্যাপারটি যদি অন্য রকম হয়, তবেই তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। মেয়েদের মুখে যদি ছেলেদের মত লোম গজাতে শুরু করে তথা মুখে অবাঞ্ছিত লোম গজাতে থাকে, তবে তা খুব বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যই নয়, শরীরের অনেক রোগের কারণেও এমন অবস্থা হতে পারে। তাই চিকিৎসা নেয়াটাও জরুরী।

#কেন_মুখে_অবাঞ্ছিত_লোম_গজাতে_শুরু_করে?

হরমোনের ভারসাম্যহীনতাই মূলত এর জন্য দায়ী। প্রত্যেক নারী ও পুরুষের শরীরে টেসটোসটেরন( Testosteron) নামক এক ধরনের হরমোন রয়েছে। এই টেসটোসটেরন হরমোনকে ‘পুরুষ হরমোন’ নামে অভিহিত করা হয়। পুরুষের পাশাপাশি মেয়েদের শরীরেও এই টেসটোসটেরন হরমোন সামান্য পরিমাণ থাকে। কিন্তু মেয়েদের শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকলে অথবা হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে মেয়েদের শরীরেও পুরুষের মত অধিক লোম গজাতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মেয়েদের এই শারীরিক সমস্যাটিকে হারসুটিজম (Hirsutism) বলা হয়৷ উল্লেখ্য, মহিলারা মহিলা,কারণ তাদের দেহে মহিলা হরমোন (ইস্ট্রোজেন) বেশি থাকে৷ আর পুরুষরা পুরুষ, কারণ তাদের দেহে পুরুষ হরমোন (টেস্টোস্টেরন) বেশি থাকে৷

লোম ঘন হওয়া ছাড়াও আরো কিছু সমস্যা দেখা দেয় যেমন: শারীরিক গঠনে পুরুষালি ভাব, ঘাড়ে কালো দাগ, গলার স্বরে অস্বাভাবিকতা, অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ওজন বৃদ্ধি, ব্রণ ইত্যাদি৷

#কাদের_হারসুটিজম_হতে_পারে?

– সাধারণত মেনোপজ হয়ে গিয়েছে বা হচ্ছে এই সময়টা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।মেনোপজ হল সেই বয়স যখন মাসিক একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়ে হরমোন পরিবর্তন হয়ে যায়, তাই ঝুঁকি বেশি। তবে যে কোন বয়সেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

– অবিবাহিত মহিলাদের মাসিকের অনিয়মিত অবস্থাও এর সাথে বিদ্যমান থাকতে দেখতে হবে।

– বিবাহিত হলে অনিয়মিত মাসিকের সাথে সন্তান হওয়া বা না হওয়ার সম্পর্ক জড়িত থাকে। সেক্ষেত্রেও রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে।

#অন্যান্য_কারণগুলো_হল:

✅কুশিং সিনড্রোম

✅মেনোপজ এবং তৎসংযুক্ত হরমোনের ভারসাম্যহীনতা

✅কোনও ওষুধের কারণে

✅এড্রিনাল হাইপারপ্লেসিয়া

✅থাইরয়েডের নিষ্ক্রিয়তা

✅অত্যন্ত বিরল ক্ষেত্রে, এন্ড্রোজেন-ক্ষরণকারী টিউমারগুলি হারসুটিজমের কারণ হতে পারে৷

#কখন_চিকিৎসকের_পরামর্শ_নিতে_হবে?

১) লোম খুব দ্রুত হারে বাড়তে থাকলে।

২) আরও কিছু পুরুষদের লক্ষণ বিদ্যমান থাকলে, যেমন-কণ্ঠস্বর পরিবর্তন,ব্রণ হওয়া , পেশি বেড়ে যাওয়া, ব্রেস্ট ছোট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

৩) সাথে যদি পিরিয়ডের সমস্যা থাকে।

#রোগ_নির্ণয়_(Diagnosis):

ব্লাড টেস্ট করে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। কিছু হরমোন লেভেল দেখতে হয়। যেমন-

– Testosterone

– Dihydroepiandrosterone sulfate (DHEA-S)

– Luteinizing hormone (LH)

– Follicle stimulating hormone (FSH)

– Prolactin

– 17-hydroxyprogesterone

#মুখে_অবাঞ্ছিত_লোম_এর_চিকিৎসাঃ

১) বাড়িতে বসে চিকিৎসা: এটি একটি দীর্ঘদিনের রোগ। চিকিৎসাও অনেক ধৈর্য নিয়ে করতে হয়। যদি বাড়তি ওজন থাকে, নিয়মিত ব্যায়াম করে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে। কম ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতে হবে।

অবাঞ্ছিত লোম দূরীকরণ:

– ব্লিচ করার মাধ্যমে লোম হালকা করা যায়, যাতে চোখে না পড়ে।

– শেভিং করা যেতে পারে, যদিও এতে লোমের গোঁড়া মোটা হয়ে যায়।

– ওয়াক্সিং করে লোম দূর করা যায়।

– হেয়ার রিমুভাল ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।

– প্লাকিং করেও লোম তোলা যেতে পারে।

– থ্রেডিং করেও লোম থেকে সাময়িকভাবে মুক্তি পাওয়া যায়।

২) লেজার চিকিৎসা:

উপরের সবগুলো পদ্ধতি থেকে এই পদ্ধতি তুলনামূলক ভাবে স্থায়ী এবং কার্যকরী। তবে এক্ষেত্রে কয়েকবার চিকিৎসা নিতে হয়। এ পদ্ধতিতে লোমের গোঁড়ায় রশ্মি ফেলা হয় যাতে গোঁড়াটা নষ্ট হয়ে যায় এবং নতুন ভাবে গজাতে না পারে। এটি কিছুটা ব্যয়বহুল এবং দক্ষ চিকিৎসকের প্রয়োজন হয়।

৩) ইলেক্ট্রোলাইসিস: এর মাধ্যমেও লোম স্থায়ীভাবে নির্মূল করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ইলেকট্রিক মেশিনের সাহায্যে হেয়ার ফলিকল নষ্ট করা হয়।

৪) ম্যাডিকেশন: জন্ম বিরতিকরণ পিল

অ্যান্টি-এন্ড্রোজেন ম্যাডিকেশন- যেমন স্পাইরোনোল্যাকটোন (Spironolactone)। এই চিকিৎসাগুলো সময়সাপেক্ষ।

এভাবেই ঘরোয়া যত্ন, ওজন কমানো , খাদ্যাভ্যাস, লোম অপসারণ এবং চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে আপনি সহজেই মুখের অবাঞ্ছিত লোম থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

2
$ 0.13
$ 0.13 from @TheRandomRewarder
Avatar for alma45
Written by
3 years ago

Comments