চায়ের মৌলিক ৩টি ধরণ রয়েছে।তবে ব্ল্যাক, হোয়াইট, গ্রিন এবং ওলং চা জনপ্রিয়।
ভিন্নতা অনুযায়ী চা এর বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্যকারি উপকারীতা দেখে নেয়া যাক-
#গ্রিন টি:- গ্রিন টি এর অ্যান্টিঅক্সডেন্ট মূত্রাশয়, স্তন, ফুসফুস, পেট, অগ্ন্যাশয় এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফ্যাট বার্ন মস্তিষ্কে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই, স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস, আলঝাইমা(স্তৃতিশক্তি লোপ), পার্কিনসন রোধ ছাড়াও কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত এমনকি হাড় ও দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে পারে।
#ব্ল্যাক টি:- এতে সর্বাধিক পরিমান ক্যাফেইন থাকে। গবেষনায় দেখা গেছে ব্ল্যাক টি সিগারেটের ধোয়াতে আক্রান্ত ফুসফুসকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।
#হোয়াইট টি:- একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে বেশী প্রক্রিয়াজাত চায়ের তুলনায় হোয়াইট টি সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী অ্যান্টিক্যান্সার বিদ্যমান।
#ওলং টি:- একটি প্রানী গবেষনায় দেখা গেছে যে ওলং চা থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অতুলনীয়।
অন্যদিকে ভেষজ চা এর মধ্যে আদা, জিস্কগো বিলোবা, জিনসেং, হিবিস্কাস, জুইঁ, গোলাপ, পুদিনা, রোয়েবস(লাল চা), ক্যামোমিল এবং ইচিনেসিয়ার উপকারিতা বেশ রয়েছে তবে বিজ্ঞানীরা ভেষজ চায়ের গুনাগুন নিয়ে এখনো গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
চা নিয়েও ক্ষতিকর কিছু দিক রয়েছে যেমন-
➡️দুধ চা রক্তনালীর প্রসারণ ঘটাতে ব্যর্থ। কারণ, দুধের মধ্যে থাকে ক্যাসেইন নামক একটি পদার্থ যা চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাটেচিনকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে চায়ে দুধ মেশালে চায়ের রক্তনালী প্রসারণের ক্ষমতা একবারেই চলে যায়। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার-এর গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেন, চায়ের প্রভাবে কোষগুলো থেকে সাধারণের তুলনায় ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন নির্গত হয়। ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন নির্গত হওয়া জরুরি। কিন্তু চায়ে দুধ মেশালে এই ইনসুলিন নির্গমনের হার কমতে থাকে। চায়ে যদি ৫০ গ্রাম দুধ মেশানো হয়, তাহলে ইনসুলিন এর নির্গমন শতকরা ৯০% কমে যায়।
➡️এক গবেষনায় এসেছে প্রতিদিন ৩ বা তার চেয়ে কম (৭১০ মি.লি.) খাওয়া বেশীর ভাগ মানুষের জন্য সেফ রেঞ্জ। এর বেশী খেলে আয়রন শোষন বাধাগ্রস্ত হবে.।
➡️গবেষনা থেকে জানা যায় প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রাম চেয়ে বেশী গ্রহন করলে উদ্বেগ, চাপ এবং অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
➡️তাছাড়া ও কিছু গবেষনায় এসেছে অতিরিক্ত ক্যাফেইন মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত করে,ফলে ঘুমের চক্র ব্যাহত হয়।
➡️এছাড়াও মাথা ঘোরা,মাথা ব্যাথা,গর্ভকালীন সমস্যা, গ্যাসট্রাইটিস, বমি ভাব,কনস্টিপিশন ইত্যাদি সম্যসার সম্মুখিন হতে পারেন।
আমরা সাধারণত সকালের নাস্তা বা দুপুরের
খাবারের পর পরই চা পান করি।অনেকেরই এটা প্রতিদিনের অভ্যাস। কেননা চা,
পান করার অনেক উপকারিতা রয়েছে।তবে সঠিক সময়ে বা উপায়ে চা না পান করলে তা শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটায়।
এসব সমস্যার কারণে কি চা পান করা বাদ দিবেন? অবশ্যই না। তাই কিছু নিয়ম মেনে চললে এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
👉যাদের হজমের সমস্যা ও এসিডিটির সমস্যা আছে তারা সকালে খালি পেটে চা খাবেন না।
👉ওজন নিয়ন্ত্রণে ও ভুড়ি কমাতে চিনি ছাড়া চা খাবেন।
👉বিশেষ কোনো রোগ যেমন- ডায়েবেটিস, কিডনী ডায়ালাইসিস ইত্যাদির ক্ষেত্রে অবশ্যই ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিবেন।
👉কনস্টিপিশন বা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত চা একজন সুস্থ ব্যক্তিও গ্রহণ করবেন না।
👉খাবার খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে চা পান করবেন।
👉যাদের রক্তস্বল্পতা আছে, কম বয়স্ক মেয়েরা সারাদিনে ১-২ কাপের বেশি চা খাবেন না।
চা প্রেমীদের কাছে এক কাপ চা নয় যেনো এক কাপ ভালোবাসা।