⚛️পাকা জামের মধুর রসে
রঙিন করে মুখ।⚛️
⚛️ঠিকই ধরেছেন,আজ কথা হবে,জাম নিয়ে।
⚛️প্রথমেই জেনে নিন জামের পুষ্টি-
প্রতি ১০০ গ্রাম পুষ্টিগত মান
➡️শক্তি ৬০ কিলোক্যালরী,
➡️ শর্করা ১৫.৫৬ গ্রাম,
➡️স্নেহ পদার্থ ০.২৩ গ্রাম,
➡️প্রোটিন ০.৭২ গ্রাম,
➡️ভিটামিন এ ৩.০ আন্তর্জাতিক একক,
➡️থায়ামিন বি১ ০.০০৬ মিলিগ্রাম, ➡️রিবোফ্লাভিন বি২ ০.০১২ মিলিগ্রাম,
➡️ন্যায়েসেন বি৪ ০.২৬০ মিলিগ্রাম, ➡️প্যানটোথেনিক অ্যাসিড বি৫ ০.১৬০ মিলিগ্রাম,
➡️ভিটামিন বি৬ ০.০৩৮ মিলিগ্রাম, ➡️ভিটামিন সি ১৪.৩ মিলিগ্রাম, ➡️ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম,
➡️লোহা ০.১৯ মিলিগ্রাম,
➡️ম্যাগনেসিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম, ➡️ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম,
➡️পটাশিয়াম ৭৯ মিলিগ্রাম,
➡️সোডিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম,
➡️পানি ৮৩.১৩ গ্রাম।
⚛️এবার জাম কেনো খাবেন তা নিয়ে জেনে নেয়া যাক-
➡️ভিটামিন সি
জামে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। এই ফল ভিটামিন সি-এর অভাবজনিত রোগ যেমন-মুখের দুর্গন্ধ রোধ, দাঁত মজবুত, মাঢ়ি শক্ত এবং মাঢ়ির ক্ষয়রোধেও জামের জুড়ি নেই ।ভিটামিন সি প্রোটিন সংশ্লেষণের সাথে জড়িত এবং শরীরের কোলাজেন এবং নির্দিষ্ট নিউরোট্রান্সমিটার উৎপাদন করার জন্য এটি প্রয়োজনীয়,কারণ ক্ষত সারাতে এদের ভূমিকা রয়েছে।
ভিটামিন সি এন্টিঅক্সিডেন্ট সম্পন্ন এবং ইমিউন সিস্টেমের কার্যক্রমে জড়িত।
➡️ফাইবার
ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা এবং চিনির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খাবারে দু' রকমের আঁশ থাকে, দ্রবণীয় এবং দ্রবণীয়।
দ্রবণীয় ফাইবার পানিতে দ্রবীভূত হয় এবং এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে এবং ভালো কোলেস্টেরল তৈরী করে।
অদ্রবণীয় ফাইবার পানিতে দ্রবীভূত হয় না তবে তা হজমে সাহায্য করে।
জামে দ্রবণীয় এবং দ্রবীভূত উভয় প্রকারের ফাইবার থাকে।
➡️রক্ত জমাট বাঁধতে
জাম ভিটামিন কে এর একটি দুর্দান্ত উৎস।তাই রক্ত জমাট বাঁধার জন্য এটি প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ।
➡️ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
জামে কম পরিমাণে ক্যালোরি থাকে, যা ক্ষতিকর তো নয়ই বরং স্বাস্থ্যসম্মত। তাই যারা ওজন নিয়ে চিন্তায় আছেন এবং নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন, তাদের খাদ্য তালিকায় আসতে পারে জাম।
➡️হার্ট ভালো রাখে
আগেই বলেছি জাম ভালো কোলেস্টেরল তৈরী করতে সাহায্য করে।আর ভালো কোলেস্টেরলের কাজ হৃদপিন্ডকে ভালো রাখে। এছাড়া শরীরের দূষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।
➡️ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে-
বিভিন্ন গবেষণায় জামের কেমোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য প্রমাণিত হয়েছে। জাগেতিয়া জিসি এন্ড কলিগস এর করা এক গবেষণা মতে জানা যায় যে, জাম ফলের নির্যাসে রেডিওপ্রোটেক্টিভ উপাদান আছে। এতে আরো বলা হয় জামের নির্যাস ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকেলের কাজে এবং বিকিরণে বাধা দেয়।
➡️আয়নরের ঘাটতি পূরণ করে-
জামের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে আয়রন একটি। এই আয়রন দেহের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। জাম ফলে থাকা আয়রন অ্যানিমিয়া নিরাময় করে এবং বিভিন্ন ধরনের আয়রনঘটিত সমস্যার সমাধান করে।
➡️ত্বক ও চুলের যত্নে
জামে পাওয়া গেছে অ্যালার্জিক নামে এক ধরনের এসিডের উপস্থিতি, যা ত্বককে করে শক্তিশালী। ক্ষতিকর আলট্রা-ভায়োলেট রশ্মির প্রভাব থেকে ত্বক ও চুলকে রক্ষা করে। এ অ্যালার্জিক এসিড ক্ষতিকর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাশের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে।
➡️ডায়াবেটিস নিরাময়ে সাহায্য করে
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম ভীষণ উপকারী। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জাম খাওয়ার ফলে ৬.৫ শতাংশ মানুষের ডায়াবেটিক কমে গেছে। এটি রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জাম ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে শরীর সুস্থ রাখে।
➡️মস্তিষ্কের শক্তি বাড়িয়ে তুলে-
নিউট্রিশনাল নিউরোসায়েন্স জার্নালের একটি প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত জাম খেলে মোটর এবং মস্তিষ্কের কার্যকরিতার উন্নতি ঘটে এবং ইউরোপীয় জার্নাল অফ নিউট্রিশনের একটি সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে জামে বিদ্যমান পলিফেনল সামগ্রীর জন্য মস্তিষ্কে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব প্রদান করতে পারে।এছাড়াও রয়েছে মিনারেল ম্যাঙ্গানিজ যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
⚛️কিছু টিপস না দিলে অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে-
#খালি পেটে জাম খাবেন না।
#জাম খাওয়ার পর দুধ খাবেন না।
#অতিরিক্ত জাম খেলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকভাব হতে পারে।
#অন্ত্রের সার্জারি হয়ে থাকলে জাম খাবেন না।
⚛️সবশেষে জামের ক্ষতি নেই বললেই চলে।তাই নিয়ম করে জাম খান,নিজে সুস্থ থাকুন সাথে পরিবারকেও সুস্থ রাখুন।