গ্রীক শব্দ Az-MA থেকে Asthma শব্দের উৎপত্তি যার অর্থ ‘দ্রুত নিঃশ্বাস নেয়া'। এ্যাজমা এমন একটি অবস্থা যাতে ফুসফুসের বায়ুনালীসমূহ আক্রান্ত হয়।
এ্যাজমায় আক্রান্ত হলে ফুসফুসের বায়ুবাহী নালীসমূহ অত্যাধিক সংবেদনশীল (Hyper active) হয়ে যায় এবং সহজে ফুটে ওঠে ও প্রদাহিত হয়। ফলশ্রুতিতে বায়ু চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।
শ্বাস-প্রশ্বাস বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি যা দেহের কোষ ও কলায় পরিমিত অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড বের করে দেয়।
বায়ুমন্ডলীয় অক্সিজেন নিঃশ্বাসের মাধ্যমে শ্বসনতন্ত্রের শ্বাসনালী (Trachea), ব্রঙ্কাই (Bronchi) ও ব্রঙ্কিওল (Bronchiole) পেরিয়ে সব শেষ এলভিওলাই (Alveoli) বা বায়ু কুঠুরীতে পৌঁছে। সেখানেই গ্যাসের আদান প্রদান সম্পন্ন হয়।
💢প্রকারভেদ:
#তীব্রতা অনুসারে এ্যাজমা
১.তীব্র হাঁপানি (Acute asthma)- এতে ফুসফুসের বায়ুবাহী নালীসমূহ আকস্মিকভাবে সংকুচিত হয় ও শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্টের সৃষ্টি করে।
২. দীর্ঘমেয়াদী হাঁপানি (Chronic Asthma)- এতে ঘন ঘন এ্যাজমায় আক্রান্ত হয় এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে ও প্রতিরোধে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
#কারণ অনুসারে এ্যাজমা:
১.এলার্জিক এ্যাজমা (Extrinsic asthma)- সাধারণত কোন এলার্জেন বা এন্টিজেন নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকলে আমাদের ইমিউন সিস্টেম-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। যেমন- ফুলের রেণু, বিভিন্ন প্রাণীর লোম, মাইট ও ধুলাবালি ইত্যাদি। ফলশ্রুতিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয় ও হাপানী দেখা দেয়। একে এটোপিক এ্যাজমা বা এলার্জিক এ্যাজমাও বলা হয়।
২. নন এলার্জিক এ্যাজমা (Intrinsic asthma)- এ ধরনের এ্যাজমা এলার্জি ঘটিত নয় বরং ধূমপান, রাসায়নিক দ্রব্য, জীবাণুর সংক্রমণ, মানসিক চাপ, অট্টহাসি, অধিক ব্যায়াম, এস্পিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন, খাদ্য সংরক্ষণকারী উপাদান, পারফিউম, অত্যাধিক ঠান্ডা, গরম, আর্দ্র ও শুষ্ক বাতাসের কারণে দেখা দেয়।
#অন্যান্য এ্যাজমা
👉মিশ্র এ্যাজমা (Mixed asthma)- এক্ষেত্রে রোগী পূর্বোক্ত এলার্জিক ও নন-এলার্জিক দু'ধরনের এ্যাজমাতেই ভোগেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রকোপ বেড়ে যায়।
👉রাত্রিকালীন এ্যাজমা (Nocturnal asthma)- এ ধরনের হাঁপানি রাতের বেলা, বিশেষতঃ রাত ২ টা থেকে ৪ টার মধ্যে আক্রমণ করে। রোগীর শারীরিক দুর্বলতার জন্য রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে। এমনকি দিনের বেলায় স্বল্পকালীন নিদ্রা যায়। রাত্রিকালীন এ্যাজমা গুরুত্বের সহিত নেয়া উচিত কারণ এ ক্ষেত্রে রেসপিরেটরী এরেস্ট হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
👉 ব্রঙ্কিয়াল এ্যাজমা (Bronchial asthma)- এটি মূলত: এক ধরনের এলার্জিক রিএ্যাকশন যাতে শ্বাসকষ্ট ও বুকে সাঁই সাঁই শব্দ হয়। শ্বাসনালীর চারপাশের পেশী ও মিউকাস মেমব্রেনসমূহের সংকোচন দেখা দেয়। শ্বাসনালীর সংক্রমণ, বায়ুবাহিত এলার্জেন, খাদ্যের এলার্জেন ও অত্যধিক মানসিক চাপ এর প্রধান কারণ।
👉কার্ডিয়াক এ্যাজমা (Cardiac asthma)- হৃদপিন্ড যখন তার স্বাভাবিক রক্ত সংবহন হারিয়ে ফেলে তখন পালমোনারি ইডিমা বা ফুসফুসে পানি জমে বায়ুনালীকে সংকুচিত করে ফেলে এবং হাঁপানি সৃষ্টি হয়। এটি অত্যন্ত মারাত্মক। ঘুমানোর কয়েক ঘণ্টা পর এটি আক্রমণ করে কারণ শুয়ে থাকলেই ফুসফুসে পানি জমে। শ্বাসকষ্টে রোগীর ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং কিছুক্ষণ বসে থাকার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
👉ব্যায়ামজনিত এ্যাজমা (Exereise indrced asthma)- এ ধরনের এ্যাজমা ব্যায়ামকালীন সময়ে অথবা ব্যায়ামের কিছুক্ষণ পর থেকে শুরু হয়। বিশেষতঃ শীতকালে এ ধরণের সমস্যা বেশি হয়।
👉পেশাগত এ্যাজমা (Occupational asthma)- অকুপেশনাল বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এ্যাজমা সাধারণত: চাকরি নেবার কয়েক মাস থেকে শুরু করে কয়েক বছরের মধ্যে দেখা দেয়। সাধারণত কর্মস্থল ত্যাগ করার সাথে সাথে বা ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে লক্ষণসমূহ কমে যায়।
‘স' মিলের গুড়া, রাসায়নিক ধোঁয়া, সর্বদা ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশ, সিমেন্ট কারখানা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী, আটা ও মসলার মিল, রাইস মিল, জুট মিল, স্পিনিং মিল, রংয়ের কারখানা, রাসায়নিক সার কারখানা, ফটোকপি মেশিন, ড্রাইভিং, পোল্ট্রি ফার্ম, বেডিং স্টোর ইত্যাদিতে কর্মরত শ্রমিকরা এ ধরনের হাপানিতে বেশি আক্রান্ত হন।
👉মওসুমি এ্যাজমা (Seasonal asthma)- মওসুমি এ্যাজমা সাধারণত: বিশেষ ঋতুতে দেখা দেয়। যেমন- কারো কারো গরমে এ্যাজমা বাড়ে, কারো ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফুল বাগানে এ্যাজমা বাড়ে। গাছ, ঘাস, ফুলের রেণু ইত্যাদিতেও এ্যাজমা বাড়ে।
👉নীরব এ্যাজমা (Silent asthma)- এ ধরনের হাঁপানির আক্রমণ অত্যন্ত ভয়াবহ ও জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। কোনরূপ পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই বা বুকে হালকা শব্দ করেই আক্রমণ করে।
👉কফ ভেরিয়েন্ট এ্যাজমা- এ ধরনের এ্যাজমা দীর্ঘমেয়াদী ও বিরক্তিকর কাশিযুক্ত হয়ে থাকে।
💢#কারণ:
অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট এমন একটা রোগ যার নির্দিষ্ট কোন কারণ জানা না গেলেও চিহ্নিত করা হয়েছে প্রধানত ২ টি কারণকে বলে জানালেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা.শাহরিয়ার জামান দীপ ।
১) ‘এটোপি’ বা বংশগত (Genetic) ও ‘এলার্জি’ পরিবেশগত উপাদান এবং
২) শ্বাসনালীর অতি-সক্রিয়তা (Bronchial hyper-responsiveness)
পৃথিবীজুড়ে ৩০ কোটি লোক অ্যাজমায় আক্রান্ত, যা ২০২৫ সাল নাগাদ ৪০ কোটিতে পৌছবে । বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ । যার মধ্যে ৪০লাখই শিশু ।
৬৫% মানুষের আক্রান্ত হবার কারণ এলার্জি । যুবক বয়সে অ্যাজমা আক্রান্তের হার ১৫% । পেশাগত ভাবে ‘potent sensitizer’ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫-২০% এজমায় আক্রান্ত হয় ।হাঁপানির প্রকৃত কারণ এখনও স্পষ্ট নয় তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগী বংশগত ভাবে এ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে জীবনের প্রথম দিকে যারা তামাক আসক্ত হয়ে থাকে, ফুসফুসের ইনফেকশনে (যেমন-নিউমোনিয়া) ভোগেন ও বিভিন্ন এলার্জেন এর সংস্পর্শে থাকেন তাদের এ্যাজমায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
#ট্রিগারিং ফ্যাক্টর
যে সকল ফ্যাক্টরগুলো শ্বাসকষ্ট বাড়ায় অথবা হাঁপানীকে মারাত্মক রূপ দেয় সেগুলোকে ট্রিগারিং ফ্যাক্টর বলে।
এরা মূলত: এ্যাজমা সৃষ্টি করে না তবে এ্যাজমার আক্রমণকে ত্বরান্বিত করে।
❤দু'ধরনের ট্রিগারিং ফ্যাক্টর রয়েছে-
💜#এলার্জিক ট্রিগারসঃ
+মাইট ( যা পুরনো ময়লা কাপড় চোপড়ে জন্মায়)
+বিড়ালের পশম, প্রস্রাব ও লালা
+কুকুরের পশম, প্রস্রাব ও লালা
+মেটাবাইসালফাইড (যা পানীয় ও খাদ্যে প্রিজারভেটিভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়)
+ফুলের রেণু বা Pollen
+ তুলার আঁশ, পাটের অাঁশ
+ঘরের ধুলাবালি
+স্যাঁতস্যাতে কার্পেট
+ পুরনো অপরিষ্কার উলের জামা কাপড়
💜#নন-এলার্জিক ট্রিগারস-
+ধোঁয়া
+ শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম
+গ্যাস, কাঠের গুঁড়া, কয়লা, কেরোসিন, পেট্রোল, ডিজেল
+প্রাকৃতিক গ্যাস, প্রোপেন, রান্নায় জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত কেরোসিন
+কুয়াশা ও ধোঁয়া
+শ্বাসনালীর ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন
+কাঠ পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া
+আবহাওয়া পরিবর্তন
+দীর্ঘক্ষণ ভ্রমণ
🤦♀কাদের হতে পারে এ্যাজমা বা হাঁপানি :
যে কোন বয়সের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর যে কারো হতে পারে। যাদের রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের হাঁপানি আছে তাদের এ রোগ হবার আশঙ্কা প্রবল। আবার দাদা-দাদীর থাকলে (বাবা-মা’র না থাকলেও) নাতি-নাতনী বা তাদের ছেলেমেয়েরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। পিতৃকুলের চেয়ে মাতৃকুল থেকে হাঁপানিতে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে এ্যাজমা বা হাঁপানীর মূল কারণ কিন্তু এলার্জি ।
🗣হাঁপানি রোগের লক্ষণসমূহ
💢#প্রধান লক্ষণসমূহ-
+ বুকে সাঁই সাঁই বা বাঁশির মত শব্দ হওয়া
+শ্বাস কষ্ট হওয়া
+বুকে চাপ অনুভব করা
+ দীর্ঘ মেয়াদী কাশিতে ভুগতে থাকা
+ব্যায়াম করলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া
💢#অন্যান্য লক্ষণসমূহ-
+শীতকালে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া
+ ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া
+কাশির সাথে কফ নির্গত হওয়া
+গলায় খুসখুস করা ও শুষ্কতা অনুভব করা
+রাতে কাশি বেড়ে যাওয়া
+নাড়ীর গতি দ্রুত হওয়া
+কথা বলতে সমস্যা হওয়া
+সর্বদা দুর্বলতা অনুভব করা
+দেহ নীল বর্ণ ধারণ করা
🌡#প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা:
রক্তের বিশেষ বিশেষ পরীক্ষাঃ বিশেষত রক্তে ইয়োসিনোফিল ও সিরাম আইজিই।
👉স্কিন প্রিক টেস্টঃ এই পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার উপর বিভিন্ন এলার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে (এ্যাজমার জন্য দায়ী) ধরা পড়ে।
👉বুকের এক্স-রেঃ হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই বুকের এক্স-রে করে নেয়া দরকার যে অন্য কোন কারনে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা ।
👉স্পাইরোমেট্রি বা ফুসফুসের ক্ষমতা দেখাঃ এই পরীক্ষা করে রোগীর ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায় ।
🌬🌬#হাঁপানি থেকে রক্ষা পাবার উপায়🤔🤔
👉বিছানা ও বালিশ প্লাস্টিকের সিট দিয়ে ঢেকে নিতে হবে বা বালিশে বিশেষ ধরনের কভার লাগিয়ে নিতে হবে।
👉ধুলো ঝাড়াঝাড়ি করা চলবে না।
👉ধোঁয়াযুক্ত বা খুব কড়া গন্ধওয়ালা পরিবেশে থাকা চলবে না।
👉গরম চা হাঁপানির টানে উপশমের কাজ করে। তবে দুধ চা একেবারেই খাবেন না। অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়িয়ে দেয় হাঁপানির টান। চলতে পারে গ্রিন টি বা লিকার চা।
👉পশু-পাখির রোমে অ্যালার্জি থাকলে ঋতুবদলের সময় পোষ্যদের সঙ্গও এড়িয়ে চলতে হতে পারে।
👉আলো-হাওয়া যুক্ত, দূষণমুক্ত খোলামেলা পরিবেশ থাকা দরকার। কারণ স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় ফাঙ্গাল স্পোর অনেক সময় হাঁপানির কারণ হয়।
👉 হাঁপানি রোগীর আশেপাশে ধূমপান বর্জনীয় ও মশার কয়েল জ্বালানো যাবে না।
👉হাঁপানির টান উঠলে পিঠে বালিশ রেখে আধশোয়া হয়ে থাকলে খানিকটা আরাম পাবেন।
👉অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্যও হাঁপানি রোগীরা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তাই নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে পরিশ্রমের ঝুঁকি নেয়া উচিত।
👉হালকা খাওয়া-দাওয়া করা উচিত যাতে হজমের কোনও অসুবিধে না হয়। কারণ, বদহজম এবং অম্বল থেকেও হাঁপানি হতে পারে। যে খাবারে এ্যালার্জি আছে তা বর্জন করে চলতে হবে।
👉অফিস শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত হলে অবশ্যই কান-মাথা ঢেকে বসুন। গায়ে রাখুন পাতলা চাদর। শীতে শোওয়ার সময়ও কান-মাথা ঢেকে ঘুমান। ঘাম হচ্ছে কি না খেয়াল রাখুন। ঘাম হলে গরম পোশাক খুলুন। ঘাম বসে ঠাণ্ডা লাগলেও বিপদ বাড়বে।
👉প্রয়োজনে স্থান ও পেশা পরিবর্তন করতে হবে। শুধু নিয়ম মেনে চললেই এই ধরনের রোগীর শতকরা পঞ্চাশ ভাগ ভাল থাকেন।
👉ঠাণ্ডা লেগেছে বুঝলেই চিকিৎসকের কাছে যান। অল্প সর্ষের তেল হাতের তালুতে নিয়ে বুকে মাসাজ করলেও কিছুটা আরাম পাবেন।
👉 ইউক্যালিপটাস তেল হাঁপানিতে খুব কার্যকর। গরম পানিতে দু'ফোটা এই তেল ফেলে ভেপার নিলে উপশম পাওয়া যায়
👉প্রয়োজন মতো ওষুধ ব্যবহার করে রোগী সুস্থ থাকতে পারেন। সতর্ক জীবনযাপন ও চিকিৎসার মাধ্যমে শতকরা ৮০ ভাগ হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
👉তীব্র হাঁপানিতে খাবার ওষুধের চেয়ে ইনহেলার(Inhaler) বা রোটাহেলার (Rotahaler) ব্যবহার করাই বেশি ভাল।
👉খুব বেশি শ্বাসকষ্ট থাকলে জেবুলাইজার নামের যন্ত্রের সাহায্যে রোগীকে হাঁপানির ওষুধ দেয়া হয়ে থাকে।
💢#হাঁপানি রোগীর খাদ্য ও পথ
☕যা যা খেতে হবে:
+ কুসুম গরম খাবার।
+ মওসুমি ফলমূল।
+ছাগলের দুধ (তেজপাতা, পুদিনা ও কালোজিরা সহ)।
+আয়োডিন যুক্ত লবণ ও সৈন্ধব লবণ।
+মধু, স্যুপ, জুস।
+কালোজিরার তেল।
+আদা ও পুদিনার চা।
🍜যা যা খাবেন না:
+মিষ্টি দধি ও মিষ্টান্ন।
+ফ্রিজের কোমল পানীয়।
+আইসক্রীম, ফ্রিজে রাখা খাবার।
+ইসুবগুল ও গ্রেবী জাতীয় খাবার।
+কচুর লতি, তিতা জাতীয় খাবার।
+ পালং শাক ও পুই শাক,
+মাসকলাই
+মাটির নীচের সবজি যেমন-গোল আলু, মিষ্টি আলু, শালগম, মুলা, গাজর ইত্যাদি।
+ইলিশ মাছ
+ গরুর গোশত
+ চিংড়ী মাছ।
+পাম অয়েল, ডালডা ও ঘি।
+অধিক আয়রনযুক্ত টিউবঅয়েলের পানি।
🌴🌾কিছু ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমেও হাঁপানির আক্রমনে উপশম করা সম্ভব।
#পেঁয়াজ: পেঁয়াজ যে কোনও প্রদাহজনিত রোগ উপশমে খুবই উপকারি। তা ছাড়া নাসাপথকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। শ্বাসকষ্ট দূর করতে কাঁটা পেঁয়াজ খেয়ে দেখতে পারেন।
#লেবু: লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এক গ্লাস জলের মধ্যে লেবুর রস এবং সামান্য চিনি দিয়ে রোজ খেয়ে দেখতে পারেন। হাপানির কষ্ট অনেক কম হবে।
#ল্যাভেন্ডার তেল: গরম পানির মধ্যে ৫-৬ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল ফেলে দিন। এ বার ধীরে ধীরে ভেপার নিন। ম্যাজিকের মতো কাজ হবে।
#মধু: হাঁপানি নিরাময়ের অন্যতম প্রাচীন উপায় হল মধু। বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজ রাতে ঘুমোবার আগে এক চামচ মধুর সঙ্গে দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে শ্বাসকষ্ট কমে যায়। সর্দি-কাশিতেও অনেক আরাম পাওয়া যায়।
#আদা: পানির মধ্যে এক টুকরো আদা ফেলে ফোটান। এ বার পাঁচ মিনিট রেখে সেই মিশ্রণ খেয়ে নিন। শুধু হাঁপানি নয়, জ্বর, সর্দি-কাশি নয়, যে কোনও রোগেই সমান উপকারি আদার রস।
#রসুন: এক কাপ দুধের মধ্যে ৩-৪ কোয়া রসুন ফেলে ফুটিয়ে সেই মিশ্রণ পান করুন। ফুসফুসের যে কোনও রোগ নিরাময়ে রসুনের রস খুবই উপকারি।
#কফি: হাঁপানির কষ্ট নিরাময়ে খুবই নির্ভরযোগ্য পানীয় কফি। এক কাপ গরম কফি শ্বাসনালীর প্রদাহ কম করে। শরীরে এনার্জি যোগায়।
💢#হাঁপানি রোগীর পোশাক-পরিচ্ছদ💢
👉 কটন জাতীয় নরম ঢিলে-ঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।
👉 সিল্ক, সিনথেটিক, পশমি কাপড় পরিধান না করাই উত্তম।
👉পাতলা বালিশ ও নরম বিছানায় শোয়া উচিত।
👉বাসস্থান শুষ্ক ও পর্যাপ্ত সূর্যের আলো-বাতাস সম্পন্ন হওয়া উচিত।