♥ লাউয়ের ইংরেজি নাম Bottle gourd.এটি সাধাররণত শীতকালীন সবজি।কিন্তু সারা বছর পাওয়া যায়। লাউ সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ভেষজ গুন সম্পন্ন সবজি।এর খোসা,শ্বাঁস,পাতা সবইই খাওয়া যায়।
♥ লাউয়ের _ পুষ্টিগত _ উপকারিতা : -
★লাউয়ে প্রচুর ফাইবার আছে,যা খিদে কমায়,তাই ওজন কমে।
★এর নিউরো ট্রান্সমিটার মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।ফলে স্ট্রেস,ডিপ্রেশন সহ মেন্টাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কমে।
★এর ভিটামিন - কে বিপাকে সহায়তা করে।
★লাউয়ের প্রচুর পানি ও দ্রবণীয় ফাইবার হজম ক্ষমতা উন্নতি করে,অ্যাসিডিটি ও কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমায়।
অদ্রবণীয় ফাইবার অর্শ্ব,পেট ফাঁপা,পাইলসের সমস্যা দূর করে।
★এতে ৯৬ শতাংশ পানি আছে,যা পানি শূন্যতা কমায়।
★উচ্চ রক্ত চাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েটে লাউ রাখলে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো হয় ও রক্তে সুগার লেভেল স্বাভাবিক থাকে।কারণ লাউ ভিটামিন সি এর ভালো উৎস এবং এ্যান্টি অক্সিডিন্ট সমৃদ্ধ ।
২৫০ গ্রাম লাউ খেলে ২৫ এমজি ভিটামিন - সি পাই,যা সারা দিনের চাহিদার প্রায় অর্ধেক।
★এর রস অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা দূর করে।
★হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ ,দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ও অস্বস্তি দূর করতে সপ্তাহে ২ - ৩ দিন এর রস খেতে হবে। কারণ এতে প্রচুর খনিজ উপাদান আছে।
★লাউয়ের প্রাকৃতিক প্রোটিন ও ভিটামিন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে,ব্রণের প্রতিরোধ করে,ধরুন মাত্রাতিরিক্ত ঘাম দূর করে,আয়ু বৃদ্ধি করে।
★লাউ অতিরিক্ত পিত্ত বরোনো বন্ধ করে বলে বদ হজম হয় না।
★শীতের শুরুতে এর রস খেলে মেয়েদের ইউরিনারিট্রাক্ট ইনফেকশনের সম্ভাবনা কম থাকে।
★প্রতিদিন লাউয়ের রসের সাথে লেবুর রস খেলে রোগ - প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়।
★এতে প্রচুর পানি থাকায় প্রস্রাব ভালো হয়, প্রস্রাব হলুদ হয় না।ফলে 'ইউ টি আই' রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কমে যায়।
★জন্ডিস ও কিডনি রোগীদের জন্য উপকারী।মূত্র নালির সংক্রমণ,কিডনি ফেইলিউর এর বিরুদ্ধে কাজ করে।
★ক্লান্তি দূরর করে,এটা ভালো ডিটক্সিফায়ার ( যা শরীর থেকে বাজে ও ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে )।
★গরম কালে আমাদের পাচন তন্ত্র দুর্বল থাকে,তখন লাউ উপকারী। লাউ গা গলানো ও বমি ভাব দূরর করে।পাচন তন্ত্র ও তন্ত্র ঠিক রাখে।
★লাউয়ে কোলেস্টেরল নেই বললেই চলে ও ক্যালরি ও কম।তাই ডায়াবেটিস রোগীদের পিঁপাসা কমায়।
★লাউ যকৃত ভালো রাখে ও যকৃতের ফোলা রোধ করে।
★লাউ + আদা রস করে খেলে, শরীরের পেশির ক্ষয় রোধ করে ও পেশি ভালো রাখে।কারণ লাউয়ে পপটাসিয়াম ও অন্যান্য অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে।
★এর ভিটামিন বি চুলের অকাল পক্কতা রোধ করে।
★এর ভিটামিন সি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখে,মস্তিষ্ক সচল রাখে,শরীরে কোলাজেন ( যা একটি প্রোটিন,শরীরের টিসুকে শক্তিশালী করে ) উৎপন্ন করে।
★লাউয়ের দস্তা, ভিটামিন সি ত্বকের অকাল বার্ধক্য ও কুচকে যাওয়া রোধ করে,স্নায়ু ভালো রাখে,সর্দি,কাশি,জ্বর রোধ করে।
♥ প্রচন্ড গরম,এই গরমে নিজেকে সতেজ ও শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজন লাউয়ের রসের।
♦ প্রতি ১০০ গ্রাম লাউয়ে রয়েছে -
★ ক্যালরি - ১৫ কিলো ক্যালরি
★পানি - ৯৬ শতাংশ
★কার্বোহাইড্রেট - ২.৫ গ্রাম
★প্রোটিন - ০.২ গ্রাম
★ফ্যাট - ০.৬ গ্রাম
★ভিটামিন - সি ৬ গ্রাম
★ক্যালসিয়াম - ২০ মি.গ্রাম
★ফসফরাস - ১০ মি. গ্রাম
★পপটাসিয়াম - ৮৭মি.গ্রাম
★নিকোটিনিক অ্যাসিড - ০.২ মি.গ্রাম
- এছাড়াও খনিজ লবণ, ভিটামিন - বি১, বি২, আয়রন প্রভূতি উপাদান।
♥ লাউয়ের রস তৈরির পদ্ধতি : -
★লাউয়ের ছাল ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে ধুয়ে ব্লেন্ডার দিয়ে রস করে নিন।
★এর সাথে একটু গোল মরিচ গুড়া, পরিমাণ মত লবণ ও পুদিনা পাতা মিশিয়ে নিন।
★ এবার এক চা- চামচ আদা বাটা যোগ করুন।
★শেষে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে খেয়ে নিন। কয়েক টুকরো বরফের টুকরো যোগ করতে পারেন বেশি গরমে।
♦ দৈহিক পরিশ্রমের পর লাউয়ের রস খেলে উপকার হয়।কারণ দৈহিক পরিশ্রমের পর আমাদের শরীরে গ্লুকোজ ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম হয়ে যায়।তাই গ্লুকোজ ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ ঠিক রাখতে লাউয়ের রস খেলে ভালো।
এছাড়াও শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে,যা ডায়রিয়া,জ্বর,গরমে উপকারি ভূমিকা পালন করে।