♥ হার্ট ব্লক বা হৃতপিন্ডের ধমনী ব্লক বা করোনারি আর্টারি ডিজিজ :
চর্বি জাতীয় পদার্থ জমা হতে হতে রক্তনালীর মধ্য দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার পথকে সম্পূর্ণ বা আংশিক ভাবে বন্ধ (ব্লক) করে দেওয়াকেই ব্লক বলা হয়।
♥লক্ষণ :
★হৃতপিন্ডে ব্লক থাকলে বুকে ব্যথা হয়। আস্তে আস্তে ব্যথা বাম দিক হতে ছড়িয়ে পড়ে।
★গলা,কপাল ও মাথা ঘাম হয়।
★খাবার হজম না হওয়ার মতো অস্বস্তি লাগে।
★ সামান্য সময় হাঁটা বা ছোট ছোট কাজে অল্পতেই হাপিয়ে উঠা এবং নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
★ বমি বমি ভাবের পাশাপাশি পেটের নিচের দিকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
★ রক্তের মাধ্যমে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌছাতে পারে না।ফলে অজ্ঞান হওয়া,অতিরিক্ত দুর্বলতা এবং উদ্বেগ ও অস্হিরতা অনুভূত হয়।
★রক্ত সঞ্চালনে বাঁধা তৈরি হয়।ফলে হৃতপিন্ড রক্ত সন্ঞালনের জন্য পাম্প হতে থাকে।
এছাড়াও ব্লকের কারণে সঠিক ভাবে হৃতপিন্ড রক্ত পাম্প করতে পারে না।ফলে অনিয়মিত হ্নদস্পন্দনের সৃষ্টি হয়।এতে করে বুকে ব্যথা ও মাথা ঘোরায়।
★ধমনী ব্লকের মধ্যে এনজিনা একটি লক্ষণ।ফলে বুকের মাঝে ব্যথা ও অস্বস্তি অনুভব হয়।
এই ব্যথা সাধারণত ( বুক ভারী লাগা, বুক চেপে ধরা,বোধ শক্তি হারিয়ে ফেলা ও জ্বালাপোড়া) ধরণের হয়ে থাকে।
এই ব্যথা পরবর্তীতে বাহু,পিঠ,ঘাড়,পাকস্থলী ও চোয়ালের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
♥ কারণ :
★ভ্রান্ত ও অবৈজ্ঞানিক জীবনাচর।
★অতৃপ্তি,অশান্তি,অস্থীরতা,অতিরিক্ত চিন্তা।
★অস্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস -তৈলাক্ত,চর্বিযুক্ত খাবার,ফাস্ট ফুড খাওয়া ,ফল ও শাকসবজি কম খাওয়া।
★মেদ,স্থুলতা,উচ্চ রক্তচাপ,ডায়াবেটিস, রক্তের উচ্চ কোলেস্টেরল,ধুমপান।
★শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করা।
এই সমস্ত কারণে ধমনীর গায়ে চর্বি জমে তা ক্রমান্বয়ে সুরু হতে থাকে।এটা শতকরা ৫০ ভাগ এর বেশি হলে হৃতপিন্ডের রক্ত প্রবাহ অনেক কমে যেতে থাকে এবং রোগী সামান্য কারণে পরিশ্রমে বা টেনশনেই বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারে।ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়ে রোগী মারা যেতে পারে।
বহুবিধ কারণে হার্ট ব্লকের চর্বি জাতীয় বস্তুতে রক্তক্ষরণ ঘটতে পারে।এতে প্রদাহ দেখা দিতে পারে বা চর্বি জাতীয় বস্তুর ওপর রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালীতে রক্ত প্রদাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারে।
ব্লকের ভাটির দিকের অংশে রক্ত সরবরাহ কমে যাওয়ায় হার্টের ওই অংশের মাংস পেশি অক্সিজেন ও খাদ্য সরবরাহ খেকে বঞ্চিত হয়। ফলে হার্টের পাম্পিং কমে যায়। রক্ত সরবরাহ কমে গিয়ে রোগীর মৃত্যুও ঘটে।
রক্ত নালীতে চর্বি জাতীয় বস্তু খুব ধীরে ধীরে জমা হতে থাকে। তাই হার্ট ব্লক খুবই ধীর গতিতে বৃদ্ধি পায় ।ব্লক ১০% থেকে ৮০% - এ পৌছালে ব্যক্তি ভেদে ১০ - ৩০/৪০ বছর সময় লাগতে পারে।
★★তাই হার্টের ব্লক হবার পরেও সঠিক চিকিৎসা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে সুস্থ থাকা সম্ভব।