🐟🐟মাছের রাজা ইলিশ,আসুন জেনে নিই আমাদের জাতীয় এই মাছ ইলিশ সম্পর্কে 🐟 🐟
১০০ গ্রাম ইলিশে প্রায় ২১ দশমিক ৮ গ্রাম প্রোটিন।১৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম,২৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৩.৩৯ গ্রাম শর্করা, ২.২ গ্রাম খনিজ ও ১৯.৪ গ্রাম চর্বি। তাছাড়া আরোও রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ওমেগা তিন ফ্যাটি এসিড, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন, বি ১২, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সহ অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলস।আরও আছে জিঙ্ক, ক্রোমিয়াম,আয়রন, সেলেনিয়ামের মতো খনিজও রয়েছে ইলিশ মাছে৷ জিঙ্ক ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে খুব ভালো৷ সেলেনিয়াম আবার অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কাজ করে৷।ইলিশ মাছে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই৷ বিশেষ করে ভিটামিন ডি কিন্ত্ত খুব কম খাবারেই পাওয়া যায়৷তাই ইলিশ মাছ সপ্তাহে বা মাসে ১ বার রাখার চেষ্টা করা যেতে পারে।
বর্তমানে ইলিশ মাছ বিভিন্ন খাওয়া যায় । যেমন ভুনা ইলিশ, ভাপা ইলিশ পাতুরি, সর্ষে ইলিশ,দই ইলিশ, ইলিশের টক, ভাজা ইলিশ ইত্যাদি । তবে ইলিশ মাছের পাশাপাশি ইলিশ মাছের ডিম ও খুব সুস্বাদু।
🔵আসুন জেনে নেয়া যাক ইলিশের উপকারিতা:
⭕ ইলিশ মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম। অন্য দিকে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকায় রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে। ফলে হার্ট থাকে সুস্থ।
⭕ সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে ওমেগা ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। নিয়মিত মাছ খেলে একজিমা, সোরেসিসের হাত থেকে রক্ষা পায় ত্বক। ইলিশ মাছে থাকা প্রোটিন কোলাজেনের অন্যতম উপাদান। এই কোলাজেন ত্বক টাইট ও নমনীয় রাকতে সাহায্য করে।
⭕ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে অস্টিওআর্থারাইটিসের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে। প্রতি দিনের ডায়েটে সামুদ্রিক মাছ থাকলে বাতের ব্যথা, গাঁট ফুলে গিয়ে যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
⭕ তেলযুক্ত মাছ খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভাল থাকে, চোখ উজ্জ্বল হয়। বয়সকালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসার মোকাবিলা করতে পারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ইলিশ মাছের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ রাতকানার মোকাবিলা করতেও সাহায্য করে।
⭕ ইলিশ মাছে রয়েছে আয়ডিন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম। থায়রয়েড গ্ল্যান্ড সুস্থ রাখে আয়ডিন, সেলেনিয়াম উত্সেচক ক্ষরণে সাহায্য করে যা ক্যানসারের মোকাবিলা করতে পারে। এ ছাড়াও ভিটামিন এ ও ডি-র চমৎকার উৎস হল ইলিশ মাছ।
⭕বহু গবেষণায় দেখা গিয়েছে সামুদ্রিক মাছ ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কার্যকরী। শিশুদের ক্ষেত্রে হাঁপানি রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ। যাঁরা নিয়মিত মাছ খান তাঁদের ফুসফুস অনেক বেশি শক্তিশালী হয়।
⭕ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড অবসাদের মোকাবিলা করতে পারে। সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার (SAD), পোস্ট ন্যাটাল ডিপ্রেশন কাটাতে পারে ইলিশ মাছ।
⭕সামুদ্রিক মাছে থাকা ইপিএ ও ডিএইচএ ওমেগা-থ্রি-অয়েল শরীরে ইকসিনয়েড হরমোন তৈরি রুখতে পারে। এই হরমোনের প্রভাবে রক্ত জমাট বেঁধে শিরা ফুলে যায়। ইলিশ মাছ খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। থ্রম্বসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
⭕ ডায়েটে তেলযুক্ত মাছ থাকলে পেটের সমস্যা অনেক কম হয়। আলসার, কোলাইটিসের হাত থেকে রক্ষা করে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যসিড।
⭕ভাঁপা ইলিশ, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো বা যেকোন সবজি দিয়ে রান্না ইলিশ, কম তেলে রান্না ইলিশ ইত্যাদি অনেক উপকারী মেন্যু। তাই ইলিশের স্বাদ ও পুষ্টি পেতে হলে সঠিক উপায়ে রান্না করা অনেক জরুরি।
⭕মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশই তৈরি ফ্যাট দিয়ে। যার অধিকাংশই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। যাঁরা নিয়মিত মাছ খান তাঁদের মধ্যে বয়স কালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক কম দেখা যায়। শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনেও সাহায্য করে ডিএইচএ। অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার(ADHD) রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ। স্মৃতিশক্তি, পড়াশোনায় মনযোগ বাড়ায়।
⛔সতর্কতা :
🚩ইলিশ মাছ তেলে ভেজে খেলে এর মধ্যে ফ্যাট ও ক্যালরির মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তখন উপকার কম হয়।কড়া তেলে ভাজা ইলিশ, ঝলসানো ইলিশ তেমন একটা স্বাস্থ্যকর হয় না।এতে অনেক পুষ্টিগুন নষ্ট হয়ে যায়।
🚩ইলিশ মাছ খেলে কারো শরীরে অ্যালার্জি বা গ্যাসের উদ্রেক হতে পারে। সেক্ষেত্রে আগে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ইলিশ মাছের বিরূপ প্রভাব আছে কিনা। থাকলে এড়িয়ে চলাই ভাল।