ইলিশকে বলা হয় মাছের রাজা! এই নামকরণ হয়েছে মূলত তার স্বভাব ও স্বাদের আভিজাত্যের জন্য।
ইলিশের জীবন- চক্র খুবই বৈচিত্র্যময়। সমুদ্র তাদের কাছে শ্বশুরবাড়ির মত আর নদী তাদের কাছে বাপের বাড়ির মত।
তাইতো আমরা দেখি প্রজনন (ডিম পাড়ার সময়) মৌসুমে তারা ঝাঁকে ঝাঁকে মিঠাপানির নদীর দিকে ছুটে আসে- অনেকটা আমাদের দেশের গৃহবধুর মত।আরো মজার বিষয়।অনুকুল পরিবেশ না পেলে মা ইলিশ ডিম পাড়ে না। আমাদের দেশের মহিলারাও সন্তান প্রসবের সময় মায়ের বাড়ি বেশি পছন্দ করে।
কি বিচিত্র মিল!!!!
সমুদ্র থেকে যত নদীর দিকে চলে আসতে থাকে ততই ইলিশমাছ থেকে লবণাক্ত ভাব চলে যেতে থাকে,মাছের স্বাদ বৃদ্ধি পেতে থাকে।ইলিশ মাছের গায়ের চকচকে রুপালী ভাবটা ফিরে আসতে থাকে।তাইতো পদ্মা,মেঘনার ইলিশ সুস্বাদু এবং দেখতে সুন্দর।
পুরুষ আর নারী ইলিশের অনুপাত আকাশ - পাতাল।
শতকরা ৯০-৯৫% মাছ নারী।একটি স্ত্রী ইলিশ একবারে ১ থেকে ২ মিলিয়ন ডিম ছাড়ে।এর দশ শতাংশ মাছ যদি বেচে যেয়ে পূর্নতা পায়,তাহলে নদীগুলি ইলিশে পরিপূর্ণ থাকতো।সারাবিশ্বে আহরিত ইলিশের ৮৬% মাছ বাংলাদেশের।পুরো জনসংখ্যার ২% কোন না কোনভাবে ইলিশের সাথে জড়িত।আর জিডিপির ৬% আসে ইলিশ সহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত থেকে।ইলিশের সাথে বাংগালীর আবেগ,ঐতিহ্য, আভিজাত্য, রাজনীতি জড়িত।
ইলিশর স্বাদের ও গন্ধের রহস্য হচ্ছে নির্দিষ্ট ফ্যাটি অ্যাসিড এর উপস্থিতি ও এর শারীরিক বিন্যাস।অনেক কাঁটা যেমন এর ঝামেলা ঠিক স্বাদের ও কারণ।
অনেকের ইলিশ মাছের allergy প্রবণতা দেখা যায়।এর কারণ ইলিশের গায়ে সুস্বাদু কালো অংশে হিস্টামিনের উপস্থিতি।এছাড়া cooling temperature গেলে মাছের বডিতে ও হিস্টামিন গ্রো করে।
মাঝে আমাদের দেশে ইলিশ মাছ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিন্তু অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও আশানুরূপ স্বাদ,গন্ধ না পাওয়ায় বাতিল করা হয়।
ইলিশ শুধু স্বাদেই অতুলনীয় তা নয় গুণেও অনন্য।
প্রতি 100 gram ইলিশের গুণাগুণ-
- Calorie 309.58
- Total Fat 22 gram
- protein 25 gram
- Carbohydrate 3.29 gram
- Calcium 24.12 mg
- vitamin C 27.22 mg
- Iron 2.38 mg
ইলিশ নিয়ে ও অনেক দুর্নীতি আছে।সামুদ্রিক কিছু মাছকে ইলিশ বলে বিক্রি করে একদল অসাধু ব্যবসায়ী।
সবাই স্বাদ ও গুন সম্পন্ন মাছটি খান ও ভালো থাকুন।